নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.oputanvir.com

অপু তানভীর

আমার চোখে ঠোঁটে মুখে তুমি লেগে আছো

অপু তানভীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ইরার শোধ নেওয়া

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭


এক

সত্যি সত্যিই এতো ভাল খাওয়া-দাওয়া হবে আমি মোটেই ভাবতে পারি নি । কথা ছিল কেবল মেয়ে দেখেই আমরা চলে যাবো । সন্ধ্যার সময় দেখা, হবে টুকটাক কথা হবে, হালকা পাতলা নাস্তা, ব্যস । সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে । কিন্তু এসে শোনা গেল যে কোন ভাবেই মেয়ের বাবা রাতে না খাইয়ে ছাড়বে না ! আমাদের জন্য নাকি সব আয়োজন করেই রেখেছে ।
কি আর করা তাই খেয়ে যেতেই হল ।

রাফির সাথে মেয়ে দেখতে এসেছি । রাফি আমার ভার্সিটি জীবনের বন্ধু । বলা চলে বেশ ভাল বন্ধু । যদিও ও আর আমি একই ডিপার্টমেন্টে পড়ি না তবুও ওর সাথে আমার ভাব আছে অনেক । তার কারনটা সম্ভবত হলে আমরা দুজন একই দিনে উঠেছিলাম এবং সেই থেকে গত ৬ বছর আমরা একই সাথে ছিলাম । এই জন্য আমার সাথে ওর মিলটা অনেক দিনের, পরিচিতটাও অনেক দিনের । তাই হল ছাড়ার পরেও ওর সাথে যোগাযোগ আমার নিয়মিতই হত !

বেটার ভাগ্যও বলতে হবে । আমার থেকে মাস খানেক আগেই ওর পড়া লেখা শেষ হয়েছে । পড়াশুনা শেষ হতেই চাকরীও হয়ে গেছে । এখন ছেলে মানুষের পড়ালেখা শেষে ভাল একটা চাকরী পাওয়ার পরপরই প্রথম যে কথাটা সবার আগে মনে আসে সেটা হচ্ছে এখন একটা বউ দরকার । সেই সুবাধেই আজকের এই মেয়ে দেখতে আসা । ও একা একা আসতে একটু অস্বস্থিবোধ করছিল তাই সাথে করে আমাকে নিয়ে এসেছে ।

আমাদের আসার কথা ছিল সন্ধ্যা বেলা তবে রাফির অফিস থেকে বের হতে একটু দেরি হয়ে গেছিলো । তাই আসতে আসতে সন্ধ্যা পার হয়ে গেল । অবশ্য আমার এতে করে কোন সমস্যা নেই । খাওয়া দাওয়া শেষ করেই চলে যাবো । মেয়ে আমাদের দেখা শেষ হয়েছে । ইনফ্যাক্ট, মেয়ে আমাদের সাথেই রাতেই খাবার খেয়েছে । পাত্রের বন্ধু হিসাবে আমার যে কম সমাদর হয়েছে সেই কথা মোটেই বলবো না । বরং আমার তো মনে হচ্ছিলো যেন আমাকেই ওরা বেশি আদর যত্ন করেছে ।

খাবার টেবিলেই সত্যি বলতে কি মেয়ের দিকে আমার বেশ কয়েকবার চোখ গেছে, দুজনের চোখাচোখীও হয়েছে কয়েকবার । বন্ধু বিয়ে করতে যাচ্ছে সেই পাত্রীর দিকে চোখ যাওয়া ঠিক না, তবে মেয়ে দেখতে বেশ সুন্দরী ! অবশ্য চোখ যাওয়া বলতে আমি অন্য কিছু বোঝাই নি । আমার সেই দিকে কোন ইচ্ছাও নেই । রাফি নিজেও সেই কথা জানে । আসলে এতো জলদি আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নেই । আরো ভাল করে বলতে বিয়ে করার ইচ্ছেই আমার নেই ।

লুবনার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি অন্য কোন মেয়ের দিকে ঠিক মত তাকাইও নি । সেই থার্ড ইয়ার থাকতে লুবনার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তারপর থেকে প্রেম পিরিতি ভালবাসার এসবের প্রতি আগ্রহ কমে গেছে । চাকরী বাকরী খোজার জন্যও এতো তাড়া নেই । আমার নিজের বাসার অবস্থা বেশ ভাল । বাবা এখনও আয় করেন । তাদেরকে এতো জলদি সাপোর্ট দেওয়ার কোন দরকার নেই । আর কেউ নেইও যে বলবে যে জলদি কিছু একটা কর, বাসায় আমার জন্য ছেলে দেখছে । তাই আমি অনেকটাই গা ছাড়া !

তবে রাফির সম্ভাব্য বউকে আমার ভালই লাগলো । ওর সাথে মানাবে কি না এখনও বুঝতে পারছি না তবে বিয়েটা হয়ে গেলে মনে হয় ভালই হয় ! বেটা বিয়ে করে একটু থিতু হোক । ওর সংসার দেখে যদি মনে হয় একটা বিয়ে করা যায় তাহলে পরে আমিও না হয় কোন গতি করে নিবোনে !

খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি বসে বসে মোবাইল টিপছি । রাফি ভেতরে গেছে কি জানি একটা কাজে । সম্ভবত টয়লেটে গেছে । আমি ড্রয়িংরুমে বসে আছি । টিভি চলছে । এমন সময় মেয়ের বাবা লুৎফর সাহেব ঘরে ঢুকলেন । বসলেন আমার একদম পাশে এসে । বড় আন্তরিক ভাবেই বললেন
-তা বাবা, ভাল করে খেয়েছো তো ? ঠিকঠাক মত আয়োজন করতে পারি নি ।
-জি আঙ্কেল ! সত্যিই ভাল করে পেট পুরে খেয়েছি ! আর কি যে বলেন না ! এই যদি আয়োজন ঠিকঠাক না থাকে তাহলে কোনটা হবে ? আপনি মনে অন্য কিছু আনবেন না আমরা দুজনেই খুব ভাল করে খেয়েছি ।

এবার লুৎফর সাহেব একটু যেন ইতস্তর করলেন । কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন কিন্তু বলতে পারছেন না । আমি বুঝতে পেরে বললাম
-কিছু বলতে চান ? রাফি মনে হয় ওয়াশ রুমে গেছে । ওর সামনে বলবেন নাকি আমাকে বললেই চলবে ?
-না মানে, আমার মেয়েকে কেমন দেখলে ?
-আসলে আমি কি বলবো ? রাফি জানে !
-তোমার কাছে কেমন লাগলো ?

আমি ঠিক মত কথাটা যেন বুঝতে পারলাম না । কিন্তু কথার ধরন আমার কাছে মোটেই ভাল লাগলো না ! উনার মেয়েকে কেমন সেটা তো আমার কোন চিন্তার কিংবা আমার পছন্দের কোন বিষয় না । সেটা ঠিক করবে রাফি ! বিয়ে করবে রাফি আমি তো না । তবে এমন হতে পারে যে আমি যদি ভাল লাগে আমি সেটা রাফিকে বললে হয়তো একটা পজেটিভ রেজাল্ট আসবে । এই অর্থে হয়তো জানতে চেয়েছেন তবুও আমার কেন জানি ভাল লাগলো না ।
কিন্তু বয়স্ক মানুষ জানতে চেয়েছে খারাপ কিছু তো আর মুখের উপর বলা যায় না। বিশেষ করে এমন বাদশাহী খাবার যখন খাওয়ালো। আমি একটু হেসে বললাম
-ভাল । যে কোন ছেলে তো এমন মেয়েই খুজবে । রাফিরও তাই করা উচিৎ।
তারপর লুৎফর সাহেব লম্বা একটা দম নিয়ে বলল
-আসলে ইরা রাফিকে নয় তোমাকে পছন্দ করেছে ।

