somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলেবেলে ’এশটাটাশ’ সমগ্র

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটি আসলে একক ও সমন্বিত কোনো লেখা নয়, লেখার সংগ্রহশালা।

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে লেখা বিভিন্ন এলেবেলে পোস্টের ভাগাড় এই লেখা। পড়তে পারেন, পড়ে মাথা এলোমেলো করতে পারেন। আবার, একদম না পড়ে মাথা ঠান্ডাও রাখতে পারেন। পছন্দ আপনার।

।।--।।

এলেবেলে-১: #modesty #generousity

”তোমার বোধ, বিনয়, মনুষ্যত্বের প্রবৃদ্ধি,

যদি তোমার ব্যক্তিগত সমৃদ্ধি, growth ও অর্জনের উর্দ্ধগতির সমান না হয়,

তাহলে,

তুমি হয়তো বাড়ছ ঠিকই, তবে, মানব নয়, দানব হিসেবে।”

--জনৈক পোড়খাওয়া হেডমাস্টার।

-----------------+++

এলেবেলে-২: #Perceptualdestortion #preconceivednotion #Predominant #proguidedperception #predetermined #predefined

প্রি-ডিজাইনড, প্রো-গাইডেড চিন্তা, কাজ, সৃষ্টির কথা কখনো শুনেছেন?

একজন লেখক, সৃষ্টিশীল শিল্পী, নির্মাতা, প্রগতির কর্মী, বিপ্লবী-যে কেউই এই প্রি-ডিজাইনড ও প্রো-গাইডেড, তথা ফরমায়েসি সৃষ্টির চোরাকাঁটার ফাঁদে পড়তে পারেন।

সেই ফাঁদের নাম ভয় ও লোভ। অর্থ, সুনাম, ভাবমূর্তি, স্বীকৃতি, ভক্তকূলের লোভ ও তাকে হারানোর ভয়-এগুলোই একজন সৃষ্টশীল ব্যক্তিকে শেষ করে দেবার জন্য যথেষ্ট।

---------------+++

এলেবেলে-৩: #questionning

প্রশ্ন করা-সম্ভবত জানবার, শিখবার, বুঝবার সবচেয়ে চমৎকার কার্যকর পন্থা।
সঠিক প্রশ্নটি করতে জানা-সম্ভবত এটা বুদ্ধিমত্তা যাচাইয়ের সর্বোত্তম ও সর্বাধিক কার্যকর পন্থা।

------------------+++

এলেবেলে-৪: #enmity #animosity

শত্রূদের থেকে সতর্ক থাকো।
বন্ধুদের থেকে আরও বেশি সতর্ক থাকো।
ফেসবুক বন্ধুদের থেকে তার চেয়েও বেশি সতর্ক থাকো।

--------------------+++

এলেবেলে-৫: #surprise #puzzled

আপনার ভিতরে কি এখনো অবাক হবার ক্ষমতা বিদ্যমান আছে?
কী বললেন, আছে?
বেশ, তাহলে আপনি একজন অতিমানব বনে গিয়েছেন।
অবাক হবার ক্ষমতা যদি রহিত হয়ে থাকে, তাহলে আপনি এখনো একজন নিতান্তই ভেতো অথচ স্বাভাবিক বাঙাল মানুষ রয়ে গেছেন।
যেই সমাজ ও দেশে মুহূর্তে মুহূর্তে মানুষের অকৃতজ্ঞতা, অনধিকার চর্চা, চোখ উল্টে ফেলা, গণমিথ্যা বলা, কমিটমেন্ট ভুলে যাওয়া আর অবিশ্বাস্য সব ঘটনা ঘটে চলে, সেখানে অবাক হবার ক্ষমতা জীবিত থাকা দ্রস্টব্য ঘটনাই বটে। খোদার বিশেষ নজর না থাকলে সেটা সম্ভব না।

------------------+++

এলেবেলে-৬: #utilizationofpower #powergame #applicationofpower

শক্তি ও ক্ষমতা অর্জন যতটা গুরুত্বপূর্ণ,

তারও চেয়ে অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, সেই ক্ষমতা ও শক্তির প্রয়োগের প্রাজ্ঞতা। যা অনেকেরই হয় না।

শক্তি আছে মানেই, সেটাকে যত্রতত্র প্রয়োগ করা প্রাজ্ঞতা নয়। আবার, ক্ষমতা থাকা সত্বেও সেটাকে মানবতার জন্য প্রয়োগ না করাও প্রাজ্ঞতা নয়।

এবং; যত্রতত্র, নিজ ক্ষমতা ও প্রতিভাকে প্রকাশ করে ফেলাও বুদ্ধিমত্তার কাজ নয়। মাইন্ড ইট।

--------------------+++

এলেবেলে-৭: #hypocrites #compromise #beneficiary #opportunist

Are you a demon?
Are you a corrupt?
Are the angel dogs barking too much at you?
Share them a bite, and they stops barking, rather starts, কূঁই কূঁই।

-------------------+++

এলেবেলে-৮: #tellingthetruth #arrogance #antisocial

”সদা সত্য কথা বলিবে”-এ রকম কিছু বেদবাক্য শৈশবে আমাদের কন্ঠ্যস্থ ও মস্তিষ্কস্থ করতে হত।

মুশকীল হল, পৃথিবী সত্য কথা হজম বা গ্রাহ্য করার মতো যোগ্য নিজেই নয়। পৃথিবী হল মনপছন্দ কথার স্থান। আপনি গুটুর গুটুর করে কিংবা হাত কচলে কচলে মনের মতো কথা বলবেন। সাত খুন মাফ।

যেই না আপনি সত্যি কথা বলবেন, আপনি বেয়াদব, ঘাড় ত্যাড়া, অসামাজিক, ত্যাদোড়,......................অথবা
’তুমি বদলে গেছ।”

-------------------+++

এলেবেলে-৯: #BDfootball #patronization #govtbackup #antique

বাচ্চা বয়সী (মেয়েগুলোর) একান্তই নিজ গরজ ও তেজে SAFF জিততে দেখেই যারা ”সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা একদিন বিশ্বকাপ জিতবে”-এই জিকির ও ঢেঁকুর তুলছেন, তারা একটু অবদমিত হোন।

আমাদের এর চেয়েও ছোট বাচ্চারা একটা কাপ জিতেছিল। করোনার লকডাউনে কলকেসুন্দার সেই ১১ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। দেশে অবশ্য বাল্য বিবাহ কমছে!

বাচ্চারা ডানা ও গোথিয়া কাপ জেতার পরেও পৃষ্ঠপ্রদর্শন, স্যরি, পৃষ্ঠপোষকতা এসেছিল। ফলাফল, বিশ্ব রেংকিংয়ে ১৮০।

বাচ্চারা যুব বিশ্বকাপ জিতল। পৃৃষ্টপোষকতা আসা শুরু হল। ফলাফল, পরপর ডজনখানেক সিরিজ ধবলধোলাই।

জাফলং আবিষ্কার হল। প্রমো হল। পৃষ্ঠপোষকতা এলো। ফলাফল, জাফলং এখন পাথরের কোয়ারি।
সবশেষ।

বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ। ইউনেস্কো সাইট হল। সরকারি পৃষ্ঠপ্রদর্শন এলো। ফলাফল, বিশ্ব ঐতিহ্য ও পুরাতাত্ত্বিক এই স্থাপনাকে এমন গাড়লের মতো প্লাস্টার আর ডিসটেম্পার করা হয়েছে, যে, এটা এখন জহুরি মহল্লার বড় জামে মসজিদ ছাড়া আর কিচ্ছু নাই। প্রত্নতত্ম দূর কি বাত।

তাই বলি কী, নিজেরা হেঁচড়ে পেঁচড়ে যা পারে, তাতে সন্তুষ্ট থাকুন। পৃষ্ঠপোষকতা খুঁজে মরবেন না। পৃষ্ঠপোষকতা নামের কুমিরকে খাল কেটে ডেকে আনবেন না।

------------------+++

এলেবেলে-১০: #performance #credit #hijackingcredit

রূপকথার কাজলরেখা সূচ কুমারের গল্প পড়েছেন কেউ?

