somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তঃপুরবাসিনীর অন্তর্দহন: পর্ব-২ ও ৩

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

।।--।। পর্ব-২

দুই; রাজহংসের রাজত্বে পেখমহীন ময়ুরী:
পুরুষ প্রজাতি যে নারীর অন্যতম কাউন্টারপার্ট সেটা নানা কারনেই ঘটেছে। কারন যাই হোক, সত্যিটা হল এটাই, পুরুষ নারীর প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্বীকৃত। তার অনেক কারনের মধ্যে এটাও যে, বাস্তবে খুব সামান্য কিছু ক্ষেত্রে নারীর আপাত পশ্চাতপদতা থাকলেও আসলে সম্ভাবনা, সক্ষমতা ও শক্তিমত্তায় সে পুরুষের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। সুলতানা রাজিয়া, দেবী চৌধুরানী, ঝাঁসির রাণী কিংবা আমাদের প্রিতিলতাদেরই দেখুন। তাতেই পুরুষের এত ভয়। স্থান হারানোর ভয়, কর্তৃত্ব হারানোর ভয়। আর তাইতে, সমাজে, পরিবারে, রাষ্ট্রে অনবরত একটি প্রচেষ্টা চলে নারীকে সচেতনভাবে দাবিয়ে রাখার, দমিয়ে দেবার, তার হতে ছিনিয়ে নেবার। তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার। না, ধর্মভয় বা ধর্মীয় আচারকে দায়ী করলে সেটা খুব একপেশে হবে। কারন প্রকৃত ধর্মীয় জ্ঞান আমাদের খুব সামান্যই আছে। আর যা আছে, তার বিকৃত প্রয়োগের দায় ধর্মকে দেয়া যাবে না। ধর্ম যতটা না নারীকে অবরুদ্ধ করেছে, ধর্মের পান্ডাদের স্বার্থান্ধ প্রয়াস তার চেয়ে ঢের বেশি করেছে। সাত্ত্বিক বা আত্মিক-সব রূপেই এই অবদমনের উপস্থিতি টের পাবেন কান পাতলেই।

তিন; ভগিনী, মাতা, জায়া আর ব্রাত্য সমাজ:
চতুর সমাজ ও অবশ্যই প্রতিক্রিয়াশীল পুরুষশাসিত দৃষ্টিকোণ সচেতনভাবে প্রচার করে থাকে একটি গল্প। কী সেই গল্প? “When you have one single wife in life, she will fight with you but when you have two wives in life, they will fight each other for you." নারী কি নারীর শত্রূ হতে পারে? অবশ্যই পারে। যখন নারীকে কেবল মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করবেন, তখন নারীরাও নারীদের শত্রূ। বিশ্বজুড়ে, বিশেষত বাংলাদেশে নারী নিগ্রহ, অসম্মান, নির্যাতন, শোষণ ও প্রতারনার যত ঘটনা ঘটে, তার একটি বড় সংখ্যকের মূল অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই ঘটনার মূলে কোনো না কোনোভাবে নারীর অস্তিত্ব আছে। এক সময়ে বাড়ির বউ হিসেবে যে মেয়েটি নির্যাতিত হয়ে প্রতিনিয়ত ঈশ্বরের দরবারে বিচার দিয়েছে, সেই যখন পূর্ন বয়সে আরেকজন নারীর মা বা শাশুরি হয়ে বসে, সেই হয়ে ওঠে, তারই মতো আরেকজন নারীর মূর্তিমান বিপদ। আজীবনের নিপীড়ন, শোষণ, নির্যাতন, দমন ও অবদমন নারীকে নিজেকে একসময় তার অজান্তেই আরেক নারীর ওপর ভিনডিকটিভ, এ্রগ্রেসিভ ও পোজেসিভ করে তোলে। বুঝতে না পারলে জনাব হুমায়ুন আহমেদের অয়োময় নাটকটিতে মির্জা সাহেবের মা, অর্থাৎ মিজ দিলারা জামানের কিছু ডায়লগ দেখবেন। আমাদের হাজারো লেখায় বারবার শাশুরি, ননদ, বধূ, জা-এই নামগুলো উচ্চারিত হলেও, বাস্তবতা হল, এমনকি মায়েরাও তাদের মেয়েদের জন্য নানা সময়েই পুরুষের মতোই নির্যাতকের ভূমিকায় নেমেছেন। পূত্রবধূ হয়ে উঠেছেন আরেক পূত্রবধূর হন্তারক। বাজারে একটি কুকথা প্রচলিত আছে। দু’জন, দশজন ছেলে একত্রে একটি ঘরে অবলীলায় থাকতে পারে। কিন্তু দু’জন নারী? কক্ষনো নয়। এই লেখা যার অনুপ্রেরণায় লেখা তিনি একজন নারী। তার বয়ানেই শুনুন কিছুটা,

