নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতিপ্রাকৃত গল্পঃ ইশানা

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০



মানুষ সাধারনত দুইটা জিনিসের পেছনে সব সময় ঘোরাঘুরি করে । একটা হচ্ছে সৌন্দর্য্য আরেকটা হচ্ছে টাকা-পয়সা । একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে যে ক্লাস কিংবা অফিসে সুন্দরী কিংবা বড়লোক মেয়েদের আসে পাশে সবাই ঘুরে বেড়ায় ! আর যার কাছে এই দুইটা জিনিসই আছে বলা চলে তার আশে পাশে তো মানুষ জনের লাইন লেগে যাওয়ার কথা ! কিন্তু ইশানার বেলার ব্যাপারটা কোন ভাবেই আমি মেলাতে পারি না ! ওর চেহারা যেমন আছে তেমনি আছে টাকা পয়সা । এই দুটো জিনিসই আছে তবুও মানুষ জন ওর আসে পাশে ঘোরাঘুরি করে না । আমার কাছে ব্যাপার টা বেশ অবাকই লাগে সব সময়ই ।

ক্লাসের সেরা পাঁচজন সুন্দরীর নাম বলতে বলা হলে ইশানার নাম আসবে । আর আমি যতদুর শুনেছি ইশানার বাবার বেশ টাকা পয়সা । অন্তত যে মেয়ে পাজেরো গাড়িটাতে চড়ে ও প্রতিদিন ভার্সিতে আসে সেই মেয়ের বাবার যে টাকা পয়সার কোন অবাব নেই সেটা বুঝতে কষ্ট হয় না ! এমন মেয়ের আসে পাশে তো ছেলেদের লাইন লেগে যাওয়ার কথা অথচ ক্লাসের সবাই যেন কেমন ওকে এড়িয়ে চলে । আরও ভাল করে বলতে গেলে ইশানা নিজে সবাইকে একটু এড়িয়ে চলে । কারো সাথে ঠিক মত কথা বলে না ।

মাঝে মাঝে ক্লাসে ওর সাথে আমার চোখাচোখি হয়ে যায় । নিরবে কয়েকটা মুহুর্ত আমার দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও চোখ সরিয়ে নেয় । আমার বারবারই মনে হয় ও যেন কিছু একটা বলতে চাইছে কিন্তু সেটা আর কোন দিন জানতে চাওয়া হয় না । আমিও কিছু সময় তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে নেই ।

তবে ইশানার প্রতি যে আমার আগ্রহ ছিল না তা না । আমাদের ক্লাসের কয়েক জনেরও আগ্রহ ছিল ওর প্রতি । অন্তত আমার বন্ধু সামিরের কথা তো আমি বেশ ভাল করেই জানতাম । সামির ইশানাকে নিয়ে টুকটাক কথা বলতো কিন্তু ক্লাসে কখনও ইশানার নাম মুখেও আনতো না । একটা সময় ভাবতাম হয়তো ভয়ে কিংবা লজ্জায় সেটা করছে না কিন্তু পরে মনে হল ব্যাপার টা ওরকম না ।

ক্লাসের বাইরে একদিন জানতে চাইলে সামির বলল
-আসলে ব্যাপার টা নিয়ে আমি নিজেও ভেবেছি । যখন ওর সামনে থাকি না তখনও ওকে বেশ ভাল লাগে আমার । কিন্তু যখনই ও আসে পাশে থাকি মনে হয় যেন কিছু একটার কারনে আমি ওর কাছে যাওয়া কিংবা ওর কথা ভাবতেই পারছি না । এমননি ও আসে পাশে থাকলে আমার ওর কথা মনেই পরে না ।
-তাই ? বড় আজিব ! আমার তো এমন মনে হয় না !
-কি জানি !

সামিরের কথা শুনে আমি একটু চিন্তা করলাম । আরও কয়েকটা ছেলের খোজ দিল সামির । ওরাও ইশানাকে পছন্দ করে কিন্তু ওদের অবস্থাও ঠিক সামিরের মতই । ওরাও ক্লাসে বাইরে ইশানাকে নিয়ে আলোচনা করে কিন্তু সামনে এলে আর কিছু বলার সাহস পায় না কিংবা বলতে পারে না কোন এক অদ্ভুদ করানে একদিন ঠিক করলাম যে এই বিষয়টা নিয়ে একটু পরীক্ষা করবো । আগের দিন রাতে ঠিক হল যে আগামীদিন ঠিক ঠিক ইশানার সাথে সামির কথা বলবে । যে কোন ভাবেই ।
কিন্তু পরদিন ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে সামির সব কথা ভুলে গেল । আমি ওকে বারবার মনে করিয়ে দিতে গেলেও ও এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো যে আমি যেন অদ্ভুদ কোন কথা বলছি কিংবা এর থেকে অবাক করা বিষয় ও আর কোন দিন শুনে নাই । আরো কয়েকবার জোর করলাম ইশানার সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু ও কানেই তুলল না ।


ক্লাস শেষ করে সামির এমন ভাবে পালালো যেন ওর পেছনে কেউ বন্দুক হাতে নিয়ে তাড়া করছে । সবার মত আমিও বের হতে যাবো ঠিক তখনই প্রথমবারের মত আমি ইশানার ডাক শুনতে পেলাম ।
ডাকটা একটু শুনেই আমার মাথার ভেতরে কেমন একটা ঝিমঝিম করে উঠলো । কেবলই মনে হল যেন কেউ আমার মাথায় জোরে করে একটা বাড়ি মাড়লো । আমি দাড়িয়ে পড়লাম !

ইশানার আমার সামনে এসে দাড়াতেই দেখলাম ওর মুখটা কেবল থমথম করে আছে । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-কেউ আমার সাথে কথা না বলতে চাইলে তাকে জোর করার কোন মানে নেই, তাই না ?

ইশানা এই লাইনটা বলে আরও কয়েকটা মুহুর্ত তাকিয়ে রইলো আমার দিকে । একটু আগের যে মুখ থমথমে ভাব ছিল সেটা দেখলাম মুহুর্তেই কেটে গেছে । আমার দিকে সেই আগের চোখে তাকিয়ে আছে । আমি অবাক হয়ে বললাম
-তুমি কিভাবে বুঝলে ?
-আমি বুঝতে পারি ! এমনটা আর করবে না । ঠিক আছে ?
-না আগে বল কিভাবে বুঝলে ?
-বলব না !
এই বলে ইশানা হাসলো । যেন খুব মজার কোন কথা বলেছে । বাচ্চা মেয়েরা যখন বড়দের বোকা বানিয়ে মজা পায় ঠিক তেমন ভাবেই যেন ও এই কথাটা বলে মজা পেল ! আমি আবার বললাম
-বল প্লিজ ! প্লিজ !
-এতো আগ্রহ কেন ?
-জাগবে না ? তুমি কিভাবে বুঝলে যে আমি সামিরকে তোমার সাথে কথা বলানোর জন্য জোর করছিলাম ।

এই কথার জবাব না দিয়ে ইশানা আবারও হাসলো । রহস্যময় হাসি । ততক্ষনে দেখি ওর কালো রংয়ের পাজেরোটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের সামনে চলে এসেছে । আমার দিকে রহস্যময় হাসিটা দিয়েই ও গাড়ির দিকে হাটা দিল । আমি তখনও দাড়িয়ে আছি অবাক হয়ে । বারবারই মনে হচ্ছে ইশানা কিভাবে বুঝলো আমি সামিরকে কি বলছিলাম ? কেমন করে বুঝলো ?

গাড়ির কাছে গিয়ে ইশানা আবারও আমার দিকে ফিরে তাকালো । আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-ইফ ইউ ওয়ান্ট এ আন্সার, ইউ হ্যাভ টু ফলো, কনসেন্ট্রেইট !

তারপর আর কোন কথা না বলে গাড়িতে করে চলে গেল । আমি দাড়িয়ে রইলাম বেশ কিছুটা সময় । তখনও আমার মাথায় কিছু ঢুকছে না । বারবার মনে হচ্ছে এর ভেতরে কিছু একটা ঝামেলা নিশ্চয় আছে ।


আমি এরপর থেকে ইশার উপর নজর দেওয়া শুরু করলাম । ক্লাসে ও কি করে না করে সব কিছু । এবং ওর কাছাকাছিই বসা শুরু করলাম । ও কখন আসে কিংবা কখন যায় কোন দিন কি করে সব কিছু ! মাঝে মাঝেই দেখতাম ও কারো দিকে এককভাবেই তাকিয়ে আছে । সেই তাকিয়ে থাকার ভেতরে একটু যেন অস্বাভাবিকতা আছে । আমি সব কিছু লক্ষ্য করা শুরু করি কিন্তু তবুও কিছু বুঝতে পারি না । তবে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম যে মাসের একটা নির্দিষ্ট দিনে ইশানা ক্যাম্পাসে আসতো না । এমনিতে প্রতিদিনই ওকে দেখি ওকে । তবে মাঝে মাঝে ও ঠিক ঠিকই কামাই করে । আমার এইটা বিশেষ করে মনে করার কারন হচ্ছে একবার একটা ইনকোর্সের পরীক্ষার দিনও ও আসে নাই । আমার কেন জানি মনে হল যে ওর এই না আসার পেছনে একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে । একদিন পরীক্ষা করার জন্য স্যারের রোল কলের খাতাটা চেক করলাম । এবং যা ভেবেছিলাম তাই । একটু দিন হিসেব করে দেখলাম যে গত এক বছরের খাতায় ইশানা প্রত্যেক মাসে ২৮ দিন পরপর ২৯, ৩০ আর ১ তম দিন গুলো কামাই করেছে । এটা আমার কাছে একটু অবাকই লাগলো ।