আমার প্রথমে মনে হল যেন আমি ঠিক মত শুনলাম না । কিছু একটা ভুল শুনেছি । মোবাইল থেকে চোখ তুলে অবাক হয়ে লুৎফর সাহেবের দিকে অবাক হয়ে তাকালাম ! নিঃশ্বাস নিতেও যেন ভুলে গেছি ।
লুৎফর সাহেব আবার বলল
-আমারও তোমাকে পছন্দ হয়েছে । আমিও চাই তুমিই ইরাকে বিয়ে কর ।
-কিকককককি বলছে আপনি ? আপনার মাথা ঠিক আছে তো ?
আমার কথা যেন আমলেই নিলেন না তিনি ! নিজের মত করে বলে গেলেন
-আমি চাচ্ছি আজ রাতেই তোমাদের বিয়েটা হয়ে যাক ।

আমার কেবল মনে আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো । এই লোকটা নিশ্চয়ই আমার সাথে বড় ধরনের কোন রশিকতা করছে । শুনেছি বিয়ের সময় নাকি শালা-শালী যারা থাকে, তারা রশিকতা করে । কিন্তু এই ভদ্রলোক তো আমার সম্ভাব্য শালা নন ! তাহলে এমন কথা বলছেন কেন ?
নিশ্চয়ই কোন সমস্যা আছে ! এমনটা হতে পারে না । কোন ভাবেই হতে পারে না ! না, আমি ভুল দেখছি ! ভুল শুনছি । নিশ্চয়ই ভুল শুনছি ! হেভি খাওয়া দাওয়া হয়েছে তাই নিশ্চয়ই আমি সোফার উপর ঘুমিয়ে পরেছি । তাই এইবস অস্বাভাবিক ঘটনা আমার সাথে ঘটছে !
আমি নিজের হাতে একটু চিমটি কেটে দেখার চেষ্টা করলাম । ব্যাথাও পেলাম বেশ । নাহ, স্বপ্ন তো দেখছি না ! তার মানে সত্যি সত্যি !
না না ! এটা কোন ভাবেি হতে পারে না । পারে না এবং পারে না !
আমি বললাম
-আঙ্কেল আপনি কি বলছেন ? আমি কিভাবে বিয়ে করবো ? রাফি কত ভাল ছেলে । ভাল চাকরি করে । আমি এখনও বেকার । বিয়ে করবো কিভাবে ?
-সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না । আজকে চাকরি নেই, কাল পাবে । আর না পেলেও সমস্যা নেই তো । আমি আছি কেন ?
-দেখুন আপনি ভুল করছেন ! রাফি কোথায় ? আমি রাফির সাথে বলবো।

লুৎফর সাহেব এমন ভাবে হাসলো যেন আমি খুব মজার কোন কথা বলেছি । তারপর বলল
-তোমার খোজ কিন্তু তোমার বন্ধুই এনেছে । যে কথাটা তোমাকে বলা হয় নি সেটা হল রাফি আমার বড় বোনের ছেলে । ওকেই বলেছিলাম আমি ইরার জন্য একটা ভাল ছেলে দেখতে । সবার আগে ও তোমার কথাই বলেছে । তোমার সাথে ও ৬ বছর হলে ছিল এক সাথে । ও যখন নিজের বোনের জন্য তোমার কথা বলেছে সেখানে আমি তোমাকে হাত ছাড়া করতে চাই না । জানোই তো আজকাল একটা ভাল ছেলে পাওয়া সহজ কাজ নয় !
-ভাল ছেলে ! আমি ভাল ছেলে !! কে বলল ? দেখুন আমার অনেক খারাপ অভ্যাস আছে । আমি কিন্তু খুব রাগি ! আমার নেসার স্বভাবও আছে ! আর আর আর আমি কয়েকটা গার্লফ্রেন্ড আছে !

আমার কথা শুনে লুৎফর সাহেব আরও জোরে হেসে ফেলল ! তারপর হাসি থামিয়ে বেশ ঠান্ডা গলায় বলল
-শোন এতো সময় আমি ভাল করেই বললাম তাই মনে হচ্ছে আমি খুবই শান্ত শিষ্ট ভদ্রলোক ! আমার অন্য রূপটা দেখাতে বাধ্য কর না । কেবল বলি এই এলাকার ওসি হচ্ছে আমার ভাতিজা ! ওকে আমি ফোন করেই রেখেছি যদি পালানোর চেষ্টা কর তাহলে সোজা পুলিশে খবর দেব, সেখানে তোমার নামে কত গুলো মামলা হবে সেটা তুমি হিসাবও করতে পারবে না ! আর পালানোর কথা চিন্তাও কর না ! বাড়ির সদর দরজায় তালা লাগানো হয়ে গেছে । কাজীও চলে আসছে । রেডি হয়ে নাও !

আমি একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম ! আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না কি হতে যাচ্ছে আর কেনই বা হতে যাচ্ছে । বারবারই মনে হচ্ছে আমি স্বপ্নে দেখছি । আমি দুঃস্বপ্ন দেখছি । ঘুম ভাঙ্গলেই দেখবো আমি নিজের বিছানায় আছি !

রাফি !
এসব কিছুর পেছনে রাফি রয়েছে । প্রথমে বিশ্বাস না হলেও আমার এখন একটু একটু বিশ্বাস হতে শুরু করলো । রাফি মাঝে মাঝে ওর এই মামার কথা বলতো । বেশ ক্ষমতাবান এই মামা নাকি ওকে ছেলের মত আদর করে সেই সাথে রাফি নিজেও তাদেরকে নিজের বাবা মায়ের মত শ্রদ্ধা করে । আর ইনার মেয়ে কে নিজের বোনের মত আদর করে । ওর মুখ থেকেই শুনেছি মামা নাকি নিজের মেয়ের বিয়ে নিয়ে খুব চিন্তায় থাকত সব সময় । একটা ভাল ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চান আর কিছু না ! একবার রাফিও আমাকে বলেছিল ও নিজেও একটা ভাল ছেলে খুজছে ! আমার মত ছেলের সাথে !

আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না ! ফোন দিয়ে যে কাউকে ফোন দিবো সেই ব্যবস্থাও রইলো না ! লুৎফর সাহেব মানে আরও ভাল করে বলতে গেলে আমার হবু শ্বশুর সাহেব আমার কাছ থেকে আমার মোবাইলটা নিয়ে গেল । বলল
-বিয়ের পরেই এটা ফেরৎ দিয়ে দেবে !!
আমি কেবল অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম । কোন কিছু আমার মাথায় ঢুকছে না ।


দুই


-ঘুমাচ্ছো ?
কোন রকমে চোখ মেলে মোবাইলের ঘড়ির দিকে তাকালাম । ১১.১৭ বাজে । আমার জন্য ভোর বেলা । মোটামুটি বেকার বলা চলে বিধায় আমার সকালে ঘুম থেকে ওঠার কোন প্রয়োজন নেই, আমি উঠিও না । সারাটা জীবন আমি সকালের ঘুমটাকে সব থেকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে এসেছি সব থেকে বেশি । আগে ক্যাম্পাস ছিল তবুও ঘুম কামাই যাই নাই আর এখন তো তাও নাই । এখন তো ঘুম কামাইয়ের কোন কারনও আমি খুজে পাই না । এই বদ মেয়ে বলে কি না আমি ঘুমাচ্ছি কি না !
মুখে বিরক্তি নিয়ে আমি ফোন কেটে দিলাম । যদিও জানি ইরা আবার ফোন করবে । সুপার গ্লু আঠার মত একটা মেয়ে । মেয়ের বাবা কেবল মুখ খুলে আমার সাথে লাগিয়ে দিয়েছে ।

ফোন কেটে দেওয়ার প্রায় সাথে সাথেই আমার রিং বেজে উঠলো । একবার মনে হল ফোনটা না ধরি কিন্তু খুব ভাল করেই জানি যে আমি ফোন না ধরা পর্যন্ত সে ফোন করেই যাবে ।
-কি হল ?
-ফোন কেটে দিচ্ছো কেন ?
-আমি ঘুমাচ্ছি ।
-এখন সকাল সাড়ে এগারোটা বাজে । এতো সকাল পর্যন্ত কেউ ঘুমায় ?
-আমি ঘুমাই । কোন সমস্যা তোমার ? কি জন্য ফোন করেছো বল ?
কয়েক মুহুর্ত ইরা কোন কথা বলল না । আমার কাছে এই কয়েক মুহুর্তই যেন বেশ দীর্ঘ্য মনে হল । আমি আবার যখন কথা বলতে যাবো ঠিক তখনই ইরা বলল
-আসলে একটু ক্যাম্পাসে আসবা ?
-কিইইই ?
আমি আরও একটু বিরক্ত হয়ে বললাম
-কেন ?
-আসলে আমার বান্ধুরা তোমাকে দেখতে চাইছে । জানোই তো আমাদের বিয়েটা কেকমন তাড়াহুড়া করে হয়ে গেল । কাউকে বলতেও পারলাম না ঠিক মত ।
আমি কন্ঠটা আরো ঠান্ডা করে বললাম
-আমাদের বিয়েটা হয় নি, তোমার বাবা জোর করে তোমাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে । সেদিনও আমি তোমাকে বলেছি আবারো বলছি !