”আমারা মেয়েরাই মেয়েদের প্রধান শত্রূ...............!! এবং শিক্ষিত সমাজ ব্যবস্থায় সেটা আরও বেশি নোংরা। .........ভাবছেন কি বলছি! অবাক হবেন না মোটেই.........আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি...........মেয়েরা নিজেদের কে পণ্য ভাবতে বেশি পছন্দ করে......আমার সংখ্যায় ছেলে বন্ধু বেশি..... চলতে কমফোর্ট ফিল করি........যত নোংরামো হয় বেশির ভাগই মেয়েদের কারনেই হয় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে। এতো নিচু মানের চিন্তা ভাবনা মন মানসিকতা.......ছেলেরা কখনো ভাবেই না.......অবশ্য দোষ গুণ মিলিয়েই মানুষ; কেউ ফেরেস্তা নই!! ..........দুর্বলের হাতে ক্ষমতা অতি ভয়ংকর।”

যা বলছিলাম। অবশ্যই কারন আছে এই বৈপরীত্যের। কিন্তু কারন এখন মূখ্য নয়, কার্যফল নিয়ে এই লেখা। পরিবারে মেয়েকে অধিকার বঞ্চিত করা, নারীর জন্য নারীর ঘর ভাঙা, ছেলের চেয়ে মেয়েকে খর্ব করে রাখা, যৌনশ্রম বিক্রীর ব্যবসাকেন্দ্রে বিক্রী করা হতে শুরু করে এমনকি নিজ স্বামীর দ্বারা নিজ কন্যার ধর্ষনকে অগ্রাহ্য করা-সাম্প্রতিক অতীতে কোন পথে নারী কর্তৃক নারী নিগ্রহ ঘটেনি-খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। কতকটা আপন গরজে, কতকটা দীর্ঘ চর্চার ফলে, কতকটা সমাজের চাপে পুরুষের ইচ্ছা ছাড়াই নারীরা স্বতস্ফূর্তভাবে আরেকজন নারীকে পাঁকে নামিয়েছে-এমন ঘটনা আকছার ঘটছে।

চার; রঙ্গিলা আকাশে ওড়ে অন্তরের হাউষ:
মিডিয়া নারীর বন্ধু নাকি শত্রূ-সেটা এক কথায় বলা কঠিন। নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার নিয়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবশ্যই আছে মিডিয়া। নারীর যেকোনো বিপদে সহযোগীতা নিয়ে দাড়ায় মিডিয়া। আবার সেই মিডিয়াই তাকে নামিয়েছে গ্ল্যামার, রূপ, বিজ, শো-অফের পণ্য হবার মহান ব্রতে। সেটা মিডিয়ার অস্তিত্বের প্রয়োজনেই। নারীর নিজ রুপ, মোহ, আকর্ষন, বায়োলজিক্যাল প্রোপার্টি তার গর্ব ও বিক্রয়যোগ্য অধিকার সত্যিই কিনা-তা নিয়ে আরো গভীর ও একাডেমিক গবেষনা হতেই পারে। তবে নারী নামক পণ্য ছাড়া মিডিয়া ও শো-বিজ জগত অচল। কনজ্যুমার কালচার নির্ভর পূঁজিবাদী অর্থনীতি, এর ত্রাতা গ্লামার বেজড মিডিয়া ও ভোগবাদী সমাজ নারীকে, নারীত্বকে, নারীর মূলত শরিরী আবেদনকে পয়সায় কেনে, বিকোয় রীতিমতো দরদাম করে। বেশি দামে যে বিকোয়, তাকে পুরষ্কৃত করে। নিজেকে বিক্রী করার ক্ষমতা ও স্বভাবকে মিডিয়া নারীমুক্তির তকমা দিয়ে নারী নামক পণ্যের প্রসার ঘটায়। কথায় বলে দশ চক্রে ভগবান ভূত। চারিদিকে যখন নারী পণ্যের জয়জয়কার, তখন কি নারী, কি পুরুষ-সবার মাথা ঘুরতে বাধ্য। সাম্প্রতিক সময়ে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন, এক্সপ্লয়টেশন কিংবা ক্যাপিটালাইজেশন অথবা একেবারেই তার বিপরীত, অর্থাৎ এমপাওয়ারমেন্ট নিয়ে ব্যপক বিতর্ক চলছে। যদিও নেগেটিভ বক্তব্যের ধারক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষরা। পজিটিভ নারীরা। তবে ব্যতিক্রম আছে। ভাল সংখ্যাতেই।

