দুই সপ্তাহের ছুটিতে ডিসেম্বরে বেড়াতে গিয়েছিলাম দেশে। ব্লগে ছবি আপুর গ্রামের অসাধারন সব ছবি দেখে পন করেছিলাম যে এবার একটা গ্রামে বেড়াতে যাব। এক নিকট আত্মীয় প্রস্তাব দিলেন তার গ্রামের বাড়ীতে বেড়াতে যাবার। ঢাকার বেশ কাছেই উনার গ্রামের বাড়ী। গ্রামে উনার কেউ থাকেন না।তবে সেই আত্মীয় অত্যন্ত শৌখিন মানুষ। গ্রামে তিনি ছোট্ট একটি একতালা বাড়ী বানিয়েছেন। বাসার সামনে সবজি বাগান করেছেন, পুকুরে মাছের পোনা ছেড়েছেন।প্রায়ই পরিবার নিয়ে তিনি সেখানে ছুটি কাটাতে যান। এমন একটা জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার আমন্ত্রন পাওয়া আমার জন্য ছিল ''মেঘ না চাইতেই জল''। আত্মীয় স্বজন মিলে প্রায় পঞ্চাশ জনের একটা পিকনিকের আয়োজন করা হল। বাস ভাড়া করে খুব ভোরে রওনা দলাম সেই ছায়া সুনীবির শান্তির গাঁয়ে। ভোরে ট্রাফিক জ্যাম তেমন একটা না থাকায় মাত্র দুই ঘন্টাতেই পৌছে গেলাম গন্তব্যে। খুবই ছোট্ট সাজানো গোছানো একটা গ্রাম।গ্রামের মানুষগুলোও খুব সহজ সরল।
চারিদিকে যেদিকে তাকাই সেদিকেই শুধু সবুজের সমারোহ। শহরে বড় হওয়া বাচ্চারা , এরকম খোলামেলা সবুজ পরিবেশে কলকাকলিতে মেতে উঠেছিল। ছোটদের সাথে বড়রাও মেতে উঠেছিল মাছ ধরতে এবং সবজি ক্ষেত থেকে সবজি তুলতে। মাটির চুলায় রান্না বসানো হয়েছিল গাঁয়ের মুরগি ও পুকুর থেকে তুলে আনা মাছ। ক্ষেত থেকে তুলে আনা সবজি দিয়ে বানানো হয়েছিল কয়েক পদ ভর্তা ও ভাজি । আত্মীয়ের বাড়ি দেখাশোনা করা কেয়ারটেকার আগেই বানিয়ে রেখেছিল ছিটা রুটি , ভাপা ও পুলি পিঠা। গ্রাম্য পরিবেশে বসে সে সব খাবার মুখে ঠেেকেছিল অমৃতের মত।
চমৎকার দিনটি কেটে গিয়ে যখন সন্ধ্যা নেমে আসে, তখন মনে হয়েছিল বড্ড ছোট ছিল দিনটি। আমার মোবাইল ক্যামেরায় তোলা অল্প কিছু ছবি সেই ছোট্ট সুন্দর গায়ের।
লাউ, কুমড়র মাচা
পালং শাক, ধনিয়া পাতা, বেগুন, ঢেড়স এর ক্ষেত
সবজি ছাড়াও আছে বিভিন্ন ফলের গাছ
শিমের ফুল
একপাশে শীতকালীন ফুলের বাগানও করা হয়েছে
বাশ ঝাড়
ছোট্ট ডোবা শেওলা জমে পরিনত হয়েছে সবুজের গালিচায়
মাটির চুলায় রান্না হচ্ছে দেশি মোরগের ঝোল যার স্বাদ ও গন্ধ ছিল তুলনাবীহিন।
মাঝি ভাই পালা করে সবাইকে চড়িয়েছে তার নায়ে। ঘন সবুজের মাঝে সে নৌকাভ্রমন ছিল দারুন রোমাঞ্চকর।
চলছে মাছ ধরা
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫০