নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আমার নিরক্ষর কিন্তু বুদ্ধিমতী মায়ের কাছ থেকে এই শিক্ষাই পেয়েছিলাম,যথাযথ কর্তব্য পালন করেই উপযুক্ত অধিকার আদায় করা সম্ভব। - মহাত্মা গান্ধী

পদাতিক চৌধুরি

হাই,আমি পদাতিক চৌধুরী।পথেঘাটে ঘুরে বেড়াই।আগডুম বাগডুম লিখি। এমনই আগডুম বাগডুমের পরিচয় পেতে হলে আমার ব্লগে আপনাদেরকে স্বাগত।

পদাতিক চৌধুরি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফ্রম সাতক্ষীরা সাতক্ষীরা টু বেলগাছিয়া ( খন্ড-১/পর্ব১২)

২০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৪৮



ক্রমশ কোলাহলটা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।পাশ ফিরে শুয়েও তার তীক্ষ্ণতা এতটুকু কমলো না। কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ করে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকি। ভেবেছিলাম খানিকবাদেই হয়তো শব্দটা মিলিয়ে যাবে। কিন্তু না! আমার অনুমান সঠিক ছিল না। মিলিয়ে তো যায়নি উল্টে পরিষ্কার মনে হলো শব্দটা যেন আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে।ক্রমশ তার প্রাবল্য আরও স্পষ্ট হতে থাকে। এমন নিশুতি পরিবেশে চারদিকে গাছ গাছালিতে ঘেরা বন্য প্রকৃতির মাঝে সবাই যখন নিশিযাপন করছে; কেউবা আবার নাক ডাকানির মধ্যে দিয়ে গভীর ঘুমের সাক্ষ্য তুলে ধরছে আর ঠিক তখনই দূর থেকে ভেসে আসা উন্মত্ত জনতার কোলাহল আমার মনের সুস্থিতিকে বিপন্ন করে তুলেছিল। আমি ভীষণই অস্বস্তি অনুভব করি। কিছুক্ষণ পর আর এভাবে শুয়ে থাকা সম্ভব হলো না। চোখ ঘষতে ঘষতে উঠে বসি। মনে কুডাক ডাকতে থাকে, তাহলে কি সত্যিই দাঙ্গাবাজরা আমাদের সন্ধান পেয়ে গেছে? আগাম সতর্কতা সংকেত হিসেবে বিকালে হালদার বাবু এক প্রকার জোর করে আমাদেরকে গোলা ছাড়তে বাধ্য করলেন- তাতেও শেষ রক্ষা হবে না? ক্ষণিকেই দুর্ভাবনার গাঢ় মেঘ ভয়াল অন্ধকারের ন্যায় আমার মনোরাজ্যকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। মূহুর্তেই একটা অস্থিরতা দমকা হাওয়ার মতো সবকিছুকে এলোমেলো করে দেয়।আমি এক্ষণে জীবন অংকের হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হলাম। আমার চিন্তাশক্তি যেন থমকে গেল। নাটকের যবনিকাপাতের মতোই চোখের সামনে ঘনান্ধকার নেমে এলো।পরের দৃশ্য অবশ্য আমার আর মনে নেই।

যখন জ্ঞান ফিরলো, দেখলাম দাদা বাপজান নুরুল চাচা স্বপন কাকার সঙ্গে আশেপাশের আরও কয়েকজন অপরিচিত ব্যাক্তি আমাকে ঘিরে বসে বা দাঁড়িয়ে আছেন। সবারই চোখেমুখে উৎকণ্ঠার শুকনো দৃষ্টি। সকলের এমন চাহনিতে এবার শুরু হলো আমারি অস্বস্তি। সর্বপ্রথমে যে প্রশ্ন মাথায় চলে আসে, পরিধেয় বস্ত্র ঠিক আছে তো? কোনক্রমে হাত দিয়ে অনুভব করি সেটা যথাযথই আছে। নিজের অন্তরে এমন নিশ্চিত হতেই মনে প্রশ্ন জাগে,তাহলে কি কারণেই বা তারা এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে আড়াল করি, আমি ছোট তাই বলে এতটা ছোট্ট নই যে আমার দিকে এমন হ্যাংলার মতো তাকিয়ে থাকতে হবে। যাইহোক এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে কোনো বিকল্প উপায় না পেয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়ে অন্য পাশ ফিরে আবার চোখ বন্ধ করি। উদ্দেশ্য এতগুলো লোকের সামনে থেকে নিজেকে আড়াল করা। উল্লেখ্য সেদিন গ্রামের অপরিচিত ব্যাক্তিরাই আমার প্রতি বেশি আন্তরিকতা দেখিয়েছিলেন। আমার অভিব্যক্তিতে সম্ভবত লাজুক লাজুক ভাব প্রকাশ পাওয়ায় তারা আমাকে অভয় দিয়ে জানালেন,
-তোমাদের আর কোনো ভয় নেই খোকা। আমরা সবাই এখন তোমাদের পাশে।
আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, ওনারা কেন একথা বলছেন কিম্বা আমারিই বা কি হয়েছে। অস্ফুটে বলে ফেলি,
-আপনারা কি তৈরির কথা বলছেন আমি তো ঠিক বুঝতে পারছি না?
এবার একজন আরেকজনকে আমার মাথার কাছ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বললে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি সরে যেতেই দৃষ্টি গেল, বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকারের পুরু চাদর উন্মোচন করে দূরের ঐ শহরের পানে। আগুনের লেলিহান শিখার মতোই পশ্চিম আকাশ তখন রীতিমতো দীপ্তময়। মাঝ আকাশ পর্যন্ত তার উজ্জ্বল্য বিকশিত।এতদিন শহরে থেকেছি কিন্তু এমন আলো ঝলমলে নৈশালোক প্রত্যক্ষ করার সু্যোগ ইতিপূর্বে কখনও হয়নি। আমি সরল মনে প্রফুল্ল চিত্তে বলেই ফেলি সেকথা,
-আহা! কি সুন্দর আলোয় আলোকিত রাতের আকাশ। বাবুদের ওখানে এতদিন থাকলেও রাতের বেলায় অন্ধকারে থাকতে হত। এই স্থানে এত উজ্জ্বল আলো কখনও চোখে পড়ে নি। মনে হয় জায়গাটা বাবুদের এলাকার চেয়েও উন্নত...

আমার কথা শুনে আশপাশের লোকেরা একে অন্যের সাথে মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকে। পাশেই একজনের সঙ্গে চোখাচোখি হতেই দেখি ভদ্রলোক আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছেন। বুঝতে পারলাম না ওনার এমন করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকানোর কারণই বা কি। তার মধ্যে অন্য একজন অত্যুৎসাহী জানাল,
- তুমি এক দিক দিয়ে ঠিকই বলেছ খোকা।রাতের আকাশের আলো ঝলমল দেখতে আমরা সবাই কম বেশি পছন্দ করি।একটু আগে তোমার দাদার সঙ্গে এই কথাই হচ্ছিল। আমাদের আশেপাশের মানুষদের ভালোলাগার বহর সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোনো ধারণা নেই।প্রত্যেকে নিজের ভালোলাগাকে গুরুত্ব দেয়। ঠিক একই রকম ভাবে ভালোবাসে ওরাও যারা আরেকটা সম্প্রদায়ের রক্ত দিয়ে হোলি খেলতে বদ্ধপরিকর। তোমার দাদার সঙ্গে আলাপ না করলে বিষয়টি আমার কাছেও অজ্ঞাত থেকে যেত। যাইহোক এই অদ্ভুত ভালোলাগার আনন্দে এমনি একটা গোষ্ঠী হত্যাযজ্ঞের নেশায় মেতেছে। কাজেই বুঝতেই পারছো,এই অকাল আলো একজনের স্বপ্ন পূরণ আরেকজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার কৌশল; ভিটেমাটি সহায় সম্পত্তি নিশ্চিহ্ন করার অভিসন্ধি; সবংশে নির্মূল করার চক্রান্ত। এখন তুমিই বলো,
- আকাশে ওটা আসলে কিসের আলো?
আমি ঠোঁট দুটো সামান্য উন্মোচিত করে অস্ফুটে বলে ফেলি,
-বু..জ..তে...ই পারছি আলোটা তাহলে দা..ঙ্গা..র!

অস্বীকার করবো না, উনার প্রথমদিকের কথাগুলো আমার মাথায় উপর দিয়ে চলে গেছিলো। সেদিন বিকেল থেকে বহুবার দাঙ্গা কথাটা শুনে শুনে মনের মধ্যে প্রোথিত হয়ে গেছিল। এক্ষণে ভদ্রলোক দাঙ্গার স্বরূপ তুলে ধরাতে ভাসা ভাসা ধারণা স্বচ্ছ হলো।।তবু আমার মন যেন কিছুতেই তাতে সাড়া দিল না। কেবলই মনে হচ্ছে, না এসব কিছুই নয়; আসলে অন্য কোনো কিছু থেকে এই আলোর উৎপত্তি। আমি একটু কিন্তু কিন্তু করতেই উনি আবার বলতে লাগলেন,
-প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কোথাও বড়ধরনের আগুন লেগেছে। সবাইকে সচেতন করতেই তারা চিৎকার করছে। আমরা বাইরে এসব নিয়েই বলাবলি করছিলাম। কিন্তু তোমার অস্বাভাবিকতার কারণে আমরা এখানে এসে তোমার দাদার কাছ থেকে গোটা ঘটনাটা জানার পর স্পষ্ট হয় যে এটা নিছক দুর্ঘটনা বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা নয়। বরং ইচ্ছে করেই কোথাও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। লোকজন এসময় নাকি হিংসার উন্মত্ততায় মেতে ওঠেছে। নিজেদের উদ্দীপ্ত করতেই তারা একধরনের পৈশাচিক আনন্দে চিৎকার করছে। আগেও বলেছি তুমি গোঙাচ্ছিলে বলে মসজিদ থেকে চিৎকার করাতেই আমরা ছুটে এলাম।আর এসে শুনলাম তুমি নাকি এই হল্লা শুনেই জ্ঞান হারিয়েছ। তবে তোমাদের কোন ভয় নেই খোকা। তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমাও..আজ রাতে আমরা মসজিদ পাহারা দিব। পাহারা দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই বাস্তবে বুঝতে পারলাম আমরা কতটা সংকটের মধ্যে পড়েছি। এক্ষণে দিনের বেলায় হালদার বাবুর সেই ভয়াল রূপটি আরও একবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো।