পাঁচ; লাগা চুনাড়ি মে দাগ:
যদি বলি, সময়, সমাজ, সভ্যতা, ইতিহাস ও বাস্তবতাও নারীর মিত্র নয়, বিশ্বাস করবেন? আচ্ছা ভাবুন তো, কবে হতে নারীরা “মেয়ে মানুষ” হয়ে উঠল? সৃষ্টির শুরু হতে পরবর্তি একটি দীর্ঘ সময়তো তারা পুরুষের সমান সমান যোগ্য সহকর্মী বা সহযোদ্ধা হিসেবে টিকে থাকার যুদ্ধে সমান তালে তাল দিয়ে গেছে। তাহলে কবে হতে, নারী হয়ে উঠল একটি নাজুক, স্পর্শকাতর, কোমল, কমনীয়, নাদুস নুদুস ও স্রেফ শোকেসে পরম যত্নে সাজিয়ে রাখার মতো আদরের বস্তু? কবে হতে তাকে আগলে রাখার, যত্নে রাখার বস্তুতে পরিণত হল? নিজের সুরক্ষার ভার নিতে কবে হতে সে অক্ষম হল? সেও তো বর্ষা হাতে একসময় অসুর বধ করত। আমার মনে হয়, যেদিন হতে মানুষ স্রেফ টিকে থাকার সভ্যতা হতে অবসরভোগী ও নিরাপদ জীবনের সন্ধান পেয়েছে, সেদিন হতে এর শুরু। টিকে থাকা, মানে ব্যাসিক সারভাইভাল যখন হাতের মুঠোয় সহজে চলে এলো, তখনই মানুষ ডোমিনেটিং ও পোজেসিভ হতে শিখল। তার থেকেই নারীকে সহজেই ডোমিনেট করার উপযোগী পাওয়া গেল। কারন সে আকারে তুলনামূলক ছোট ও দুর্বল। তাকেই তাই সহজ টার্গেট করা হল। আর ডোমিনেশনকে সহজ ও সহজাত করে তুলতে তাকে নানা প্রক্রিয়াতে ও ছলনাতে আবদ্ধ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নারীর সৌন্দর্য, গ্লামার, নিরাপত্তা, সতীত্ব, সম্ভ্রম, আবডাল-বিষয়গুলোর উদ্ভব। তাকে বোঝানো হল, বা বুঝতে বাধ্য করা হল, যে, তোমার সতীত্ব, তোমার সম্ভ্রম তোমার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। এই জিনিসে দাগ লাগল মানে তুমি ব্রাত্য হয়ে গেলে। যুগ যুগ ধরে সচেতন বা অবচেতনভাবে নারী (ও পুরুষকেও) এই মানসিক বিশ্বাস দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। আমাদের চারপাশে ‘সতীত্ব’ ও সম্ভ্রমের এক কাল্পনিক মিথ নিয়ে আমরা বেড়ে উঠি। পুরুষ সতীত্ব খোঁজে, নারী সতীত্ব পূঁজে। এই অনুচ্ছেদ পড়লে একচেটিয়াভাবে পুরুষরা (এমনকি নারীরাও) আমাকে গাল দিতে বসে যাবেন। যে, তবে কি আপনি নারীর ’সতীত্ব’ ও কুমারিত্বকে অহেতুক মনে করেন? আমি সেই প্রশ্নের জবার দেবার চাইতে বরং আপনাদের জিজ্ঞেস করব, ওই তথাকথিত সতীত্ব যার হাতে বিনষ্ট হয়, তার সতীত্ব নিয়ে কি কখনো প্রশ্ন হয়? তার কি কোনো পরীক্ষা হয়?