ইরার এবার চুপ করে গেল । কথা গুলো আমি বেশ কঠিন করে বললাম । তারপর আর কোন কথা না বলে ফোন রেখে দিলাম । আমি এখনও ঠিক মত মেনে নিতে পারছি না এসব । কোন দিন মেনে নিতে পারবো কি না কে জানে ।
ঐদিন সত্যি সত্যিই ইরার বাবা লুৎফর সাহেব আমার বিয়ে দিয়ে দিলেন । আর আমার পক্ষের সাক্ষি হল আর কেউ নয়, স্বয়ং রাফি ! আরও একটা বুদ্ধিমানের কাজ তিনি করে রাখলেন মেয়ের বিয়ের দেনমোহর করলেন ২০ লাখ টাকা । এখন এই মেয়েকে যদি আমি ডিভোর্স দিতে চাই তাহলে আমাকে গুনে গুনে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে ।
তার মানে আমি খুব ভাবেই আটকা পড়ে গেলাম । এখান থেকে বের হওয়ার কোন উপায়ই রইলো না !

বিয়ের পর যখন বাসর ঘরে ইরা ঢুকলো আমি তার দিকে ফিরেও তাকালাম না একটা বারের জন্যও । আসলে মেজাজটা এমন ছিল যে তার দিকে ফিরে তাকাতে ইচ্ছে হয় নি । কেবল একটা কথাই আমি ইরা কে বলেছিলাম যে যেদিন আমি ২০ লাখ টাকা আয় করবো সেদিনই আমাদের মাঝে আইনগত সব কিছু শেষ হয়ে যাবে ।
ইরা কোন কথা বলে নি । আমি খাটের এক পাশে চুপচাপ গুটিশুটি মেরে শুয়ে পরেছিল । আমি গভীর রাত পর্যন্ত জেগে রইলাম । কিছুই যেন করার ছিল না । রাগে সারা শরীর কাঁপছিল কিন্তু আমি কিছুতেই নিজের রাগটা প্রকাশ করতে পারছিলাম না । একটা সময় মনে হল যে একটু গা এলিয়ে ঘুমিনো দরকার । সারাদিন শারীরিক পরিশ্রম না হলেও মানষিক যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে বেশ । নরম বিছানায় শোয়ার একটু পরেই ঘুম চলে এল ।

সারা জীবনই আমি ঘুম কাতুরে নতুন জায়গা হলেও আমার সমস্যা হয় না ঠিক । ঘুম ভাঙ্গলো বেশ বেলা করেই । উঠে কিছু সময় কি করবো ঠিক বুঝতে পারলাম না । আসলে আমার কি করা উচিৎ সেই বিষয়ে আমার কোন ধরনা নেই । আমি কি করবো যখন এই জিনিস নিয়ে ভাবছি তখনই ইরা ঘরের ভেতরে ঢুকলো । গতকাল রাতের থেকেই আমি ওকে শাড়িতেই দেখেছি যে দুইবার দেখা হয়েছে । এখন দেখলাম সেলোয়ার কামিজে । একটু যেন অন্য রকম লাগলো । আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছু সময় ধরে ! আমি কিছু না বলে অন্য দিকে তাকালাম ! ওর দিকে তাকাতে ইচ্ছে করছিলো না !
-ফ্রেস হবে না ? বাধরুমে ডান দিকে ।
কঠিন কিছু বলার দরকার কিন্তু বললাম না । বাধরুমের দিকে হাটা দিলাম ।
ফ্রেস হওয়ার পরপর আমি সোজা ওদের বাসা থেকে বের হয়ে এলাম । কেউ আমাকে আটকালো না কিংবা জানতেও চাইলো না আমি কোথায় যাচ্ছি। গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় বাড়ির দারোয়ান আমাকে দেখে একটা লম্বা সালাম টাইপের স্যালুট দিল । আমার শ্বশুর মশাই সম্ভবত বাসায় ছিল না । থাকলে হয়তো আমাকে আরও কিছু ভয় ভীতি দেখাতো কিন্তু ভাগ্য ভাল যে তিনি ছিল না ।

তারপর থেকেই ইরার জ্বালাতন শুরু হয়েছে । দিন না রাত নাই আমাকে সব বষয়ে তার আমাকে ফোন করা চাই ই চাই । আমি তাকে তীব্র ভাবে ইগনোর করার চেষ্টা করলেই কোন লাভ হচ্ছে না কোন ভাবেই । প্রত্যেকটা দিন প্রত্যেকটা রাতই এমন ভাবে আমাকে জ্বলাতন করে চলছে । আর সব থেকে বিরক্ত করে এই সকাল বেলা হলেই । গত দু সপ্তাহ ধরে আমার প্রতিদিনের আরামের ঘুমটা তার ফোনের ভেঙ্গেছে । এমন না যে আমি চেষ্টা করিনি তার নাম্বার টা ব্লক লিস্টে দেওয়ার কিন্তু লাভ হয় নি । সে প্রতিবারই অন্য নাম্বার থেকে ফোন করে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়েছে ।

ফোন বন্ধ করতে পারি না কারন বাসা থেকে ফোন আসে । বাসার কথা মনে হতেই আমার এখন ভয়ে হাত পা জমে আসে । আমার বাসায় এখনও জানে না যে আমি বিয়ে করেছি । জানলে কি হবে সেটা আমি কল্পনাতেও আনতে পারি না । বাবা মা এমনিতে আমাকে কিছু বলেন না তবে যদি জানতে পারে যে আমি একা একা বিয়ে করে ফেলেছি তাহলে আমার আর ঐ বাসায় ঢোকা হবে না । তখন না চাইলেও আমার শ্বশুর বাড়ি হবে যাবে আমার এক মাত্র প্রবেশযোগ্য বাসা !