সে রাতে আর ঘুম আসেনি। একসঙ্গে এতজন লোকের কথাবার্তায় এমনিতেই একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল।আমরা মসজিদের দাওয়ায় বসে অনেক রাত পর্যন্ত গল্পগুজব করতে থাকি। গভীর রাতে প্রতিবেশীরা যে যার বাড়ি চলে যায়। আমরা ততক্ষণে বসে থাকি। শেষের দিকে একটা সময় আর চোখের পাতা খুলে রাখতে পারছিলাম না। অবশেষে সকাল বেলায় আমরা একটু ঘুমানোর সুযোগ পাই। সেদিন আমি অবশ্য অনেক বেলা করে উঠেছিলাম। উঠেই দেখি মসজিদের সামনে যথেষ্ট মানুষের ভিড়। বুঝতেই পারি বাকিরা অনেক আগেই উঠে গেছে। যাইহোক গ্রামবাসীরা ঠিক করে, এখন থেকে প্রত্যেক রাতে গ্রাম পাহারা দেওয়া হবে। দুদিন পরে আমরা খবর পাই গ্রামের এক লোকের বাজারে দর্জির দোকান ছিল। হামলাকারীরা দোকানটিকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।দোকানে পৌঁছানোর আগে পরিচিত একজন ভিন্ন সম্প্রদায়ের বন্ধু ওনাকে আপাতত বেশ কয়েকদিন ওদিকে যেতে নিষেধ করেছেন।ঘটনাটা শোনার পর আমরা প্রচন্ড বিমর্ষ হয়ে পড়ি।দাদা কেন জানি বারবার বলছিল,
-হালদার বাবুর গোলাটাকে নিশ্চয় ওরা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।লোকটা বড্ড ভালো ছিল গো;বড্ড ভালো ছিল।
দাদা অনেকটা বিলাপের সুরে আরও বলল,
-শুধু আমাদের মতো ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে কাজে লাগানোর জন্যই উনি নিজের সম্প্রদায়ের রোষানলে পড়েছেন। দাদার উদ্বিগ্নতা আমাদেরকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছিল। কিন্তু অসহায় ভাবে হাহুতাশ করা ছাড়া আর যে কিছুই করার ছিল না। এসময় প্রতিদিন গ্রামে আপডেট খবর আসছিল। মসজিদটাই হয়ে উঠেছিল সর্বশেষ খবর পরিবেশনের কেন্দ্র। এমন একটা অসহিষ্ণু পরিবেশে গ্রামবাসীরা আমাদের প্রতি ভীষণই আন্তরিকতা দেখায়। কোনো অবস্থাতেই পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে গ্রাম না ছাড়তে আমাদের পরামর্শ দেয়। উল্লেখ্য এমন বিপদের সময় ওনাদের আন্তরিক ব্যবহার আমাদেরকে মুগ্ধ করেছিল।যেখানে একরাত থেকে পরেরদিন ফুফুর বাড়ি ছাড়ার পরিকল্পনা ভাবা হয়েছিল সেখানে পরবর্তী সময়ে ওদের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে আমরা প্রায় মাসাধিক সময় ওখানে থাকতে বাধ্য হই।

সন্ধ্যার পর পরই আগত মুসল্লিদের মধ্যে থেকে দল বা উপদল তৈরি করে মূল রাস্তার সামনে ও পেছনে পাহারা দেওয়ার প্রথা চালু হয়।গ্রাম পাহারা দেওয়ার তাদের উদ্যমতা ছিল চোখে পড়ার মতো।প্রত্যেকেই লাঠিসোঁটা নিয়ে তৈরি থাকতো। মাঝে মাঝে নিজেদেরকে উদ্দীপ্ত করতে জোরে জোরে চিৎকার করত‌। আমরা গ্রামের মাঝে মসজিদে অবস্থান করতাম। রাতের বেলায় পাহারা আর সকাল বেলা ঘুম- এভাবে চক্রাকারে আমাদের দিন কাটছিলো। উল্লেখ্য এসময় আর আমাদেরকে রান্না করতে হতো না। গ্রামবাসীদের মধ্যে থেকেই প্রতিদিন আমাদের জন্য খাবার আসতো। কিন্তু এভাবে থাকতে থাকতে আমরা অধৈর্য হয়ে উঠি।দাদা একদিন প্রস্তাব দিল,
- আপনাদের সহযোগিতা পেলে দলুজ বাড়িটির চারপাশে দেওয়াল তুলে পাকাপাকি ভাবে মসজিদ তৈরি করা যেতে পারে। গ্রামবাসীরা এককথায় রাজি হওয়াতে পরের দিন থেকে আমরা মসজিদের দেওয়াল তৈরির কাজে নেমে পড়ি। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা চারদেওয়াল বিশিষ্ট স্থায়ী মসজিদ তৈরি করতে সমর্থ হই।

