somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মস্তিষ্কের প্রথম "সোশ্যাল নেটওয়ার্ক"

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের ভেতর এই আক্ষেপ তো কম বেশি সবার থাকে যে এত বড় পৃথিবীতে কেউ আমাকে বোঝেনা, এমনকি মনের কথা খুলে বললেও না, এমন একজন মানুষ নেই যে আমাকে আমার মতন বুঝবে কিছু বলতে হবে না।
কিংবা কেমন আছেন কথাটার জবাবে আমরা ভালো থাকি মন্দ থাকি মন ভালো থাকে মন মন্দ থাকে বিপদে আপদে যেভাবেই থাকিনা কেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে জবাব দেই ভালো আছি, সেই ক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তা ও উত্তর শুনে খুশি হয়।
বলা যায় আমরা মানব সম্প্রদায় মুখে মুখোশ পড়ে ভালো আছি সেজে থাকি আবার অনেক ক্রিমিনাল ও ভালো মানুষ চেহারায় ধারন করে দিন অতিবাহিত করেন কারোই বুঝবার উপায় থাকে না কি তার মনে।



এই সকল জটিল দৈনন্দিন পারস্পরিক সামাজিক ও মানসিক যোগাযোগের মাধ্যম উন্নত করতে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি (ইউডব্লিউ) এবং কার্নেগী মেলন ইউনিভার্সিটির একটি দল একটি ব্রেইননেট নামে একটি সিস্টেম তৈরি করেছে, যা তিনজনের মস্তিষ্কের শক্তি ব্যবহার করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে।



এই সিস্টেমটাকে বলা হয় একটা টেট্রিস গেইম । এই গেইমেযোগাযোগের মাধ্যম শুধু চিন্তা। টেট্রিস খেলায় অংশগ্রহণকারীরা কোনো ভাষা, অভিব্যক্তি বা শারীরিক ভঙ্গি ব্যবহার করেন নাই।

ইউডির গবেষক রাজেশ রাও নিউজউইককে বলেন, "২০১৩ সালে, আমরা প্রথম মানব মস্তিষ্কের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ও সহযোগিতার জন্য প্রথম মস্তিষ্ক-থেকে-মস্তিষ্ক ইন্টারফেস করেছিলাম।
চেষ্টা ছিল কেউ একাধিক মস্তিষ্কের কাজ করতে পারে এমন সমাধান করার জন্য দুই বা ততধিক মস্তিষ্কের একটি 'সামাজিক নেটওয়ার্ক' তৈরি করতে পারে কিনা। ব্রেইননেট এই ধারণাটির প্রথম প্রমাণ।




ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন ও কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির একটা যৌথ দল সফল ভাবে এই ব্রেইননেট নিয়ে গবেষণা চালান এবং এই ব্যাপারে বিবৃতি প্রদান করেন।

তারা ব্রেইননেট (BrainNet) সম্মিলিতভাবে সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে একাধিক ব্যক্তির সাথে ঝুঁকিহীনভাবে এটা সর্বপ্রথম সরাসরি ব্রেইন-টু-ব্রেইন এর সংযোগ করতে সক্ষম হন।

এই ব্রেইন-টু-ব্রেইন ইন্টারফেসের সাথে যুক্ত ইলেক্ট্রোয়েনসেফালোগ্রাফি (EEG) ও ট্রান্সক্র্যানিয়াল ম্যাগনেটিক সিমুলেশন (TMS) । এই EEG ব্রেইন সিগনাল রেকর্ড করে এবং TMS ব্রেইন সিগনাল পাঠানোর কাজ করে।
ব্রেইননেট সংযুক্ত তিনজন অংশগ্রহণকারী কোনো ভাষা ব্যবহার না করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে করতে সক্ষম হন।

এই পরীক্ষায় দুইজন ‘সেন্ডার্স’ বা প্রেরক হিসেবে কাজ করেছিলেন। এই দুইজন কাজ ছিল টেট্রিস ব্লক সেট করার জন্য তৃতীয় জনকে নির্দেশনা দেওয়া।
ব্রেইননেটের ‘টেলিপ্যাথিকালি’ ডেটা পাঠানোর গ্রাফিক চিত্র
প্রেরকেরা EEG ইলেক্ট্রোড কন্ডাকটরের সাথে সংযুক্ত থেকে তাদের ব্রেইন যে তরঙ্গের ফ্রিকোয়েন্সি বা সিগনাল তৈরি করেছে সেটা তৃতীয় জনের কাছে পাঠানোর কাজ করেছে EEG। যেমন, কোনো প্রেরক যদি ১৫ হার্জ এর এলইডি লাইট দেখে, তাহলে ব্রেইন একই ফ্রিকোয়েন্সিতে একটা সিগনাল তৈরি করে এবং EEG সাথে সাথে সেটা পাঠিয়ে দিত। প্রেরকেরা টেট্রিস ব্লক কোন দিকে সেট করা হবে সেটার জন্য নির্ধারিত এলইডি লাইট দেখে বা পর্যবেক্ষণ করতো, দুটি এলইডি লাইটের মধ্যে একটা লাইটের অর্থ ছিল টেট্রিস ব্লক যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দেওয়া, এবং আরেকটা ব্লকের অর্থ টেট্রিস ব্লকটিকে রোটেট করাতে হবে বা ঘুরাতে হবে।



গবেষকরা আশা করছেন যে এই প্রযুক্তি হয়ত নতুন ধরনের সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করবে।
তারা বলছেন, ব্রেইন-টু-ব্রেইন যোগাযোগের মাধ্যমে হয়ত ভবিষ্যতে মানুষ ব্রেইনের মাধ্যমে অন্যদের সাথে সাথে যোগাযোগ করে একটা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবে। কেমন হবে তখন ব্রেইন-টু-ব্রেইন যোগাযোগ মাধ্যমের সামাজিক জীবন পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝাপড়া?

তথ্য সুত্রঃ- SCIENTISTS CONNECT THREE PEOPLE'S MINDS SO THEY CAN COMMUNICATE USING BRAINWAVES ALONE



BrainNet allows three people to communicate using brainwaves to play TetrisRewriting Life The first “social network” of brains lets three people transmit thoughts to each other’s heads

ছবিঃ- ANASTASIA MITYAKOVA'S MAKE-UP MODEL
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০২
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×