তিন

টিউশনী থেকে বের হয়ে যখনই গলির মাথায় এলাম তখনই গাড়িটা দেখতে পেলাম । কালো রংয়ের করোলা এক্স । ডাস্টবিনের এক পাশে দাড়িয়ে আছে চুপচাপ । আমি জানি একটু পরেই গাড়িটা আর চুপচাপ বসে থাকবে না । এতোক্ষন আমার জন্য বসে ছিল । কয়েক দিন থেকেই গাড়িটা এমন করছে । আমি চলতে শুরু করলেই গাড়িটা আমার পিছু পিছু আসতে শুরু করবে । যাবে একেবারে আমার বাসা পর্যন্ত । কদিন থেকেই ইরা এই যন্ত্রনা শুরু করেছে । একবার মনে হল ডেকে কঠিন করে একটা ধমক দিয়ে দেই কিন্তু পরেই আবার নিজেকে সামলে নিই । এই কাজ করতে মানা করলে নিশ্চয়ই আবার নতুন কোন ঝামেলা করা শুরু করবে । এর থেকে এটাই করুক ।

সপ্তাহ খানেক আগে ইরার বাবা আমাকে তাদের বাসায় যেতে বলল । আমি ভেবেছিলাম হয়তো আমার আবারও হুমকি ধামকি দিতে শুরু করবে । কেন আমি তার মেয়েকে ঠিক মত সময় দেই না কিংবা কেন তার সাথে ঠিক মত কথা বলি না এই সব কথা বার্তা বলবে । আমি অবশ্য এই প্রত্যেকটা কথার জবার দেওয়ার জন্য প্রস্তুুতি নিজেই গিয়েছিলাম । ইরার উপর ঝাড়ি মারলেও রাগটা সম্পুর্নভাবে যাচ্ছিলো না । মনে হচ্ছিলো ইরার বাবা লুৎফর সাহেবকে দু-কথা শোনাতে পারলে মনটা একটু শান্ত হত ।

এখন অবশ্য আর ইরার বাবাকে আমার ভয় লাগে না । একটা ব্যাপার আমি খুব ভাল করেই জেনে গেছি যে উপরে যতই ইরার বাবা আমাকে ভয় দেখাক না কেন আমি এখন তার মেয়ের জামাই । তার দৌড় এখন ঐ ভয় দেখানোর পর্যন্তই । আমি জানি তিনি আমাকে কিছুই করবো না, কারতে পারবেও না । তাই আমি ভেবে রেখেছি যে আমি এবার কঠিন করে কিছু কথা বলবো । যেন ওর পরিবারের সবাই সেটা শুনতে পায় ! সবাইকে এক সাথে শুনিয়েই বলবো ।

কিন্তু বাসায় পৌছে আমি একটু অবাক হলাম । ঐদিনের পর অবশ্য আমি এই প্রথমবার ইরাদের বাসায় এসে হাজির হয়েছি । দুপুর বেলা যাওয়ার কথা ছিল আমি সময়ের একটু পরে গিয়ে হাজির হলাম বাসায় । সেদিন প্রথমবারের মত হাজির হয়েছিলাম আমার কেন জানি এখনকার পরিবেশটা ঠিক তেমনই মনে হল । বাসাতে সুস্বাধু খাবারের গন্ধে ভরে আছে । আমাকে দরজার সামনে দেখেই লুৎফর সাহেব একটা প্রাণঢালা হাসি দিলেন । তারপর আমাকে অবাক করে দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন !

আমি আসলে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে ঘটনা কি হচ্ছে । কেন এমন করে আমার উপর লুৎফর সাহেব আমাকে জড়িয়ে ধরলেন । ছেলে ভাল রেজাল্ট কিংবা ভাল কোন কাজ করলে যেভাবে বাবা খুব খুশি হয় লুৎফর সাহেবের চোখে সেটা দেখতে পেলাম । কারন তো আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না । আমার কেন জানি মনে হল আবার নতুন কোন সমস্যায় আমি পড়তে যাচ্ছি । এর আগেরবার ভাল খাবার খাইয়ে আমার গলায় নিজের মেয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিল এবার কি ঝুলাবে কে জানে ?
লুৎফর সাহবে বলল
-আমি আসলে খুবই খুশি হয়েছি ?
আমি খানিকটা শংঙ্কা নিয়ে বললাম
-কেন ?
-আরে তুমি ইরার সাথে যোগাযোগ শুরু করেছো তাই দেখে । আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমার মেয়েটাকে ইগনোর করেই যাবে । সেদিন যেভাবে চলে গেলে আমি নিজের কাছেই একটু ভয়ে ছিলাম । জানি তোমার সাথে আমি ঠিক মত আচরন করি নি এমনটা হওয়ার কথা ছিল না কিন্তু বিশ্বাস কর যখন তুমি মেয়ের বাবা হবে তুমি বুঝবে !

আমি কোন কথা না বলে কেবল অবাক হয়ে ইরার বাবার দিকে তাকিয়ে রইলাম । এই লোক বলছে কি ? আমি তার মেয়ের সাথে যোগাযোগ কখন করলাম ? আমি তো তার সাথে আজ পর্যন্ত ঠিক মত কথাও বলি নাই তাহলে ?
কিভাবে হল ?
তখনই মনে হল যে এর ভেতরে ইরার নিশ্চয়ই হাত আছে । ও নিশ্চয়ই ওর বাবাকে মিথ্যা বলেছে ?
কিন্তু কেন বলেছে ?
ইরার বাবা বলল
-আচ্ছা কথা পরে হবে আগে খাওয়া দাওয়া করা যায় । আসো দুপুরের খাবারের সময় হয়েছে ।
আমাকে আর কোন কথা না বলার সুযোগ দিয়ে ইরার বাবা আমাকে খাবার টেবিলের দিকে নিয়ে গেল ।
এবারও সত্যি সত্যিই আমি খানিকটা অবাক হয়ে গেলাম । ভাবতে খানিকটা অবাক লাগছে এসব খাবার কেবল আমার জন্য রান্না করা হয়েছে । যতই রাগ থাকুক খাবার আর ঘুম উপর রাগ করা অন্যায় । আমি এই দুইটার ব্যাপারে বেশ একটু দুর্বল ! মনে পড়লো একবার খাবার খেতে গিয়ে আমি গভীর খাদে পড়েছি এবং সেটা এই ঘরে আর এই টেবিলেই ঘটেছে । আজকেও না জানি খাবার খেয়ে কি ঝাঁমেলা বেঁধে যায় । অবশ্য এর থেকে আর কত গভীর খাদে পরতে পারি আমি ? আমি এমনিতেই খাদে পরেই আছি ।

আমি টেবিলে বসতে না বসতেই ইরার ঘরে ঢুকলো ! আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিল সাথে সাথেই । ইরাকে দেখে ইরার বাবা লুৎফর সাহেব বলল
-আরে তুইও বয় ! এক সাথে শুরু করি !
-না থাকুক ! তোমরা খাও ! আমি পরে খাবো !
-পরে খাবি কেন ? নিজের হাতে রান্না করলি এতো সব । খাবি না ?
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি নাকি বলেছো যে চিংড়ি তোমার খুব পছন্দ । দেখো আমি প্রথমে চিংড়ি পাইনি বলে তার কি মন খারাপ ! পরে কত খোজাখুজি করে এই মাছ আনতে হয়েছে । ওর মাকেও রান্না করতে দিবে না । নিজের হাতে রান্না করেছে । আর এখন বলছে পরে খাবে !

ইরার বাবা স্বভাবই চাচ্ছেন যেন আমি ইরা একই সাথে খেতে বসতে বলি ! এতো কিছু খাওয়াচ্ছে যখন এই কথাটা বলাই যায় । আর কেন যে তার বাবাকে মিথ্যা কথা বলেছে সেটা তার কাছ থেকেই জানতে হবে । আমি ইরার দিকে তাকিয়ে বললাম
-বস তুমিও বসে পর । পরে খাওয়ার কি আছে ?
ইরা সাথে সাথেই বসে পরলো আমার পাশের চেয়ারে । যেন আমার বলার জন্যই অপেক্ষা করছিল । ওর নিজের মুখেও আমি অন্য কিছু একটা দেখতে পারলাম ।
সত্যি বলতে কি ইরাদের বাসায় মানে আমার স্বশুর বাড়িতে সেই দিনও সেই লেভেলের খাওয়া দাওয়া দিলাম । অনেক দিন এতো ভাল করে খাওয়া দাওয়া করি নি । বাসায় থাকলে মা খুব যত্ন করে আমাকে খাওয়ায় । অনেক দিন বাড়ির বাইরে থাকি তাই মা সুযোগ পেলেই আমাকে আমার পছন্দ মত খাওয়াতো । আর আজকে এই ইরাদের বাসায় খাওয়ার পরেই ঠিক বাসার মতই অনুভুতি হল ।
খাওয়ার পরে ইরা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তুমি এখনই চলে যাবে ?
আমি কি বলবো তার আগেই ইরার বাবা বলল
-আরে এখনই চলে যাবে কেন ? খাওয়া দাওয়ার পরে একটু বিশ্রামের দরকার আছে । আর এখন দুপুর বেলা বাইরে যেতে হবে না ।
ইরা বলল
-আমার ঘরে তাহলে বিশ্রাম নাও ।
আমি আসলে ঠিক বুঝতে পারছিলাম না এখনে কি হচ্ছে । ইরা সেই শুরু থেকেই আমাকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করেই যাচ্ছে । তবে আমার রাগটা কোন ভাবেই এক পাশে রেখে ওদের সাথে ঠিক মত মিশতে পারছিলাম না ।