জোবাইদা ফুফুর প্রতি শুরুতে তৈরি হওয়া অভিমান উত্তরোত্তর রাগে পরিনত হয়। শুরুতে যে কারণে ওনাদের দলুজ ঘরে আশ্রয় নিলেও ওনার নাম মুখে আনিনি। কিন্তু বেশ কয়েকদিন যেতেই মনের ক্লেদ ফ্যাকাশে হতে থাকে। একদিন সন্ধ্যায় দাদাকে জিজ্ঞেস করি ফুফুর কথা।দাদা নিচু গলায় পরে বলবো জানিয়ে আমাকে অন্য প্রসঙ্গে নিয়ে যায়। ঠিক দু'দিন পর আবার জিজ্ঞেস করতে, আশেপাশে কেউ নেই দেখে দাদা জানাই,
-জোবাইদা আপন বোন না হলেও আপন বোন অপেক্ষা কোন অংশে কম ছিল না। কিন্তু এমন একটা কাজ করেছে যার পর থেকে ওর নাম আমরা মুখে আনি না।ও আমাদের কাছে একপ্রকার মৃত।
আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে ফেলি,
-কি করেছে ফুফু?
-তুমি অনেকটা ছোট। এসব নিয়ে তোমার সঙ্গে আলোচনা আমার সাজে না।
রহস্য উন্মোচনের দ্বারে এসে ব্যর্থ হব? না তা হতেই পারে না। আমিও এবার জোর দিয়ে বলি,
- না আমি এখন এত ছোট নই। যথেষ্ট বড় হয়েছি।আজ তোমাকে বলতেই হবে।
আমার জেদের কাছে দাদা হার মানে। এবার চোখেমুখে কিছুটা সতর্কতার শর্ত চাপিয়ে জানালো,
-কেউ যেন কোনদিন না জানতে পারে দাদু। জোবাইদা বিয়ের পর মুবারকের এক দূর সম্পর্কে ভাইয়ের সঙ্গে পালিয়ে গেছে।তার পর থেকে ওর সঙ্গে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই।
এখানে আসা পর্যন্ত জোবাইদা ফুফুর সামনে না আসার কারণটি স্পষ্ট হয়। মনের অজান্তেই একটা একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে।
কিছুক্ষণ থেমে দাদা আবার বলল,
- জোবাইদা চলে যাওয়ার পর মুবারক আমাদের ওখানে বেশ কয়েকবার গেছিল। কিন্তু আমরা লজ্জায় আর ওদের বাড়িতে আসতাম না।
দাদার কথার সুর ধরে বলে ফেলি,
-এখন বুঝতে পারছি, কেন সেই প্রথম দিন থেকেই মনে মনে খুঁজে গেলেও একদিনের জন্যও ফুফুকে সামনে দেখতে পাইনি।

কয়েকদিন যেতেই হালদার বাবুদের খবরাখবর জানার জন্য দাদা উদগ্রীব হয়ে ওঠে। নুতন পরিবেশে নানান কাজে ব্যস্ত থাকলেও সামান্য ফুসরত পেলেই মুখে হালদার বাবু হালদার বাবু করতে থাকে।আগে কাছে থেকে মানুষটার মহত্ত্ব অতোটা চোখে পড়েনি। কিন্তু এখন দূর থেকে দাদার মুখ থেকে নানান গুণের কথা জানতে পেরে ও নিজের চোখে দেখা কিছু মহত্ত্বের পরিচয় উপলব্ধি করে মানুষটা আমার হৃদয়েও শ্রদ্ধার আসনে আসীন হন। দাদার ব্যাকুলতা দেখে একদিন গিয়ে খোঁজ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করি। উপস্থিত সকলেই আমাকে নিষেধ করে; এমন বিশৃঙ্খলা অশান্তির সময় শহরে যাওয়া ঠিক হবে না বলে। অপ্রত্যাশিতভাবে ঠিক তখনই স্বপন কাকা এগিয়ে আসে। আমার ঘাড়ে হাত রেখে জানায়,
- আমিই যাব বাবুদের খোঁজ নিতে.
দাদা প্রথমে আপত্তি করলেও বাকিরা সবাই সম্মতি দিলে দাদাও অবশেষে সম্মতি জানায়। অস্বীকার করবো না এই প্রথম স্বপন কাকার কাছে একপ্রকার হীনমন্যতা উপলব্ধি করি। কাকার ধর্মীয় পরিচয় যে আমাদের চারপাশের পরিবেশে নিরাপদ এই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে।



মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: সংখ্যালঘুরা সব দেশেই অবহেলিত। অথচ খোদার দুনিয়ায়তে সবারই সমান অধিকার।

দাদা প্রথম প্যারা তে কেন জ্ঞান হারালো বুঝলাম না। কি দেখে?