এরই মাঝে মাঝে আমি প্রায় প্রতিদিনই ইশানার সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলাম । ও নিজেও বলতো তবে বেশি ভাগ সময়েই চুপ করে থাকতো আর আমার কথা শুনতো । আমার কেন জানি মনে হত যে ইশানা বেশ আগ্রহ নিয়েই আমার কথা গুলো শুনতো । তবে এরই ভেতরে আমি ওর কাছে অনেক বারই জানতে চেয়েছি ঐ দিনের কথা । ও কিভাবে জানতে পারলো । কিন্তু প্রত্যেকবারই ও এড়িয়ে গেছে । উত্তর দেয় নি । কেবল বলেছে একদিন ঠিক ঠিক জানতে পারবে । একদিন হঠাৎ করেই আমাকে ওর গাড়িতে উঠতে বলল । আমি কোন কথা না বলে চুপ চাপ উঠে বসলাম ।



গাড়ি চলতে আমি আমার প্রতিদিনকার মত কথা বলতেই থাকি । ও চুপচাপ শুনে যায় । হঠাৎই বলল
-তোমাকে আজকে কেন গাড়িতে উঠতে বললাম জানো ?
-কেন ?
-সরি বলার জন্য ।
-মানে ?
-মানে হচ্ছে তোমাকে আমাদের ক্লাসের নাইমা নামের মেয়েটা অনেক পছন্দ করে । জানো তো ?
-হ্যা জানি ।

আমি অনেক দিন থেকেই জানি ব্যাপার টা । কিন্তু কোন কথা বলি না । চুপ করে থাকি । ইশানা বলল
-তোমার কি মনভাব ওর ব্যাপারে ?
-আসলে আমি ওকে কোন দিন এই ভাবে কোন দিন দেখি নি । তা তুমি সরি কেন বলছো ?
কিছু টা সময় চুপ করে থেকে ইশানা বলল
-আজকে মেয়েটা তোমাকে প্রোপজ করতে আসছিল । ওর ব্যাগে বেশ কিছু ফুলও ছিল ।
-তাই ? তা আসলো না কেন ?
-আমি আসতে দেই নি তাই ?

আমি কিছু বুঝলাম না ঠিক মত । বললাম
-কিভাবে ? পুরো ক্লাসে তুমি আমার পাশে বসে ছিলে । আমার সাথেই । তাহলে কিভাবে আসতে দিলে না ?
আমার এই কথায় ইশানা কেবল হাসলো । আবারও সেই রহস্যময় হাসি । বলল
-তাই ? কেবল কথা বলেই কিংবা শারীরিক ভাবেই একজন কে আটকানো যায় ? অন্য কোন ভাবে আটকানো যায় না ?

আমি সরু চোখে ইশানার দিকে তাকালাম । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে কোথাও কোন একটা সমস্যা আছে । কিন্তু সেই সমস্যা টা যে ইশানার সাথে সম্পর্কৃত সেটা আমার মানতে বেশ খানিকটা কষ্ট হচ্ছে । হঠাৎ গাড়ি থেমে গেল । ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিয়েছে । আমি তাকিয়ে দেখি আমি আমার এলাকার সামনে । এর মিনিট দুয়েক হাটলেই আমার বাসা । আমি আরেকবার অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ইশানার দিকে ।

ড্রাইভারকে আমি বলি নি আমার বাসা কোথায় । যদিও ইশানা জানে আমি কোথায় থাকি । আমার সাথেই ও গাড়িতে উঠেছে । আমার যতদুর মনে পড়ে ইশানাও ড্রাইভার কখনও বলেনি কিছু । তাহলে এখানে এই গাড়ি আসলো কিভাবে ? আর ড্রাইভারই বা জানলো কিভাবে ?
ইশানা কি আগে থেকেই বলে রেখেছিলো ?

আমি কোন কথা না বলে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম । ইশানা জানলা দিয়ে মুখ বের করে বলল
-জানতে চাইলে না আমি কেন ওকে আটকেছি ?
-কেন ?
-আমার জিনিস আমি অন্যকে কেন নিতে দেব শুনি ?

আমি আবারও কেবল চুপ করে ইশানার দিকে তাকিয়ে রইলাম । ইশানা আবারো বলল
-আমাকে তোমার একটু অস্বাভাবিক মনে হতে পারে কিন্তু একটা জেনে রেখো আমার দ্বারা পুরো পৃথিবী ধ্বংশ হয়ে গেলেও তোমার কোন ক্ষতি আমি কোন দিন করতে পারবো না !


আর কিছু বলল না । কাঁচ নামিয়ে চলে গেল ।

ইশানা চলে যাওয়ার পরেও ওর বলা কথা গুলো আমার মাথায় ঘুরতে লাগলো । সাথে সাথে কিছু প্রশ্ন ! ওর দ্বারা পুরো পৃথিবী ধ্বংস হবে মানে কি ! কি বলছে এসব ।

এতো সব স্বপ্নের ভেতরে কেবল একটা প্রশ্নের জবাবই পেলাম সেটা হল ইশানা নাইমাকে আটকেছে যাতে করে সে আমাকে প্রোপজ করতে না পারে । আমাকে ও পছন্দ করে অন্য কেউ যাতে আমাকে ছিনিয়ে নিতে না পারে । যেভাবেই হোক সেটা এটা করেছে । কিন্তু কিভাবে ?

----------

পরদিন আমি আমার প্রশ্নের অনেক খানি জবাবই পেয়ে গেলাম একটা ঘটনা ঘটনার ভেতরে । ক্লসে আমি ওর পাশেই বসে ছিলাম । স্যারেরা কি একটা মিটিং করছিল বলে ক্লাস হচ্ছিলো না । মাঝেমাঝেই এমন টা হয় ! এমন সময় পুরো ক্লাস নিজেদের মাঝে মেতে থাকে । হইহুল্লোর আড্ডা চলতে থাকে ! আজকেও ঠিক তেমনই কিছু হচ্ছিলো ! সেই সময়েই ক্লাসের ভেতরে হট্টগোল বেঁধে গেল কি একটা নিয়ে । তাকিয়ে দেখি আমাদের ক্লাসের রাজনীতি করা একটা ছেলের সাথে সামির কথা কাটা-কাটি করছে ।

খাইছে !
দেখতে দেখতে ওদের ভেতরে মারামারি বেঁধে গেল । যে ছেলেটা রাজনীতি করে তার গালে একটা চড় বসিয়ে দিতেই পুরো থ হয়ে গেল মুহুর্তেই । ছেলেটা নিজেও থ হয়ে দাড়িয়ে রইলো কিছুটা সময় ! ভাবতেই পারে নি ওকে এমন করে কেউ চড় মারতে পারে ! ছেলেটা তারপরই ক্লাস থেকে বের হয়ে গেল ।

আমি জানি এর পরে কি হবে । ছেলেটা সাংগো পাঙ্গ নিয়ে ফিরে এসে সামিরকে মারবে ! এদের কাজই তো এই নিজেদের মুরদ নেই কিছু হলেই বাইরের লোকজন ডেকে আনে । আমি সামিরের দিকে যেতেই ইশানা আমার হাত চেপে ধরলো ।
-যেতে হবে না !
-আরে বল কি ! এখনও ওরা আসবে । সামিরকে মেরে তক্তা বানাবে ! ও আমার বন্ধু !

আমি এগিয়ে যেতে না যেতেই দেখি চার-পাঁচ জন দরজা দিয়ে ঢুকছে । চড় খাওয়া সেই ছেলেটাও আছে । আমার সাথে আমাদের ক্লাসের আরও কয়েকজন দাড়িয়ে গেল । সামিরকে বাঁচানোর জন্য মারামারি বেঁধে যাবে ঠিক তখনও অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যে সব হঠাৎ করে স্থির হয়ে গেছে । পাশে তাকিয়ে দেখি সামির রাজু মুহিম এক ভাবে দাড়িয়ে আছে । সামনের ছেলে গুলোও দাড়িয়ে গেছে !
ক্লাসের প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ে যে যায় জায়গায় স্থির হয়ে দাড়িয়ে আছে । যেন কোন মানব মূর্তি হয়ে দাড়িয়ে আছে ।

এমন না পুরো পৃথিবী থেমে গেছে । বাইরে গাড়ির হর্ন শুনতে পাচ্ছি এমন কি আমার মাথার উপর ফ্যানও চলছে । আমার চোখ চট করে তাকিয়ে দেখি ইশানা চোখ বন্ধ করে আছে । আস্তে আস্তে কাঁপছে ! সব মানব মুর্তিকে পাশ কাটিয়ে আমি দৌড়ে গেলাম ওর কাছে
-ইশানা !
ইশানা তখনও চোখ বন্ধ করে আছে । আমি আবারও ডাকদিলাম ওকে !
আমার তিন নাম্বার ডাকে ও চোখ খুললো ! আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি সেটা টকটকে লাল হয়ে আছে ।
-কি হয়েছে তোমার ? কি হচ্ছে এসব ?
-ডোন্ট ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড ?