সতীত্ব, নারীর সবচেয়ে মারাত্মক অথচ হাস্যকর প্রতিবন্ধক। এই একটিমাত্র আরোপিত প্রতিবন্ধক (কিংবা তথাকথিত অহংকার) তাকে সারাজীবন পঙ্গু করে রাখে। আরোপিত বলছি এজন্য যে, নারীর সতীত্ব যদি সত্যিই কাজের কিছু হয়ে থাকে, তবে পুরুষর সতীত্ব জিনিসটাও থাকত। দুঃখের বিষয়, সেটি নেই। যেই সত্যযুগ বা আদি যুগকে নিয়ে আমরা গর্ব বা আফসোস করি, সেখানেও ছিল না। বরং তখন পুরুষকে এক সর্বভূক প্রাণী হিসেবে মেডেল দেয়া হত। বহু সমাজেই একাধিক নারীকে স্ত্রী কিংবা দাসী হিসেবে স্রেফ লাম্প্যট্যসুলভ ভোগকে সমাজ অফিশিয়ালী স্বীকৃতি দিত। নারীকে দমন, নিপীড়ন, অবদমিত করে রাখার সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র এটি। অসংখ্য কারনেই নারীর এই আরোপিত বৈশিষ্ট তাকে ডোমিনেট করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আর নারীরাও জেনে, বুঝে কিংবা অনিচ্ছায় এই অস্ত্র তার পূঁজারীদের হাতে তুলে দেয়। সিনেমা, নাটকে নারীর এই অসহায় আত্মসমর্পনকে পূঁজি করে ডায়লগ থাকে, “তোরে তো বিয়া করতে পারলাম না, তাই তোরে নষ্ট করুম।” একটি জাতির সার্বিক সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সভ্যতাবোধের অন্যতম স্মারক তার সাহিত্য, সিনেমা, পত্রিকা, সামাজিক মাধ্যম। ওইসব মাধ্যমের চিত্র সমাজে নারীর অবস্থান চিত্রিত করে দেয়। ধর্ষিত হলে সব শেষ, কুমারীত্ব ভঙ্গ মানেই এঁটো হয়ে গেল-এই অহেতুক আতঙ্কের জন্মদাতা বা সৃষ্টিকর্তা পুরুষ ও নারী-সবাই। কারন ব্যক্তিক ও ধান্দাবাজ স্বার্থে নারী ও পুরুষ কোনো দূরত্ব নেই। ওখানে দুইপক্ষেই হরিহর আত্মা। আরোপিত ও তথাকথিত সতীত্ব নিয়ে অষ্ট্রপ্রহর দুঃশ্চিন্তা, অব্যখ্যাত সভ্রমের সন্ধান, জড়ভরত পোষাক চয়ন, খোমার সৌন্দর্য নিয়ে মিথ্যা প্রচারনা, দুর্বল শারিরীক মুভমেন্ট ক্ষমতা, পারিবারিক গঠন প্রকৃতি, ধর্মীয় আইনের অপব্যখ্যা, পুরুষের ওপর আজন্ম নির্ভরশীলতার পাঠ-এগুলোই নারীর নারী হয়ে থাকার কারন। এ থেকে যদি বের হতে পারে, তবে কেউ তাকে দাবিয়ে রাখতে পারত না। হ্যা, পশ্চিমা দেশে উন্মুক্ত যৌনাচার কিংবা টপলেস থাকার স্বাধীনতা এই বিপদের চিকিৎসা অবশ্যই নয়। উগ্রভাবে সমাজের বা তার আচারের উল্টোধারায় চললেই নারীর মুক্তি অর্জিত হয়ে যায় না। যে কারনেই মিজ তসলিমা নাসরিনের ’নারীর যৌনতার স্বাধীনতা, ইচ্ছার স্বাধীনতা ও ক্ষমতার অধিকারের দাবী’তে খোদ নারীরাই চরম বিরোধীর ভূমিকায়। মিজ সানি লিওনীর (তথাকথিত) অন্ধকার জগত হতে মূলধারায় ফিরে আসার সবচেয়ে বড় সমালোচক ও তীর্যক মন্তব্যকারী নারীর সংখ্যাও কম নয় সেজন্যই।



/-অন্তঃপুরবাসিনীর অন্তর্দহন-/

।।--।। পর্ব-৩ ও সমাপ্তি


ছয়; নারী তোর পরিবার আছে?:
একটা কবিতার লিংক দিই। সময় পেলে শুনবেন: ও মেয়ে তোর বয়স কত_ শতাব্দী রায়:

পরিবার। একজন নারী শুধু নন, যেকোনো মানুষেরই পরম নিরাপত্তার আধার হবার কথা। তবে দুর্ভাগ্যজনক হল, যেদিন হতে পুরুষ ও নারীর আর্থিক, অর্থনৈতিক, বাহুবলের বিভেদ ও সুপ্রিমেসি/ইনফেরিয়রিটির জন্ম, সেদিন হতেই পরিবারে নারী একজন দ্বিতীয় শ্রেনীর সদস্য। হ্যা, সব পরিবারে অবশ্যই না। তবে সিংহভাগে। পরিবার প্রথার জন্ম যখন হয়, তখন সম্পদের ওপর দু’য়ের নিয়ন্ত্রণ ছিল সমান। কিন্তু যুগ পরিক্রমায় তা হয়ে গেছে একপেশে। যেভাবেই বলুন আর যেই সমাজেই বলুন, আমাদের বিদ্যমান সংস্কৃতি পরিবারে একজন নারীকে কেবল স্ত্রীর ভূমিকায় দেখে অভ্যস্ত, যে স্নেহশীলা, মায়ার আধার, কিন্তু সে কখনোই একজন সমান সমান সদস্য নয়। মেয়ে জন্ম নিলে অদূর ভবিষ্যতে সে এই পরিবার ছাড়বে এবং অন্যের পরিবার আলোকিত করবে-সেই ভাবনাটি ভেবেই রাখা হয়। হ্যা, সময় পরিবর্তনের ফলে মেয়ে জন্মালে তাকে অনাদর করার হার ব্যপকহারে কমে গেছে। বদলেছে দৃষ্টিভঙ্গী। কিন্তু অনেকখানেই আজও পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানের ম্যাচিওর হওয়া বাকি। “বিয়ের পর স্বামীর ঘরই মেয়েদের আসল ঘর” এই দৃষ্টিভঙ্গীর বদল খুব একটা আজও হয়নি। সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার নিয়ে কথা বলতে গেলে খোদ নারীবাদ নিয়ে সোচ্চার পুরুষ সমাজকর্মীরাই বেঁকে বসবেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে এই নিয়ে কিছু কথা বলেছেন কি বলেননি, গোটা দেশে যেন হঠাৎ করে ইসলামী শরিয়াত (প্রকৃতপক্ষে ওয়ারেশ আইন মানা) মানা ধার্মিকে বান ডাকে। কারনটা পরিষ্কার-সম্পত্তি হারানোর ভয়। যদিও, আজও আমাদের গ্রামাঞ্চলে বাবা বা মায়ের সম্পত্তি মেয়েদের বুঝে পাবার সফলতা অত্যন্ত ক্ষীন। অনার কিলিং নামে জঘন্য একটি প্রথা উপমহাদেশের দুটি দেশে প্রবলভাবে প্রচলিত আছে। যার পারিবারিক শিকার একচেটিয়াভাবে নারী। যে পরিবার হবার কথা ছিল, নারীর পরম আপন আশ্রয়স্থল, সেই পরিবারই আসলে নারীকে নারী হিসেবে গড়ে তোলে। কতকটা নিজের স্বার্থে। কতকটা নারীরই বাস্তবতায়।