২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:৪৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ছোট ভাইকে।হ্যাঁ সবদেশেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে অবহেলিত হয়। কিন্তু কি আর করা যাবে।নিয়তি কে মেনে নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
জ্ঞান হারিয়েছে কারণ নিশুতি রাতে দাঙ্গাবাজদের উন্মত্ত কোলাহলের আতঙ্কে নিজের স্বাভাবিকত্ব হারিয়ে ফেলে।
শুভকামনা প্রিয় ছোট ভাইকে।

২| ২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টের সাথে যে ছবিটা ব্যবহার করেছেন- সেটা কি নদী? না সমুদ্র?
আর গরু গুলো এখানে এলো কি করে? গরু গুলো কার? ছবিতে কি ৬ টা গরু?

২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট ভাইয়ের আবার মন্তব্যে আসায় আনন্দ পেলাম ধন্যবাদ ভাইকে। ছবিটির নিচে সময় এবং তারিখ উল্লেখ করা আছে। সময় আমরা দীঘার পার্শ্ববর্তী রোজভ্যালি সিবিচে ঘুরতে গেছিলাম। সকালবেলায় একদল গুরুকে এভাবে সমুদ্রের মধ্যে পা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়েছিলাম। বুঝেছিলাম প্রভাতের নির্মল আলো-বাতাসকে গরুরা কতটাই না ভালবাসে। ওদের স্বাস্থ্যসচেতনতার প্রশংসা না করে পারি না। ছবিটি দেখে ভাইয়ের মনে এমন প্রশ্ন জাগায় মজা পেলাম; আবারো ধন্যবাদ ভাইকে।
শুভকামনা রইল।

৩| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:১৯

জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার!
তবে এতো লম্বা সময় নিয়ে একটা পর্ব প্রকাশিত হলে আগের পর্বের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়-এক্ষেত্রেও আমার বেলা তাই হয়েছে।

২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সুন্দর একটি প্রেরণাদায়ক মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় ভাইজানকে। চেষ্টা করি ব্লগে যাতে আরো নিয়মিত হতে পারি কিন্তু পারিপার্শ্বিক চাপে সম্ভব হচ্ছে না।যে কারণে পর্বের মধ্যে দীর্ঘ বিরতির জন্য আপনাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া খুবই স্বাভাবিক আমিও এখানে ক্ষমাপ্রার্থী। তবে চেষ্টায় আছি যাতে এই ব্যবধান কমানো যায়।

পোষ্টটিতে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

৪| ২১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:১৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: সংখ্যালঘু অত্যাচার সব জায়গায় বেড়ে গিয়ে তবে আমাদের তা নিয়ে পচা রাজনীতি চলে

২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ঠিকই বলেছেন নেওয়াজ ভাই। সংখ্যালঘুদের উপর অমানবিকতা আমরা ইতিহাসে বারবার পড়ে এসেছি বর্তমানে তা প্রত্যক্ষ করছি। কিন্তু মুখে যে কিছুই বলা যাবেনা। উপমহাদেশে ধর্মীয় উগ্রতা হানাহানি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
পোষ্টটিতে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।

অফুরান শুভেচ্ছা আপনাকে।

৫| ২১ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:৪১

ইসিয়াক বলেছেন: হালদার বাবুদের খবরের অপেক্ষায়.......

২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। পরবর্তী পর্বে আপনার প্রশ্নের উত্তর পাবেন বলে আশা করছি।
পোস্টটিতে like' করাতের প্রেরণা পেলাম ;কৃতজ্ঞতা জানবেন।

শুভেচ্ছা নিয়েন।

৬| ২৩ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৪:২৭

করুণাধারা বলেছেন: গল্প বরাবরের মতই আকর্ষণীয়, আমার ভালো লাগা বোঝাতে প্রথম লাইকটাই যথেষ্ট। সময়ের অভাবে মন্তব্য করতে পারিনি।

তবে কথোপকথনের মধ্যে "ভিন্ন সম্প্রদায়" কথাটা ঠিক লাগেনি। হিন্দু বা মুসলমান উচ্চারণে অসুবিধা কোথায়?

আরেকটা কথা, জোবায়দা ফুফু দাদার বোন হলে সম্পর্কে ফুফু হন কিভাবে?

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: " গল্প বরাবরের মতই আকর্ষণীয়, আমার ভালো লাগা বোঝাতে প্রথম লাইকটাই যথেষ্ট। সময়ের অভাবে মন্তব্য করতে পারিনি।"-গল্প আকর্ষণীয় মনে হওয়াতে এবং প্রথমে আপনার লাইক পেয়ে প্রেরণা পেয়েছি আপু। আমি জানতাম আপনি একটু সময় পেলে ঠিকই আসবেন।ব্লগ হলো আমাদের আত্মা। দিনশেষে একবার আসা চাই চাই। যে কারণে আপনার আগমন নিয়ে নিশ্চিন্ত ছিলাম বা থাকিও।