এক রাজা তার রাজকন্যাকে কোনো এক রহস্যময় অজানা কারনে একবার জঙ্গলের মধ্যে বনবাসে রেখে আসতে বাধ্য হলেন। কন্যার নাম কাজলরেখা। তো কাজল রেখা জঙ্গলে তার কূটিরে থাকে। জঙ্গলের ফলমূল খায়। একা একা ইশ্বরকে ডাকে।

একদিন জঙ্গলের খালে স্নান করতে গিয়ে দেখে একটা ভেলাতে এক রাজপূত্রের শব ভেসে যাচ্ছে। কাছে গেলে দেখল, রাজপূত্রই। তবে তার সারা শরীরে সূচ বিদ্ধ। প্রায় মৃত। সাথে একখানা পত্র। যাতে লেখা, “কোনো সতিসাধ্বি কুমারী যদি ১২ বছর বসে প্রতিদিন সকালে স্নান, প্রার্থনা শেষে পবিত্র দেহে মনে একটি করে সূচ তুলে তাকে একটি বিশেষ গাছের পাতার রস খাইয়ে যেতে থাকে, তবে সে ১২ বছর পরে সুস্থ্য হয়ে যাবে। কাজলরেখা রাজপূত্রকে কূটিরে নিয়ে এলো।

রোজ সকালে জঙলের খালে স্নান করে। উপাসনা করে। তারপর রাজপূত্রের গায়ের একটি সূচ তুলে ওই বিশেষ গাছের পাতা বেটে রাজপূত্রকে খাইয়ে দেয়। এভাবে করতে করতে গেল ১১ বছর ১১ মাস ২৮ দিন। কঠোর সাধনা ও শ্রম কাজলরেখার। আর একটা সূচ তোলা বাকি। পর দিন সে জঙ্গলে স্নানে যাবার পথে দেখে খাল দিয়ে নৌকা করে এক বৃদ্ধ তার মেয়েকে বিক্রি করতে হাটে নিয়ে যাচ্ছে। কাজলরেখা তাকে দাসী হিসেবে কিনতে চাইল। কিন্তু তার কাছে পয়সা না থাকায় হাতের সোনার কাঁকন খুলে দিল। কঙ্কণ দিয়ে কিনল বলে, সে দাসীর নাম দির কঙ্কণ দাসী। কঙ্কণ দাসীকে সে ঘরে নিয়ে গেল।

তাকে কাজ বুঝিয়ে দিল। রাজকুমারকে দেখে কঙ্কণ দাসী জানতে চায়। কাজলরেখা তাকে সব খুলে বলে। পরের দিন কাজল রেখা স্নানে যাবার আগে কঙ্কণদাসীকে বলে গেল, তুমি একটু গাছের পাতাটা বেটে রাখো। আমি স্নান করে এসে উপাসনা করে বাকি একটা সূচ তুলে ফেলে রাজকুমারকে ওই পাতার রস খাইয়ে দিলেই তিনি সুস্থ্য হয়ে যাবেন। কঙ্কনদাসী সায় দিল।

কাজলরেখা স্নান করে কূটিরে ফিরল। তার মনে অনেক আনন্দ। আজ তার সাধনা পূর্ণতা পাবে। রাজকুমার সুস্থ্য হবে।
কিন্তু এ কী?

কাজলরেখা ঘরে ঢুকতে ঘটে গেল অভাবনীয় এক ঘটনা। সে দেখল, কঙ্কণদাসী বসে আছে রাজকুমারের পাশে, খাটিয়াতে। রাজকুমার সুস্থ্য হয়ে গেছে। কাজলরেখাকে দেখেই কঙ্কণদাসী বলে উঠল, “রাজকুমার, আমি হলাম কাজলরেখা। আমি আপনাকে গত ১২ বছর ধরে সেবা করে সুস্থ্য করেছি। আর ও হল কঙ্কণদাসী। ওকে আমি আমার হাতের কঙ্কণ দিয়ে কিনেছি।” রাজকুমার সাবেক কঙ্কণদাসী ওরফে নতুন কাজলরেখাকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানালো। তারপর তাকে সাথে করে নিজে দেশে নিয়ে গেল। বিয়ে করে তাকে রাজরানী বানালো।

আমাদের কাজলরেখার কী হল জানতে চান তো?

কাজলরেখারা এভাবেই সারাজীবন খেটে যায়, শ্রম দেয়, নিজের জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক দিয়ে জান লড়িয়ে কাজ করে। আর দিনশেষে কঙ্কণদাসীরা চান্সে ছক্কা মেরে সেই ক্রেডিট ছিনতাই করে কাজলরেখা তথা হিরো বনে যায়।

গল্পের মাজেজা বহুমূখী। সে আরেকদিন হবে।

ওহ, সবকিছুতে ব্যক্তিগত গন্ধ খোঁজা ভাল নয়। পৃথিবী গোল।

অনেক সময়ই জুনিয়ররা আক্ষেপ করে থাকেন, সিনিয়ররা সব ক্রেডিট নিজেদের করে নেন।

ঘন্টার পর ঘন্টা খেটে, হোমওয়ার্ক ফিল্ডওয়ার্ক করে, নিজের আইডিয়া দিয়ে জুনিয়র কর্মীরা একটা প্রোজেক্ট, প্রোগ্রাম দাড়া করান আর সিনিয়ররা বা বসেরা সেটাকে বগলদাবা করে টপ ম্যানেজমেন্টকে দেখিয়ে পুরোটা ক্রেডিট নিজের বলে পুরষ্কারটা বাগিয়ে নেন।

অথচ যখনই কাজের কোনো ভুল হয়, তখনি নিজের কাঁধে দায়ীত্ব নেন না, সাথে সাথে জুনিয়রদের উপর দোষটা চাপিয়ে দেন।

অথচ হওয়া উচিৎ ছিল, বস বা লীডার সাফল্যের ক্রেডিট দেবেন পুরা টীমকে বিশেষত যে জুনিয়র বা সহকর্মীর জন্য সাফল্য এসেছে তাকে।

আর টীমের ভুলের দায় নেবেন নিজের কাঁধে।

জুনিয়রদের তাদের পারফর্মেন্স দেখানোর সুযোগ করে দিন। তাদের হাতে কাজ ছাড়ুন। তাদের এমপাওয়ারড করুন। জুনিয়রদেরকে সুযোগ করে দিন ম্যানেজমেন্টের সাথে ইন্টার‌্যাক্ট করার। তাদের কাজকে নিজে প্রেজেন্ট করার সুযোগ দিন।

টীম ক্লিক করলেই না আপনার ক্রেডিট।

একা একা বিশাল রাজ্যের রাজার মুকুট না পড়ে টীমকে নিয়ে ছোট একটা রাজ্যের রাখাল হওয়াও শ্রেয়।

----------------+++

এলেবেলে-১১: #pinching #hurtingtheangel

একজন একক মানুষকে ঠিক কত ভাবে, কত দিক দিয়ে পীড়ন দেয়া সম্ভব, কত রকমারিভাবে একটাই মানুষকে বারবার পিষে ফেলা সম্ভব-তার উদাহরন বাংলার ঘরে ঘরে, পরিবারে, সমাজে একটু নজর করলেই পাওয়া যাবে।

এখানে যে সামান্য একটু উদার, ভদ্র-তাকেই বারবার পিষে ফেলা হবে আরো আরো ভালমানুষী ও দায়ীত্ব পালনের দাবীতে।

ঘুরে ফিরে তাকেই বেঁছে নেয়া হবে ঢিল ছুঁড়তে, মনের ক্ষেদ মেটাতে। তথাকথিত স্বজন, প্রিয়জন, বন্ধু, পরিবার, সমাজ-মায় রাষ্ট্র-কখনো একা, কখনো দলেবলে তাকে গণধোলাই দেবে। পনেরো আনার পরে ষোলতম আনার অপূর্ণতার জন্য।

আর যখন মর্ত্যের অপদেবতাদের হাতে সময় থাকে না, তখন আকাশের দেবতারা সেই দায়ীত্বটা নিয়ে নেন। প্রকৃতি আর দেবতারাও এই একক মানুষদের নিয়ে নিষ্ঠূর খেলা খেলতে পছন্দ করেন। দুনিয়া আর সংসারের কলোসিয়ামে ছেড়ে দিয়ে নানামুখী পিড়নের কালো ষাড় ছেড়ে দেন তাকে পিষে দিতে।

প্রকৃতিও মজা নেয়।

এই সমাজ শক্তের ভক্ত, নরমের যম।

------------------+++

এলেবেলে-১২: #righttoquestion #questionning #watchdog #counterquestion #opposingadvice #socialdestruction #destructivenation

পাড়া মহল্লায়, একই কমিউনিটিতে কারো অপত্য সন্তান যদি কোনো অন্যায় করে, তাহলে তার বাবা-মাকে সেটি জানাতে গেলে প্রায়শই শুনতে হয়,
"তোমার তো নিজের পোলাপান নাই, তুমি বাঁজা মানুষ, পোলাপান মানুষ করার তুমি কী জানো?"