ইরার রুমে ঢুকতেই আমি ইরাকে বললাম
-তুমি তোমার বাবাকে মিথ্যা বলেছো কেন ?
ইরা কথা না বলে চুপ করে তাকিয়ে রইলো অন্য দিকে ,
-তোমাকে একটা কথা জানতে চেয়েছি ?
-জানি না ।
-তুমি যেটা ভাবছো সেটা কোন দিন হবে না ! আজকের পরে আমি আর কোন দিন আসবো না ! তোমাকে কথাটা বলে দিলাম । আজকে খাবার গুলো নষ্ট হবে তাই আমি বসে খেতে ।
-আচ্ছা আসতে হবে না !
ইরার কন্ঠটা একটু যেন কেঁপে উঠলো । বুঝতে পারলাম যে হয়তো কোথাও গিয়ে কান্না কাটি করবে ।
দরজা দিয়ে বের হওয়ার সময় ইরা আমার দিকে না তাকিয়েই বলল
-একদিন এই সব কিছুর শোধ আমি তুলবো । মনে রেখো !

আর না দাড়িয়ে দরজা দিয়ে বের হয়ে গেল । আমি সেদিকে আর লক্ষ্য না দিয়ে বিছানার পিঠ ঠেকালাম । খাওয়া দাওয়া বেশ হয়েছে এখন একটু না শুলেই নয় ।
সেই দিনের পরে ইরা আর আমাকে ফোন দেয় নি । কিন্তু তারপর থেকেই এই কালো গাড়িটা আমাকে ফলো করা শুরু করেছে । কিভাবে জানি আমার টিউশনীর শিডিউল জানতে পেরে কে জানে !

আমি হাটতে শুরু করতেই গাড়িটা আমার পেছন পেছন আসতে শুরু করলো । আমি সেদিকে লক্ষ্য না দিয়ে হাটতে লাগলাম । পেছনে তাকাতে ইচ্ছে করছে না ! কাজী অফিসের গলি থেকে পরিবাগ পর্যন্ত এই পথ টুকু আমি হেটেই যাই সাধারন । এরপর বাসে উঠি । প্রতিদিন ইরার গাড়িটা ঠিক এই পর্যন্ত আমার পেছন পেছন যায় । তারপর বাসে উঠার সময় আমি দেখি ওর গাড়িটা আমার পেছনেই আছে দাড়িয়ে ।

আজকে টেনামেন্ট হাউজটা পার হতেই দেখলাম গাড়িটা আমাকে ক্রস করে আরও একটু সামনে গিয়ে দাড়ালো । এই অবশ্য একটু নতুন । আগে করে নি । দরজা খুলে বের হয়ে এল । এটা অবশ্য আমার কাছে একটু নতুন ।
ওর দিকে তাকিয়ে একটু চমকাতে হল । আজকে ইরাকে একটু অন্য করম লাগছে । চুল গুলো ছাড়া অবস্থায় আছে । সাদা চুড়িদার পরে আছে । আমার কেন জানি মনে ওর হাতে মেহেদীও দেওয়া আছে । কারন এটা আমি বেশ পছন্দ করি । আরও ভাল করে বলতে গেলে আমি মেয়েদের যে যে ব্যাপারটা পছন্দ করি ও ঠিক ঠিক সেই ভাবেই আমার সামনে এসে হাজির । বোঝাই চাচ্ছে ইরা আমার ফেসবুক ব্লগ বেশ ভাল করেই ফলো করে । সেখান থেকেই সব কিছু জানতে পেরেছে ।
আমি ওর সামনে দাড়াতেই ইরা বলল
-অপু !
আমি যদিও উত্তর দিলাম না তবে দাড়ালাম !
-এই পথ টুকু তোমার সাথে হাটবো একটু ?
-কেন ?
-কোন কারন নেই । আমার ভাল লাগবে । আমি জানি তুমি আমাকে পছন্দ কর না । প্লিজ । আসলে .........
-আসলে ........?
- কালকে আমার জন্মদিন । তুমি তো কালকে বের হবে না । কাল তোমার টিউশনী নেই । আজকে যদি একটু হাটতে ।
আচ্ছা কালকে আমার টিউশনী নেই এই খবরও ইরা ঠিক ঠিক জেনে গেছে । আমি বললাম
-এটা সরকারী রাস্তা । যে কেউ হাটতে পারে ।
-প্লিজ !
আমি কোন কথা না বলে আবারও হাটতে উদ্যোত হলাম ।
-তুমি আমাকে কেন পছন্দ কর না বলতো ?
-এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার ভাল লাগছে না ।
-না আজকে দিতে হবে । আমি তোমার মন গলাতে কি না করেছি । একটা মেয়ে হয়ে আর কতটা আমি ........
-দরকার কি ? কেন করছো ? আমি কি করতে বলেছি ? কেন করছো ?
-করছি কারন ........ ইউ আর মাই হাজব্যান্ড ! ইউ নো দ্যাট !
আমি ওর দিকে তাকিয়ে কিছুটা সময় কোন কথা বললাম না ! তারপর শান্ত কন্ঠে বললাম
-বাসায় যাও ইরা । রাত হচ্ছে ! আর আকাশের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বৃষ্টি আসবে । বাসায় যাও ।
আমি আর কোন কথা না বলে হাটা দিলাম নিজের রাস্তার দিকে । যদিও পেছনে তাকিয়ে দেখি নি তবে আমি নিশ্চিত জানি ইরার চোখে পানি চলে এসেছে আকাশের বৃষ্টির পড়ার আগেই ওর চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু করে দিয়েছে । সে রাস্তায় দাড়িয়েই আমার দিকে ব্যাথিত চোখে তাকিয়ে আছে ।
থাকুক ! আমি হাটা দিলাম । তবে কেন জানি ইরার শেষ কথাটা নিজের কানের কাছেই বাজতে লাগলো ! ইউ আর মাই হাজব্যান্ড ! ইউ আর মাই হাজব্যান্ড ! ইউ আর মাই হাজব্যান্ড !
আমি লাইনটা মাথা থেকে দুর করার চেষ্টা করলাম । কিন্তু খুব একটা কাজ হল না ! আমি হাটতেই থাকলাম । আজকে রাতে মনে হচ্ছে ভালই বৃষ্টি হবে !