"তবে কথোপকথনের মধ্যে "ভিন্ন সম্প্রদায়" কথাটা ঠিক লাগেনি। হিন্দু বা মুসলমান উচ্চারণে অসুবিধা কোথায়?"-আপনার খারাপ লেগেছে জেনে দুঃখিত। তবে আমি ইচ্ছে করেই সম্প্রদায়টা এড়িয়ে গেছি। সরাসরি উল্লেখ না করলেও পরোক্ষভাবে সেটাই উল্লেখ করেছি। একজনের মুখনিঃসৃত কথা এতটা বোল্ডলি বললে হয়তো ঐ বিশেষ শহরবাসীর ভাবাবেগে আঘাত লাগতেও পারে। পুরানো ঘটনা উদ্দেশ্য সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া। বিতর্কিত অংশটাকে যতটা লঘুকরে দেখানোর চেষ্টা। আশাকরি আপু এবার আর আগের অবস্থানে থাকবেন না।

"জোবায়দা ফুফু দাদার বোন হলে সম্পর্কে ফুফু হন কিভাবে?"- আপু আগের পর্বের সম্ভবত একদম শুরুতে উল্লেখ করেছি জোবাইদা ফুফু বাপজানের চাচতো চাচাতো বোন উল্লেখ করেছি।

পরের পর্ব খুব শীঘ্রই দেবার চেষ্টা করবো। বরাবরের মতো পাশে পাবো আশাকরি।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

৭| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৯

মা.হাসান বলেছেন: আগেও বলেছি তুমি গোঙাচ্ছিলে বলে মসজিদ থেকে চিৎকার করাতেই আমরা ছুটে এলাম।আর এসে শুনলাম তুমি নাকি এই হল্লা শুনেই জ্ঞান হারিয়েছ।

আমার একটা ধারণা হয়েছিলো মামু চাচারা শহর থেকে অনেক দূরে চলে এসেছেন। আগুন বা আলো রাতের আকাশে দূর থেকে দেখা গেলেও এত দূর থেকে হল্লার আওয়াজ আসবে ভাবি নি।

ফুপু মারা গেলেও ফুপার সাথে যে সম্পর্ক থাকতে পারতো, যা ঘটেছে এর পরে সে সম্পর্ক থাকার কথা না; বরং সেই সময়ে যে আতিথেয়তা তারা দেখিয়েছেন এটাই অনেক।

পোস্টের শেষে আপনার সাসপেন্সের সিগনেচার না থাকায় অবাক হলাম :P
এই পোস্টে দেড়শতের নিচে ভিউ দেখে ব্যথিত হলাম। রাত ১১টায় পোস্ট না দেবার অনুরোধ থাকলো। সম্ভব হলে সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে সাতটার মাঝে দেবেন, বা সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দুটার মধ্যে দেবেন। এত রাতের পোস্ট সকলের অগোচরেই পরের পাতায় চলে যায়।
অনেক শুভকামনা।

০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:২৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: "আগেও বলেছি তুমি গোঙাচ্ছিলে বলে মসজিদ থেকে চিৎকার করাতেই আমরা ছুটে এলাম।আর এসে শুনলাম তুমি নাকি এই হল্লা শুনেই জ্ঞান হারিয়েছ।"- আপনার ধারণা সঠিক। তবে একটা শহরের যে প্রান্তে হালদার বাবুর গোলা অবস্থিত ছিল শহরের অপর প্রান্ত‌ থেকে সামান্য দূরে এক্ষণে মামুচাচাদের আশ্রয় স্থল।যে কারণে শহরের এমন কোলাহলের শব্দ তাদের গ্রামে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। দ্বিতীয়তঃ শব্দের প্রাবল্য যেহেতু রাতের বেলা অনেক দূর গিয়ে থাকে সে দিক থেকে দিনের বেলা যে শব্দ শোনা সম্ভব নয় একই শব্দ রাতের বেলা শোনা যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।

"ফুপু মারা গেলেও ফুপার সাথে যে সম্পর্ক থাকতে পারতো, যা ঘটেছে এর পরে সে সম্পর্ক থাকার কথা না; বরং সেই সময়ে যে আতিথেয়তা তারা দেখিয়েছেন এটাই অনেক।"-এই অংশটি খুব রহস্যময়। আপনার মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে - দেখে খুশি হলাম। পরবর্তী পর্বগুলোতে চোখ রাখুন আশা করে উত্তর পেয়ে যাবেন।

"পোস্টের শেষে আপনার সাসপেন্সের সিগনেচার না থাকায় অবাক হলাম :P
কোথাও অবাক কোথাও বা বিস্ময়! এসব নিয়েই তো আমাদের আগামীর পথচলা। আমরা স্থান বিশেষ কেবল তাকেই অনুসরণ করছি।হেহেহে....

"এই পোস্টে দেড়শতের নিচে ভিউ দেখে ব্যথিত হলাম। রাত ১১টায় পোস্ট না দেবার অনুরোধ থাকলো। সম্ভব হলে সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে সাতটার মাঝে দেবেন, বা সকাল এগারোটা থেকে দুপুর দুটার মধ্যে দেবেন। এত রাতের পোস্ট সকলের অগোচরেই পরের পাতায় চলে যায়।"-সুন্দর পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। আগামীতে আপনার দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পোস্ট দেওয়ার চেষ্টা করব।
নিরন্তর শুভকামনা আপনাকেও।