মানে হল, ন্যায্যতা বা বাচ্চাদের ভুল নিয়ে কথা বলতে হলে আপনাকে অবশ্যই আগে বাবা-মা হয়ে নিতে হবে।
নিজের ভুল বা অন্যায়কে যায়েজ করার নয়া স্টাইল এটা।

মানে, আপনি একজন উকিলের ভুল, অন্যায় নিয়ে কথা বলতে চাইলে আগে উকিল হতে হবে। ড্রাইভারের ভুল ধরিয়ে দিতে পারবেন না, যদি আপনি ড্রাইভার না হোন।

একই ফিলোসফি ও যুক্তিতে, আপনি দেশের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলতে হলে আপনাকে চেতনাধারী ইকনোমিস্টই হতে হবে। অন্যথায়, আপনি কিছুতেই প্রশ্ন করতে পারবেন না, যে, কেন প্রকল্প ব্যায় বাড়ল বা বাড়ে।

এই ইল-লজিকের গোড়াপত্তন বহু আগে। আমাদের গড়পড়তা সবার মধ্যে সেটার বীজ বুনে দেয়া হয়েছে শৈশবেই। আমরা কম-বেশি সবাইই কিন্তু এই ফিলসফিতে বিশ্বাস করি-চেতনে, বা অবচেতনে। আমাদেরকে এই ভুল লজিকের পাঠ দেয়া হয়েছে শৈশবে, যখন আমাদেরকে বাগধারা পড়ানো হত-”আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর দিয়ে কাজ কী”।

হ্যা, আদার ব্যাপারীও জাহাজের খবর রাখতেই পারে। আপনি যদি ডাক্তারের কাছে দোয়া আর হুজুরের কাছে দাওয়া চাইতে পারেন, আমি তাহলে কেন নই?

ঠিক যেমন, ক্রিকেটের ক’ও না জানা আমি প্রশ্ন করতেই পারি, যে, ৯০০ কোটি টাকা জমা করা বেশি জরুরী, নাকি ৬৪ জেলায় ৬৪টি ক্রিকেট একাডেমি করা জরুরী।

[সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অত্যন্ত দামী কথা মনে হওয়ায় আমি জনাব আব্দুল্লাহ মাহমুদের লেখার কিয়দাংশ মাঝে যোগ করলাম:

ইউরোপ সহ পশ্চিমা বিশ্বে ওয়াইন এর স্বাদ পরিক্ষা করা একটি পেশা।

নামী দামী বার রেস্টুরেন্টে এরা ওয়াইন খেয়ে পরীক্ষা করে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন, ওয়াইনটি কতটা ভাল ছিল তা নির্ধারণ করেন। তাদের মাসিক বেতন তিন চার লাখ টাকা।

ওয়াইন প্রস্তুতকারক কোম্পানীগুলো আবার ভিন্ন মানের টেস্টার নিয়োগ করেন, তাদের বেতন মাসিক বিশ ত্রিশ লাখ টাকাও হয়।
এরা কি জানেন ওয়াইন কিভাবে তৈরী করতে হয়?

এরা নিজেরা কি ওয়াইন বানাতে পারেন?
উত্তর হলো "না"

এবার চিন্তা করুন ফ্রান্সে একজন টেস্টার, যে বড় কোম্পানিগুলোর ওয়াইন খেয়ে মতামত দেন, যার বেতন হয়ত পনের বিশ লাখ টাকা, সে ওয়াইন টেস্ট করে বললেন, নাহ ওয়াইনটি ভাল হয় নি।
ওয়ানারীর মালিক বলল, পারলে এর চেয়ে ভাল বানিয়ে দেখান?

--
ডাস্টিন হফম্যান কিংবা টম হ্যাংকস এর ছবির সমালোচনা লিখেন এমন কিছু লোক যারা জীবনে কখনও অভিনয় করেন নি, কিন্তু অভিনয় বুঝেন।

আমিতাভ বচ্চন কখনোই নাসিরউদ্দিন শাহ এর মুভির সমালোচনা লিখেন না। কারন তারা দুজনেই অভিনেতা, সমালোচক নন। তারা সমালোচনা লিখতে পারবেন না তা নয়, কিন্তু পেশাদার সমালোচকদের হাতেই দায়িত্ব দেয়া হয়।

সে সব সমালোচক কে কেউ বলেনা, আসেন আমার মত অভিনয় করে দেখান।

আমাদের দেশে ক্রিকেটারদের খেলার মুল্যায়ন করেন কখনও প্রাক্তন খেলোয়াড়রা, কখনও ক্রীড়া সাংবাদিকরা। সমালোচকদের মতামত যে সর্বদা সঠিক হয় তা না, কিন্তু তার নিজস্ব কিছু পর্যবেক্ষন অবশ্যই থাকে, তার সাথে কেউ এক মত হতেও পারে, নাও পারে।

কিন্তু এর বাইরেও সাধারন দর্শকরা সমালোচনা করে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের সমালোচনাই বেশী।

এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, এরকম আম জনতার কি সমালোচনা করার অধিকার আছে?
আমাদের ক্রিকেটাররা লাখ লাখ টাকা বেতন পান, অনেকের বাৎসরিক আয় কোটি টাকা।
আমাদের ক্রিকেটাররা হেলিকপটারে যাতায়াত করে।
এসব টাকা কে দেয়?

তাদের বেতন কিংবা বিজ্ঞাপন থেকে যে আয় করেন সে অর্থের যোগানদাতা কে?
কোন মন্ত্রী কিংবা বিসিবির পরিচালক কি নিজের পকেট থেকে ক্রিকেটারদের বেতন দেন?
সবই সাধারন জনগনের পয়সা প্রতক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে।

আপনি আমাকে টাকা দেন না, সুতরাং আমাকে চার মেরে দেখাতে হবে না।
আমি আপনাকে টাকা দেই, এজন্যই আপনি আমার আশা পূরণের চেস্টা করবেন।]

প্রশ্ন করা ও প্রশ্ন তোলার অধিকার কখনো রহিত হয় না। প্রশ্ন করা ও প্রশ্ন করতে দেয়া-নিজের স্বার্থেই দরকার।

এটি পৃথিবীর আদিমতম লজিকগুলোর একটি।

-----------------+++

এলেবেলে-১৩: #friendship #fakefriendship #selfishpeople #purposefulfriendship

মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দরকারে ভিন্ন ভিন্ন পদের বন্ধু থাকে।

যেমন: -

বিপদে টাকা ধার নেবার জন্য বন্ধু। এদেরকে অন্য কোনো কাজে লাগে না। অন্য কোনো সময় এদের বন্ধুত্বও কবুল করবে না।

আবার, গাঁজা খাবার জন্য এক রকম বন্ধু থাকে। তাদের সাথে অন্য কোনো কাজ নেই। শুধু গাঁজা খাবার দরকার পড়লে তাদের কাছে যাবে। বাকি সময় ফক্কা।

কিছু বন্ধু ধরে রাখা হয় পরীক্ষার সময় নোটস নিতে। পরীক্ষা শেষ। বন্ধুত্বও শেষ। এদের সাথে আবার গাঁজা খাওয়া বা বিপদে টাকা ধার নেবার যোগ নেই।

কিছু বন্ধুত্ব সৃষ্টি করা হয় মনের সুখ মিটিয়ে গালিগালাজ করে মনের ক্ষেদ মেটানোর জন্য। এদের সাথে শুধু এই কাজই চলে। এরা আবার গাঁজার সঙ্গী হয় না। করাও হয় না।

কিছু বন্ধু মেইনটেইন করা হয় প্রক্সি দেবার জন্য। সারাবছর এদের খোঁজ রাখবে না। এদের সাথে নেবে না। শুধু প্রক্সি দিতে হলে ডাক পড়ে।

আরেক রকম বন্ধু থাকে। যাদের কদর শুধু রোগী, হাসপাতাল, রক্তদানের দরকারে। দরকার শেষ। বন্ধুত্ব আবার ড্রয়ারে। এই বন্ধুদের গাঁজা খেতে ডাকবে না, টাকা ধার করতে পারে, তবে বোনের বিয়েতে এদের ডাকবে না।