এই বলে ইশানা ঐ ছেলে গুলোর দিকে তাকালো । আমি দেখলাম সামির তার বাঁ হাত দিয়ে জোরে একটা চড় মারলো ঐ ছেলেটার গালে । তারপর আবারও চুপ । আমার কাছে কেবল মনে হল যে সামির যেন একটা মানব রোবট ! ওকে দিয়ে কেউ বলল ছেলেটাকে চড় মারতে সামির কেবল হুকুম পালন করলো ! আর কিছু না । আবার স্থির হয়ে গেল আগের জায়গায় !

-ইশা !
-হু !
-সিরিয়াসলি ইউ আর ডুইং দিস ?
-হু !

আমি ওর হাত ধরলাম । অনুভব করলাম যেন ওর পুরো শরীরের ভেতর দিয়ে কিছু একটা প্রবাহিত হচ্ছে । আমি ওর চামড়ার ভেতরের রক্ত প্রবাহ পরিস্কার ভাবে অনুভব করতে পারছিলাম যেন ! আমি বললাম
-তাহলে আমি কেন নেই ?
-আই ডোন্ট নো !
-মানে ?
-আই কান্ট কন্ট্রোল ইউ ! আমি তোমার মাথার ভেতরে ঢুকতে পারি না । চাইলেও না । কেন আমি জানি না । যত সহজে আমি অন্য সবার মাথায় প্রবেশ করতে পারি আমি পারি না !

-বুঝলাম । এখন সব কিছু আগের মত কর । তোমার মাথার উপর চাপ পড়ছে আমি বুঝতে পারছি । প্লিজ সব আগের মত কর !

তারপর আবারও হঠাৎ করেই আবারও সব কিছু আগের মত হয়ে গেল । সেই পলিটিক্যাল ছেলে গুলো ঠিক যেভাবে এসেছিল সেভাবেই চলে গেল যেন কিছু হয় নি । সামির আর বাকি সবাই এমন একটা ভাব করতে লাগলো যেন কোন হয় নাই ।

আমি ইশানাকে নিয়ে বাইরে চলে এলাম । আমার তখনও ঠিক মত মত বিশ্বাস হচ্ছে না এখন কি হল আর কিভাবে হল । ইশানা আমার হাত চেপে ধরে বলল
-ইউ নো হোয়েন ইউ কাম টু মি, টাচ মি....... আমি নিজের ভেতর অন্য রকম একটা কিছু অনুভব করি । লাইক আমি যেন একটু বেশি শক্তি পাই ! নিজের উপর বেশি কন্ট্রোল পাই ! আজুলা আরও ছোট হয়ে যায় তখন !
-আজুলা !! এটা কি ?
-কিছু না ! তোমাকে বুঝতে হবে না !

আমি কোন কথা না বলে ইশানার দিকে তাকিয়ে রইলাম ! আমার কেন জানি ইশানাকে ভয় লাগলো না । অবশ্য অন্য কেউ এই ব্যাপারটা জানতে পারলে নিশ্চয়ই ভয় পাবে ওকে ! আমার কেন জানি আসলেই ভয় লাগলো না ! আমি ওর হাত টা আরও শক্ত করে চেপে ধরলাম !

পরের দিন গুলো যেন আরও একটু সহজ হয়ে গেল । আগে তো কেবল আমি কথা বলতাম, এখন ইশানা নিজেও আমার সাথে কথা বলা শুরু করলো । ক্লাসের সময় গুলো এক সাথে, পরে ফোনালাপ তো আছেই । দিন গুলো হঠাৎ করেই ভাল হয়ে গেল ।

ইশানাকে বেশ আনন্দিত মনে হচ্ছিলো কারন আমি সব কিছু জানার পরেও ওর কাছ থেকে দুরে চলে যায় নি । ইশানার কাছ থেকেই জানতে পারলাম যে ওর আগেও একটা পছন্দ ছিল । যখন সে স্কুলে পড়তো । ছেলেটাকে বলার পরেই নাকি ছেলেটা ওকে ভয় পেতে শুরু করে । ওর কাছ থেকে দুরে দুরে থাকতো ! কিন্তু আমি সেরকম টা না করায় ইশানা আসলেই খুশি হয়েছিল ।


আরও সপ্তাহ খানেক পরে ইশানা ক্লাস শেষে বের হয়ে ইশানা বলল
-সামনের তিন দিন আমাদের দেখা হবে না ।
-কেন ?
-আমি আসবো না !
-কেন ? সেটাই জানতে চাচ্ছি ? কোথায় যাবা ?

ইশানা কোন কথা বলল না । আমার আবারও সেই কথা মনে পড়লো । আমি আগেই খোজ নিয়েছিলাম । একটা নির্দিষ্ট সময় পরপরই ও তিন দিন ক্লাসে আসে না ! কোথায় যায় ?
ভাবলাম আরেকবার জানতে চাই তবে কেন জানি মনে হল ওর এখন বলার মুড নেই । সময় হলে নিশ্চয়ই ও নিজেই বলবে ! আমি আর কিছু জানতে চাইলাম না !




প্রথম দিন পার হয়ে গেল । রাতের বেলা ইশানার ফোন থেকে আমার ফোনে এসে হাজির ! রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে একজন পুরুষের কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম ।
-কে বলছেন ?
-ইউ মাস্ট বি ইশাস ফ্রেন্ড ?
একটু ভরাট কন্ঠে কেউ বলে উঠলো
-ইয়েস !
-আই গেস দ্য ভেরি স্পেশাল ওয়ান ?
-আমি কি জনাতে পারি আপনি কে বলছেন ?
-আমি ওর বাবা !
-ও !
-আমাদের দেখা হলে আমরা হয়তো কিছু বিষয় নিয়ে কয়েকটা কথা বলতে পারতাম !
---------


কতক্ষন ইশানার বাবার সাথে বসে আছি আমি নিজেই জানি না । গাড়ি চলছে আপন গতিতে । মুন্সিগঞ্জের কোন একটা এলাকা দিয়ে এগিয়ে চলছে । রাস্তা গুলো কেমন সরু সরু আর আকা ব্যাঁকা । ড্রাইভারকে বেশ সাবধানে চালাতে হচ্ছে । মাঝে মাঝে এমন এমনও জায়গা চলে আসছে সেখানে দুইটা গাড়ি একসাথে পার হতে পারে না । আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাচ্ছি এই দেখে যে আমার দাদা বাড়ি এখানে অথচ আমি কোন দিন এই এলাকার দিকে আসি নি । এমন কি এর নামও শুনি নাই ।

আমি ইশানার বাবার সাথে ওদের বাগান বাড়িতে যাচ্ছি ! ইশানার সাথে দেখা করতে ! নিজের কাছেই ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না তবে যাচ্ছি । এখনও ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না গত কাল রাতে ইশানার বাবা আমাকে যা যা বলেছে । এখনও কথা গুলো মাথার ভেতরে যাচ্ছে না কিছুতেই ।

-আরেকবার ভেবে দেখো তুমি ?

আমাদের যাত্রা শুরুর দিকেও ইশানার বাবা আমাকে ওদের বাগান বাড়িতে যেতে মানা করেছিল । ইশানার কাছে এই সময়ে যাওয়া নাকি কোন ভাবেই বুদ্ধিমানের কোন কাজ নয় ! আমি বললাম
-না কোন সমস্য হবে না ।
-তুমি বুঝেতে পারছো না ! এখন ওর কাছে যাওয়াটা নিরাপদ নয় ! জানি নিজের মেয়ের সম্পর্কে এমন কথা কেউ বলতে পারে না কিন্তু যা সত্য সেটা আমি বলছি !
-আঙ্কেল আমি আগেই বলেছি । ইশানা আমার কোন ক্ষতি করবে না । আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন !

যদিও আমি বললাম নিশ্চিত থাকতে পারেন তবুও ভদ্রলোক কে খুব বেশি নিশ্চিত মনে হল না । এমন কি আমি নিজেও খানিকটা অনিশ্চিত হয়েই আছি !

গতকালকেই যখন ইশানার বাবার ফোনটা এল তখন আমি অবশ্য একটু অবাক হয়েছিলাম । ভদ্রলোক এতো রেখে আমাকে কেন ফোন করবেন ? তারপর উনি নিজেই গাড়ি পাঠিয়ে আমাকে ইশানাদের বাসায় নিয়ে যান । ভেবেছিলাম ওখানেই আমি ইশানাকে দেখতে পাবো কিন্তু ওখানে গিয়ে জানতে পারি যে ওশানা নাকি ওখানে নেই । ও মুন্সিগঞ্জের সোনারং এ গেছে ।
ওখানে কেন গেছে জানতে চাইলেই ভদ্রলোক আমাকে একটা অদ্ভুদ গল্প শোনালেন ! যদি আমার সাথে ঐ দিনের ঐ ঘটনা না ঘটতো আমি নিশ্চিত ভাবেই ভদ্রলোকের কথা গুলো তুড়ি মেড়ে হেসেই উড়িয়ে দিতাম ! কিন্তু উড়িয়ে দিতে পারলাম না সেদিনের ঘটনা জন্যই । ইশানার বাবা আমাকে বলল
-আমার মেয়েটা ঠিক স্বাভাবিক না ! তুমি জানি !
-জি কিছুটা আমি জানি !
-আসলে ও সাধারন না বলতে যে ওর ভেতরে কোন অক্ষমতা আছে তা না ! বরং প্রয়োজনের থেকে একটু বেশি ক্ষমতাই ওর ভেতরে আছে । ইশানা একজন মাইন্ড কন্ট্রোলার ! ও ওর আসে পাশের মানুষকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে । যা ইচ্ছে তাই করাতে পারে !