সাত; সাত পাঁকে বাঁধা আমি নারী:
নারীত্বই নারীর শত্রূ। গর্বিত হতে পারেন, যে, আপনি একজন নারী। তবে সেটা নির্ভর করে আপনার উপস্থাপনে। নারীর আত্মপরিচয়ের অস্পষ্টতা ও সংকটও নারীর নিজের কন্টকহারের মতো। পুরুষরা তো বটেই, নারীরাও প্রজাতি হিসেবে এখনো ঠিক করে উঠতে পারেন নি, কোনটা তার সঠিক পথ, কোনটা তার এমপাওয়ারমেন্ট, কোনটা তাকে পণ্য বিবেচনার মন্ত্র, কোনটা তার সত্যিকারে মুক্তি। সেই কাঙ্খিত মুক্তি কি উন্মুক্ত হওয়ায়, খোলামেলা হওয়ায়, নিজেকে উজাড় করে দেয়ায়, সেই মুক্তি কি নিজের সৌন্দর্যকে বিচারের নিক্তিতে ওঠানোয়, নারীসুলভ দেহসৌষ্ঠ্যবকে শিল্পী ও কারবারির কাঁচির নিচে দেয়ায়, নাকি অর্থনৈতিক সাবলম্বিতায়, সম্পদের সমানাধিকারে, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ক্ষমতায়, পরিবারে ও সমাজে যোগ্য সিদ্ধান্তগ্রহনকারীর ভূমিকা পালনে। আছে ব্যপক বিতর্ক। আছে পাল্টাপাল্টি মত। তবে যেটাই হোক, নারীকে নারীর নিজের সিদ্ধান্ত নেবার, পছন্দ, রুচী, জীবন, জীবনবোধ, জীবনসঙ্গী নির্ধারনের স্বাধীনতা তথা নারীর মানুষ হিসেবে গণ্য করার মনোভাবে উদ্ভাসিত হওয়াটাতেই তার মুক্তি। পুরুষের নির্মীত ও আরোপিত বিধিনিষেধে নিজেকে রেশমের মতো জড়িয়ে রেখে, পুরুষের বাহুলগ্না হয়ে, পুরুষের সযত্নে লালিত শোকেস হয়ে, পুরুষের ডোমিনেশনে, তার যত্নে, সুরক্ষায়, চার দেয়ালের ঘেরাটোপের আরামের জীবনের হাতছানি কাটিয়ে আত্মশক্তি ও আত্ম পরিচয়ে সম্মান ও দৃড়তায় বিশ্বাস করার মধ্য দিয়ে তাকে নিজের স্থানটা করে নিতে হবে। ওই সংগ্রামের সামনেই নারী সাত পাঁকে বাঁধা।

আট; শেকল ভাঙার গান:
বাংলাদেশের একটি বিশাল সংখ্যক মানুষের অত্যন্ত অপছন্দের মানুষ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “দুর্বল ও নিরুপায়ের শাসন ভয়ঙ্কর।” [এই অপছন্দের কারন, খুব হাস্যকর।] অনেকেই মনে করেন, রাষ্ট্র ও সমাজে নিয়ন্ত্রক ও শাসকের ভূমিকায় নারীর বেশি বেশি দখল সার্বিকভাবে নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীমুক্তিকে ব্যপকভাবে এগিয়ে নেবে। এই এগিয়ে নেয়া মানে তাদের আজীবনের আরোপিত প্রভূ পুরুষের উপর কর্তৃত্ব করার ইঙ্গিতবহ। অনেকটা ছিনিয়ে নেবার মতো। তবে এই ক্ষমতায়ন সমাজের জন্য কোনো সুখবর বয়ে আনবে না। সমাজের ক্ষতে কোনো উপশম হবে না। কেবল পক্ষ বদল হবে। এখন নারী নির্যাতন নিয়ে কথা হয়। তখন হবে পুরুষ নির্যাতন নিয়ে। অলরেডি তা শুরুও হয়ে গেছে। পুরুষ নির্যাতন নিয়ে বেশ সরব প্রচারনা আজকাল চোখে পড়ে। আমার নিজেরও একটি দীর্ঘ লেখা আছে এই নিয়ে। দমন ও ডোমিনেশনের বদলা হিসেবে নারীকে উগ্রভাবে ক্ষমতায়নের লবিস্ট ও ফ্যানরা নারীকে তাদের অজান্তেই নিপীড়কের ভূমিকায় নামার প্রচ্ছন্ন আশকারায় বাহিত করছেন। স্বাভাবিকভাবেই নারী তার ক্ষমতায়ন ও চুড়ান্ত সত্যিকারের মুক্তির বদলে পরিবারে অনৈতিক কর্তৃত্ব ও নিপীড়ন চালানোর জন্য পদে পদে সমালোচিত হচ্ছে। ফলে নারীর মাতা মেরীর মূর্তি অপেক্ষা সংহারীরূপের কালী মূর্তি বেশি বেশি বাজার পাচ্ছে।