সোশ্যাল স্টাটাস ও ফেসবুক স্টাটাসের জন্য রেডি স্টক বন্ধুর তালিকা আবার ভিন্ন। এদের সাথে ফেসবুকে রাজা উজির মারবে। কিন্তু, এদের কখনো কোনো উপকার করবে না। এদের কাছ হতে মাঝেসাঝে উপকার নেবে, তবে কখনো নিজ চৌহদ্দীতে নেবে না।

কিছু বন্ধু থাকে, বা রাখে, যাদের শুধু মন খারাপ হলে মনের ব্যথা শেয়ার করবে, চোখের জল ফেলবে। কিন্তু, বান্ধবী আবার ঘরে নিলে তাকে ভুলে যাবে।

কিছু বনধু আবার থাকে আর কোথাও যখন কিছু নেই, তখন সময় কাটাবার ও চা-ড্ডা করার সঙ্গ পেতে। তাদের আবার ঈদে বাসায় যাকা যাবে না। গাঁজাও খেতে ডাকবে না।

কিছু বন্ধু হবে লিটনের ফ্ল্যাট জোগান দিতে। এরা টাকা ধার বা প্রক্সির জন্য ডাক পাবে, এক সাথে বিড়ি খাবে, তবে এই বন্ধুদের কখনো বাসায় ডাক পড়বে না। যত রাজা উজির মারা সব বাইরে।

কিছু বন্ধু রাখা হয় স্টক লট। সেলফী, দলফী, বুটক্যাম্প, কক্সবাজার, সমিতি, জয়েন্ট প্লট কেনা একদলের সাথে। কিন্তু ওই যে স্টক লট, তাদেরকে ওই দলে নেবে না। খবরও দেবে না। ওদেরকে কেবল “ভাইয়া”, মেনটর, বড় ভাই, মুরব্বী, দোস্ত, প্রিয় ভাই, শ্রদ্ধেয় আসন নামের ফক্কা দেবার জন্য।

আহা বন্ধু। উহু বন্ধু।

----------------+++

এলেবেলে-১৪: #inferior #class #generousity #modesty #networking

ল্যাংড়ারও তো কখনো কখনো চিৎ হয়ে শোয়ার শখ হতে পারে-তাই না? (যদিও অভি’র বক্তব্য হল, ওই শখ শুধু কুঁজোরই হতে পারবে। যাক, তাই সই।)

সেই খাহেশ হতেই বিগত ৫৯ দিনে মোট প্রায় ১৪৯ জন বিজ্ঞ, বিখ্যাত ও উঁচু তবকার বড় মানুষকে ফেসবুক বা লিংকিতে কানেকশন রিকোঃ দিয়েছি। নিঃস্বার্থ নয়-স্বীকার করছি। ধান্দা ছিল। যদিও সেই ধান্দা মহত ধান্দাই মনে হয়েছে আমার কাছে।

ধান্দা পূরণ হয়নি। ওই ১৪৯ জন স্বর্গের উচ্চ-গগন হতে নিচে তাকিয়ে অভাজনকে দেখেননি। ‘একসেপট’ করেননি।

না, এটি কোনো অনুযোগ নয়। যারা এতটুকু পড়ে অনুযোগ ভেবে কড়া একটা উত্তর দিতে বসে গেছেন-তারা নিরস্ত হোন। এটি অনুযোগ নয়।
ফেসবুক ফ্রেন্ড আর লিংকির কানেকশন-ওই একই। থোড়বড়িখাড়া>খাড়াবড়িথোড়। ফেসবুকের বন্ধুত্ব আপনার খাটিয়া ধরার মুমীনের সংখ্যা বাড়াবে না।

লিংকির কানেকশন আপনার ইন্টারভিউ চান্স বাড়াবে না।

ফলাফল লবডঙ্কাই। সুতরাং, ওই দুটোতে আপনি কার সাথে লদকালদকি করবেন আর করবেন না-সেটা আপনার ব্যক্তিগত রুচী। সমাজের হাবলঙ্গের বাজারে নিজেই মক্ষিরাণী হোন। মৌমাছি আসবে।

কর্পোরেটের বাজারে নিজের ব্র্যান্ড নিজে হোন। এমপ্লয়ার আর কানেকশন পায়ে লুটাবে।

কাউকে ফ্রেন্ড বানান আর কাউকে আনফ্রেন্ড-কারো কিছু বলার নেই। আপনার রাজ্যে আপনিই রাজা। কনডমের রাজা না, রিয়েল রাজা।

আমি মনে করি, এই ভার্চুয়ালেও সবকিছু সীমিত ও নিজস্ব ঘরানায় থাকাটা সিদ্ধান্ত হিসেবে ভাল।

যিনি আপনার ঘরানার নয়, তার সাথে গাটছড়া বাঁধার দরকারটা কী?

--------------------+++

এলেবেলে-১৫: # #talent #talenthunt #enhancingmerit #promotingtalent

ট্যালেন্ট বা মেধা।

এমন এক বস্তু, যা আসলে প্ল্যান আর প্রোগ্রাম করে ইচ্ছামতো বানানো যায় না, কেনা যায় না, সৃষ্টি করা যায় না, রূপান্তর করা যায় না।
মেধা আসলে উৎপত্তি হয়। মেধার উন্মেষ হয়। মেধার সন্নিবেশ হয়। ট্যালেন্ট নিজে নিজেই জন্ম নেয়।

মেধা বা ট্যালেন্ট এক সক্ষমতার নাম, যা আসলে অনেকগুলো প্রিরিকুইজিটের সম্মিলন ও সন্নিবেশ নিশ্চিত হলে, অনেকগুলো প্রক্রিয়া ও উদ্যোগের ফল হিসেবে দীর্ঘমেয়াদে বিকশিত হয়। শেকড় হতে শিখরে।

মেধার উন্মেষ ঘটাবার কয়টা প্রক্রিয়া আমরা সৃষ্টি, বিকাশ ও বিস্তার করেছি?

মেধাশূন্যতার ভয়াবহ অভিঘাত টের পান কি? আমি তো পাচ্ছি।

না পেলে আপনি হয় বোকা, নয় তো অতি সরল বান্দা। হ্যা, অবশ্যই তাহলে আপনি সুখী মানব।

-------------------+++

এলেবেলে-১৬: #complexion #white #black #inferioritycomplex

আপনি কি জানেন,
পৃথিবীর বুকে উগান্ডা নামে একটি দেশ আছে,
যার ৯৯% মানুষই
হয় Inferiority complex,
নয়তো
anti-social personality disorder এ ভোগে?

আচ্ছা, যাক, বাদ দিন ওসব। আসল কথায় আসি।

ছবির মডেলরা Anyuak, পূর্ব আফ্রিকার Luo Nilotic ethnic group এর সদস্য, যার সদস্যভূক্ত আনুমানিক ৩ লক্ষ মানুষ।

নিজের নিজের জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, রুচী ও ক্লাস নিয়ে অতি আত্মতৃপ্তিতে যারা ভোগেন, তাদেরকে একটা কথা খুব বলতে ইচ্ছে করে।
আপনার সাদা চামড়াযুক্ত ক্লাসি পারর্সোনালিটি, যা নিয়ে আপনি অতি আহ্লাদিত, ডোলান টেরামপের দেশের লোকেরা সেটাকেই বলে, “বাদামী”।


আপনাকে কে বলেছে, সাদা মানেই সব?

---------------------+++

এলেবেলে-১৭: #trafficjam #traffic #roadsafety #roadrampage #crazytraffic #crazypeople

প্রিয় কবি জীবনানন্দকে মাঝে মাঝেই বলতে ইচ্ছে করে,

হে জীবনানন্দ, আপনি কার্তিকের নবান্নের দেশে আবার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন।

তখন কি আপনি জানতেন, যে, এই ঢাকা ম্যাগাশহর, তার দুই কোটি বাঙাল, তাদের তিন কোটি গাড়ি আর এক বিঘত রাস্তা-সব মিলে মিশে রোজ বৃহস্পতিবারে কার্তিকের কুকুরের মতো হয়ে যায়?

আপনি কি এই কার্তিকের মদমত্ত নগরে আসতে চেয়েছিলেন?