অন্য কেউ হলে এই কথা শোনার সাথে সাথেই হেসে দিত । কিন্তু আমি জানি সেদিন আমি কি দেখেছি, দেখেছি কিভাবে ইশানা পুরো ক্লাসকে থামিয়ে দিয়েছিল । আমি বললাম
-জানি আমি ! কিন্তু এতে সমস্যা কোথায় ? ও তো খারাপ কিছু করছে না । চাইলেই করতে পারতো কিন্তু করছে না ! এটা তো ভাল একটা দিক !
-হু ! কিন্তু ......
-কিন্তু কি ?
-আসলে ওর এই শক্তিটা মাঝে মাঝেই ওর নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় ! তখন না চাইতেও ও আশে পাশের মানুষ জনকে হার্ট করে ফেলে । যখন ওর বয়স ১৪ বছর তখন আমার বাসার একটা কাজের ছেলেকে ও মেরে ফেলেছিল ।
-কি বলছেন ? কিভাবে ?
-ডাক্তারি রিপোর্ট বলছে যে ঐ ছেলেটার মস্তিস্কের ভেতরে নাকি ব্লাস্ট হয়েছিল । এমন টা নাকি হওয়া সম্ভব না কোন ভাবেই । তারা কোন কুল কিনারা করতে পারি নি কিভাবে এটা হয়েছে । কিন্তু আমি ঠিক ঠিক বুঝতে পেরেছিলাম আসলে কি হয়েছিল । ইশানা নিজেও বুঝতে পেরেছিল । তারপর থেকেই ও তীব্র অনুশোচনায় নিজেকে একেবারে ঘরের দরজার ভেতরে আটকে ফেলে । ঠিক তারপরের মাসেই আবারও আরেকজন ওর দ্বারা আক্রান্ত হয় ! তবে ভাগ্য ভাল যে সেবার সে মারা যায় নি । তবে তার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল । সেবারই আমরা দুজনেই বুঝতে পারি যে একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর ইশানার এমন টা হচ্ছে । আরেকটু হিসাব করে নিতেই টের পেলাম যে প্রতি পূর্নিমার সময় ইশানা নিজের এই শক্তিটা নিয়ন্ত্রন করতে পারে না ! চাঁদের আলো যত তীব্র হয় ও তত নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় !

আমি চট করেই বুঝে ফেললাম ওর ক্লাস কামাইয়ের ব্যাপারটা ! কেন ও ঠিক প্রতি মাসের কয়েকটা দিন আসে না ! আমি বললাম
-তারপর ?
-ওর ক্ষমতা যে চাঁদের সাথে সম্পর্কৃত এটা জানার পর থেকেই ও নিজে আরও সাবধান হয়ে গেল । ঠিক ঠিক জানতো কবে কবে এমন হবে । সেদিন দিনই ও নিজেকে একদম আটকে ফেলতো । আশে পাশের মানুষ থেকে একদম দুরে চলে যেত । নিজেকে একেবরে বন্দি করে ফেলল !!
-বন্দি ?
-হু ! ঐ বাগান বাড়িটার নিচে একটা কয়েদখানার মত আছে । মাটির নিচে । আগে ওটা একটা জমিদার বাড়ি ছিল ! আমি শখ করে কিনে ছিলাম । ঠিক ঠাক করে নিয়েছিলাম । ও ঐখানেই নিজেকে আটকে রাখে । যাতে করে কোন ভাবেই কেউ ওর কাছে আসতে না পারে !
-তার মানে গতকালকে ও ওখানেই গেছে ?
-হ্যা ! আমার ঐ বাগান বাড়িটাতে কেউ থাকে না । একটা কেয়ারটেকার রাখা আছে । এই তিন দিন সেও থাকবে না !
আমি বললাম
-আমি যাবো !
-না ! কোন ভাবেই না ! দেখো ইশানা তোমার ব্যাপারে আমাকে সব কিছু বলেছে । আমি কোন ভাবেই তোমার জীবন ঝুকির ভেতরে ফেলতে পারি না !
-কোন সমস্যা নেই । ও আমার কোন ক্ষতি করবে না ! করতে পারবে না !
-তুমি বুঝতে পারছো না !
-আমি ঠিক ঠিক বুঝতে পারছি । আপনি চিন্তা করবে না ! কাল সকালেই আমরা যাবো ! ও ওখানে একা একা আছে !




আমরা একটা বিশাল বড় গেটের সামনে এসে দাড়ালাম ! গেটে ইয়া বড় তালা ঝুলছে । আগে বিটিভিতে দেখানো বাংলা মুভিতে যেরকম জেলখানার সামনে একটা বিশাল বত তালা দেখা যেত ঠিক সেই রকম ! তাছাড়াও বিশাল উচু পাঁচিল দেওয়া বাগান বাড়িটা । উপরে আবার কাটাতার দিয়ে আটকানো ! বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যায়, ভেতরে জায়গা জায়গা নিয়ে বানানো হয়েছে । গেটের কাছে এসেই ইশানার বাবা থেমে গেল । তারপর বলল
-আমি আর যেতে পারবো না !
-কেন ?
-এই দেওয়াল পার হলে আমিও এফেক্টেড হয়ে যাবো !
-সত্যি ?
-হুম ! ওর নিয়ন্ত্রন এই পযর্ন্ত আসে । আগে দেওয়াল টা আরো পিছনে ছিল । বেশ কয়েকজন এই বাড়ি আসে পাশে তখন অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যেত মাঝে মাঝেই । তাই জায়গা কিনে আমি দেওয়াল টা বাড়িয়ে নিয়েছি !
-আচ্ছা আমি ভেতরে যাচ্ছি !
-আরেকবার ভেবে দেখবে কি ?
-আই উইল বি ওকে !

ইশানার বাবা কিছুটা সময় চুপ করে রইলো । তারপর পকেট থেকে একটা চাবির গোছা বের করে বাড়িয়ে দিল আমার দিকে ।
-এগুলো তোমার দরকার হবে !

গুনে দেখলাম মোট চারটা চাবি ! আমি চাবির গোছা নিয়ে দরজা দিয়ে পা বাড়ালাম । দরজা খুললাম প্রথম চাবিটা দিয়ে । তারপর শেষ বারের মত ইশানার বাবার দিকে তাকিয়ে গেট টা বন্ধ করে দিলাম ভেতর থেকে !

প্রথম পাটা রাখতেই আমার কেন জানি মনে হল কিছু একটা এসে আমার মাথায় ধাক্কা মারলো ! ঝিমঝিম করে উঠলো সাথে সাথেই । আমার কেবল মনে হল কেউ কিংবা কিছু একটা আমার মাথায় ঢুকার চেষ্টা করছে । মাথাটা ঘুরে উঠে সাথে সাথে । মনেহল যে ইশানার বাবার কথাটা শোনা দরকার ছিল হয়তো । পেছন ফিরে ঘুরতে ঘুরতেই আমি মাথা ঘুরে পরে গেলাম । চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এল । আমি মাটিতে পরার আগেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম !

-----


চারিদিকটা অপরিচিত মনে হচ্ছে আমার কাছে । আমার চোখ খুলেছে অনেকক্ষন আগে । নিজেকে অন্য একটা জগতে আবিস্কার করছি তখন থেকেই । আমার যতদুর মনে পরে আমি ইশানাদের বাগান বাড়ির গেটের সামনে পড়ে গিয়েছিলাম মাথা ঘুরে । নিচে ঘাস ছিল । আর নরম মাটি । চারিপাশে ছিল অনেক সবুজ গাছগাছালি কিন্তু এখন যেখানে আছি সেখানে কোন সবুজ ঘাস নেই । এমন কি আমি কোন মাটিও অনুভব করতে পারছি না । চারিদিকে কোন সবুজের নাম গন্ধ নেই । তার বদলে কেবল ধুসর রং ছড়িয়ে আছে । কোন গাছ পালা নেই, কিচ্ছু না । বড় বড় পাথরের মত কিছু রয়েছে । তবে সেগুলো শক্ত কিছু না, নরম জেলির মত । আমার পায়ের নিচেও ঠিক তেমনই অবস্থা । সব কিছুই কেমন নরম । হাটলেই ডেবে যাচ্ছে । তবে একেবারে ডুবেও যাচ্ছে না !

