(উৎসর্গ: স্বঘোষিত বলাগারকে)
আওরত খাঁ, সম্ভ্রান্ত বউ পেটানো বংশের ছেলে। হ্যা, এখন অবশ্য সে আর ছেলে না, এখন সে দুই পত্নীর মালিক। তাঁর দিক থেকে বলা যায়, বিবাহিত সুপুরুষ। আট গ্রামের লোকজনের কাছে তাঁর বংশের একটা সুনাম আছে (সেটা আপনারা গল্প পড়েই বুঝে নিতে পারবেন )।
তাঁর সাথে আমার ছেলে বেলায় পরিচয় ঘটে। হোস্টেলে কিছুদিন ওঁ আমাদের সাথে ছিল। পরে আমরা ওঁর সুবিধা ও সম্মান রক্ষার্থে হোস্টেল মাস্টারকে বলে তাকে অন্য রুমে স্থানান্তরিত করি। ওঁর যে অভ্যাসগুলো আমাদেরকে বিরক্ত করতো তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্টাবলিশ টাইপের অভ্যাস ছিল, অতি প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা। মাঝেমধ্যে তাকে প্রত্যুষের কাক গুনতে দেখতাম। প্রথম দিকে আমরা অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে সে কিছুই বলতো না। একসময় আমাদের অবাক হওয়াটা বিরক্ততায় এসে ঠেকে। একদিন গ্রাম থেকে ওঁর এক জ্যাঠাতো ভাই আসলে তাকেও প্রত্যুষের কাক গুনতে দেখি। ওঁদের দু'ভাই মিলে খালি গায়ে দরজার চৌকাঠে বসে প্রত্যুষের কাক গুনার দৃশ্যটা আসলেই ইন্টারেস্টিং ছিল। আমি প্রথম দিন ওদের দৃশ্য দেখে হেসে উঠলে রিফাত আমার হাসি দেখে চেঁচিয়ে উঠেছিল: দেখ আদিল্লা ( ও আমার প্রতি বিরক্ত হলে আদিলের পরিবর্তে অদিল্লা ডাকত) বান্ঝুতদের কারবার দেখে তুই হাসিস নে।
ঐদিন দুপুরে ওঁর জ্যাঠাতো ভাইকে ধরলে মূল ঘটনা বেড়িয়ে আসে।
বছরখানেক পূর্বে হঠাৎ আনন্দ হলের সামনে আওরত খাঁর সাথে দেখা হয়ে যায়। মুসাফাহা মোয়ানাকার পর জানতে পারলাম তাঁর দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করার খবর। লক্ষ্য করলাম এখন তার মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বেড়েছে কথা বলার স্পিডও। এবছর যে হজে যাচ্ছে সেটাও জানিয়ে দিল কথার ফাঁকে। চা নাস্তার পর দুজন দুদিকে চলে গেলাম। সময়ের অভাবে তাঁর পূর্বের অভ্যাস বহাল তবিয়তে রয়েছে কিনা সেটা জানতে পারলাম না।
চলবে...
সর্বশেষ সাক্ষাতটি পরের পর্বে প্রকাশ পাবে ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষা ও আলোচনার টপিক: মুচি প্রফেসর হলেও অভ্যাস যায় না।