-----------------+++

এলেবেলে-১৮: #ungrateful #memoryloss #forgetting #selfcriticism

আমরা আমাদের সারা জীবন ভর, অন্য মানুষদের যত যত যত দোষ, ভুল, অন্যায় নিয়ে অভিযোগ, দোষকীর্তন করি,
তারই কতগুলো খোদ আমাদের নিজের মধ্যেই আছে-কখনো কি ভাবি?

সমাজের মানুষের অসহযোগীতা ‍ও সহানুভুতিহীনতা নিয়ে ক্রমাগত গালাগাল করে যাওয়া মানুষটা নিজেই যখন মগডালে উঠে যায়, তখন, তার কানে সেই সমাজেরই আর্তের ডাক আর পৌছায় না।

বড় স্যারদের ইনবক্সে চাকরি চেয়ে রেসপন্স না পাওয়া, সাড়া না পেয়ে অভিশাপ দেয়া ছেলেটি নিজেই একদিন ইনবক্স আনচেকড ফেলে রাখবার মতো বড় হয়ে যায়।

জেফ বেজোসের সব সম্পদ কেড়ে নিয়ে গরীবকে বিলিয়ে দেবার দাবীতে সোচ্চার রবিনহুড মেয়েটাই একদিন জামাইয়ের কল্যানে পোরশে হাঁকায়, আর পোরশের মোটা কালো গ্লাসের ভেতরে শীতল নরম সীটে বসে সেই গরীবদের ভুলে যায়।

লিগ্যাসী, অরিজিন ও অবলিগেশন ভুলে যাওয়া নিয়ে যদি কোনোদিন নোবেল প্রতিযোগীতা হয়, তাহলে আমি একটা গীতাঞ্জলি লিখতে চাই।

মানুষ একটা দুই চাক্কার সাইকেল।

মানুষ নেহাতই অকৃতজ্ঞ রাসকেল।

কত জন ভুলে গেল।
কতজন ভুলে যাবে।
কেউ ভোলে, কেউ ভোলে না।
সবটুকু অতীত ভোলার নয়।
আমারও আছে কিছু দায়।

------------------+++

এলেবেলে-১৯: #begging #donating #intension #poverty

রাস্তায় চলার সময় একজন ভিক্ষুক হাত বাড়ালে আমরা অনেক সময়ই গায়ে মাখি না। কখনো আবার গাড়ির কাচ নামিয়ে দুই দশ টাকা দিয়ে দিই। দিয়ে মনে করি, ব্যাটাকে অনেক ফেভার করলাম।

পথ চলতে ফুটপাতে একজন পঙ্গু ভিক্ষুক সুর করে ভিক্ষা চাইলে বেশিরভাগ সময়ই ভ্রূক্ষেপ করি না। কিন্তু যদি দিনটি হয় ফাইনাল ইন্টারভিউ কিংবা বিসিএস ভাইভা, দশ টাকা বের করে দিই। মহল্লায় কেউ মারা গেলো। সৎকারের সক্ষমতা কম। সবাই কিছু কিছু দান করি। অনেক সময়ই করি না।

কথা হল, আমাদের এই মানবিক দানের ভিতরে কোন নিয়ত কাজ করে?
কিংবা, এই সামাজিক কর্তব্যের ভিতরেও কি আমরা শ্রেনীবৈষম্য করি?
কীভাবে?

প্রথমেই ভাবুন, দানের মানসিক ইচ্ছা বা মকছুদের কোথাও কি এই নিয়তও মনে উঁকি মারে, যে, এই দান আপনি আমি জাগতিক বস্তুগত বা আত্মিক প্রাপ্তি কিংবা পারলৌকিক সুখ সমৃদ্ধি ক্রয়ের জন্য করছি?

কিংবা, একই দান কি আমি সব ধর্মের মানুষের জন্য করছি?

মনে করুন, কারো কাফনের কাপড় কিনতে আমি দান করলাম। চিন্তা করলাম, আহা, মৃতের সৎকার হচ্ছে না টাকার অভাবে। কিন্তু কারো দাহ হচ্ছে না পয়সার অভাবে (স্রেফ উদাহরন)। তখন কি আমি দান করি?

আরেকটু গভীরে যাই। কারো মেয়ের বিয়ের জন্য কিছু টাকা দান চাই। আপনি আমি সবাই মিলে কিছু কিছু দিয়ে কন্যাদায় উদ্ধার করে দিলাম।

এখন মনে করুন, মাস ছয়েক পরে, ওই মেয়েকে স্বামীর অত্যাচার হতে বাঁচাতে ডিভোর্স ও মামলা ফাইল করতে হবে। তখন কি টাকা দিই?

---------------+++

এলেবেলে-২০: #envy #jealous #class #classconflict

মন-তার অবস্থান বুকেই হোক বা মস্তিষ্কে, তাকে যদি দেখা যেত, তাহলে দেখা ও দেখানো যেত,
যে,
ঢাকার রাস্তার প্রতিটি মানুষ, হ্যা, প্রতিটি মানুষ তাদের পাশ দিয়ে চলতে থাকা প্রতিটি ব্যক্তিগত গাড়ি তথা ‘পেরাইভেড কার’ ওরফে ‘পেলাশটিক’ এর ওপর মনে মনে কী যে বিপুল ঘৃনা, বিদ্বেষ, ক্রোধ পোষণ করে। (অক্ষমের ইর্ষার দিকটা মার্জনাযোগ্য।)

প্রতিটি, হ্যা, প্রতিটি মানুষের মনের বিশ্বাস, পেরাইভেড গাড়ির প্রত্যেকটাই হারাম ও গরীব ঠকানো পয়সায় কেনা আর পেলাশটিকের মালিক (ও আরোহিরা) সব দানব।

এই বিপুল ঘৃনা তাদের মন হতে উপচে চোখের দৃষ্টিতেই দৃশ্যমান।

------------------+++

এলেবেলে-২১: #humanity #hypocrisy #west #democracy #ambiguity #humanrights #internationallaw #unitednations #state #government

কানাডা, আম্রিকা ও আরো আরো পশ্চিমা, উত্তরা, দক্ষিণা ভদ্দর ও উন্নত দ্যাশ সমূহের গণতন্ত্র, দানবাধিকার, সুশীল বাণী, উপদেশ ও নিদান শুনলে হাসব না কাঁদব বুঝি না।

বাংলাদেশ হতে যাওয়া জৈনক ব্যক্তিকে ট্রুডোর খ্যানাডা তাদের দেশে ঢুকতে দেয় নাই। সুশীলতার দোহাই দিয়ে। তারা বঙ্গবন্ধুর খুনীকে ঠিকই রাষ্ট্রীয় মেহমান করে রেখেছে। এবং তাকে ফেরত দেবে না-বলে দিয়েছে।

হাসি পায়।

আম্রিকা দানবাধিকারের দোহাইতে বাংলাদেশের সরকারী কর্মকর্তাদের ওপর ব্যান দেয়। আবার মুদির ভাইকে নিয়ে চা ও খায়। গণতন্ত্রের দোহাইতে গণতন্ত্র মাহফিলে দাওয়াত দেয় না, ব্যান দেয়। আম্রিকার গণতান্ত্রীক চেহারা, দানবাধিকার নিয়ে তার নিজের চরিত্র দেখলে হাসি পায়।

দুনিয়ার যে কোনো কোণায় যে কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও রাষ্ট্রকে যে কোনো ছুতায় হামলা ও নিহত করার অধিকার যাদের আছে বলে বিশ্বাস করে, ওসামা বিনকে যারা বিনা বিচারে খুন করে আরেক দেশে বিনানুমতিতে ঢুকে, যেই আম্রিকা তার দ্যাশে আশ্রিত বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দেয় না, সে আবার তাদের প্যানট খুলে নেয়া জুলিয়ানকে ঠিকই ধরিয়ে আনে।

তারা যখন গণতন্ত্র ও দানবাধিকার নিয়ে কথা বলে, হাসির দমকে পশ্চাতবায়ু নির্গত হয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যখন ইরানের শীর্ষ জেনারেল সুলেমানীকে, কিংবা ইজরেল যখন ইরানী বিজ্ঞানীকে গোপন মিশনে হত্যা করার আদেশ দেয়, সেটার নাম আত্মরক্ষা ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের বৈশ্বিক দায়বোধের হালাল বাস্তবায়ন।

সৌদি আরবের বাদশাহ (হবু) যখন তার নিজের নাগরিককে হত্যা করার আদেশ দেয়, তার নাম মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বেআইনী কাজ।
উভয় পক্ষকে আবার যে নিরবে চেটে শুধু খাশোগজির হত্যার তদন্ত ও বিচারের জন্য উদ্যোগ নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে, তার নাম জাতিসংঘ।

