[ মুখবন্ধ : কবিতায় “সনেট” না হয়ে “ননেট” কি ও কেন তা বুঝতে হলে অবশ্যই আপনাকে এটা পড়তে হবে । ]
কবিতা লেখার নাকি অনেক আইন আছে । কিন্তু যদ্দুর জানি, এই আইন ভাঙার তেমন কোনও ফাইন নেই । ফাইন আদায়কারী কোনও কর্তৃপক্ষও নেই মনে হয় । তাহলে কবিতা লিখতে বসলেই ঐ সব আইনের বা ব্যাকরণের ঝৈ-ঝামেলায় পড়ে আপনার মাথার চুল ছিড়তে হবে কেন ?
তাহলে শুনুন ---আমাদের নাগরিক দিনগুলো কি রাষ্ট্রীয় সংবিধান অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে ? চলেনা । তা হলে কবিতা লিখতে গেলে কবিতার সংবিধান লাইন বাই লাইন কেন মানতে হবে ? আর সংবিধান মানেই তো আইন কানুন । আর এই আইন কানুন প্রণয়ন তো বিশেষ গোষ্ঠীকৃতই হয় । মানুষেই করে । এই লিখিত সংবিধানের বাইরে কি পৃথিবীতে আর কোনও আইন নেই ? সবাই-ই তো যার যার মতোই আইন বানায় , তাইনা ? এই যেমন, ব্লগের আইন হলো অশ্লীল মন্তব্য করলে ব্যান খেতে হবে । এই আইন ব্লগ কর্তৃপক্ষের বানানো, জাতীয় সংসদ বানিয়ে দেয়নি । দেয়ালে আইন লেখা থাকে - “এখানে পেসাব করিবেননা । করিলে ১০টাকা জরিমানা” । এটা পাবলিকের বানানো আইন । সুতরাং আইন তো যে কেউ বানাতে পারে তার প্রয়োজন অনুযায়ী ! না কি পারেনা ?
তাই কবিতা বোদ্ধারা কবিতাকে নিয়ম কানুনের ফাঁসের দড়িতে কষে বেঁধে যতোই সনেট, অমিত্রাক্ষর, অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্ত ইত্যাদির শূলে চড়িয়ে দিতে চান , কেউ কেউ তো তা না ও চাইতে পারেন ! কবিতা বোদ্ধারা যদি আইন বানাতে পারেন, তবে অ-বোদ্ধারা তা পারবেননা কেন ? কৃষকটি কি কৃষিবিদ্যার বই পড়ে পড়েই চাষাবাদ করে ? সে চাষাবাদ করে তার নিজের মতো করে । কৃষিবিদ্যার বইয়ের মতো চাষ করেনি বলে তার উৎপাদিত ধান থেকে কি চাল হবেনা ? হবে এবং তাতে ভাত ও হবে ! সেই ভাত খেয়ে আপনার গায়ে-গতরে জোরও হবে ! কবিতা লিখতে জোশ পাবেন !
আমিও তাই নিজের মতো করে ইচ্ছাবৃত্তের ঢংয়ে এই ননেট বানালুম । নয় লাইনের কবিতা । প্রতি লাইনে নয়টি অক্ষর দিয়ে সাজানো। সনেটের আট লাইনের বদলে ছয়টি লাইন নিয়ে সাজানো হয়েছে প্রথম স্তবক এবং ছয় লাইনের বদলে তিন লাইন নিয়ে শেষ স্তবক।
( আমার মতো ন-কবিরা এবার জোরসে তালিয়া বাজাতে পারেন ।)
" তুমি আর নেই সে তুমি......"
তোমার আমার সকাল
ও মিষ্টি রোদের বিকাল
একসাথে আর রয়না ।
কখন কোথায় হারায়
সে অন্য মনের পাড়ায়
দুঃখ যে আর সয়না ।
যেদিন এমনি করেই
ঐ গেলে হারিয়ে ঝড়েই
দেখাই তো আর হয়না ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৯