চার


বৃষ্টি শুরু আগেই যে বাসায় পৌছাতে পারলাম এটা একটা ভাগ্যের ব্যাপার । আমার বৃষ্টি ভাগ্য কখনও ভাল হয় না । সারা জীবন আমি ঠিক যেদিন যেদিন ছাতা নিতে ভুলে যাবো ঠিক বেছে বেছে সেই সেই দিনই বৃষ্টি নামবে এবং আমাকে বৃষ্টিতে ভেজাবেই । কিন্তু আজকে বৃষ্টি শুরুর আগেই যে বাসায় পৌছে গেলাম এটা দেখে নিজেকে আসলেই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে । অবশ্য রাস্তায় ইরার সাথের ঘটনা টা এখন মাথা থেকে বের করতে পারি নি । সেই লাইন গুলো এখনও মাথার ভেতরেই রয়েছে ।

মেয়েটা বলছিল আজকে ওর জন্মদিন । অবশ্য এখনও শুরু হয় নাই । ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে ১০টার মত বাজে । এখনো দেড় ঘন্টার মর বাকী আছে । আচ্ছা মেয়েটার সাথে একটু হাটলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেত ?
মেয়েটা কি জোর দিয়েই না বলল যে আমি তার হাজব্যন্ড । স্বামী !
আমাদের দেশের মেয়েরা কি এমনই ?
জানা নেই, চেনা নেই একবার বিয়ে হয়ে গেলেই সেই ছেলেটার তার জন্য সব কিছু হয়ে ওঠে ! সব কিছু রেখে সেই মানুষটার সাথে থাকতে চায় ! এসব চিন্তা মাথা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলাম । এসব এখন ভাবার সময় না ।

একটু পরে বৃষ্টি শুরু হলেই কারেন্ট চলে যাবে । তাই মোমবাতি আগে থেকেই খুজে রাখা দরকার । অবশ্য আমি বেশি রাত জাগবো না । এমনও দিনে কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর কোন তুলনা হয় না । তবুও সাবধানের মার নেই । কখন লেগে যায় কিছু বলা যায় না । মোমবাতিটা খুজে রাখা দরকার । আমি টেবিলের নিচে হাত দিতে যাবো তখনই আমার দরজায় কড়া নড়লো ।

একটু অবাক হতে হল । আমি এই ছাদের এক পাশে অর্ধেক হওয়া ফ্লাটটাতে একাই থাকি । একটা রুম কেবল সম্পুর্ন ভাবে শেষ হয়েছে । আর একটা বাধরুম । রান্না ঘরটার উপরে টিন দেওয়া । এটা নিয়েই আমার সাংসার ! নিচের ভাড়াটিয়াদের এই ছাদে ওঠা নিষেধ । তাও এতো রাতে তো কারও ওঠার কথাই নয় । উঠলে কেবল বাড়িওয়ালা উঠতে পারে । তিনি মাঝে মাঝে ছাদে উঠে আসেন পানির ট্যাংকি চেক করার জন্য । কিন্তু আমার এখানে তো আসেন না । তাহলে ?

আমি দরজা খুলতেই একটা ছোট খাট ধাক্কার মত খেলাম ।
ইরা দাঁড়িয়ে আছে ।
এই মেয়ে এখানে কি করে ? এর তো এখানে আসার কোন কারনই নেই । তাহলে ?
-তুমি ?
ইরা কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । একটু আগে যে কান্না করেছে সেটা ওর চোখের দিকে তাকালেই বুঝতে পারলাম । তখনই আবার মনে হল মেয়েটার সাথে একটু হাটলে মনে হয় এই ঝামেলা হত না ।
-এখানে কি চাই ?
-কিছু না ।
-তাহলে কেন এসেছো ?
-জানি না ।
-দেখো সোজা চলে যাও । আমি তোমাকে ঘরে ঢুকতে দিবো না । গেট বন্ধ হয়ে গেলে কিন্তু আমি তোমাকে চিনবো না ।
-তাই ?
-হ্যা ।
-আচ্ছা তোমাকে চিনতে হবে না । যাও ঘরে দরজা দিয়ে বসে থাকো !
-আর তুমি ?
-সেটা আমার বিষয় !

আমাকে আর কিছু না বলতে দিয়ে ইরা ছাদের অন্য দিকে চলে গেল । ওখানে কয়েকটা ইট দিয়ে আমি বসার একটা জায়গা বানিয়েছি । মাঝে মাঝে ওখানে গিয়ে বসি । ছাদের একটা ৪০ ওয়াটের বাল্ব জ্বলে সব সময় । আমি দেখলাম ইরা সেই ইটের উপরে গিয়ে বসলো । আমার বিপরীত দিকে মুখ করে ।আর তখনই আকাশে মেঘ ডেকে উঠলো ।

এখন ?
দেখে মনে হচ্ছে এখনই কুকুর বিড়ালে বৃষ্টি নামবে । কিন্তু ইরার !
আমি কি করবো ভেবে পেলাম না । চোখের সামনে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল । আমি ঘরের দরজার ভেতর থেকেই তাকিয়ে দেখছি ইরার মুহুর্তের ভেতরে বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেল । হাত দিয়ে একটু বৃষ্টি ছুতেই টের পেলাম পানি অসম্ভব ঠান্ডা !

এই বৃষ্টিতে মেয়েটা ভিজতে থাকলে নির্ঘাত জ্বর বাঁধিয়ে ফেলবে । যতই মেয়েটা আর ওর বাবার উপরে রাগ করে থাকি এই ভাবে একজন কে শরীর খারাপের দিকে ঠেলে দিতে পারি না । ছাতা নিয়ে নেমে গেলাম বৃষ্টির ভেতরে । ইরার সামনে গিয়ে দাড়াতেই ওর চোখের দিকে তাকালাম । যদিও একেবারে দিনের আলোর মত সব কিছু পরিস্কার দেখা যাচ্ছে না তবুও ওর চোখে পাহাড় সমান অভিমান আমার চোখ এড়ালো না । বৃষ্টির পানি আর চোখের পানিও আমি ঠিকই আলাদা করে ধরতে পারলাম ঠিকই ।
-চল ঘরে চল !
-যাবো না । আমি কে যে তোমার ঘরে যাবো ।
-এ সব কথা পরে হবে ।
-না !

আরও কয়েকবার বলার পরেও যেখন ও যেতে রাজি হল না তখন আমি আসলেই বিপাকে পড়লাম । কি করবো এখন ?
একটু আগে এই মেয়েই আমার কাছে আসার জন্য কত কিছু করছিলো আর এখন আমি ওকে ঘরে ডাকছি কিন্তু উনি আসবেন না । এমন রাগের মানে কি !

ভাবতে লাগলাম কি করবো । কিছু ভাবার পরে কেবল একটা পথই পেলাম । ছাতা বন্ধ করে ইরা প্রায় কোলে নিয়ে আমার ঘরে যেতে হল । প্রথমে একতা হাত পা ছোড়াছুড়ি করলেও আমার সাথে শক্তিতে ওর পারার কথা না কোন ভাবে । কিছুক্ষন পরে সেটা ওর বন্ধ করে দিল ।

ঘরের ভেতরে এনে আবার পড়লাম নতুন বিপাকে । ওর শরীরে ভেজা কাপড় । এই কাপড় না খুললে তো সেই যা জ্বর আসার তাই আসবে ! কয়েকবার বলার পরেও ইরা কিছুতেই নড়লো না । নিরবে চোখের জল ফেলতে লাগলো !

এই মেয়ের সমস্যা টা ?
একটু আগেও আমার সাথে হাটার জন্য কেমন করছিল এখন ঘরের ভেতরে নিয়ে এসেছি আর এই মেয়ে কিছুতেই কিছু করছে না ।

-প্লিজ বাধরুমে যাও !
-কেন যাব ? কেন ? আমার শরীর খারাপ হলে তোমার কি ? বল তোমার কি ?
-এসব কথা পরে হলেও চলবে । প্লিজ আগে ভেজা কাপড় তা বদলাও ।
-না ! আমি মরে যাই । তোমার ঝামেলা শেষ হোক !
-এমন করে কেন বলছো ?
-বলবো না ? তুমি আমার বাবার অন্যায় টা আমার উপরে চাপাচ্ছো ? ঐ দিনের পর আমি কি না করেছি তোমার কাছাকাছি আসার জন্য । আর তুমি ? আমাদের, মেয়েদের কাছে আমাদের স্বামীর ছাড়া আর কিছু নেই তা সে যেভাবেই হোক না কেন ? কিন্তু……

আমি কি বলবো খুজে পেলাম না ! ইরা দাড়িয়েই রইলো বাধরুমের দরজার কাছে । একটু একটু কান্নার বেগ যেন বেড়েই চলেছে । আমার মনে কি হল আমি ওকে আবারও ওর হাত ধরে ওকে বাধরুমের ভেতরে নিয়ে গেলাম । আগের বার যখন ঘরের ভেতরে আনতে যাচ্ছিলাম তখন একটু জোড়াজুড়ি করলেও এবার একটূও বাধা দিল না ।

জানি না কি করছি আর ও এটা কিভাবে নিবে তবে মনে যে ও নিজে নিজে নিজের ভেজা কাপড় টা বদলাবে না, আমাকে জোর করতে হবে একটু যেভাবে জোর করে ওকে ঘরের ভেতরে নিয়ে এসেছিলাম । বাধরুমের ভেতরে ওকে দাড় করিয়ে যখন প্রথম ওর সেলোয়ারের পেছনের আটকানো প্রথম গিট টা খুললাম তখনই আমার বুকের ভেতর ধাক্কা মারলো ।
কি করছি আমি ?
কেমন করে করছি এসব ?
না আমি এটা করতে পারবো না কোন ভাবেই ।

আমার হাত থেমে গেল । আমি দাড়িয়ে রইলাম । সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না কি করবো !