কতটা সময় আমি এখানে আছি তার কোন ধারনা নেই । আমি কিভাবে এখানে এলাম সেটাও ঠিক মত জানি না । কিভাবে ফিরে যাবো তারও কোন ধারনা নাই । আরও কয়েক মুহুর্ত পরেই আমার চারিপাশের মাটি কাঁপতে লাগলো । কেবল মনে যেন কেউ অথবা খুব ভারি কিছু এদিকে এগিয়ে আসছে । আমি শব্দ লক্ষ্য করে তাকিয়ে রইলাম । যেই আসুক সে আসছে বেশ দ্রুত এবং আমার দিকেই ।

আর মাত্র কয়েক মুহুর্ত, তার পরেই আমি তাকে দেখতে পেলাম ! সোজা আমার দিকে এগিয়ে আসছে । কোন ভাবেই এটাকে মানুষ বলা কিংবা এর ধারে কাছেও বলা যাবে না ! প্রাণীটার দুইটা মাথা । একটা অস্বাভাবিক ভাবে বড় অন্যটা একেবারে শুকিয়ে গেছে এমন মনে হচ্ছে । ঘাড়ের কাছে দুইটা পাশাপাশি রয়েছে । হালকা মাথাটা থেকে লম্বা চুল তবে ভারি মাথা থেকেও লম্বা কিছু ঝুলে রয়েছে তবে সেটা আর যাই হোক সেটাকে চুলের সাথে তুলনা করা যাবে না । প্রাণীটা হাটছে চার পায়ে হাতের দিক দিয়ে অবশ্য দুইটা হাতই রয়েছে । সারা শরীর টা মানুষের শরীরের মত মসৃণ ।

দ্রুত আমার দিকে এগিয়ে আসছে । এই নরম জেলির মত মাটিতে তার দৌড়াতে খুব একটা কষ্ট হচ্ছে না ! আমার এখন এখান থেকে পালানো দরকার । যদিও আমি খুব ভাল করেই বুঝতে পারছি যে এই দুই মাথাওয়ালা প্রাণীটা আমাকে খুব জলদিই ধরে ফেলবে তবুও কেন জানি মনে হল এখানে এভাবে দাড়িয়ে থাকাটা মোটেই বুদ্ধিমানের কোন কাজ হবে না ।

আমি যখনই দৌড়াতে শুরু করবো ঠিক তখনই আমার চোখ গেল প্রানীটার পাতলা মাথাটার উপর । জীবনে এর থেকে অবাক আর আমি কোন দিন হয়েছি কিনা জানি না তবে এতোটাই অবাক হলাম যে আমি আমি এক পাও নড়তে পারলমা না । পাতলা মাথাটা আর কারো নয়, ওটা ইশানার ! প্রতিটি ঝাকির সাথে সাথে দোল খাচ্ছে !

প্রাণীটা যখন একদম আমার সামনে, আমার উপর ঝাপিয়ে পরার জন্য একদম তৈরি তখনই আমি ইশানার নাম ধরে জোরে ডাক দিলাম । হালকা মাথাটা সোজা হয়ে গেল মুহুর্তেই । সোজা আমার দিকে তাকালো । চিরোচেনা সেই দৃষ্টি আমার চিনতে মোটেই কষ্ট হল না ! প্রাণীটাও থেমে গেল সাথে সাথেই । কিছু একটা চলছে যেন ! পুরো শরীরের একটা কাঁপন দেখতে পাচ্ছি !
কয়েক মুহুর্ত কেটে গেলে নিশ্চুপ ভাবেই !
তারপরই একটা আজব ঘটনা ঘটতে লাগলো ! সেই প্রানীটার দেহ আগের থেকে আরও জোরে কাঁপতে লাগলো । আরও একটু ভাল করে তাকাতেই আমি বুঝতে পারলাম যে ইশানর মাথাটা এখন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে । এবং সেটা সেই প্রাণী থেকে আলাদা হওয়ার চেষ্টা করছে । এতোক্ষন যে প্রাণীটা আমাকে হামলা করার চেষ্টা করছিলো এখন চাইছে যেন ইশানা ওর দেহ থেকে আলাদা না হতে পারে ।

হোয়াট ইজ গোয়িং অন ?

আমি নিজের চোখের সামনেই দেখলাম ইশানা ওটার থেকে আলাদা হয়ে গেল ! একেবারে সম্পূর্ন আলাদা হয়েই আমার সামনে এসে দাড়ালো ! তারপর খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমার সামনে এসে ইশানা বলল
-তুমি ?
আমিও তখনও ঠিক মেনে নিতে পারছি না ! একটু আগে আমার সামনে যা হয়ে গেল ! জীব বিজ্ঞানে কোষ বিভাজন যেভাবে হয় ঠিক সেভাবেই যেন ইশানা ঐ প্রাণীটা থেকে আলাদা হয়ে গেল !

ইশানা আবার বলল
-তুমি এখানে কেন ?
আমি বললাম
-তুমি এখানে কেন ?


-অপু তোমার এখানে আসা মোটেই ঠিক হয় নি । তুমি এখনই চলে যাও ! আমি আজুলাকে আটকে রাখছি । তুমি এখনই এখন থেকে চলে যাবে । গেটের বাইরে চলে যাবে ! ঠিক আছে ? আমি যতটা সময় ওর কাছ থেকে আলাদা ততক্ষন ও তোমার কিছু করতে পারবে না
-আজুলা ? আজুলাটা কে শুনি ? এর আগেও আমি তোমার মুখে ওর নাম শুনেছি !

এই কথা বলতেই সেই প্রানীটা হঠাৎ করেই বিকৎ শব্দে চিৎকার করে উঠলো । আমার বুঝতে অসুবিধা হল না যে আজুলাটা কে ?
-যাও !!
ইশানার আবার বলল !
-না আমি তোমাকে রেখে যাবো না !
-তুমি বুঝতে পারছো না ! দেখো যখন ফুল-মুন হয় তখন আজুলা অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে, ফুল-মুন যতটা কাছে আসে ততটা শক্তি শালী হতে থাকে । আমি তখন ওকে নিয়ন্ত্রন করতে পারি না ! ও এই সময় টা পুরোটাই আমাকে নিয়টন্ত্রন করে !
-তাই ? তাহলে তুমি কিভাবে আলাদা হয়ে গেলে ? কিভাবে ? আজকেই না ফুল মুন ?

আমার কথা শুনে ঈশানা নিজেও খানিকটা থমকে গেল ! কয়েক মুহুর্ত ভাবলো কি যেন ! তারপর বলল
-তাই তো ! আগে এমন কোন দিন হয় নাই । ফুল-মুনের আগের দিন রাত থেকে পরের দিন পর্যন্ত এমনটা কোন হয় নি । আমি কোন দিন এই আজুলার কাছ থেকে আলাদা কারতে পারি নি । কিভাবে করলাম ?

তারপর আবারও কিছুটা সময় চুপ করে রইলো ! একটু পরেই তার মুখ টা উজ্জাল হয়ে উঠলো !
-ইটস ইউ !
-আমি !
-ইয়েস ! মনে আছে আমি বলেছিলাম তুমি আসে পাশে পাসে থাকলে আমি সব কিছুর উপর নিয়ন্ত্রন পাই ! আরও একটু বেশি করে !
-হুম ! মনে আছে !
-তার মানে আজুলা যখন না বুঝে তোমার সংস্পর্শে এসেছে, সে না বুঝেই তোমাকে আমার নিজের সংস্পর্শে নিয়ে এসেছে ! এই জন্যই ! ফুল-মুন যেমন ওকে আমার থেকে শক্তিশালী করে তেমনি তুমি আমাকে শক্তি শালী কর ! ব্যাপারটা এরকমই

আচ্ছা এই আজুলা টা কে ? কিভাবেই তোমার ভেতরে এল !

ইশানা কি যেন ভাবলো ! ঐ দিকে তাকিয়ে দেখি সেই প্রানীটা কোথাও নেই ! আমরা যখন কথা বলছিলাম তখন অন্য কোথাও চলে গেছে !
আমি এদিক ওদিক তাকাচ্ছি দেখে ইশানা বলল
-ভয় নেই । ও কাছে আসবে না ! এটলিস্ট যতক্ষন না আবার আকাশে চাঁদ উঠছে । কিন্তু ও আসে পাশেই আছে !
-কোথায় ? আর এই জায়গাটা কোথায় ?
-এটা ?
এই বলে ইশানা হাসলো ! তারপর বলল
-এটা তোমার মাথার ভেতরে !
-মানে ?
-মানে আমি তুমি আর আজুলা তোমার মাথার ভেতরে বসে আছে । এতো দিন আমি চাইলেও তোমার মাথার ভেতরে প্রবেশ করতে পারি নি কিন্তু আজুলা পেরেছে কোন ভাবে । সেই সাথে আমাকে নিয়েও ঢুকেছে । যেহেতু ও আমারই একটা অংশ !
আমি খুব বেশি কিছু বুঝতে পারছি না ইশানার কথা তাই চুপ করেই তাকিয়ে রইলাম ! আমি আমার মাথার ভেতরে আছি এই কথাটাও আমি ঠিক মত হজম করতে পারছি না !
-তুমি ভেব না যে এসব কিছু তোমার মাথার ভেতরে আছে আসলে ও তোমাকে ঠিক যে রকম ভাবে দেখাচ্ছে সেটা তুমি সেভাবেই দেখছো ! দাড়াও তোমাকে দেখাই ! বলেই ইশান হাতের তুড়ি বাজানোর মত দুই আঙ্গুল এক সাথে করে শব্দ করলো ! সাথে সাথেই আশে পাশের সব কিছু বদলে গেল মুহুর্তেই । ধুসর সেই পরিবেশের বদল চারিপাশে এখন সবুজের সমরহ ! আমরা দুজন বসে আছি সবুজ কোন মাঠে । চারিদিকে গাছ গাছাগালিতে ভর্তি !
-সি !

