১।
সকালে রাস্তায় তাকায়। ফাঁকা রাস্তা । কয়েকটা কুকুর পায়চারী করে। রাস্তার রাজত্ব পেয়ে গেছে তবু ভীষণ অস্বস্তি নিয়ে তাকায় এদিক ওদিক । অস্বাভাবিকতা কুকুরগুলোও পছন্দ করছে না। খুব রাতে নীরবতা ভেদ করে এই কুকুর গুলো কেঁদে উঠে। কি ভয়ংকর!
২।
গত পরশু বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। জরুরী ওষুধ আর বাচ্চার দুধ কেনার জন্য । রিক্সায় উঠতে যাবো দেখি অনেক বাজার - চাল , ডাল, তেল,আলু,পেঁয়াজ । ভাবলাম কারো বাসায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছে । রিক্সা চালক বললো, মামা উঠেন।
আমি বললাম, কিন্তু বাজার?
'ঐটা আমার । ভাইয়ারা দিছে।'--
রিক্সা চালকের মুখে মাস্ক। তাই মুখ না দেখা গেলেও চোখ দুটো ঠিকই জ্বলজ্বল করে উঠলো। চোখ অনেক কথা বলে।
চরম দুঃসময় অপেক্ষা করছে আমাদের। আমি আকাশের দিকে তাকালাম। আমার চোখের অজস্র প্রার্থনা দূর আকাশে মিলিয়ে গেল।
৩।
৭১ টিভিতে দেখলাম, হাজারবার বলার পরেও ঠুনকো অজুহাত নিয়েও মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে । কারো ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না। কেউ বাতাস খেতে বের হয়েছে। সেনাবাহিনী বল প্রয়োগ করছে না। একজন বলছে, "ডাব খেতে এসেছি । ডাব খেয়ে চলে যাব।"
এই ডাব খাওয়া লোকদের জন্য "বিশেষ পরিস্থিতিতে ডাব খেতে ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না" টাইপের একটা দীর্ঘমেয়াদী সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম হাতে নিতে পারে ইউনিসেফ/ইউনেস্কো । আশাকরা যায় আগামী ৫৫ বছর পর খুব ভালো ফল পেতে শুরু করবে বাংলাদেশ । আশায় থাকুন।
৪। এয়ারপোর্টে বসানো থার্মাল স্ক্যানারে টেম্পারেচার ধরা পড়েনি। যারা বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন তারা প্লেনে উঠার আগে দুই তিনটা প্যারাসিটামল খেয়েছে। তাই টেম্পারেচার ধরার কোন উপায় নেই ।
যমুনা টিভিতে প্রায় এমন কথাই বললেন একজন বিশেষজ্ঞ ।
কোয়ারেন্টাইন বোঝে না কিন্তু জ্বর যেনো না ধরা পরে তার জন্য কি করতে হবে সেটা বোঝে আমাদের অবুঝ 'রেমিটেন্স যোদ্ধারা '।
৫।
আগামী দশদিন কিযে ভয়াবহ হতে পারে। ভাবতেও চাই না। দুপুর থেকে মাথাটা দপদপ করছে। ব্যথা কমেনা। উপায় না থেকে টাফলিন খেলাম। এখন ঘুমাবো। মাথা ব্যথা নিয়ে চিন্তা করা যায় না । প্রচন্ড গরম । জানালা খোলা। ঘড়িতে রাত ১টা বেজে ৫৫ মিনিট । রাস্তায় পায়চারীরত কুকুরের পাল কেঁদে উঠলো ।
৬। আমার ছেলেটার খুব ভাঙে সকাল ৮ টায়। এর পর একঘন্টা নিজে নিজেই খেলে। ঘুম ভেঙ্গে যখন আমি তাকাই দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে । কি অদ্ভুত মায়া !কি অদ্ভুত মায়াময় চোখ!! বাঁচতে ইচ্ছা হয় খুব। এই পৃথিবী যথেষ্ট সুন্দর । জীবনটাও খারাপ না।