নয়; যেন কাঁশফুলের নরম ছোঁয়া:
ফেমিনিজম এখন এক বহুল উচ্চারিত মীথ। সমাজের পুরুষরা শুনলে তাদের কাছে হাস্যোস্পদ হয়ে উঠতে পারে। সেই ঝুঁকি নিয়েও আমি প্রতিদিন বেশ কিছু সময় কলকাতা হতে প্রচারিত বাংলা চ্যানেলের কিছু নাটক দেখি। তারই একটি ’মোহর’। যথারীতি নারীচরিত্র নির্ভর এই ডেইলী সোপে নায়িকা মোহর তার সমসাময়িক পুরুষতান্ত্রীক শাসনের মূর্ত এক প্রতিবাদের নাম। যেখানে তার বাবা, ভাই, বোন, মুরব্বীরা ক্রমাগত তাকে পাঠদান করতে থাকে, যে, নারী বিয়ের জন্যই জন্মে। বিয়ের মধ্য দিয়েই তার সত্যিকার জীবন শুরু হয়। হায় সভ্যতা। নারীর অর্থনৈতিক সাবলম্বিতা ও পেশাজীবি জীবন কি তাকে মুক্তি দিতে পারে? সমাজ অন্তত আজও এতে নিরঙ্কূশভাবে একমত নয়। কর্মজীবি নারী আজ হয়তো এক বাস্তবতা। কিন্তু পেশাজীবি নারী আজও অধরা। নারীকে সাধারনভাবে এখনো একজন সাধারন ক্যারিয়ারিস্ট হিসেবে কামনা করা হয় না। সম্প্রতি এক ভিডিওতে একজন পরিচারিকা কর্তৃক শিশুকে অত্যাচারের ঘটনা যখন সামাজিক মাধ্যমে দেখছিলাম, মন্তব্যগুলোর একটি বিরাট অংশেই দেখলাম, ওই শিশুর মা কেন বাচ্চা রেখে চাকরী করেন-তা নিয়ে ব্যপক ঘৃনার উদগীরন। তবে কি পুরুষের কিনে দেয়া বিলাস ও আর্থিক স্বাচ্ছন্দের মধ্যেই নারীর কল্যাণ? মুশকীল হল, মাঝে মধ্যেই আমাদের কাছে কিছু কিছু চাকরী দেবার বা পাইয়ে দেবার অনুরোধ আসে। যেখানে একটি সচ্ছল ও সুখী পরিবারের নারী তার স্বামীর অকাল প্রয়ানে কিংবা হঠাৎ ডিভোর্সে পুরোপুরি পথে বসে গেছেন। তখন কী করবে সে? স্বামীর বিত্তের আহ্লাদে থাকা নারীতো ততদিন তার ডানা হারিয়েছে উড়বার। পরিবার ভাঙা ও পারিবারিক অশান্তির সাথে সাথে সন্তানদের সুষ্ঠূভাবে প্রতিপালন না হবার জন্য নারীর পেশাজীবিত্বকে দায়ী করা লোকের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। কিন্তু নারীর পক্ষে তাহলে কী করার আছে? প্রথমে বাবার, তারপর স্বামীর আর তারও পরে ছেলের আর্থিক অবদানের ভরসায় জীবন ভাসাবে কি সে?


”জাগো নারী জাগো, বহ্নিশিখা”:
রাণী মুখোপাধ্যায় ও অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ব্ল্যাক ছবিটি কেউ দেখেছেন কি? মূভিটিতেে একটি ডায়লগে প্রিয় অমিতাভ বচ্চনের (দেবরাজ সাহাই) ছাত্রী, জন্মান্ধ ও বধির রাণী মুখোপাধ্যায়কে (মিশেল ম্যাকনেলী) বলা একটি ডায়লগ মনে গেঁথে থাকবে আজীবন,

"You should be proud, that you are different,"

আমার সারাজীবনের পথচলার অন্যতম পাথেয় সেই ডায়লগ।

নারীর নিজের অস্তিত্ব, যোগ্যতা, সম্ভাবনা, সৃষ্টিক্ষমতা, শিক্ষা, অবদান, ইতিহাস নিয়ে গর্বিত হওয়ার যথেষ্ট কারন আছে। নারী হিসেবে জন্ম নিয়ে, অতীত ও বর্তমানের নারীর সার্বিক অস্তিত্ব নিয়ে, বাস্তবতা নিয়ে আহত বা আশাহত হয়ে মৃয়মান হয়ে থাকার কোনো কারন আমি অন্তত দেখি না। আর অন্তঃপুরের পুরবাসিনি না হয়ে, অবগুন্ঠনে অবরুদ্ধ হয়ে না পড়ে, নন্দন কাননের নন্দিনী নামক দ্বিতীয় স্বত্তা হয়ে না বেঁচে নারীকে যে কোনো একজন মানুষ হয়ে বাঁচার মানসিকতায় আগে দীক্ষা নিতে হবে। নারীর নিজেকে নিজেই মুক্ত করতে হবে। কোনো স্পার্টাকাস কিংবা হারকিউলিস নামক পুরুষ দেবতা তার ত্রাণকর্তা নন, কিংবা দেবী আফ্রোদিতির মতো ওয়ান্ডার লেডিও নন।
সেই মুক্তি রক্ষিত হবার অসম্মান থেকে,
আগলে রাখার দায়বদ্ধতা হতে, শোকেস বা পাপেট হবার হাতছানি হতে।
আর নিজেকে নিজে চিনে নিতে;
নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে।
বধূ নয়, বঁধু হিসেবে।