এসব দেখে দ্বিগুন উৎসাহে যে নিজের যত অকামের আরো নতুন ফন্দী আঁটে, তার নাম রাষ্ট্র।

রাষ্ট্র ও জনগণ নামক পাঁঠাকে বলি দিয়ে যে আবার কাঁঠাল খায়, তার নাম 'স্যারক্যার'।

স্যারক্যারকে নিজ নিজ পশ্চাৎদেশে আবাদ করার অধিকার প্রদানের নাম 'ভুট', আর নেই ভুট যারা দেয়, তার নাম 'জানেমান'।

'ছারখার' এর অকামে নিরুপায় হয়ে যখন জানেমানরা আবার রুখে দাড়ায়, সেটার নাম 'রাষ্ট্রদ্রোহিতা'।

রাষ্ট্রদ্রোহী জানেমানদের সাইজ করার জন্য আবার স্যারক্যার যখন কুত্তা লেলিয়ে দেয়, তার নাম সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও জানেমানদের সুরক্ষার দায়বোধ।

এভাবেই বিশ্ব হতে দ্যাশ-সর্বত্রই চক্রাকারে ধাবিত হয় আইন ও ন্যায়ের উত্থানরহিত ঝান্ডা।

কৃষ্ণ করলে লীলা,
কেষ্টা বেটা করলে লীলাখেলা।

------------------+++

এলেবেলে-২২: #humanity #hypocrisy #west #democracy

আম্রিকা তার নাগরিক অভিজিত রায়ের খুনিদের ধরিয়ে দেবার জন্য ৫০ লাখ ডলার বাউন্টি বা পুরষ্কার ঘোষণা করেছে।

আনন্দ সংবাদ।

আম্রিকা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও সাজাপ্রাপ্ত খুনিকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়নি।

এটা শুধুই একটা সংবাদ।

অভিজিতদের আত্মাও হয়তো রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, দেশে দেশে, স্বদেশে বিদেশে নানান দ্বিচারিতার সংবাদ দেখেও হাসে। কোনো যুগেই কোনো জাতি অভিজিতদের ধারন করবার যোগ্যতা ধারন করেনি।

------------------+++

এলেবেলে-২৩: #uneven #evil #misdeed #compromise #demonstration #opposition #protestagainstevil

অন্যায় করা অন্যায়।
অন্যায়কে মেনে নেয়া আরও বড় অন্যায়।
অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া ততোদিক অন্যায়।

কিন্তু দেশে এখন চলছে অন্যায়কে লেজিটিমেট বা হালালাইজ করার অন্যায়ের মড়ক।

অন্যায় করুন, ভুল করুন, দোষ করুন, অযোগ্যতা ধারন করুন, ব্যর্থ হোন এবং-------

কোনো অনুতাপ, ক্ষমাপ্রার্থনা, সংকোচবোধ বা নিদেনপক্ষে স্বীকারের তো বালাই নেই।

উল্টো, অন্যায় ও ভুলটিকেই ন্যায়, সঠিক, প্রত্যাশিত নর্মস তথা হালাল প্রমানের জন্য খোদ অন্যায়কারী বৃন্দে তো বটেই, চারপাশের পাবলিকও দাড়িয়ে যাবে।

একটা অন্যায় বা অন্যায্য কিছুর বিরুদ্ধে সামান্য গলা তুলবেন, তো,
আপনাকে চৌদ্দজন মিলে বোঝাবে,

ঘুষ খাওয়াটা কেন ঠিক আছে,
রাস্তায় ভুল দিক দিয়ে গমন কেন ঠিক আছে,
একজন নারী বা নরকে ধর্ষণ করা কেন ঠিক আছে,
রাস্তা দখল করা কেন ঠিক আছে,
ইংরেজি না পারলেও কেন দোষ নেই,

কভারমেইল ছাড়া চাকরির জন্য রিজুম পাঠিয়ে দায় সারলেও কেন ঠিক আছে,
বাসের জানালা দিয়ে পিচিক করে পানের পিক ফেলে একজন ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া মানুষকে ভূত বানালেও কেন ঠিক আছে,
রিক্সা দিয়ে ইচ্ছে করে বাইকটার পেছনের লাইটটা ভেঙে দিয়েও কেন ঠিক আছে,

বাসের মধ্যে বুট দিয়ে কারো পা মাড়িয়ে দেবার পরও কেন সব ঠিক আছে। (পাবলিক বাসে নাকি কারো পা মাড়িয়ে আঙুল ভেঙে দেবার ঘটনা ঘটতেই পারে।)

'গরীব মানুষ'- শব্দযুগল শুনতে মানবিক, কিন্তু এই শব্দযুগল এখন এখানে অন্যায়কে হালালাইজ করবার ও করাবার দারুন এ্যালিবাই।
ভ্যানের ফল বিক্রেতা পঁচা ফল দিল, ওজনে কম দিল, ধরা পড়ল, পাবলিক সাপোর্ট দেবে, ”থাক ভাই, বাদ দ্যান, গরীব মানুষ।”

অন্যায়কে হালালাইজেশনের সাফাই দেবার গণমড়ক চলছে।

------------------+++

এলেবেলে-২৪: #preaching #association #uniting #rewarding #awards #recognition #crown #fake #paidreward

আদিকাল, মধ্যযুগ ও আধুনিক দাহকালের তিন গল্প।

আদি কালে এই পোড়ার দ্যাশে শীতকাল আসলেই পাড়ায় পাড়ায় অজমফেলের মচ্ছব শুরু হত। ভাড়ায় খাটা ধর্মীয় তক্তাদের কামাইয়ের মৌসুম শুরু হত, আর ট্যাঁকের বৈধ-অবৈধ পয়সার বদৌলতে ঈশ্বরকে তুষ্ট করতে পূণ্যবাক্য শোনার হিড়িক পড়ত। মৌসুমি সে হিড়িক।

জৈনক মানবিক মুনমুনুল হকের আত্মাহুতিজনিত মানবিক নিকাহ ধরা পড়ার পর সেই ডাইনোসর যুগের অবসান হয়। মায়ান সভ্যতার মতো বিলুপ্ত হয়ে যায়। টিকে আছে নিভুনিভু বাতির মতো। চিপাচাপায়।

মধ্যযুগে এইষাড়েডমিনকমপ্লেন্স নামে একধরনের হাইব্রিড পেশা মাথাচাড়া দেয়। এই পেশার পান্ডারা সারাবছর শীতনিদ্রা গেলেও খোদ শীতকাল এলে গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠত। দিকে দিকে এইষাড়েডমিনকমপ্লেন্সের ব্যাঙের ছাতার মতো সমিতির পিকনিকের মচ্ছব নামত।

করোনা ভাইরাস নামক একরকম পরজীবির ২০ মাসব্যাপী হামলায় সেই মৌসুমি মেটিঙ, থুরি মিটিঙ উৎসবের মহামারি বিলুপ্ত হয়ে যায়। যখুনি আমার মাথাচাড়া দিতে চায় হাজার বছরের সে ঐতিহ্য, তখুনি নতুন নতুন ওমিডোন, থুরি, ওমিক্রন পাঠিয়ে তাকে হিমঘরে পাঠায় প্রকৃতি।
এবার আধুনিক যুগ।

শীতকাল এলেই মূলত ইন্ডিয়া, শ্রীলঙ্কা, ও উগান্ডার একটি মাড়োয়ারি দল সচল ও সক্রিয় হয়। এঁরা মোটা ওসমানের বান্ডেল তথা নোটকড়ির বিনিময়ে বার্ষিক অমুক তকমা, তমুক তকমা, ক্রেস্ট, এউয়ার্ড, ক্রাউন, খেলাত দেবার একটা উৎসবে নামে। মূলত শীতকালে এদের কারিক্রম বাড়ে। কাঠের টুকরো ও ফিতায় বাঁধা মেঠেল দেবার এই প্রিপেইড মচ্ছব এখন মৌসুমি জ্বরের মতো খুব বিকোচ্ছে।

[স্থান, কাল, পাত্র, পাত্রী, ছাত্র-ছাত্রী, ধাত্রী-কেউ মনে কিছু করবেন না। ঝুম বৃষ্টি নামলে মাথাটা নষ্ট হয়ে যায়। আর জানেনইতো, আমি সবসময় সব এলেবেলের পরেই বলি, "সবাই না।"]

