যেসব পরিবার কোরবানী করে গড়ে ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন, এবং গড়ে ৩০ হাজার টাকার মাংস পেয়েছেন, তাদের ২০ হাজার টাকা 'বাতাসে মিশে' গেছে। এই ২০ হাজার টাকা বা তার চেয়ে কম টাকা একজন বা একাধিক মানুষ লাভ হিসেবে পেয়েছেন। ৫০ হাজার টাকা খরচ করে, ৩০ হাজার টাকার মাংস যা ঘরে এসেছে, তা খাওয়া হয়ে যাবে। কিন্তু মহামারীর সময় কেহ বাজারে গিয়ে এক সাথে ৩০ হাজার টাকার মাংস কেনার কথা ভাবার কথা নয়; এই সময়ে ৩০ হাজার টাকার মাংস কেনার আগে মানুষ অনেকবার ভাবতেন, হঠাৎ করে এতগুলো টাকা শুধু মাংসের জন্য খরচ করা ঠিক হবে কিনা? আরো তো অন্য খাত আছে, জরুরী কোন কিছু ঘটতে পারে কিনা, মহামারীর সময় হাতে কিছু টাকা ধরে রাখার দরকার আছে কিনা।
যারা ৫০ হাজার টাকা খরচ করে কোরবানি করেছেন, তারা কিন্তু "ফ্রি টিকা' চাইবেন; মডেরনা বাইও ফার্মাসিউটিক্যাল'এর মতে মাথাপিছু টিকার দাম হবে ৬৫ ডলার, ৫৫১৩ টাকা। যারা কোরবানী করেছেন, দরকার হলে, তারা সবাই টিকাও হয়তো কিনে নিতে পারবেন; পরিবারে, গড়ে ৪ জন থাকলে, ২২ হাজার ডলারের টিকা কেনার সামর্থ এদের আছে। কোরবানীর একটা দিক সবাই ভালোভাবে নেন, সেটা হলো, গরীবারা বছরে ১ দিন হলেও মাংস খাবার সুযোগ পান; কিন্তু যারা গরীবদের এই সুযোগ দেন, তারা কি কোন গরীবকে ৫৫১৩ টাকা দিয়ে টিকা কেনে দেবেন? মনে হয়, সেই কজাটা তারা করবেন না।
আজকের পরিস্হিতে গরীবদের জন্য ১ দিন মাংস না খেয়ে টিকা পাওয়া অনেক অনেক বেশী জরুরী। আজকের পরিস্হিতিতে, ১ দিনে ৭/৮ বিলিয়ন ডলারের মাংস কেনা আমাদের মতো কোন জাতীর উচিত নয়। মাংসে ৭/৮ বিলিয়ন ঠিকই খরচ হতো জাতীর, তবে সেটা হয়তো ঘটতো ১ বছর সময় নিয়ে। মহামারীর সময় ১ দিনে এত টাকা খরচ করা, লাভ করা, কোনটাই সঠিক নয়; মহামারীর সময় সরকার ও পরিবার টাকা হাতে রাখলেই সবার জন্য ভালো হতো।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