somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইফ নাদির
এক খণ্ড সাদা পাতায় পুরো পৃথিবী লিখবো বলে কলম ধরেছি। এক খণ্ড কাঁদা মাটিতে পুরো সবুজ ফলাবো বলে হাল বেয়েছি। এক খণ্ড রঙিন কাগজে পুরো বিশ্ব আঁকবো বলে রং তুলি এনেছি। এক খণ্ড হৃদয়ে পুরো দুনিয়া পুষবো বলে দৃঢ়প্রত্যয়ি হয়েছি।

মৃত্যু

২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কল্পনা করুন, আপনি মরে গেছেন। সবকিছু থেমে গেছে। বাসা ভর্তি আত্মীয় স্বজন কান্নাকাটি করছে, কান্না থামানোর চেষ্টা করছেন অথচ কেউ আপনাকে শুনতে পাচ্ছে না। বন্ধুরা সবাই শেষ বাবের মত দেখতে এসেছে, ওদের সাথে বসে গল্প করতে খুব ইচ্ছে করছে অথচ তারা কেউ আপনাকে সময় দিচ্ছে না। কয়েকজন প্রতিবেশী কবর খুঁড়ছে, ওদেরকে বাঁধা দিচ্ছেন অথচ কেউ আপনার বাঁধা মানছে না। কিছু লোক গোসলের জন্য পানি গরম করছে, ওদেরকে পানি গরম করতে নিষেধ করছেন অথচ ওরা শুনছে না। গোসল করিয়ে লম্বা লম্বা সাদা কাফন পরিয়ে মাথার কাছে গিট দেয়ার ফলে ভিতরে আপনার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আপনি ছটফট ছটফট করছেন অথচ কেউ আপনার কষ্টটা বুঝতে পারছে না। জানাযা পড়ার জন্য খোলা ময়দানে অনেক মানুষ জমা হয়েছে। জানাযা শেষে, বন্ধু-বান্ধবরা পালাক্রমে খাটিয়া বহন করে কবরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, আপনি কাফনের কাপড় থেকে বেরোনোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছেন অথচ পারছেন না, যেন কোনো এক ঐশী শক্তি আপনাকে আঁটকে রেখেছে। সবাই মিলে আপনাকে কবরে রাখছে, ওদের হাতে পায়ে ধরে খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে, ‘‘আর ক’টা দিন পৃথিবীতে আমায় থাকতে দাও’’ অথচ আপনি তা পারছেন না। ওরা এবার বাঁশের ফালি দিয়ে কবর ঢেকে দিচ্ছে, আপনি বুক ফেটে চিৎকার করছেন অথচ কেউ শুনছে না। আল্লাহর নামে দোয়া পড়ে, তিন মুঠ করে সবাই মাটি দিয়ে সরে যাচ্ছে। নিকট আত্মীয়রা মাটি দিয়ে আপনার কবরকে উটের কুজের মত বানিয়ে তার উপর একটা বড়ই গাছের ডাল গেড়ে দিয়ে, তারাও চলে যাচ্ছে, আপনি কবরে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন অথচ আপনার কান্নার আওয়াজ কেউ শুনতে পাচ্ছে না।

কেউ মরতে চায় না, অথচ সবাইকে মরতে হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘‘সীসা ঢালা প্রাচীরে ঘেরা কোনো সুদৃঢ় প্রাসাদের ভিতরে আত্মগোপন করলেও মৃত্যু সেখানে পৌঁছে যাবে।’’ কিন্তু কখন, কোথায়, কিভাবে মৃত্যু চলে আসবে কেউই বলতে পারে না। যেকোনো সময়, যেকোনোভাবে মৃত্যু চলে আসবে। হাত জোড় করে সময় বাড়িয়ে নেয়ার মিনতি করেও কোনো লাভ হবে না। এক মুহূর্তকালও বিলম্ব করবে না, সময় হলেই মৃত্যু হাজির হয়ে যাবে।

পৃথিবীর সবচে’ বড় বাস্তবতা হচ্ছে মৃত্যু। যে পদে আপনি এখন অধিষ্ঠিত আছেন, সে পদে থাকা অজস্র মানুষ পৃথিবীর বাইরে চলে গেছে। যে পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, সে পথে হেঁটে যাওয়া অসংখ্য পথচারী হারিয়ে গেছে। যে ঘরে শুয়ে আছেন, সে ঘরে শুয়ে থাকা আপনার দাদুভাইও না ফেরার দেশে পারি জামিয়েছে। যে ইজিচেয়ারে বসে দুলছেন, সে চেয়ারে বসে থাকা আপনার বাবাও হয়ত কিছু দিন আগে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে চলে গেছেন। কর্মক্লান্তির পরে পাপ্পুর দোকানে বসে যে কাপে চা খাচ্ছেন, সে কাপে চা খাওয়া হাজারও মানুষ আজ কবরের মাটিয়ে শুয়ে আছে।

আপনি তো মরে যাবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এমন কিছু মানুষ পৃথিবীর বুকে রেখে যান, যারা খোদার কাছে আপনার মাগফেরাতের জন্য দু’হাত তুলে ফরিয়াদ করবে এবং রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কর্মগুলো সমাপ্ত করে দুনিয়ার বুকে আপনাকে স্মরণীয় করে রাখবে।
.......................................................
মৃত্যু / সাইফ
ফেইসবুক ডি-একটিভ থেকে একটিভ করার পর প্রথম লেখা।
পি টি আই রোড, কুষ্টিয়া
১৯-১০-১৮ ইং
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:০১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×