------------------+++

এলেবেলে-২৫: #selfesteem #lovingself #selfwellbeing

এক ভদ্রলোকের ইন্টারভিউ নিচ্ছি। কথাপ্রসঙ্গে বললেন, "এক চাকরির টাকাতেই আমার বাবা-মা, স্ত্রী, সন্তান সবার জীবন চলে। আমাকে এটা দিয়েই যা করার করতে হবে। চাকরি নিয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত সেজন্যই নিতে পারি কম। "

উঠতি বা মধ্য সময়ে থাকা পেশাজীবিদের প্রায় শতভাগই দেশের প্রচলিত প্রথা অনুসরন করে নিজের থেকে বাবা-মা ও নিজ পরিবারের প্রয়োজনকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে চাকরি খোঁজেন, করেন, বদলান, বদলান না।

নিজ ক্যারিয়ারের ভবিষ্যতের থেকে ওগুলোই বেশি বিবেচনায় রাখতে বাধ্য আমরা। সেই স্নাতক ভর্তির সময় হতেই এই চাপের জন্ম।

দুঃখের বিষয় হল, এই চাপে অনেক সময়ই আমরা ক্যারিয়ারের জন্য সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে, ক্যারিয়ারে ইনভেস্ট করতে না পেরে ক্যারিয়ার ব্লকেজের শিকারও হই। তারপরও কিছু করার থাকে না।

কিন্তু পরিনত বয়সে যখন সবাই নিজ নিজ পথ বেঁছে নেয়, দাড়িয়ে যায় পুরো পরিবারের সবাই, তখন এই ব্যক্তিটি, এই সেই স্যাকরিফাইসিং ব্যক্তিটি আবিস্কার করেন, সবাই তারই ত্যাগের সাঁকো দিয়ে পাড় হয়ে উন্নত জীবনের বাসিন্দা। শুধু তার একার জীবনটা আজ চলছে পুরোনো প্রদীপের মতো।

অনেকই দেখেছি। আমি কাউকে স্বার্থপর হতে প্ররোচিত করছি না। তবে স্বার্থত্যাগকারী ও তার উপকারভোগীদের আরেকটু চিন্তাভাবনা করে নিতে বলছি।

সময় চিরকাল একরকম যায় না।

------------------+++

এলেবেলে-২৬: #trainingfun #trainingmockery

আমাদের যেকোনো টপিকে শুরু হওয়া টেরনিঙ কেন যেন ultimately
কী করিলে কী হইবে,
এবং,
তুমিও পারিবে-তে গিয়ে শেষ হয়।

টেরনিঙ হয়তো ছিল এ্যাডভান্সড এক্সেল এর ওপর, সেশন শেষে 'ভাইয়া'র উত্তেজিত গরম টেরনিংয়ের তুবড়ি থামলে আর উত্তেজিত শ্রোতাদের জোস কিঞ্চিত কমলে দেখা যায়, পুরো সেশনে বক্তৃতা হয়েছে ড্রপ আউট হয়েও স্টিভ জবস হওয়া আর বড় লিডার হবার নানা চোরাগলির বয়ান নিয়ে।

গোটা প্রফেশনাল জগতটা মাথা দিয়ে পাহাড় ঠেলে সরানোর পেছনে পড়ে যাচ্ছে। সেই পাহাড়ের নাম মুটিভেশন ও ইনসপিরেশন।

ওদিকে,

জাতিকে মোটিভেট করতে গিয়ে আমাদের বোদ্ধা ও বিজ্ঞরা মোটিভেশনের কাটাটির ইকুইলিব্রিয়ামকে বিভ্রান্ত করে ফেলেছেন।

এক স্টিভ জব্বারস আর বিলিগোট স্যারকে সামনে রেখে তারা 'একাডেমিক রেজাল্ট তথা cgpa ই সব নয়' এটাকে কচলাতে কচলাতে ওভারডোজ করে বাচ্চা পোলাপানের মগজে কু-বিশ্বাস ঢুকিয়ে দিয়েছেন ''CGPA কিছুই না।'

ফলাফল হচ্ছে ভয়াবহ। পড়বেন কিন্তু রেজাল্ট ম্যাটার করবে না, টুর্নামেন্টে যাবেন, জিততে হবে না, বিয়ে করবেন, বাচ্চা হতে হবে না, বাজেট ব্যয় করবেন, ব্রীজটা বাস্তবে বানাতে হবে না-কী চমৎকার!

------------------+++

এলেবেলে-২৭: #personalgain #goodorganization

জগদ্বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে আপনার ও প্রতিষ্ঠানের সুনিশ্চিতভাবেই অনেক পারস্পরিক প্রাপ্তি আছে।
তবে, তুলনামূলক পছন্দ তত্ব অনুযায়ী,

তুলনামূলকভাবে লো-প্রোফাইল বা অখ্যাত কিংবা ছোট প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কিছু ভাল দিকও আছে।
তার একটা হল কাজ ও এক্সপিরিমেন্টের অবারিত সুযোগ।

পেশাগত বহু বিষয় আপনি ছোট বা অখ্যাত প্রতিষ্ঠানে ইনিশিয়েট, এক্সপিরিমেন্ট ও এক্সপিরিয়েন্স করার সুযোগ পাবেন-যা বড়, বিখ্যাত ও জগদ্বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে কখনো পাবেন না।

------------------+++

এলেবেলে-২৮: #opportunist #laborlaw #businessaholic

একজন ’গারমেনশ’ এইছারেডমিন ষাড় মৃত্যুর আগে ওয়াসিয়াত করে গেলেন,

তিনি মরলে যাতে তার মরদেহের সাথে একখানা ল্যাবার-ল এর কিতাব দিয়ে দেয়া হয়।
ল্যাবার-ল ভক্তরা সেই মোতাবেক তার কবরে একখানা ১৫০ টাকা দামের ল্যাবার-ল কিতাব দিয়ে দিল।

কিছুদিন পরে ল্যাবার ল’তে এমেন্ডমেন্ট হল। সেই ষাড় তার ভক্তদের স্বপ্নে দেখা দিয়ে সেই এমেন্ডমেন্টের কপিও কবরে পাঠাতে বললেন।
ভক্তরা এবার পড়ল বিপদে।

এমেন্ডমেন্টের কিতাব কীভাবে কবরে দেবে?
যাহোক, তারা একটা কপি কিনে নিয়ে কবরে গেল।

কবরের মাটি সরিয়ে কবর উন্মুক্ত করা হল।
উন্মুক্ত করে তো অবাক। চোখ ছানাবড়া।

উপস্থিত ল্যাবার-ল ভক্ত বাহিনী দেখল,
কবরের মধ্যে ওই ষাড় আশপাশের কবরের দায়ীত্বে থাকা কর্মী, মানে মুনকীর,
নাকির,
অন্যান্য আজাব ও আরামের দেবদূতদের জড়ো করে
তাদেরকে ল্যাবার-ল এর ওপর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

ভক্তদের দেখেই বললেন, কী করি বলো, ওরাও তো লেবার। ওদেরও তো ল জানা দরকার।
এখন একটা গ্রুপফি তুলে দাও তো চটপট।

আজই ’অল পরলোক লেবার ইউনিয়ন পেজে’ আপলোড করব।

ভক্তরা জয়ধ্বনী তুললেন, ”লেবার ল অমর হোক।”

ধান্দাবাজরা স্বর্গে গেলেও ধান্দা বের করে ফেলতে পারে। ল্যাবার ল’ ভক্তদের ল্যাবার পেইনও যেকোনো স্থানে উঠে বসতে পারে।
মজার বিষয় হল, ওই ধনন্তরী আইনখানার নাম ‘ল্যাবার ল’ না।

ওটার নাম 'Bangladesh Labor Act 2006'

------------------+++

এলেবেলে-২৯: #customership #customercare #service

ব্যাবসা পাবার জন্য বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভব অসম্ভব সব করে। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু, গণহারে সবার অনাগ্রহ শুধু তিনটা জিনিসে-

দাম>কোয়ালিটি>কাস্টমার সার্ভিস।
এই তিনটা নিয়ে আগ্রহের স্থান শূন্যের কোটায়।

মিরপুরে বিগত তিন বছরে খাদ্য ব্যবসার বিষ্ফোরন হয়েছে। দুই নম্বর আর ছয় নম্বরের একটা বাসার নিচতলাও বোধহয় আর বাকি নেই।

