বাইরে শীতটা খুব জাকিয়ে বসেছে। ধীরে কিন্তূ একটানা বাতাসে একেবারে কাপুনি ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। বেশ কুয়াশায়, মাথার চুল, চোখের পাপড়ি, ভিজে ভিজে আসছে। হঠাৎ ই জোনাকি দেখতে মন চাইল। থোকায় থোকায় জোনাকি, কুয়াশা ভেদ করে জলছে, নিভছে। একটু কাছে আসছে,সোজা উপরে উঠে যাচ্ছে অথবা দূরে সরে যাচ্ছে।
হাটতে হাটতে অনেকদূর এসে পড়েছে হোসেন। সামনে অন্ধকারটা ঝোপ ঝোপ, চাদের আলোয় যতটুকু দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে অযত্নে কোন বাড়ির পাশে পরিচয়বিহীন ভাবে এক জংলা বেড়ে উঠেছে।
জোনাক জলছে ওখানে। অনেকটা তৃষিত এর মত দাঁড়িয়ে জোনাক জলা মন ভরে দেখে নিচ্ছে হোসেন। একটু এগিয়ে হাত বাড়িয়ে ধরতে গেল। তক্ষনি জোনাকিগুলি এলোমেলো হয়ে গেল, নেই কিচ্ছু নেই।
আবার হাটা শুরু, টুক্টুক করে এগিয়ে যাচ্ছে হোসেন। রাত এখন গভীর, রাস্তায় কিচ্ছু নেই তারপর ও দুই একটা রিক্সা দেখা যাচ্ছে, অনেক অনেক আগে রিকশার নিচে হারিকেন লাগানোর নিয়ম ছিল, আলোর জন্য। মহল্লা গুলির ভিতর সন্ধ্যার পর রিকশা গুলি হারিকেনের টুক টুক আলো কে সাথী করে, টুংটুং বেল বাজিয়ে যেত।
খুব হারিকেন জালানো সেই রিকশায় চড়ার ইচ্ছে হচ্ছে হোসেনের। শীত উপেক্ষা করেই পাড়া থেকে পাড়া, মহল্লা থেকে মহল্লা হেটে বেড়াচ্ছে। যুগ বদলেছে, সময় পালটেছে সব কিছু নেই আর আগের মত।
অন্ধকার রোডের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে,
বৃদ্ধা কে জিজ্ঞেস করল হোসেন, সব কি বদলে যাওয়া খুব জরুরী?
উত্তর এলো, দিন শেষে মানুষ খুব একা।ভীষন। রাতের কাছে তোমাদের ওই মুখোশ বড্ড ঠুনকো।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৯