তখন ইরা আমার দিকে ঘুরলো ! আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল
-থেমে গেল কেন ?
আমি কি বলবো খুজে পেলাম না । ইরা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি সত্যি সত্যি আমার ভেজা কাপড় খুলবো না । এভাবেই বসে থাকবো । যদি গায়ে শুকিয়ে যায় বাইরে গিয়ে আবার ভিজিয়ে আনবো । তোমার চোখের সামনেই এটা করবো !
আমি বললাম
-তুমি কি চাও বল ?
-আমি কি চাই তুমি ভাল করেই জানো !
-আমি এটা পারবো না ! প্লিজ
ইরা বলল
-আমাকে অন্য কেউ মনে করলে পারবে না কোন দিন, কিন্তু যদি আমাকে নিজের স্ত্রী ভাব তাহলে পারবে !

আমি নিজের বুকের স্পন্দন টা খুব ভাল করেই অনুভব করতে পারছিলাম । ইরার চোখে রদিকে তাকিয়ে আমার সত্যই সত্যিই মনে হল আমি যদি ওর ভেজা কাপড় না বদলে দেই তাহলে ও এভাবেই সারা রাত থাকবে । আর এভাবে থাকলে যে কারো জ্বর থেকে নিউমোনিয়া হয়ে যেতে পারে । আমি ইরার দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা ঘোর, অন্য দিকে তাকাও

ইরা আবার ঘুরে দাড়ালো । ওর ঘুরে দাড়ানোর ঠিক আগ মুহুর্তে ওর ঠোটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেখানে একটা সুক্ষ হাসির রেখা । সেটা স্পষ্ট যেন আমাকে বলছে যে মিস্টার অপু হাসান, তুমি আমার কাছে হেরে গেছো ।

কিভাবে আমি ওর ভেজা কাপড় গুলো বদলাম আমি নিজেও জানি না । মনে হচ্ছিলো যেন আমি কোন ঘোরের ভেতরে চলে গেছি । আসে পাশে কি হচ্ছে সেটা আমি ঠিকঠাক মত জানি না । এর আগে আমি কোন দিন নারী দেহের এতো কাছে আসি নি ! আমার নিজের কাছেই নিজেকে কেমন অপরিচিত লাগছে ।




বাইরে এখনও বেশ বৃষ্টি পড়ছে । ভেবেছিলাম যে কারেন্ট চলে যাবে কিন্তু যায় নি । ইরা আমার বিছানার উপর বসে ধোয়া ওঠে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে । নিজের হাতেই আমি ওকে চা বানিয়ে এনে দিয়েছি । নিজের কাঁপ টা এখনও টেবিলের উপরে রয়েছে কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছে না !
আমি ইরার চা খাওয়া দেখতে লাগলাম ওর মুখে কিছুক্ষন আগে যে গাম্ভীর্য আর অভিমান ছিল এখন সেখানে তার ছিটে ফোটাও দেখা যাচ্ছে না । বরং মনে হচ্ছে যেন ও নিজে খুব আনন্দে আছে ।

আমি নিজের কাছে অস্বস্থি নিয়ে আমার নিজের ঘরে এদিক ওদিক ঘোরা ফেরা করছি । কি করবো ঠিক মত বুঝতে পারছি না । বারবার ঘুরে ফিরে কেবল ঐ কথাই মনে আসছে । আর ওর দিকে তাকাতেও আমার কেমন যেন অস্বস্থি লাগছে ।

ভেজা কাপড় বদলানোর পরে ইরা আমার একটা গেঞ্জি পরে আছে । গেঞ্জিটা ওর হাটুর একটু উপরে এসে শেষ হয়েছে । এমনিতেও সেটা আমার গায়েই বড় হয় ওর গায়ে তো হবেই । ট্রাউজার দিয়েছিলাম তবে সেটা ও পড়ে নি । লাইটের আলোতে ওর পরিস্কার পা দেখা যাচ্ছে । আমার ওর দিকে তাকাতে লজ্জা লাগলেও ওকে দেখলাম বেশ স্বাভাবিক রয়েছে যেন খুবই সাধারন একটা ব্যাপার এটা !
ইরা হঠাৎ বলল
-এমন করছো কেন ?
-বিছনার উপর বস চুপ করে ।
-না ঠিক আছে । আমার একটু কাজ আছে ?
-কি কাজ শুনি ?

কি কাজ আমি বলতে পারলাম না ! ইরার আমার দুরাবস্থা দেখে হেসে ফেলল । হাসতেই থাকলো । ঘরের প্রতিটি কোনা থেকে যেন ওর হাসির স্বর প্রতিধ্বনি হচ্ছিলো । ঠিক সেই সময়েই কারন্ট চলে গেল । পুরো ঘর একেবারে অন্ধকারে ভরে গেল । বাইরে তখন বৃষ্টি পরেই যাচ্ছে এক ভাবে । মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ।

৩০ সেকেন্ড পরে যখন আবারও নতুন করে বিদ্যুৎ চমকালো তখনই ইরাকে আমি উঠতে দেখলাম বিছানা থেকে । আরেক বার বিদ্যুৎ চমকে একেবারে আমার মুখোমুখি !

এবার আর বিদ্যুৎ না চমকালেও ওর চোখের দৃষ্টি যেন আমি পরিস্কার বুঝতে পারছিলাম । সেটা যেন অন্ধকারের ভেতরেও জ্বলছিল । আমি জানি এর পরে কি হবে । তবুও বুকের ভেতরেই সেই ঢিপঢিপানি অনুভুটা ফিরে এল । এতো দিন ওকে অবহেলা করা আর ওর কাছ থেকে দুরে দুরে থাকার শোধ আজকে সে ঠিক ঠিক নিয়ে ছাড়বে ! ও বলেছিলো একদিন এসবের শোষ তুলবে । আজকে সেই শোধ তোলার দিন !

আমি কেবল এদিক ওদিক তাকাতে লাগলাম । সেদিন হঠাৎ করেই আমি এই ঝামেলার ভেতরে পরে গেছিলাম কোন প্রকার কোন সতর্ক হওয়ার সুযোগ না পেয়েই । আজকেও মনে হচ্ছে আবার নতুন ভাবে সেটার ভেতরে জড়িয়ে যাবো । জীবনে আর এর থেকে বের হতে পারবো না । আরও ভাল করে বললে ইরা কোন দিন আমাকে বের হতে দেবে না ।
বদ মেয়ে ঠিক ঠিক জানতো একদিন আমাকে সে পটিয়ে ফেলবেই !

(the end)

মন্তব্য ৪১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৪১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭

জাহিদ ২০১০ বলেছেন: ১৮+++++++++

এইটা আমি কি পড়িলাম,,,,,,,,,,, কেন পড়িলাম,,, কি কারনে পড়িলাম,,,,, ওহ নো

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫০

অপু তানভীর বলেছেন: :D

২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: তারপর সূর্যমুখী ফুল দেখানো হইবেক!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১

অপু তানভীর বলেছেন: B-)) B-))

৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: দুর্দান্ত হইছে।

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: :)

৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬

দোলাভাই বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন..................

