somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কিছু বলতে চাই

১৪ ই জুন, ২০২২ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(জিন্নাত আলি। ছবি: Click This Link)

বেশ ক'বছর পর আবার এই সাইটের ভার্চুয়াল বোর্ডে লিখছি। জানি না, কি লিখতে যাচ্ছি।

কুমিল্লায় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আসন্ন। মনে পড়ছে আগেরবার ভোটের কয়েক মাস আগে ওখানে ছিলাম। দারুণ উপভোগ্য ছিলো ভ্রমণটা। চমৎকার অভিজ্ঞতা। ভোরে চট্রগ্রাম থেকে কুমিল্লা আসি। সেটাই প্রথম কুমিল্লা ভ্রমণ। সত্যি নানারকম অভিজ্ঞতা লাভ করেছি সেই ভ্রমণ থেকে। যার সবটাই আনন্দের। অল্প দুয়েকটা বেদনারও থেকে থাকবে। মনে পড়ছে, মাঝরাতে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে টার্মিনালের কাছে এক রেস্টুরেন্টে বসে ছিলাম। চব্বিশ ঘন্টার রেস্টুরেন্ট। সে সময় বিদ্যুৎ ছিলো না। আমার মুখোমুখি চেয়ারে বসে দাড়িওয়ালা এক ভদ্রলোক বুটের ডাল পরোটা খাচ্ছিলো। জেনারেটরের মৃদু আলো চারপাশে। লোকটার খাবার দৃশ্য বড্ড ভালো লাগলো। ইচ্ছে হলো ফ্রেম বন্দী করি। ওমনি তখনকার নকিয়া লুমিয়া ৮২০ ফোনটা মুখোমুখি তুলে ক্লিক। তৎক্ষনাৎ শক্তিশালী ফ্ল্যাশের সাদা আলোয় ভরে উঠলো চারপাশ। লোকজন খাওয়া ফেলে আমাকে দেখতে লাগলো অবাক বিস্ময়ে। আমি তখন ব্যাগ মোবাইল নিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। পাঁচ ফিট নয় ইঞ্চি লম্বা, জাতীয় সনদপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক মানের এ্যাথলেট। একবার গেট পেরোলেই কেউ ধরতে পারবে না। এমন দৌড় দিবো! হে হে হে। বিপদজনক কিছু ঘটেনি অবশ্য। মুখোমুখি বসে থাকা সেই কান্তিমান ভদ্রলোক স্মিত হেসে বুঝিয়ে দিয়েছিলো যে, কিছু মনে করেনি। সহজভাবে নিয়েছে। সত্যি, দারুণ একজন মানুষ। পরিষ্কার মনে পড়ছে চেহারা। ছবিটি ভালো আসেনি দেখে ডিলিট করে দিয়েছিলাম। বড়ো আফসোস হচ্ছে আজ, কোনওভাবে যদি সংগ্রহে রাখা যেতো!

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময়কার ঘটনা। চোদ্দ পনেরো বছরের কিশোর তখন। ধানমন্ডি লেক পার্কে ছিলাম। বেশ রাত। সে সময় জিগাতলায় বড়ো বোনের বাসায় থাকতাম। কাছাকাছি এক জায়গায় দেখলাম প্রচুর ভিড়। অগণ্য মানুষের হৈচৈ মিছিল শ্লোগানে গমগম করছে চারিদিক। কৌতুহল হলো। এক পর্যায়ে হাটতে হাটতে পৌছে গেলাম সেখানে। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি সুধা সদন। তখনকার জাতীয় পার্টির অন্যতম শীর্ষ নেতা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মিজানুর রহমান চৌধুরী দল ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে এসেছিলেন। তারই সাজসাজরব হৈ হুল্লোড় চারিদিকে। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে খুব কষ্টেসৃষ্টে মিজানুর রহমান চৌধুরীকে এক পলক দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো। চিকন গোফওয়ালা, ক্লিন শেভ গাল, কালো ফ্রেমের চশমা, দীর্ঘাকৃতির প্রবীণ ভদ্রলোক ধীরগতির মাইক্রোতে বসে আছে চুপচাপ। চারদিকে তুমুল শ্লোগান হাততালি চিৎকার চেচামেচি অবিরাম। ‘মিজান ভাই মিজান ভাই।’ বিশ বিশটি বছর কেটে গেছে মাঝে! মিজানুর রহমান চৌধুরী গত হয়েছেন সেও বেশ ক'বছর। আহা সময়! মনে হচ্ছে যেন গতকালকেরই কথা। সুধা সদনের সামনে হাফ প্যান্ট পরা কিশোর উপভোগ করছি, মিজানুর রহমান চৌধুরীর জাতীয় পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান। সেই নির্বাচনে অবশ্য আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়। তাই তার সে যোগদান বিফলে গিয়েছিলো বলা যেতে পারে! হা হা হা।

এখানে সেখানে প্রচুর সেলিব্রিটিকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এর মধ্যে সবচেয়ে উপভোগ্য ছিলো একদিন রমনা পার্কে বাংলাদেশের দীর্ঘতম মানুষ জিন্নাত আলিকে দেখা। সত্যি, ভাষায় প্রকাশ করার নয় সে অনুভূতি। হঠাৎ সেদিন বিকেলবেলা আবিষ্কার করলাম, তাল গাছের মতো লম্বা ছেলেটা পার্কের বেঞ্চে বসে। আচ্ছা আজ থাক, বাকিটা হয়তো আবার কোনওদিন লিখবো। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, জিন্নাত আলি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। কাছাকাছি সময়ে গত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন তার মৃত্যুতে। খুব স্নেহ করতেন। জীবিতাবস্থায় চিকিৎসার জন্য অনেক সহযোগিতা করেছেন। পৃথিবীর সর্বকালের সবচেয়ে লম্বা বিশজন মানুষের তালিকায় জিন্নাত আলিও আছে। সত্যি, তাকে দেখার সে অভিজ্ঞতা অতুলনীয়। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। সেদিন পার্কে আমি এক প্রকার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলাম, সকলের কাছে জিন্নাত আলিকে পরিচয় করিয়ে দিতে। বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ। ওপারে ভালো থাকুক জিন্নাত আলি। আমি যে তার সম্বন্ধে এতো ভালো জানি, ব্যাপারটা স্বয়ং জিন্নাত আলিকেও বিস্মিত করেছিলো। আনন্দের স্মৃতি হয়ে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২২ দুপুর ১২:০৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×