৮| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৩৭

মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন: সংখ্যালঘুরা সব জাগায়ই অবহেলিত। এর একটি বিহিত হওয়া খুবই জরুরী।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভসন্ধ্যা প্রিয় সাখাওয়াত ভাই। সহমত আপনার সঙ্গে যে সংখ্যালঘুরা সব জায়গাতেই অবহেলিত। কিন্তু এর বিহিত তো দূরের কথা এখন গুজরাটের দাঙ্গা দিল্লির পর পশ্চিমবঙ্গের দোরগোড়ায় ধাক্কা দিচ্ছে। দীর্ঘ বাম জামানায় এবং মাঝে কিছু বছর মমতাজি কোনক্রমে তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেও পশ্চিমবঙ্গের বাবুসম্প্রদায় এখন খৈনি পার্টিকে উদ্বাহু সহকারে সুস্বাগতম জানাতে প্রস্তুত। কাজেই আশা করাই যায় মোদিজীর লালরঙের হোলি খেলা গুজরাটের পর দিল্লির পর পশ্চিমবঙ্গের ঘটতে চলেছে।
তবে কপালে যাই থাকুক বাস্তবকে তো মানতেই হবে।
ভালো থাকুন সবসময়।

৯| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:৪১

রাকু হাসান বলেছেন:

কেমন আছ ভাইয়া।অনিয়মিত.. বাট ভুলি কিভাবে। ভাই অন্তরে আছে।নির্বাচন নিয়ে খুব ব্যস্ত নাকি।
তৃণমূল ঠিকবে এবার?

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আগে একরকম ছিলাম। কিন্তু তোমাকে পেয়ে ভীষণই খুশি হয়েছি। পুরানো মানুষদেরকে ফিরে পেলে যেমন এক অকৃত্রিম আনন্দ হৃদয়ে তরঙ্গায়িত হয় এখন আমি তেমনি আনন্দিত। আশাকরি এখন তুমি সমস্ত সমস্যা কাটিয়ে উঠেছ।
নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ততা ছিলাম না। মমতাজি পশ্চিমবঙ্গকে দুর্বৃত্তায়নের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। কিন্তু তবুও কষ্ট করেও হলেও বেঁচে আছি। কিন্তু এবার যে সামনে গুজরাট মডেলের আশঙ্কা। আমরা একপ্রকার পিটিয়ে আছি। পশ্চিমবঙ্গের বাবুরা দেরিতে হলেও খৈনি পার্টিকে উদ্বাহু সহকারে সুস্বাগতম জানাতে প্রস্তুত। কাজেই গুজরাট দিল্লির লাল হোলি খেলার আশঙ্কায় আমরা আশঙ্কিত।
তৃণমূল হয়তো বা ভোটে জয়ী হবে কিন্তু বহু জয়ী বিধায়ক পা বাড়িয়ে আছে বিজেপিতে যাওয়ার জন্য। প্রচুর অবৈধ ইনকাম আছে সেসব কে বৈধ করতেই বিজেপিতে যাওয়া অবশ্যম্ভাবী। কাজেই তৃণমূল হয়তো ভোটে জিতবে কিন্তু সরকার গড়বে বিজেপি।
অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট ভাইকে।



১০| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৮

ওমেরা বলেছেন: ছোট বেলায় আমার নানীর কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কথা শুনেছি উনারা তখন কিভাবে দৌড়ে পালাতেন এক গ্রাম থেকে একগ্রাম। আপনার গল্পের এই পর্বটা পড়ে সেই রকম মনে হল।
ধন্যবাদ ভাইয়া । ভালো থাকবেন।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুভ সন্ধ্যা আপু। অনেক দিন পর আপনার কমেন্ট পেয়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
"ছোট বেলায় আমার নানীর কাছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কথা শুনেছি উনারা তখন কিভাবে দৌড়ে পালাতেন এক গ্রাম থেকে একগ্রাম। আপনার গল্পের এই পর্বটা পড়ে সেই রকম মনে হল।"-ঠিকই বলেছেন আপু। প্রাণের দায়ে কখনোবা দাঙ্গাবাজ দের হাত থেকে রক্ষা পেতে সর্বশান্ত মানুষেরা পলায়ন করতো অচেনা অজানা জগতে।

আপনাকেও ধন্যবাদ। নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।

১১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৬

আনমোনা বলেছেন: আগের পর্ব থেকে এ পর্বে আসতে একটু হোঁচট খেলাম, ভাবছিলাম মাঝে কিছু মিস করলাম কিনা। পরে বুঝলাম একবারে অনেকখানি এগিয়ে গেছেন।
দাঙ্গার প্রভাব শিশুমনে সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন। ভালো লাগলো।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: "আগের পর্ব থেকে এ পর্বে আসতে একটু হোঁচট খেলাম, ভাবছিলাম মাঝে কিছু মিস করলাম কিনা। পরে বুঝলাম একবারে অনেকখানি এগিয়ে গেছেন।"-ঠিকই ধরেছেন। একটু এগিয়ে গেছে। আপনি নিয়মিত পাঠক; আশাকরি লিংক পেতে অসুবিধা হয়নি।