আমি তখনও আসে পাশে তাকাচ্ছি কেবল অবাক হয়ে । এখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না ! ইশানা বলল
-শোন, অনেক হয়েছে । এবার তুমি চলে যাও ! সোজা চলে যাবে ! ঠিক আছে । আমাদের কাল দেখা হবে আবার !
-তুমি কিন্তু বললে না কিভাবে ওটা তোমার কাছে এল ! কিভাবে এসব তুমি কর !
-আসলে বলার মত কিছু নেই । আমার মা একজন উইচ ছিলেন । আমার বয়স যখন আট বছর তখন আমার খুব কঠিন একটা রোগ হয় ! সহজ ভাষা যেটাকে ব্রেন টিউমার বলে । ডাক্তারেরা যখন বললেন আর কিছু করা সম্ভব না তখনই মা তার ডাইনি বিদ্যা কাজে লাগালেন ! ডাইনিদের দেবী আজুলা আশ্বাস দিল যে আমাকে ঠিক করে দিবে তবে শর্ত দিল যে তার কিছু অংশকে আমার ভেতরে থাকতে দিতে হবে । এই ডায়নীরা হোস্ট বডি নিয়ে একজনের দেহে বছরের পর বছর বেঁচে থাকে এবং এরপরে যদি কোন দিন মা চেষ্টা করেন আজুলাকে আমার থেকে আলাদা করতে তাহলে আমি মারা যাবো ! সব কিছু ঠিকই চলছিল কিন্তু ঐ ফুল-মুনের সময়ই কেবল ঝামে বেঁধে যেত । কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেটাও দুর হয়ে যাবে !
ইশানা কিছু সময় চুপ করে রইলো ! তারপর বলল
-এখন তোমার যাওয়া দরকার ! চাঁদ উঠে গেলে আজুলা পূর্ণ শক্তিতে ফিরে আসবে । আমাকে টেনে নিবে ওর ভেতরে । তখন আমি না চাইলেও অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে ! তাই তোমার এখন যাওয়া দরকার ! পরশুদিন তোমার সাথে দেখা হবে ! তখন আমরা এটা নিয়ে কথা বলবো ! ওকে ? যাও ......
এইবলে ইশানা আমার মাথায় হাত রাখলো !

ঠিক সেই সময় আমি জেগে উঠলাম ! তাকিয়ে দেখি আমি ঠিক যেখানে অজ্ঞান হয়ে পরে ছিলাম ঠিক সেই খানেই পরে আছি । মাথাটা এখনও খানিকটা ঝিমঝিম করছে । আসে পাশে তাকিয়ে দেখি ততক্ষনে অন্ধকার হয়ে এসেছে । অবাক না হয়ে পারলাম না । আমি সেই সকাল বেলা এই গেট দিয়ে ঢুকেছি । পুরোটা সময় আমি এখানে পরে ছিলাম । পুরোটা সময় অজ্ঞান ছিলাম ।
ইশানার বাবা কোথায় ?
উনি কি আছেন ?
ইশানা কোথায় ?

ইশানার কথা আমার তখনই মনে পড়লো । ইশানা বলে ছিল আমাকে গেটের বাইরে চলে যেতে ।

আমার এখনই গেট দিয়ে বের হওয়া উচিৎ ! এখনই ! আমি উঠে গেট দিকে যাবো ঠিক তখনই পেছন ফিরে তাকালাম । একটু দুরেই বাগান বাড়িটা দাড়িয়ে আছে । এর নিচেও কোথাও ইশানা আছে । যদিও জানি আমি ভুল করতে যাচ্ছি তবুও আমার কেবলই মনে হচ্ছে আমার অবশয়ই ইশানার কাছেই যাওয়া দরকার । আমি আবারও ঘুরে দাড়ালাম । সোজা পা বাড়ালাম বাড়িটার দিকে । গত পরশুদিনের সময় নেই ! আজকেই যা হওয়ার হবে !
আমার কেবল মন বলছে যে আমি যদি ইশানার হাত ধরি ওকে জড়িয়ে ধরি ও ঠিক ঠিক ঐ ডাইনিটাকে ঠিক ঠিক কাবু করতে পারবে ! পারবেই !

সন্ধ্যা হয়ে এসেছে । চারিদিকে অন্ধকার হয়ে আসছে । গ্রামে এই সময়টা প্রচুর ঝিঝি পোকা আর বিভিন্ন পাখির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় ! কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার কোন পশু পাখি ডাকছে না । চারিদিকে এতো গাছ গাছালী রয়েছে তবুও না । কেবলই মনে হচ্ছে এখানে একটা জন প্রানীও নেই । পুরো এলাকাতে আমি একদম একা ।

-চলে যাও !

ইশানার আওয়াজ ! আসে পাশে তাকিয়ে খোজার চেষ্টা করলাম । নাহ ! বাইরে না । সে আমার মাথার ভেতরে !
নিজের মনের কাছেই বললাম
-না ! আমি যাবো না ! তোমাকে না নিয়ে যাবো না !
আবারও সেই আওয়াজ শুনতে পেলাম ।
-প্লিজ চলে যাও ! চাঁদের আলো যত বাড়তে থাকতে ওর ক্ষমতা তত বাড়তে থাকবে । প্লিজ চলে যাও !
-না ! আমি যাবো না ! তোমাকে একা রেখে তো যাবোই না !


আমি আরও কয়েক ধাপ এগুতেই আমার মাথাটা আবারও ঝিম ঝিম করে উঠলো । আগের বার আমি ঠিক প্রস্তুত ছিলাম কিন্তু এবার আমি ঠিক ঠিক তৈরি আছি । এবার কিছু হবে না ! আর ইশানা নিজেও আছে ।

এখনও ঠিক মত চাঁদ উঠে নাই । তবে উঠবে উঠবে করছে । তখনই আজুলা আর হয়তো ইশানাকে ভয় পাওয়ার কারন থাকবে না ! তার আগেই আমার ইশানার কাছে যাওয়া দরকার !

আর জোরে পা বাড়ালাম ! বাগান বাড়িটার সদর দরজাতেও একটা বিশাল তালা ঝুলছে । এতো তালা মারার কি কোন দরকার আছে । এমনিতেও এখানে কেউ আসতে পারবে না ! তখনই মনে হল এই তালা বাইরের কাউকে ভেতরে আসা থেকে আটকানোর জন্য নয় বরং ভেতরে যে আছে সে যেন বাইরে না আসতে পারে সেই জন্য !
তালা খুলতে গিয়ে এবার আমাকে একটু ভাবতে হল । যদি আমি আর ইশানা সত্যি সত্যি আজুলাকে আটকাতে না পারি আর আজুলা যদি কোন ভাবেই এই বাসার বাইরে চলে যায় তাহলে ?
না এটা করা যাবে না !

আমি ভেতরে ঢুকে আবারও দরজাটা আটকে দিলাম ! তারপর সেই তালার চাবিটা দরজার নিচ দিয়ে বের করে দিলাম ! আজুলালা মানে ইশানা আর এই দরজা দিয়ে বের হতে পারবে না ! আমিও পারবো না ! ওর সাথে সাথে আমি নিজেও আটকা পড়েছি এখন ! চাবিটা ছুড়ে দেওয়ার পরেই মনে হল একটা ভুল করে ফেলেছি ! বাইরের গেট তো আমি বন্ধ করে চাবি সাথে করে নিয়ে এসেছি কিন্তু এই যে সদর দরজা বন্ধ করে দিলাম এখন আমি বের হব কিভাবে ? না ইশানার আব্বার ঐ দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে পারবা না আমি এই দরজা দিয়ে বেরিয়ে ঐ দরজা খুলতে পারবো !
যাক যা হওয়ার হয়েগেছে এখন এসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নাই । আমি সামনে এগুতে লাগলাম ! এখন আর পেছনে ফেরার কোন উপায় নেই ! আমাকে সামনে যেতেই হবে !

আরও কাছে যেতেই আমি অনুভব করলাম আমার মাথার চাপ বাড়ছে । যদিও আমি জ্ঞান হারিয়ে পরছি না তবে কেবলই মনে হচ্ছে যেন আমার চারিপাশে হাজারও মৌমাছি ঘোড়াফেরা করছে । সেগুলো থেকে ভনভন আওয়াজ আসছে । ইশানার বাবা বলেছিল যে বাধরুমের পাশেই আছে বেজমেন্টে যাওয়ার দরজাটা । আই মিন নিচের কয়েদখানার যাওয়ার দরজাটা । দুটি দরজা পাশাপাশি । খুজে পেতে খুব বেশি কষ্ট হল না আমার । তিন নাম্বার চাবিটা তালায় ঢুকালাম । আমাকে আরেকটা তালা খুলতে হবে । ইশানার বাবা বলেছিল বেজমেন্টের ভেতরেও একটা লোহার শিক দেওয়ার হাজতের মত আছে । ইশানা নিজেকে সেখানেই আটকে রাখে । যাতে করে সেখান থেকে কিছুতেই বের না হতে পারে ! আমি চাবি মোচড় দিলাম ! দরজাটা খুলতেই এবার সত্যি সত্যি আমি যেন আরেকটা ধাক্কা খেলাম । এতোক্ষনের মৌমাছির আওয়াজের সাথে আরো কত রকমের আওয়াজ যে এসে যুক্ত হয়েছে আমি সেটা বলে বোঝাতে পারবো না । আমি কিছুটা সময় কানে হাত দিয়ে আওয়াজ বন্ধ করার চেষ্টা করলাম কিন্তু তাতে কোন লাভ হল না । আওয়াজটা আমার মাথার ভেতর থেকে আসছে । কানে হাত দিয়ে লাভ নেই । প্রথম পা দিতেই আমার পুরো শরীর নড়ে উঠলো । আমি ব্যালেন্স হারিয়ে সিড়ি বেয়ে পড়ে যেতে লাগলাম ! সিড়ির একেবারে নিচের নামার আগেই আমি ২য় বারের মত জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম ।



---

কয়েক মিনিট অজ্ঞান ছিলাম সম্ভবত ঠিক তার পরেই আমার জ্ঞান ফিরে পেলাম ! চোখ মেলার সাথে সাথেই সেই মাথার ভেতরের ভনভন আওয়াজ টা আবার ফিরে এল । সেই সাথে প্রচন্ড ব্যাথা । নিশ্চয়ই পড়ে যাওয়ার সময় ব্যাথাটা পেয়েছি । কোন রকম চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি আমার থেকে ফুট দশেক দুরে একটা লোহার খাঁচার ভেতরে ইশানা রয়েছে !

