somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বার্লিনের রাস্তায় এক রাতে (সদ্য প্রসূত কোবতে)

৩১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে একটা সময় ছিল, প্রতি রাতে একটা করে কবিতা লিখতাম। আজ অনেকদিন পর লিখলাম, হয়ত প্রেমের কবিতা পড়ে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাবে আপনার, যাক, আজকে লজ্জার তোয়াক্কা না করেই জীবনের এই প্রথমবারের মত সামুতে একটু আগে প্রসব করা কবিতাখানি দিয়েই দিলাম-

বার্লিনের রাস্তাগুলোতে তখন শুধু সোডিয়াম বাতিগুলো জ্বলছিল
আমি আর তুমি ঠিক তখন পাশা-পাশি হাঁটছিলাম ফুটপাথ ধরে
গোটা বার্লিন তখন নিঝুম নিস্তব্ধতায় অবগাহন করছিল
আমি আর তুমি সেই মৌনতায় কি এক অদ্ভূত ভালবাসায়
কোথায় যেন হারিয়েছিলাম অন্ধকারে।



সে রাতে আমি আর তুমি পাশাপাশি হাঁটছিলাম,
গোটা বার্লিন তখন নিরব,নিঝুম
ক্লান্ত মানুষগুলো ঘুমাচ্ছিল না বলা অনেক কথা নিয়ে
আমি আর তুমি না বলা জমানো ব্যাথা নিয়ে হাঁটছিলাম
কেউ কোন কথা বলছিলাম না, অথচ বুকের গভীরে কেন জানি
চিনচিনে একটা অনুভূতি, ঠিক যেমন অনেক আকাঙ্খা,অনেক আশা
আর অনেক সংগ্রামের পর কোন কিছু পাবার অনুভূতি,
বার্লিনের রাস্তাইয় সে রাতে শুধু সোডিয়াম লাইট জ্বলছিল।



বলতে পার? কতদিন পর সে রাতে তোমার হাতটি আমি ধরেছিলাম?
আমি আর তুমি কত দিন পরে হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটছিলাম,
কত দিন পরে আমি আর তুম অন্ধকারে অবগাহন করছিলাম?
হয়ত হিসেব নেই, বার্লিনের ব্যস্ত শহরে আমি ব্যস্ত ছিলাম, তুমি
হয়ত অন্য কোন কোথাও,হয়ত পাশেই কোথাও।
তবে এটুকু বলতে পারি তোমার হাসিমাখা মুখটুকু
আমি অনুভব করেছি প্রতিটি মুহুর্ত, সেই মুহুর্তগুলোর হিসেব আমার কাছে আছে।
তবে আজ কেন বার্লিনের রাস্তায় পাশাপাশি আমি আর তুমি,
অনুভব করছি আমি ভাল নেই তুমি, হাসি নেই তোমার মুখে?
সে রাতে শুধু সোডিয়াম লাইট জ্বলছিল, বার্লিনের রাস্তায়
আমি আর তুমি পাশা-পাশি, দুজনার হাত ধরে অনেকটা দূর।



সে রাতে আমি আর তুমি কোন কথা বলিনি, এমনকি বহুদিনের
আবেগে তোমাকে জড়িয়ে ধরে চুমুও খাইনি,
না সেদিন সূচনার অভাব ছিল না, বহু কষ্ট ছিল, বহু কথা ছিল
শুরু করার জন্য,তারপরেও আমি বলিনি, শুধু তোমার কোমল হাতটি
ধরেছিলাম শক্ত করে, ভয় ছিল হয়ত আবার জীবন থেকে ছিটকে যাবে তুমি।
তোমার হাত ধরে সে রাতে বার্লিনের রাস্তায় অনেকটা পথ হেঁটেছিলাম
আমি আর তুমি, দু-জনের আবেগ প্রতিটা পদক্ষেপের সাথে ঘনীভূত হচ্ছিল
সেটা দুজনেই খুব ভাল বুঝতে পারছিলাম, যেকোন সময় দুজনের যেকোন
একজন যে ফেটে পড়বে তাও দুজনেই অনুভব করছিলাম,
তবুও আমি তোমার হাতটা ধরে এক অন্যরকম অত্যুক্ত ভালবাসা অনুভব করছিলাম। আমি আর তুমি সেদিন বার্লিনের রাস্তায় হাঁটছিলাম
অনেকটাদূর এসে শহরতলি ছাড়িয়ে নির্জন এক মেঠোপথ পর্যন্ত গিয়েছিলাম
না, সেখানে সোডিয়াম লাইট ছিল না, ছিল না ঘুমন্ত মানুষের বাস
আমি আর তুমি ছিলাম সেখানে, কোন পুর্নিমা ছিল না সেদিন,
অন্ধকারে আমি আর তুমি হাটছিলাম শুধু দু’জনার হাতটা ধরে।



হঠাত করে তোমার নিশ্বাস যেন ভারি হয়ে আসল, পথচলা যেন শ্লথ হল কিছুটা
বুঝতে পারছিলাম, কথা বলার সময় হয়েছে, কিন্তু আমার শার্টের কলার খামচে
গুমরে কেঁদে ওঠা তোমার ঐ ফর্সা স্নিগ্ধ মুখটার দিকে তাকিয়ে আমি যেন বোবা
হয়ে গিয়েছিলাম, পৃথিবীর সমস্ত ভালবাসা, সমস্ত ঘন আবেগ যেন সেই রাতে
বার্লিনের সেই মেঠোপথে আমার মনে এসে উপস্থিতির জানান দিল।
কোন ভাষাই এল না মুখে, আমার মনটাও
তখন ঠিক থক থকে জেলীর মত হয়ে গিয়েছিল, না, আমি কাঁদিনি সে রাতে
আমি কাঁদতে পারিনি, আমার অন্তরটাও দেখাতে পারিনি তোমাকে,
শুধু আর একটু শক্ত করে তোমার হাতটা ধরে রেখেছিলাম।
সে রাতে আমাদের কাউকেই আর কথা বলতে হয়নি, মুখ দিয়ে একটি
শব্দও বের করতে হয়নি, শুধু আমারা দু’জনে হাতটি ধরে
পাশাপাশি হাঁটছিলাম বার্লিনের রাস্তায়, নিরব নিস্তব্ধ রাস্তায়,
শুধু সোডিয়াম লাইটগুলো জ্বলছিল আগের মতই।
আমি আর তুমি সেদিন হেঁটেছিলাম বার্লিনের রাস্তায়,অনেকটা দূর
অদ্ভুত এক অন্যরকম আবেগ আর ভালবাসা নিয়ে, দুজনের হাতটি ধরে।


কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।বিরক্ত করার জন্য দুখিত। ;)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১২:০৮
২৯টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×