অরিগনে এসেছি মে মাসের শুরুতে। মে মাসের ৩০ তারিখে গিয়েছিলাম প্রশান্ত মহাসাগরের ( Pacific Ocean) Canon beach -এ। বাসা থেকে দুরুত্ব প্রায় ৮০ মাইল, আমেরিকাতে এই দুরুত্ব কোন ব্যাপার না, হাইওয়ে দিয়ে দেড় ঘন্টার ভিতর সহজেই যাওয়া যায় এই দুরুত্ব! আমেরিকার হাইওয়েগুলো সত্যিই চমতকার! বিকেলে রওনা দিয়ে সময়মত পৌছে গেলাম বিচে! অরিগনের একটা সমস্যা হল এখানে বছরের বেশীর ভাগ সময়ই বৃষ্টি হয়, যাবার সময়ও রাস্তায় মাঝে মাঝে বৃষ্টি পেয়েছিলাম, তাই কিছুটা সন্দেহ ছিল আবহাওয়া ভাল থাকে কিনা, গিয়ে দেখলাম চমৎকার আবহাওয়া!
আজ শনিবার অর্থাৎ সাপ্তাহিক ছুটির দিন আমাদের এখানে। এই সোমবার আমেরিকাতে স্বাধীনতা দিবস, সেই ক্ষেত্রে বড় একটি ছুটি পেলাম, টানা তিনদিন শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত। অবসরে ভাবলাম আমার সমুদ্র দর্শন নিয়ে কিছু লেখি! আফসোস এই ছুটিতে দুরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারছিনা কারণ আমি গাড়িটা টয়োটা সার্ভিস সেন্টারে দিয়ে এসেছি কয়েকদিন হল, আজ সকালে টয়োটা থেকে ফোনে জানাল গাড়ি বুধবারের আগে পাব না!
অরিগনে এসেছি মে মাসে, এখানে গাড়ী রেজিষ্টেশোন করতে হলে স্মোক টেস্ট দিতে হয়, আমার গাড়ি স্মোক টেঁস্টে ফাস্ট ডিভিশনে ফেল করেছে, ওরা আমাকে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলল গাড়িটিতে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেটা ঠিক করে যেন আবার আসি। যাইহোক আমি আগে যেই স্টেইটে থাকতাম সেখানে এরকম কোন টেস্ট ছিল না যাইহোক এখন গাড়ি কবে হাতে পাব সেই অপেক্ষায় আছি!
ছবিতে সী-বিচে যেই ছোট পাথরের পাহাড়গুলো দেখা যাচ্ছে, এগুলো এই বীচের আকর্ষন বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। পর্যটকদের কাছে এই ছোঁট পাথরের পাহাড়গুলোর চাহিদা অনেক।
যাইহোক আমরা দুটি ফ্যামিলি মিলে গিয়েছিলাম এই ভ্রমণে। যেই ফ্যামিলির সাথে গিয়েছিলাম সেই ফ্যামিলিও অরিগনে এসেছে আমরা যেদিন এসেছি সেদিন, কাকতালিয়ভাবে আমরা একই ইউনিভার্সিটিতে জয়েন করেছি এবং আমাদের নামও একই, এসেছিও আমেরিকার দক্ষিণ থেকে। তাই অল্পদিনেই ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে আমাদের মাঝে, উইকেন্ডে একই সাথে বের হই আমরা বিভিন্ন জায়গায়!
অরিগনে সী-বিচ অনেক যেহেতু প্রশান্ত সাগরের পাশে অবস্থিত তবে এখানকার পানি খুব ঠাণ্ডা, পানিতে নামা যায় না! মানুষজন এখানে তেমন পানিতে নামে না। আমেরিকার দক্ষিণে যেমন ফ্লোরিডার বীচগুলোর আবহাওয়া আবার ভাল, সেখানে পানিতে নামা যায়, প্রচুর মানুষ পানিতে নামে।
বীচের পাশে পর্যটপকদের থাকার জন্য অনেক হোটেল আছে। হোটেলগুলো বেশ সুন্দর। তবে আমরা এখানে থাকি নাই যেহেতু আমাদের বাসা থেকে বীচের দুরুত্ব খুব বেশী নয়!
অনেক মানুষ ঘুরতে এসেছিল এই বীচে। বীচটি সত্যিই অসাধারণ ছিল।
সারাদিন ঘুরাঘুরি করে আমরা সন্ধ্যায় বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমরা সূর্যাস্তের জন্য অবশ্য অপেক্ষা করি নাই কারণ এখানে সূর্য ডুবে রাত সাড়ে নয়টার পর, তাই সন্ধ্যা সাতটা বাজতেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।
ভ্রমন পোষ্ট ১: আমার থাই এবং লাউস ভ্রমনের গল্প
ভ্রমন পোষ্ট ২: ঘুরে এলাম আমেরিকার সানফ্রানসিসকো
ভ্রমন পোষ্ট ৩: আমেরিকার আলাবামা থেকে ওয়াশিংটন রোড ট্রিপ
ভ্রমন পোষ্ট ৪: আমেরিকার আলাবামা থেকে পোর্টল্যান্ড রোড ট্রিপ
ভ্রমন পোষ্ট ৫: অরিগনের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট-হুড
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৫৪