আমার চোখের দৃষ্টি ঝপসা হয়ে এল ব্যাথার কারনে ! চোখের সমনেই ইশানাকে দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে ! চোখে বিষন্ন দৃষ্টি !
-অপু !

আমি চোখ তুলে তাকানোর চেষ্টা করলাম । আমার মাথার ওজনটা মনে হচ্ছে আরও শত গুন বেড়ে গেছে । ইশানা বলেছিল ফুল মুনের সময় আজুলাকে আটকানো ওর পক্ষেও সম্ভব নয় ! আই গেস এখন ফুল মুন চলছে !
অ্যাম আই গোয়িং টু ডাই ? অথবা পাগল হয়ে যাচ্ছি ?

-লিভ হিম এলোন ! লিভ হিম !

ইশানার চিৎকার শুনতে পেলাম আবারও । সেই সাথে লোহার শিক ঝাকানোর আওয়াজ ! আরও কয়েকটা মুহুর্ত ! প্রতিটা মুহুর্ত আমার মাথার উপর চাপ যেন বাড়তেই লাগলো ! আমার মনে হল যে আর কয়েকটা মুহুর্ত এখানে থাকলে আমার মাথার ভেতরে হয়তো কিছু একটা ব্লাস্ট হবে ! আমি মারা যাচ্ছি ! আমি মারা যাচ্ছি .......

হঠাৎ করেই আমার মাথার সমস্ত চাপ মুহুর্তেই কেটে গেল ।
কি হল আমি ঠিক মত বুঝতেই পারলাম না !

যখন চোখ তুলে ইশানার খাঁচার দিকে তাকিয়েছি, দেখি ইশানা মাটিতে পড়ে আছে । ওর হাত দুটো পেটের কাছে ধরা ! সেখান থেকে রক্ত বেরুচ্ছে ! আমার বুঝতে মোটেই কষ্ট হল না ইশানা কি করেছে ! আমাকে বাঁচানোর জন্য ইশানা নিজেকে আঘাত করেছে । ও না থাকলে আজুলাও থাকবে না !


ও মাই গড !
দিস ইজ নট হ্যাপেনিং !!


আমার আসলেই এখানে আসা উচিৎ হয় নি ।

আমি উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করলাম ! তীব্র একটা ব্যাথা অনুভব করলাম । আমলে দিলাম ব্যাথাটা ! দৌড়ে গেলাম ওর লোহার খাঁচার কাছে । চাবি দিয়ে দরজা খুলে ওকে ধরে বিছানায় শোয়ালাম ! একটা আস্ত চাকু ও ওর পেটের ভেতরে ঢুকিয়ে ছিয়েছে । এখানে চাকু কিভাবে এল কে জানে ! নিশ্চয়ই ও সাথে করে নিয়ে এসেছে । এখন কি করবো ?
আগে রক্ত বন্ধ করতে হবে !
কি দিয়ে ? কি দিয়ে আটকাবো রক্ত !
ওড়না !
এই তো পেয়েছি !
ওর ওড়না দিয়ে শক্ত করে ওর পেতের কাছটা বাঁধলাম ! তারপর ওকে কোলে করে তুলে নিয়ে চললোম উপরে । আমার যতদুর মনে হচ্ছে যে ইশানার বাবা নয়তো ওদের ড্রাইভার ঐখানেই আছে । গেটের বাইরে ! ঐ পর্যন্ত যেতে পারলেই হয়তো কিছু একটা হবে ! ওকে বাঁচানো যাবে !

যখনই বাংলোর সদর দরজার কাছে এলাম তখনই আসলে সমস্যা কথা মনে হল ! চাবি তো আমার কাছে নেই !
এখন ?

-অপু !
ইশানা তখনও চোখ বন্ধ করেই আছে !
-বল !
-আই লাভ ইউ !
-ইয়েস আই নো !
-আমার মনে হচ্ছে আমি মারা যাচ্ছি !
-না ! কোন ভাবেই না ! কোন ভাবেই তুমি মারা যাচ্ছো না ! আমি তোমাকে মারা যেতে দিবো না !
-আমি তোমাকে বলেছিলাম আমার আমি কোন দিন তোমার ক্ষতি করতে পারবো না !
-চুপ থাকো ! চুপ করে থাকো আমি আছি না তোমার পাশে !


কোথা থেকে আমি এতো শক্তি পেলাম ঠিক জানি না তবে কেবলই মনে হল এসবের জন্য আমি দায়ী ! আজকে যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাহলে সেটা কেবল মাত্র আমার দোষ ! আর কারো নয় ! ইশানাকে নিচে নামিয়ে রেখে আসে পাশে তাকালাম ! এই তো ! বড় টেবিলটা দেখা যাচ্ছে ! তুলতে পারবো তো ?
পারবো ? পারতে হবে !!

শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে টেবিলটা তুলে গায়ের যত শক্তি দিয়ে সদর দরজায় বাড়ি মারলাম !

কিছুই হল না !
নো ! এমন হতে পারে না !
আবার !
আবার !

-অপু !
-হুম !
-দেয়ার ইজ এ নাদার ওয়ে আউট !
-রিয়্যালী !
-হুম !
-কোন দিকে !
-কিচেনের পেছনে !


দেখছো ! এই জিনিস টা আমার মনেই আসে নাই । আসলেই তো আরেকটা দরজা থাকতে পারে ! আমি আবারও ওকে কোলে নিয়ে কিচেনের দিকে দৌড় দিলাম !
আরও অল্প কয়েকটা সময় ! প্লিজ আমার সাথে থাকো ! আর কয়েকটা মুহুর্ত !! আমি দৌড়াতেই লাগলাম ১





পরিশিষ্টঃ


আজকে পূর্নিমা ! চাঁদটা একেবারে মাথার উপরে রয়েছে । এই রাতের বেলাও যেন দিনের মত আলো রয়েছে । আমি চাঁদের দিকে মুখ করে শুয়ে আছি । চাঁদের আলোতে বাইরে মাধুর পেতে শুয়ে থাকতে মজাই লাগে !
ইশানা ঠিক আমার পাশে শুয়ে আছে । অনেক টা আমার বুকের এক পাশে মাথা রেখে ! আমার হাতে ধরা ! দুজন মিলে এই জোছনা দেখাটা এখন একটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছে ! আরও একটা অবশ্য কারন আছে । এই দিন দিনে ওকে আর একা রাখতে হয় না ! আমার সাথে থাকলে ও অনেক টাই স্টেবল থাকে । বিশেষ করে আমার হাত কিংবা আমার সং স্পর্শে থাকলে ।
অবশ্য এইটার খুব একটা যে দরকার হয় সেটাও না ! ঐদিনের পর আজুলা আর কোন দিন আমাকে আক্রমন করার সাহস করে নি । আর কাউকে না চিনুক আমাকে বেশ ভাল করেই চিনে নিয়েছে । আমাকে ঐভাবে ঐদিন আক্রম করার ফলে ইশানা যেভাবে নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল তাতে করে যাউলা নিজেও মারা যেত . ইশানা যদি না বেঁচে থাকে তাহলে ওরও একক ভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব না !

আরও সেই সাথে আমি থাকলে ওর নিজের উপর যাউলার উপর নিয়ন্ত্রনটা আরও ভাল করেই আসে ! তাই এই দিন গুলো আমরা এক সাথেই থাকি ! ইশানার বাবাও এতে আপত্তি করে না । যখন দেখছে ওনার মেয়েকে আর একা একা থাকতে হচ্ছে না !