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

অপু তানভীর বলেছেন: :)

৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫

মিথুন আহমেদ বলেছেন: আনলিমিটেড লাইক :) :)

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৪

অপু তানভীর বলেছেন: :)

৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার লেখা!

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫

অপু তানভীর বলেছেন: :) :)

৭| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬

কেউ নেই বলে নয় বলেছেন: ভাল্লাগছে। +

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

অপু তানভীর বলেছেন: :):)

৮| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬

তিমিরবিলাসী বলেছেন: ভাল লাগলো। মাঝখানে পড়তে গিয়ে ভাবলাম, একটু কি বাড়াবাড়ি আছে?
কিন্তু শেষটা খুব মার্জিতভাবে শেষ হয়েছে।
ভাল্লাগছে ।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮

অপু তানভীর বলেছেন: সত্যি বলতে কি আমি নিজেো লিখতে গিয়ে মনে হল বাড়াবাড়ি কিছু লিখতে হবে নাকি তবে শেষ পর্যন্ত হয় নি তা :)

৯| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২১

রাকিব সরদার বলেছেন: আপনি তো কোটি কোটি মেয়ের কাছে আসছেন ?এটা আবার প্রথম কিভাবে :) undefined

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯

অপু তানভীর বলেছেন: নতুন গল্প মানে একেবারেই নতুন জীবন । অন্য গল্পের সাথে এর কোন যোগাযোগ নাই !

১০| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৫

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রথম তিনটি পর্বে চেনা চেনা লাগে তবু অচেনা।। একটা বাস্তব আরেকটা গল্প।। সুতরাং নিঃশ্চিন্তে ঘুম।।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০০

অপু তানভীর বলেছেন: চেনা চেনা লাগে তবুও অচেনা :D

১১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৩

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: গফ পইড়া মজা পাইছি। :-D

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫

অপু তানভীর বলেছেন: অনেক দিন পর আপনাকে ব্লগে দেখলাম । থাকেন কই কন তো দেখি ।

১২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩২

নীল আকাশ বলেছেন: এটাকে কনটিনউ করেন। ২য় & ৩য় পর্ব চাই। অপু ভাই জোস হয়েছে।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬

অপু তানভীর বলেছেন: বিবাহ পরবর্তি ঘটনা নিয়ে অনেক গল্প আছে আমার । লিখতে গেলে সেরকম কিছু হয়ে যাবে !

ধন্যবাদ

১৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৪

সাহসী সন্তান বলেছেন: আমার মন্তব্যের প্রতিউত্তরেও কি ইমো কাজে লাগাবেন? তাইলে মন্তব্য করুম না........!!



গল্প অনেক ভাল লেগেছে! শুভ কামনা জানবেন!

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

অপু তানভীর বলেছেন: সংক্ষিপ্ত মন্তর‌্যের উত্তরে আমি আজীবন ইমোই কাজে লাগাই । এটা আমার আজন্ম অভ্যাস ! :):)

১৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: দারুনসসসসসস!!! :)


১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৭

অপু তানভীর বলেছেন: ধন্যবাদ :):)

১৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১০

প্রামানিক বলেছেন: দারুণ- - -- - -।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮

অপু তানভীর বলেছেন: থেঙ্কু :)

১৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৫

লিও কোড়াইয়া বলেছেন: একটা জায়গায়ই তো ছেলে মানুষ দূর্বল! তবে গল্পের নায়কের মতন ছেলে আদৈ আছে কিনা জানি না! তানা হলে সুন্দরী একটা মেয়ের একটা ছেলে পটাতে এত কষ্ট করতে হয়! আমার ক্ষেত্রে তো একটা হাসি দিলেই কাজ হয়ে যেত!

সুন্দর গল্প, ইরাকে কল্পনা করেছি। আমিও তো ভালো ছেলে, কেন যে আামাকে চুজ করলো না!

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০

অপু তানভীর বলেছেন: আছে আছে । নায়কের মত কত শত ছেলে আছে । একটু খোজ খবর নিলেই পাওয়া যাবে । যাদের কে পটাতে মেয়েদের আসলেই বেগ পেতে হয় । আর এখানে যেহেতু রাগের একটা যুক্তিসংগত কারনও আছে !

আমিও কিন্তু ভালু পুলা । আমাকে যে চুজ করে নাই তা না তবে এতো দুর যায় নাই । এতো দুর যাওয়ার অপেক্ষায় আছি :D

১৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: এই প্রথম মনে হয় তোমার গল্পে শারীরিক ব্যাপার নিয়ে কোন দৃশ্য অঙ্কিত হতে দেখলাম। যদিও তা ছিলো শুধুই একটা ইঙ্গিত, তবে এভাবেই ভালো লাগে আমার। গল্পটা ভালো লাগে নাই একেবারেই। কথকের কী এমন গুণ ছিলো যে তাকে ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়ে দেয়া হলো? এমন না যে ইরার কোন গুরুতর শারীরিক অথবা মানসিক জটিলতা আছে। তার জন্যে কেন একটা বেকার ছেলেকে নির্বাচিত করে ভয় দেখিয়ে আটকে ফেললো? এই অসঙ্গতির পরে গল্পের বাকি অংশটুকুও চলেছে অনুমেয় এবং একঘেয়ে হয়ে।

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬

অপু তানভীর বলেছেন: মাঝে মাঝে বাস্তব গুলো গল্প থেকেও আশ্চর্য্যের হয় । আমার অনেক গল্পই আমি বাস্তবে ঘটা কোন ঘটনা থেকেি নিয়ে । সত্যি কথা বলছি যে আমার এটাও খানিকটা বাস্তব ঘটনা থেকেই নেওয়া ।

গত ঈদের আগের ঈদে আমাদের গ্রামে ই ঘটনা ঘটেছে । এখানে তো ছেলে পড়ালেখা শেষ করেছিলো আমাদের ঐ গ্রামের ঘটনায় সেটাও না । ছেলে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো, মেয়ে কেবল কলেজে । দুজন দুজনা কে খুব একটা চেনেও না । খালাতো না মামাতো একভাইকে দিয়ে ছেলেকে ডেকে এনে ঘরে শিকল দিয়ে দেয় সেই মেয়ের মা । :D
তারপর গ্রামের লোকজন ডেকে বিয়েও দিয়ে দেয় । মেয়েটা যে দেখতে খারাপ, কিংবা শারীরিক ভাবে কোন খুত আছে তাও কিন্তু না ।

পরে মেয়েটা অবশ্য কয়েকবার চেষ্টা করে ছেলেটার মন গলাতে তবে আমার গল্পের মত সেটা কাজ হয়নি । গতবার বাসায় গিয়ে শুনি ছেলের পরিবার সেই ৫ লাখ টাকা দিয়ে মেয়ে বাদ দিয়েছে !

১৮| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৪

ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: আপনার গল্পগুলা অধিকাংশই ভালো লাগে... ... এটাও তেমন একটা... ... কিন্তু গল্পলের মূল ঘটনা জেনেতো একটু খারাপ লাগলো এইবার... ...

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

অপু তানভীর বলেছেন: লাগলে আর কি ! বাস্তব জীবন তো আর গল্পের মত হয় না !

১৯| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১৮

নিয়ামুল ইসলাম বলেছেন: আমার হৃদয় অনেক নরম কিন্তু এই ধরনের অন্যায়ের ক্ষেত্রে ইস্পাত কঠিন হতে সেকেন্ড ও দেরি হবে না।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

অপু তানভীর বলেছেন: ভালুতো :):)

কিন্তু একবার বিয়া কইরা ফালাইলে এতি জোর থাকে না ;)

২০| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

শান্তির দেবদূত বলেছেন: গল্পটা তেমন ভালো লাগেনি, কাহিনী দূর্বল; তবে লেখার স্টাইলের কারনে বড় হলেও একটানে শেষ পর্যন্ত পড়তে পারলাম।

ইস,সব শশুড় যদি এমন হইতো!

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩১

অপু তানভীর বলেছেন: :D :D
সবাই পাইবে না

২১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪

খাঁজা বাবা বলেছেন: পটে গেলেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.