somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশ্যই ব্লগার নুরু সাহেবের অভিশাপ কাজ করছে

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি দীর্ঘদিন থেকে এক গায়েনীজ মহিলার দোকান থেকে ফলমুল, শাকসবজী কিনি; মহিলা ক্যাশে থাকেন; বিকেলে ভীড় হলে, উনার স্বামী আরেকটা ক্যাশ খোলেন। সেদিন বিকেলে দোকানে গিয়ে দেখি তাদের কলেজে-পড়া মেয়েটি বাবার ক্যাশে কাজ করছে; আমি এটা সেটা কিনে মায়ের লাইনে দাঁড়ালাম; তিনি ইশারায় মেয়ের লাইনে যেতে বললেন; মেয়েকে লক্ষ্য করে বললেন,
-ইনি আমাদের বন্ধু মানুষ, আমাদের অনেকদিনের কাষ্টমার।
-ওমা, তোমাদের পাকিস্তানী বন্ধুও আছে? এরা তো জাল নোট দেয়!
-চুপ কর, বেকুব মেয়ে! প্রথমত: উনি পাকিস্তানী নন, বাংলাদেশী; উনি আমাদের পারিবারিক বন্ধু।
-ঠিক আছে, ঠিক আছে; পারিবারিক বন্ধু তো আমারও বন্ধূ।

ক্যাশ মেশিনে মুল্য চাপতে গিয়ে মেয়ে বারবার ভুল করছে, মাকে সবকিছুর দাম জিজ্ঞাসা করছে; আমি বিপদেই পড়লাম মনে হয়, দাম কম রাখলে তো অসুবিধা নেই, বেশী নিলে আমার মনটা খারাপ হবে শেষে। আমি নীচু গলায় বললাম,
-মেমোরি কম নাকি, কোন কিছুর মুল্য মনে থাকে না?
-মেমোরি আছে, মেমোরি আছে, এখন বড় হয়ে গেছি, মেমোরিও অনেক বড় হয়ে গেছে! তবে, ওখানে শাক লতাপাতার মুল্য লেখা নেই, আছে ফুল, ফল, মৌমাছি, মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়ের কবিতা!
-আমিও কবিতা ভালোবাসি!
-তাই নাকি? তা'হলে আমাদের রাস্তা একদিন হয়তো কোথায়ও পরস্পরকে কাটবে।


আমি চুপ, বেশী কথা বলতে চাইলাম না; শেষে মা কি মনে করে। বাসায় এসে দেখি, স্পারাগাস এক প্যাকের স্হানে ২ প্যাকের মুল্য নিয়েছে; মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো! তার সৌন্দয্য তার, টাকা নষ্ট হয়েছে আমার। ঠিক আছে, তা'কে একটু ধরতে হয়; ঘরে ১০ ডলারের ২টি জাল নোট অনেকদিন থেকে পড়েছিলো। ৩/৪ দিন পরে বিকেলে দোকানে গেলাম, ২১ ডলারের মত বাজার করলাম; টাকা দেয়ার সময়, ২ ডলারের একটা নোট দিলাম উপরে, তারপরে ১ ডলারের অনেকগুলো নোট, প্রায় শেষের দিকে ১০ ডলারের জাল নোট! সে ২ ডলারের নোট পেয়ে এমনভাবে উত্তেজিত হয়ে উঠলো যে, বাকী টাকা গুণেও দেখেনি। ২ ডলারের নোটটা নিজের পকেটে রেখে দিলো; আমাকে বারবার ধন্যবাদ দিলো।

সপ্তাহ'খানেক পর, কাজের দিনে দোকানে গেলাম, লোকজন নেই, মা বাইরে বসে বাতাস খাচ্ছে, মেয়ে ক্যাশে। মেয়ের মা বললো,
-ফ্লোরিডার ছোট কমলা এসেছে, এই সিজনে আজকে প্রথমবার, খেয়ে দেখবেন।

আমি এটা সেটা কেনার পর, ১ কমলা খেয়ে দেখলাম, বেশ ভালো; আমি আরো ২/১টা খেলাম; দেখি মেয়ে তাকিয়ে আছে! মেয়ে তাকিয়ে থাকায় আমি আরো ২টি খেলাম। শেষে ৩/৪ পাউন্ড কমলা নিলাম। ক্যাশে আসার পর মেয়ে আমাকে বলে,
-তোমার ওজম কত?
-১৮০ পাউন্ড।
-বরাবর?
-বরাবর অবধি জানার কি দরকার?
-এখন আমি তোমাকে পাল্লায় তুলে মাপবো, তার থেকে ১৮০ পাউন্ড বাদ দিলে বুঝতে পারবো কি পরিমাণ কমলা তুমি খেয়েছো!
-মাপার এই পুরানো পদ্ধতিই তুমি শুধু জান? মেয়েরা বিনা পাল্লায়ও মানুষের ওজন মাপতে পারে!
-তুমি বলছ, মেয়েরা বিনা পাল্লায়ও মানুষের ওজন মাপতে পারে?
-হ্যাঁ, পারে!
-পারিবারিক বন্ধু, তুমি খুবই আকর্ষনীয় কথা বলেছ; আমার খুব ভালো লেগেছে! আমি আমার মাকে এটা শোনাতে চাই; তুমি কি বল!
-না, মাকে বলার দরকার নেই!
-আমার মনে হয়, বলাই ঠিক হবে!
-না, না বলাই ঠিক হবে!
-আমার মনে হয়, তুমি ছোটখাট একটা ধরা খেয়েছ!

সে হাসছে, আমাকে কৌশলে ধরেছে, এমন একটা ভাব। পয়সা দিয়ে বের হওয়ার আগে তার হাতে ১০ ডলারের একটা নোট দিলেম।
-এটা কিসের জন্য?
-গতদিন তোমাকে জাল ডলার দিয়েছিলাম, টের পাওনি?
-ঐ কাজ তুমি করেছিলা? আমাকে অনেক বকুনী খাওয়ায়েছো তুমি! এটাকে বলে পারিবারিক বন্ধু?










সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×