জগতকে জানিয়ে দিতে, নিজের বিশ্বাসে নিতে হবে-
নারী সাদা নয়,
নারী কালোও নয়,
নারী রূপসী নয়, সুন্দরী নয়, কুচ্ছিত বা অপ্সরার প্রতিরূপ হতে নয়।
নারী শ্রীমতি নয়, মোসাম্মাৎও নয়,
নারী মিস নয়,
মিসেস নয়,
সঙ্গিনী নয়, বান্ধবী নয়,
নারী সতী নয়, অসতীও নয়,
নারী নরের স্ত্রী লিঙ্গ নয়।
নারী নরের অর্ধাঙ্গিনী নয়।
নারী মেয়েমানুষ নয়। মেয়েছেলেও নয়।

নারী কেবলই মানুষ। সবার আগে সে একজন রক্তমাংসের, মন ও মানসের, হেঁটে চলে বেড়ানো, হৃদপিন্ড ও হৃদয়বিশিষ্ট জলজ্যান্ত মানুষ।

যুগ যুগ ধরে তাকে যেই সর্বংসহার বৃত্তে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তার বাইরে এসে ভাবতে হবে। নারী যদি মনে রাখে, “ভয় করলেই ভয়, ভয় না করলে কীসের ভয়” তাহলে তাকে ভয় দেখানোর ধারাটা কমে আসতে বাধ্য। আমি নারীবাদী নই। নই পুরুষতান্ত্রীকও। আমি নারী ও পুরুষ দেখি না। দেখি মানুষ। বায়োলজিক্যালী একজন মানুষ নারী নাকি পুরুষ-এই বিভেদ আমার কাছে অত্যন্ত গৌন। নারী ও পুরুষ উভয়েরই উচিত পরষ্পরকে প্রতিযোগীর চোখে না দেখা। আমার বিশ্বাস, সমাজের সকল পুরুষ এবং অবশ্যই নারীরাও যেদিন বিশ্বাস করা শুরু করবেন, যে, নারী কেবলই একজন মানুষ, সে ‘মেয়ে মানুষ’ না, সেদিনটি হবে নারীর সত্যিকারে মুক্তির নবোদয়।

[আমি আসলে পাঠকের জন্য লিখি না। আমার ভাবনাকে স্রেফ লেখায় ধরে রাখি। তাই লেখার কলেবর বিশাল হওয়ায় কিছু করার থাকে না। লেখায় প্রকাশিত আমার ভাবনার সাথে আপনার দ্বিমত থাকলে যৌক্তিকভাবে বলুন। তবে মন হতে বলছি, আমার লেখায় তাত্ত্বিক ভুল থাকতে পারে। তথ্যগত ভুল থাকতে পারে। বানান ভুলতো অবশ্যই। সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থী। সময় স্বল্পতায় ও আরো কিছু বাস্তবতায় আমার বিশ্বাসের বিপরীতে গিয়ে বাংলা ও ইংরেজির মিশেলে লিখতে বাধ্য হয়েছি। সেজন্য মানসিক পীড়ন থাকবে। পাবলিক লেখা শেয়ার করার জন্য কোনো অনুমতি দরকার নেই। তবে লিখিয়ের নামটি না লুকালে খুশি হব। লেখার উদ্দেশ্য মোটেই নারী মুক্তি বা নারীর অসহায়ত্ব’র প্রতি সমবেদনা জানানো নয়। ভাতের স্বাদ বুঝতে যেমন লবন লাগে, তেমনি লেখাটি বুঝতে হলে আরো কিছু লেখা পড়া দরকার। সেই লেখাগুলোর লিংক দিলাম। সময় পেলে পড়বেন:
১. Click This Link
২. shorturl.at/grTZ1
৩. Click This Link
৪. Click This Link
৫. Click This Link
৬. Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×