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

প্রামানিক বলেছেন: ভাই অনেক বড় লেখা। হাজিরা দিয়ে গেলাম পরে পড়বো।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫০

অপু তানভীর বলেছেন: পড়তে থাকেন । তিন দিন ধইরা লিখছি বড় তো হইবেই :D

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: গল্পের থিমটা বেশ ভাল ছিল। লেখাটাও ভাল ভাবে এগুচ্ছিল। তবে শেষের পরিশিষ্টের আগের জায়গাটুকু ভাল ছিল।

তবে, বেশ ভুল ছিল গল্পটায়। মাইন্ড কন্ট্রোলিং করার সময় মনে হয় না, মাইন্ড কন্ট্রোলকারী ব্যক্তি অন্য কোন কথার জবাব দিতে পারে বা শুনতে পারে।
যতি চিহ্নের ব্যবহারটা ভালো ছিল না। দাঁড়ির জায়গায় আশ্চর্যবোধক চিহ্ণ, আশ্চর্যবোধক চিহ্নের জায়গায় প্রশ্নবোধক চিহ্ন, বেশ কিছু জায়গায় অযথাই প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল।

গল্পের সংলাপগুলোতে ইংরেজী ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী করার জন্য - কিন্তু এর জন্যই সবচেয়ে বেশি দুর্বল লাগলো সংলাপ বলার ধরণটা। বাংলার চেয়ে ভালো ভাষায় বাংলা গল্পে সংলাপ শক্তিশালী মনে হয় না করা যাবে। দরকার লাগলে ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করাই যায়। পুরো গল্পেই এইটা মানা যায় না। কেমন যেন - অনুবাদ ছাপ লাগলো। যদিও এটা মৌলিক।

এছাড়া বাক্যগুলোতেও হালকা ত্রুটি চোখে পড়লো।
যেমনঃ
কেউ আমার সাথে কথা না বলতে চাইলে তাকে জোর করার মত কোন মানে নেই, তাই না ? - এইটা মনে হয় কেউ আমার সাথে কথা না বলতে চাইলে তাকে জোর করার তো কোন মানে নেই, তাই না ? হবে।
যদিও ইশানা জানে আমি কোথায় থাকে । আমার সাথেই ও গাড়িতে উঠেছি । আমার যতদুর মনে পড়ে ইশানাও ড্রাইভার কখনও বলেনি মোহাম্মাদপুরের দিকে আসতে । - এটা হবে যদিও ইশানা জানে আমি কোথায় থাকি । আমার যতদুর মনে পড়ে ইশানাও কখনও ড্রাইভারকে বলেনি মোহাম্মাদপুরের দিকে আসতে ।
এই দেওয়াল পার হলেও আমিও এফেক্টেড হয়ে যাবো ! - এই দেয়াল পার হলে আমিও এফেক্টেড হয়ে যাবো।

এরকম আরো বেশ কয়েকটা বাক্যই ছিল।

ভাল ছিল গল্পটা। তবে এই ভুলগুলো না থাকলে পড়তে আনন্দ পেতাম একটু বেশি। তবুও লেখা টানার দক্ষতা মারাত্নক আপনার। + :)

[মন্তব্যে কিছু মনে করলে অতীব দুঃখিত]

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: আমার গল্পে বানান ভুল থাকে সব সময়ই আর (!) চিহ্নটা আমি আমি অনেক বেশি বেশি দেই । এটা অনেক টা আমার দাড়ি চিহ্নের মত !

ভুল গুলো ঠিক করে নিচ্ছি ! ধন্যবাদ :):)

দুঃখিত হওয়ার কিছু নেই :):)

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৯

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: বিশাল লেখা ।

অনেকক্ষন লাগলো পড়তে । তবে লেখা অনেক ভালো হইছে । অল্প কিছু ক্যারেক্টার নিয়ে ভালো শুরু করেছেন ।

আপনার অন্য লেখার তুলনায় এই লেখা বেশি ভালো হয়েছে ।

শুভেচ্ছা লেখক

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭

পুলক ঢালী বলেছেন: অনেকদিন পর আবার আপনার গল্প পড়লাম । থ্রিলার আমার পছন্দ। আপনার চটুল প্রেমের গল্পের তুলনায় এই গল্পটা ব্যতিক্রম । ভাল লাগলো, তবে বাক্য বিন্যাস আর বানানে মনযোগ দরকার । ভালই লিখেছেন তবে শেষের দিকে অতৃপ্তি রয়ে গেল । মনে হচ্ছে শেষ হয়েও শেষ হলনা ।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

অপু তানভীর বলেছেন: বানানে আমার সমস্যা আজীবন :D

৫| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫১

কেউ নেই বলে নয় বলেছেন: দীর্ঘ্য কিন্তু পড়তে ক্লান্তি লাগেনাই। ভালোই। ++

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৫

অপু তানভীর বলেছেন: :)
ধন্যবাদ :)

৬| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৭

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ৩১টা গেল কৈ?? সব মাসতো ৩০ দিনে না।।
একটা প্রচলিত কথা,ভালবাসার শক্তি অনেক অসাধ্যকে সাধন করতে পারে।।
পড়ে গেলাম একটানা।। ছোট করলে এত কিছু বর্ননায় আসতো না।। বাকিটা শুয়ে শুয়ে ভাববো।। যতক্ষন না নিদ্রাদেবী কোলে টেনে নেন।।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: ভাবতে থাকুন !

৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১৬

উল্টা দূরবীন বলেছেন: বিশাল গল্প ভালো লেগেছে। তবে শেষের দিকে মনপুত হইলো না। চালিয়ে যান। ধন্যবাদ এবং আমার ব্লগে আমন্ত্রণ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:২৪

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

৮| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৯

রায়হান চৌঃ বলেছেন: ধুর মিঞ... আপনি একটা পুরো আউলা ঝাউলা.............. মাথাটা এখনো ভন ভন করতে ছে :)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১১

অপু তানভীর বলেছেন: হেহেহেহে !! :D

৯| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১

আমার কোনো নাম নাই বলেছেন: 1. The politically correct term of "মাইন্ড কন্ট্রোলার" is TELEPATH.

2. প্রাণীটার নাম কি "যাউলা" নাকি "আজুলা"? দুই নামই ব্যবহার করেছেন।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: টেলিপ্যাথ দিয়ে তো কেবল এক জনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রন করা কি সম্ভব ?
প্রানীটার নাম প্রথমে যাউলা দিয়েছিলাম । পরে এডিট করে আজুলা করেছি । একটা এডিট করতে মনে হয় ভুল হয়ে ছিল । ঠিক করে নিয়েছি :)

ধন্যবাদ :)

১০| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
অর্ধেকের মতো পড়ে আর ইন্টারেস্ট পাইলাম না সামনে আগানোর ||

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩

অপু তানভীর বলেছেন: ভালু

১১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫২

রাকিব সরদার বলেছেন: অনেক্ষণ লাগল পড়তে ।আর সত্যিই অসাধারণ ! :-)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

১২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আ----জু------লা =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~


আপনার অতিপ্রাকৃত গল্পগুলো দারুন দারুন!!!

আমার মাঝে কোন আজুলা আছে নাকি কে জানে :P তাই বেশি বেশি ভাল লাগে :-/ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

+++++++++++++++

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩২

অপু তানভীর বলেছেন: আমিও ভাবতেছি যে প্রেম পিরিতির গল্প লেখা বাদ দিয়ে এখন থেকে কেবল ভুত আর অতিপ্রাকৃত গল্প লিখবো !

১৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৪

সুলতানা রহমান বলেছেন: লম্বা, কিন্তু পড়তে ভাল লেগেছে। অতিপ্রাকৃত গল্প ভালো লাগে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪০

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

১৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৭

কল্লোল পথিক বলেছেন: গল্পটা অনেক বড় কিন্তু চমৎকার।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

১৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫১

ক্রাশখোর বলেছেন: পুরোটা পড়লাম....
সত্যিই অসাধারন হয়েছে

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :):)

১৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৬

আমার কোনো নাম নাই বলেছেন: জ্বী, নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ইভেন X-Men সিরিজের মুভিগুলোতে Charles Xavier কে Telepath হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। He can CONTROL MINDS along with transferring informations.

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৯

অপু তানভীর বলেছেন: Telepathy is the purported transmission of information from one person to another without using any of our known sensory channels or physical interaction.

মুভির রেফারেন্স কি কার্যকর ? মুভিতে যা ইচ্ছে তাই দেখাতে পারে !

১৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: অসাধারন লাগছে অপু ভাই।একটানা পইড়া ফেল্লাম।তাছাড়া,আপনার প্রতিটি গল্পই অসাধারন টু দি পাওয়ার অসীম। আমার মাঝে মাঝে ঈশানার মতো মাইন্ড কন্ট্রোলার হইতে মুন্চায়।ক্যামনে হওয়া যাবে,বলতে পারবেন কি?

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২০

অপু তানভীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :):)

এই জিনিস আমার জানা সম্ভব না ! :D

১৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৫

আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্পটা ভালই, তবে থিমটা "শাবকী দেবী"র সাথে অনেকটাই মিলে যায়। সব মিলিয়ে খারাপ না।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২০

অপু তানভীর বলেছেন: :):):)

১৯| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৫

আমি মাধবীলতা বলেছেন: দারুণ তো ! একটু বড়...তবে পড়তে গিয়ে বড় মনেই হয়নি :)

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য :):)

২০| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৫:০৮

শান্তির দেবদূত বলেছেন: বেশ ভালো লেগেছে। মনে হলো মুভি দেখলাম বর্ননাগুলো এতোই জীবন্ত ছিল। কি নেই এই গল্পে, সাই-ফাই, ডাইনী, মাইন্ড কন্ট্রোলিং, প্রেম, আজুলা :) , সব মিলিয়ে উপভোগ্য। শুভেচ্ছা।

এবারের বই মেলায় বই বের করার প্ল্যান আছে না কী?

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৬

অপু তানভীর বলেছেন: আরে কি যে বলেন না । কোন বইটই বের করবো না । তবে জীবনে একটা বই বের করার ইচ্ছে আছে । তাও অনেক পড়ে !!

আপনার নতুন গল্পের খবর কি !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.