এরকম ছবি নিশ্চিতরূপেই পৃথিবীতে খুব সামান্য তোলা হয়েছে। আমি অন্তত আমার জীবনে কখনও দেখিনি। আপনাদের কারও এরকম অভিজ্ঞতা আছে কিনা মন্তব্যে জানালে খুশি হবো। ছবিতে ঢাকার ৬ নাম্বার লোকাল বাসের ভিতরে ডান দিকে রড ধরে দাঁড়িয়ে আছে যে আনুমানিক বছর ত্রিশের যুবক, সে একজন পকেটমার। (অনিবার্য কারণে ছবিতে তার মুখ সেন্সর করা হলো।) ঘটনা বেশ আগের। সাত আট বছর তো হবেই। এতোদিন পর আজ আর কিছুতে নিশ্চিত হতে পারছি না, ছবিটি ঠিক কখন তুলেছিলাম, ঘটনার আগে না পরে!
সিটে বসে দেখছিলাম। বাসে উঠে কেমন ইতস্ততভাব যুবকের। দাঁত দিয়ে নখ কামড়াচ্ছে। এদিকওদিক তাকাচ্ছে বিক্ষিপ্তভাবে। কেমন ভয় চোখেমুখে। এভাবে ভিড়ের মধ্যে একপর্যায়ে দেখলাম, পাশে দাঁড়ানো মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোকের পাঞ্জাবির পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছে। প্রায় পয়তাল্লিশ সেকেন্ড হাতড়ে বেরোলো। কিন্তু বিধি বাম। পকেট খালি। কিছুক্ষণ পর বাস থেকে নেমে যায়। খুব সম্ভবত ঘটনার পরই তুলেছিলাম ছবিটা।
যাই হোক এক পর্যায়ে লক্করঝক্কর ৬ নাম্বার বাসটা ফার্মগেটে চলে এলে অনেকের সঙ্গে আমিও নামি। এসময় বাসে যার পকেট কাটার চেষ্টা হয়েছিলো, সেই ভদ্রলোককেও পেয়ে যাই। ভিতরে কিছু না থাকায় বেঁচে যায় সৌভাগ্যক্রমে। সেও নেমেছে। বললাম, ‘চাচা, ব্যাপারটা বুঝলাম না, বাসের ভিতর একজন আপনার পকেট মিনিট খানেক হাতাহাতি করলো। কিন্তু আপনি তো কিছুই করলেন না। কোনোই ভাবান্তর হলো না। অদ্ভুত।’ ভদ্রলোক হাসে। ‘হ্যা এরকম হয় লোকাল বাসে। পকেটমার চোরটোর ওঠে।’ ও এবার বুঝলাম, নো মানি নো টেনশন। হে হে হে। চাচার প্রতিক্রিয়া দেখে না হেসে পারলাম না।
ঘটনাটা ভোলার নয়। সেই যুবককে সেখানে পকেট কাটতে হাতেনাতে ধরেছিলাম। চাইলে সিনক্রিয়েট করে বিপদে ফেলতে পারতাম। ইচ্ছেমতো গণপিটুনি দিতো উপস্থিত জনতা। প্রাণেও মেরে ফেলতে পারতো। কিন্তু আমি চাইনি। পকেট কাটতে ব্যর্থ হয়েছিলো বলে নয়। যাই হোক, পাঞ্জাবি পরা চাচাকেও ভুলবো না। মিনিট খানেক একজন লোক তার পাঞ্জাবির পকেট ইচ্ছেমতো হাতাহাতি করলো, কিন্তু কোনওরকমের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই! আসল ঘটনা হয়তো সেটাই, পকেটে কিছু নেই। তাই টেনশনও নেই। হে হে হে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৩:২৭