তসলিমা নাসরিণকে নিয়ে আমার সকল ধারণাই থিওরিটিক্যাল, আমি উনাকে জেনেছি ব্লগ ও মিডিয়া থেকে; আমি উনার কোন বই পড়িনি, মিডিয়ায় উনার উপর লেখা, অনেক ম্যাঁওপ্যাঁও বক্তব্য শুনেছি, উনার বইয়ের উপর আলোচনা, সমালোচনা পড়েছি, উনার ব্যক্তিগত জীবনের উপর লেখা আলোচনা ও খবর পড়েছি, বিদেশে থাকার কষ্ট নিয়ে উনার নিজের লেখা খবর টবর পড়েছি। আমার চোখে উনি একজন জন্মসুত্রে বাংগালী, বাংলাদেশের নাগরিক; ব্লগে লিখলে বুঝতে পারতাম উনি কেমন লেখক: ডোডো জাতীয়, নাকি ম্যাঁওপ্যাঁও, নাকি নুরু সাহেবের মতো!
উনাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে মোল্লাদের ভয়ে, এটা ভয়ংকর ব্যাপার; ২ পয়সার মোল্লরা উনার মাথার উপর লাখ টাকার ঘোষণা দিয়েছিলো নাকি! যাক, এই দেশ মোল্লাদের দেশ নয়। ব্লগে শতশত ব্লগারকে উনার বিপক্ষে লিখতে দেখেছি, এটা উনাদের ব্যক্তিগত মতামত। ব্লগে আমি সামান্য পরিমাণ ব্লগারকে দেখেছি, যারা উনার দেশে ফেরার বিপক্ষে; এগুলো ভালো ব্লগার নন, ডোডো ব্লগার। উনি যদি কোন ধরণের অপরাধ করে থাকেন, এসব ব্লগারেরা উনার বিচার চাইতে পারেন; কিন্তু একজন জন্মসুত্রে নাগরিকের দেশে ফেরার বিপক্ষে মতামত দেয়া একজন ব্লগারের উচিত নয়: মোল্লা, জামাত-শিবির, ইত্যাদিরা এগুলো বলে আসছে, বলতে পারে; ওদের ভাবনাশক্তি সীমিত ও কথার কোন মুল্য নেই।
ব্লগে, অনেক ব্লগারদের পোস্টে একটা বিয়য় বরাবরই থাকতো যে, "তাসমিমা নাসরিণ কোরান শরীফকে অবমাননা করেছেন"; কোরান শরীফকে অবমাননা করলে, তার বিচার কে করবে, মোল্লারা, জামাত-শিবির ও বিএনপি দলের নাগরিকেরা? দেশে কি আইন আছে, কেহ কোরান শরীফ অবমাননা করলে, অন্য নাগরিক তার বিচার করতে পারবে? ব্লাসফেমী নামে যা আছে, উহাও কোর্টের অধীনে বিচার।
কেহ যদি মনে করেন যে, তাসলিমা নাসরিণ কোরান শরীফ অবমাননা করেছেন, তাদেরকে আদালতে যেতে হবে; দেশের আইনে তসলিমার বিচার হোক; কিন্তু উনার দেশে ফেরার বিপক্ষে কথা বলা অন্যায়।
যারা তসলিমার 'দেশে ফেরার বিপক্ষে' কথা বলে, তাদেরকে ঠেকোনোর দায়িত্ব হচ্ছে শেখ হাসিনার, উনি বড় লাঠির মালিক। আমরা ব্লগার হিসেবে (যারা উনার দেশে ফেরা সমর্থন করে থাকি) শুধু তসলিমা নাসরিণের পক্ষে কথা বলতে পারি; কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে হবে শেখ হাসিনাকে।
শেখ হাসিনা যদি তসলিমাকে দেশে আনেন, এতে শেখ হাসিনা মোল্লা, জামাত-শিবির ও বিএনপি'র লোকদের শক্তি মাপারও একটা সুযোগ পাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৭