"দাঙ্গার প্রভাব শিশুমনে সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন। ভালো লাগলো।"-অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। দাঙ্গা যেন উপমহাদেশের এক পরম্পরা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কতশত মানুষকে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে তার হিসেব নেই। অপ্রিয় হলেও কৈশোরের স্মৃতি মামু চাচাকে সারাজীবন ধরে তাড়া করিয়েছে।
আশাকরি আগামীতেও এভাবে আপনাকে পাশে পাবো।
শুভেচ্ছা জানবেন আপু।

১২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫০

ইসিয়াক বলেছেন: দীর্ঘ একমাস পাঁচদিন গত হইয়া গেল......... তবু দিবস রজনী আমি নিশিদিন আশায় আশায় থাকি। :(

২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: পরিস্থিতি অনুকূলে নয়। কিছুদিন না গেলে এসব বিষয়ে মন দিতে পারছিনা।

১৩| ১৯ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৬:২৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং শিশু মনে এর কুফল বেশ ভাল ভাবেই গল্পে প্রকাশ পেয়েছে। গল্পের ভাষা প্রাঞ্জল ও সাবলীল। গল্পে পাঠকের আগ্রহ এবং কৌতুহল অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

"রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টের সাথে যে ছবিটা ব্যবহার করেছেন- সেটা কি নদী? না সমুদ্র? আর গরু গুলো এখানে এলো কি করে? গরু গুলো কার? ছবিতে কি ৬ টা গরু?" - মাত্র দু'টি লাইনে উনি অনেকগুলো প্রশ্ন করেছেন। তবে ওনার অন্য প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলেও, শেষ প্রশ্নটার উত্তর দেয়া হয়নি কিন্তু!

একটা লেখা পোস্ট করার 'শুভসময়' সম্পর্কে আপনাকে দেয়া মা.হাসান এর উপদেশটা এখন থেকে আমিও কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। আমারও সাম্প্রতিক কয়েকটা পোস্ট বেশি রাতে পোস্ট করাতে স্বল্প-পঠিত থেকে গেছে। এখন একটা লেখা মাত্র শতবার পঠিত হলেও সেটাকে সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।

গল্পে একাদশতম ভাললাগা রেখে গেলাম। + +

২২ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
"দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং শিশু মনে এর কুফল বেশ ভাল ভাবেই গল্পে প্রকাশ পেয়েছে। গল্পের ভাষা প্রাঞ্জল ও সাবলীল। গল্পে পাঠকের আগ্রহ এবং কৌতুহল অক্ষুণ্ণ রয়েছে।"-আপনার এমন উপলব্ধিতে শ্রদ্ধা। ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।

"রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টের সাথে যে ছবিটা ব্যবহার করেছেন- সেটা কি নদী? না সমুদ্র? আর গরু গুলো এখানে এলো কি করে? গরু গুলো কার? ছবিতে কি ৬ টা গরু?" - মাত্র দু'টি লাইনে উনি অনেকগুলো প্রশ্ন করেছেন। তবে ওনার অন্য প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলেও, শেষ প্রশ্নটার উত্তর দেয়া হয়নি কিন্তু!"- হ্যাঁ স্যার মাত্র দুটি লাইন। কিন্তু প্রশ্ন বহুল। শেষ প্রশ্নটি অসাবধানতা বশত উত্তর দেওয়া মিস হয়ে গেছে।সরি স্যার। আপনাকেও উত্তরগুলো আবার দিচ্ছি।
ওটা নদী নয় একটা সমুদ্র সৈকত নাম রোজ ভ্যালি (দীঘার নিকটবর্তী)
সকাল বেলা নাকি গরুগুলো ওখানে আসে। আমরা যেমন এদিনে ওদেরকে ওভারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওরা নাকি পাশেই লোকালয়ের দিকে চলে যায়।
‌ যে প্রশ্নের উত্তরটি দেওয়া হয়নি-নাহা! ছবিতে কেবলমাত্র ছয়টি গরু ছিল না। আরো অনেকগুলো ছিল। বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। ছবিতে একসঙ্গে ছয়টা পাশাপাশি থাকায় ওদের ছবি তুলেছিলাম।


"একটা লেখা পোস্ট করার 'শুভসময়' সম্পর্কে আপনাকে দেয়া মা.হাসান এর উপদেশটা এখন থেকে আমিও কাজে লাগাতে চেষ্টা করবো। আমারও সাম্প্রতিক কয়েকটা পোস্ট বেশি রাতে পোস্ট করাতে স্বল্প-পঠিত থেকে গেছে। এখন একটা লেখা মাত্র শতবার পঠিত হলেও সেটাকে সৌভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে।"- পোস্ট দেওয়ার টাইমিংটা খুব বিবেচনা বিষয়।আগেও মা.হাসান ভাই এমন সূক্ষ্ম অবজারভেশন অত্যন্ত সমাদৃত।


গল্পে একাদশতম ভালোলাগা ও ডাবল প্লাসে অনুপ্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা আপনাকে।

১৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৩৬

আনমোনা বলেছেন: এর পরের পর্ব আসবেনা?

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৪৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অবশ্যই আসবে। মাঝে তমোময়ী সিরিজটি শেষ করে আবার বেলগাছিয়াতে ফিরে যাবো।পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। শুভেচ্ছা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.