নয়নাভিরাম সব ডেকোরেশন দিয়ে দোকানগুলোকে যেভাবে সাজানো হয়েছে, দেখলে মনে হয় রোম বা কায়রোতে এসে পড়লাম।
কিন্তু, মূল ফাঁকিটা সেই একই।

দাম, কোয়ালিটি ও কাস্টমার সার্ভিস-থোড়বড়িখাড়া ও খাড়াবড়িথোড়।

------------------+++

এলেবেলে-৩০: #developmentaholic #facedevelopment #destructivenation #destructivedevelopment

উন্নয়নের শরাব পানে মদমত্ত এই জাতির সর্বগ্রাসী ক্ষুধা ও বিধ্বংসী অস্থিরতা একদিন হয়তো পুরো পৃথিবীটাকেই গিলে খেয়ে নেবে।
না খেতে পেলেও এদের এই অস্থিরতা পুরো সৌরজগতের পারস্পরিক মাধ্যাকর্ষণজনিত ভারসাম্যকেও নাড়িয়ে দেবে।

বড়লোকস হবার রাক্ষুসে ক্ষুধা ঘরে ঘরে রাক্ষসের জন্ম দিচ্ছে। গিলে খাচ্ছে সব। ফুটপাত হতে সংস্কৃতি, ময়লার ব্যবস্থাপনা হতে চেতনা-সব, সব কিছু।

।।--।।

এলেবেলে-৩১: #aesthetism #classic #beautification #artwork #masterstroke #creativity #appropriateness #situationanalysis #gooddecision #instantdecision #situationdemand

ধরুন, আপনার অফিস রুমে বসার যায়গাটার পাশেই একটি ছোট্ট স্পেস আছে। একদিন মনে হল, ওই যায়গাটায় একটি কাঠের সাইড টেবিল বা ক্যাবিনেট দিলে সুন্দরও হবে, দরকারও সমাধা হবে।

কাঠমিস্ত্রীকে ডেকে বলুন। সে আপনাকে রাতারাতি একটা সাইড র‌্যাক বানিয়ে জায়গা ফিল দেবে। সেখানে আপনার ঘটিবাটিও রাখতে পারবেন। পারপাস সার্ভড।

কিন্তু একই মনোবাসনা একজন ইনটেরিয়র ডিজাইনারকে বলুন। সে আপনার সাইড টেবিলের দরকার তো পূরন করবেই, সেই সাথে কারিকুরি যোগ করে সে ওই ক্যাবিনেটের ভেতর দিয়ে আপনার কক্ষে একটা সৌন্দর্যও যোগ করবে। একে বলে মাস্টারস্ট্রোক বা ক্লাসিক জব।

যার যেটা কাজ, সেটা তাকে দিন। এবং, সম্ভব হলে, সব সিদ্ধান্তে বা সব দরকারে একাডেমিক বা ক্লাসিক ওয়ার্কারদের নিতে চেষ্টা করুন। হাতুড়ে বা প্রাকটিশনার আপনার পেটের বেদনার চিকিৎসা করে ব্যাথা কমিয়ে দিতে পারবে ঠিকই, কিন্তু এপেনডিক্স সার্জারি করতে পারবে না।

নিজে নিজে শিখে তবলা বাদক হতে পারবেন, ”বন্ধুর বাঁশি বাজে রে, আমার কানে কানে”-গানের সুর বাঁশিতে বা তবলায় তুলে দর্শকের বাহবা পাবেন। কিন্তু কখনো ধ্রূপদি বাদক হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া বা রাজেন্দ্রপ্রসাদ হতে পারবেন না। (যদি না আপনি রবীন্দ্রনাথ কিংবা মোজার্টের উত্তরপুরুষ না হোন। তবে মুশকীল হল, একজন স্বশিক্ষিত আলভা এডিসন কিংবা কাজি নজরুল গন্ডায় গন্ডায় পয়দা হন না।) কপি-পেস্ট কিংবা “ছায়া অবলম্বন” করে চটির লেখক, কিংবা বড়জোর ফেসবুক লেখক হওয়া সম্ভব। কিন্তু, একজন হুমায়ুন আহমেদ কিংবা শামসুর রাহমান হওয়ার জন্য গ্রামার দরকার, সবক দরকার, রেয়াজ দরকার, মহড়া দরকার, একাডেমি বা ওস্তারেদ সঙ্গ দরকার, আরও আরও অনেক কিছু দরকার।

তবে, খেয়াল রাখতে হবে, পরিস্থিতি কী চাইছে, কিংবা, পরিস্থিতির চাহিদা কী। ঘরে আগুন লেগেছে। তখন যদি আবার আপনি মনে করে, এই কাজে তো ফায়ার সার্ভিসই সবচেয়ে ওস্তাদ। তাদের আসা অব্দি অপেক্ষা করি। যা করার ওরাই সুন্দর করে করবে। তাহলে সব শেষ।

ওদের আসতে দিন। কিন্তু, তারা আসতে আসতে হাতের কাছে পানি বা বালু যা আছে, তাই নিয়ে আগে নিজেই চেষ্টা শুরু করে দিন।

।।--।।

এলেবেলে-৩২: #seminar #workshop #meeting #result

রঙিন তরল ও অনুজ্বল মানবতা:

----------একবার একখানা মানবতাবাদী কর্মশালায় গিয়াছিলাম। নিশ্চই প্রচুর পূণ্য কামাই হইয়াছে। আফটার অল মানবতার জন্য করা।
তবে ফাউ হিসেবে একখানা দামী স্যুট খরিদ করার খাহেশও মনে গাঁথিয়া লইয়া ঘরে ফিরিয়াছি।

কারন তথায় দেখিলাম, কমপ্লিট স্যুট না পড়িলে মানবতার সেবা করা যায় না।

৩ ঘন্টার সেমিনার হইল, এত সঙক্ষিপ্ত সময়ে দুইবার পিশাব করিবার বিরতি, চারদফা চা-সেনাকস বিরতি, ফুটু শুটিঙ হইল। সেমিনার শেষে বুফে সিস্টেমে মানবাধিকার রক্ষার মহান রথিমহারথীরা ভুড়িভোজে তৃপ্ত হইলেন। ঢেকুর তুলিতে তুলিতে পরবর্তি দেশোদ্ধারকারী সভার দিন তারিখ নির্ধারিত করিয়া সভাত্যাগ করিল।

আমি দেশ ও মানবের অধিকারকে কোনখানে দেখিতে পাইলাম না। মানবতার সওদা ইদানিঙ বেশ খুব বিক্রী হইতেছে।

কর্পোরেটদের একটা অত্যাবশ্যকীয় অনুসঙ্গ হইল সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম। এই হাস্যকর ও বিরক্তিকর ইভেন্টগুলোর একটি বড় অংশ আয়োজিত হয় রাত্রি বেলা।

দিনে রাতে যখনি হউক, তাহার সাথে লাঞ্চ বা ডিনার যোগ থাকে। ওই সেমিনার, সিম্পোজিয়ামগুলোর বেশিরভাগই একদল মানুষের টাকা কামাইবার ও সময় কাটাইবার মচ্ছব।

আরেকবার ফাইভ স্টার হোটেলের একখানা লেট নাইট সেমিনারে গিয়াছিলাম। রাত ১০ ঘটিকা বাজে। আমি উপস্থিত নারী ও পুরুষ কাহাকেও দেখিলাম না সামান্যতম উশখুশ করিতে।

বাড়ি ফিরিবার কোনো তাড়া আমি তাহাদের মধ্যে দেখিলাম না। কর্পোরেট আমাদের এমনই অভ্যস্ত করিয়া লইয়াছে।

আর উপস্থিত বোদ্ধাদের একটা বড় অংশই মোবাইলে ফেসবুকে ব্যস্ত রহেন সেমিনার চলিবার কালে। শুনিয়াছি, উঁচু স্তরের কোনো কোনো মানবতা রক্ষাকারী সেমিনারের বিশেষ মানবতাকর্মীদের জন্য মানবতার সেবা শেষে রঙিন মদিরারও ব্যবস্থা থাকে।

সেমিনার করিবার সহিত দেশ উদ্ধারের কী সম্পর্ক-উহা আজিও আমি বাহির করিতে পারি নাই।

সেমিনার ওয়ার্কশপ ঠিক কোন প্রকারে আমাদের কোনো কাজে আসে তাহা আজিও জানি না।

আপনারা জানেন কি?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×