ইতালির প্রভাবশালী প্রায় সবগুলো পত্রিকার গতকাল প্রধান শিরোনাম ছিল উপড়ের সংবাদটি। এর বাংলা অনুবাদ করলে দাড়ায় বাংলাদেশ থেকে ভুয়া করোনা পরীক্ষার সার্টিফিকেট। গতকাল বুধাবার রাত ৯টায় খবর আসে বাংলাদেশের যাত্রীদের বিমান থেকে নামার অনুমতি দিচ্ছে না ইতালি সরকার। তারা সবাই কাতার এয়ারওয়েজের যাত্রী ছিলো। পরে এই যাত্রীদের ফিরিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশের দিকে এবং বাংলাদেশ থেকে সকল ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে ইতালি।এর আগেই গত সোমবার ২২৫ জন যাত্রী ঢাকা থেকে ইতালি পৌঁছান এবং এদের মধ্যে পরীক্ষা করে ২১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। ইতালির গনমাধ্যম ''মানব বোমা'' হিসেবে অভিহিত করে করোনা রোগী পরিবাহিত সেই বিমানকে।
এর আগেও বাংলাদেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া ১২ জনের এবং জাপানে যাওয়া চারজনের কভিড-১৯ শনাক্ত হয়। বাংলাদেশ ছাড়ার সময় তাঁদের কাছে ‘কভিড-১৯ নেগেটিভ’ মেডিক্যাল সনদ ছিল। নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে চার বাংলাদেশির শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টাড ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাপান। এরপরেও টনক নড়েনি আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের।
ইতালিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানিয়েছে যে কর্মঠ হওয়ায় বাংলাদেশিদের সুনাম ছিল ইতালিতে কিন্ত এখন স্থানীয়রা তাদের সুনজরে দেখছে না। কিছু প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন যে তারা এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার সাহস পাচ্ছেন না।এমনকি রাস্তায় বের হতেও ভয় পাচ্ছেন।বিদেশে নিজ দেশের নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশে যে কি পরিমান লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। করোনার এই সংকটকালীন সময়ে চাকুরি হারিয়ে প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছে। এর মাঝে এই ধরনের নেতিবাচক খবর এ দেশের শ্রম বাজারের জন্য ভয়ংকর দুঃসংবাদ।
এদিকে বিদেশে যাওয়ার পর বিমানবন্দরেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের শরীরে করোনা শনাক্ত হচ্ছে কেন, তার কোনো সুস্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি দায়িত্বশীল কেউ। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করছে। সম্প্রতি নানা অনিয়ম, প্রতারণা, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ ও করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার নানা অভিযোগ ওঠে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে, ফলে প্রধান কার্যালয়, উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন । র্যাব বলছে, রিজেন্ট এ পর্যন্ত সাড়ে চার হাজারের বেশি ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে, এবং ২০১৪ সালে লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর আর নবায়ন না করেই তারা হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে এতদিন ধরে চলা এসব অনিয়ম কিভাবে কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গেল?
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৯