নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের আইউব আলী স্যার **************************

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৩

প্রাইমারি স্কুল পাস করে আমি জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার শাখা ছিল ক। যারা বাইরের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আসে তাদেরকে ক শাখায় নেয়া হতো। হাইস্কুল থেকে যারা ৫ম শ্রেণী পাস করে আসত তারা থাকত খ শাখায় । তারা ছিল অপেক্ষাকৃত ভাল ছাত্র। তবে আমার ক শাখায়ও অনেক স্কুলের প্রথম স্থান অধিকারীরা ছিল। তারা দেখতাম ধামধাম করে সব অংক করে ফেলত। আমি খুবই অসহায় বোধ করতাম।অংকটা আমার কাছে সারা জীবনই ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে গেল। জীবনের কোন অংকই ঠিকমতো মেলাতে পারলাম না।

৬ষ্ঠ শ্রেণীতে যে শিক্ষকের পড়ানো আমার ভালো লেগেছিল তিনি ছিলেন জনাব মোঃ আইউব আলী মিয়া। এই স্যারের পড়ানো আমার এতো ভাল লেগে গেল যে আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

আমাদের ক্লাসের ইংরেজি প্রথম পত্র নিতেন তিনি। উনি যে চ্যাপ্টারটি পড়াতেন তা ছিল তার মুখস্ত। ক্লাসে একবারও বই দেখতেন না। ফলে আমি দ্রুত তার মহাভক্ত হয়ে গেলাম। তিনি প্রথম যে কবিতাটি পড়িয়েছিলেন তা হলো :

Two Little black birds
Sitting on a wall
One called peter
And the other called Paul.
How are you Peter?
Not good at all.
How is your Broter?
Not bad at all.
Goodbye Peter
Goodbye Paul
Come back Peter
Come back Paul.

পরে জেনেছিলাম, বাস্তবিকই তিনি অনেক ভাল ছাত্র ছিলেন। দারিদ্র্য আর নানান ঝামেলায় তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। যোগ দেন তার নিজেরই স্কুলে শিক্ষকতার কাজে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। যিনি শিক্ষকতাকে নিয়েছিলেন একটি মহান ব্রত হিসাবে সেখানে তার জীবনে আসে মহাবিপদ। তিনি কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। সম্ভবত ১৯৮৯ কিংবা ১৯৯০ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্কুলের ছাত্রদের সুবিধার্থে একটি গ্রামার বই লিখেছিলেন। তখন তো মুদ্রণ কাজ আজকের মতো এতো উন্নত ছিল না। ফলে তাকে অনেক টাকা কর্জ করতে হয়েছিল। সে টাকা তার উঠে আসেনি।

তার কথা প্রায়ই অনেক মনে পড়ে। ছোট্ট একটি কন্যাকে রেখে যিনি চলে গেলেন অসীমের পানে। রেখে গেলেন ছোট্ট একটি কন্যা ও তার মাতাকে।
জগতে কষ্টের কোন শেষ নেই।

সম্ভবতঃ আইউব আলী স্যারের কারণে কিনা জানি না, আমি কেমন যেন ইংরেজি একটু একটু বুঝতে শুরু করলাম। সাথে সাথে অন্যান্য বিষয়ও । পড়াশোনা আমার ভালো লাগতে শুরু করলো।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: গণিতটা আমার নিকট সবচেয়ে সহজ ছিলো। ঐ বিষয়ে আমি একশতে একশ নম্বরও পেয়েছি।

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আমার কোন প্রাইভেট টিউটর কিংবা হাউস টিউটর ছিল না।
স্যারেরা ক্লাসে তেমন বুঝাতের না।
ফলে পড়াশোনা আমার জন্য যমের মতো।
তারপরও আমি প্রথম বিভাগে সায়েন্স নিয়ে পাস করেছিলাম।
বিজ্ঞানও হিসাবরক্ষনে লেটার মার্ক সহ।
স্যারদের সহযোগিতা পেলে ৪/৫ টা লেটার পেতাম।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৩

করুণাধারা বলেছেন: আইয়ুব আলী স্যারকে নিয়ে আপনার স্মৃতি কথা ভালো লাগলো।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: উনাকে সর্বশেষ দেখি সম্ভবত ১৯৮৯ সালে।
কেমো দেয়াতে মাথায় একটা চুলও ছিল না।
দেখে কি যে খারাপ লেগেছিল।
প্রকৃতির কাছে মানুষ খুব অসহায় ।
এক সময় হয়তো মানুষ ক্যান্সার জয় করবে।
কিন্তু কত লাখ লাখ মানুষ ক্যান্সারের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে তার কোন হিসাব নিকাশ নেই।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


উনার পরিবারের এখন কি খবর?

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:০০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:



আমি কিছুই জানি না। হয়তো বেঁচে আছে।
শুনেছিলাম- উনার স্ত্রীর বিয়ে হয়েছে।
নতুন স্বামীর বাড়িতে চলে গেছে।
মেয়েটা পড়েছিল ভয়াবহ বিপদে।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৩

নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: স্যার এখন কেমন আছেন?

১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:০৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:




মৃত্যুর পর মানুষ কেমন কেমন থাকে সেটা জানার মতো কোন যন্ত্র আজ অবধি আবিষ্কার হয়নি।
৪২ বছর প্রতীক্ষায় আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.