শুক্রবার ০৯.১২.১৬
মাত্রই নাস্তা শেষ করে পিসি তে বসে ফেইসবুকের ওয়াল দেখছি। বেশির ভাগ ফ্রেন্ডদেরই সেমিস্টার ফাইনাল শেষ। সবাই দেখছি ঘুরতে গিয়ে চেক ইন দিচ্ছে। ফ্রেন্ডদের ট্যুরের এসব পিকচার দেখে নিজের মন টা বলে উঠছে জমীরউদ্দীন তুই ও ঘুরতে যা। এসব ভাবতে ভাবতেই মাথায় ট্যুর এ যাওয়ার ভুত চাপল। ট্যুর এ যেহেতু যাবো, সবার আগেই শোভন এর নামটাই মনে পড়ল। কারন এর আগের সেমিস্টার এ শোভন এর সাথে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে ও যেতে পারিনি। সাথে সাথে শোভন কে নক করলাম। ও অনলাইনেই ছিল। কুশলাদি জিজ্ঞেস করার পর বললাম, “ফ্রি আছিস তো?”
শোভন বলল,” হ্যাঁ ফাইনাল তো শেষ, এখন তো বেকার বসে আছি।“
“চল তাহলে একটা ট্যুর দিয়ে আসি।“
শোভন হেসে,” তুই বাটপার আগের বার প্ল্যান করে ও যাস নাই, এবার ও ওমন করবি আমি জানি ফুট শালা। তোর সাথে আমি নাই।“
“দোস্ত সরি অইবার আম্মু ঝামেলা করসে তাই যাইতে পারি নাই, এইবার শিওর আমি যাব, চল না প্লীজ।“ আমি মিনতি করে বলে উঠলাম।
“আচ্ছা কই যাইতে চাস বল। আমারও অনেক ইচ্ছা করতেছে। সবাই যেভাবে ট্যুরের পিক দিচ্ছে।“আমি বললাম,” যেখানেই ট্যুর দেই না কেন ফুল এডভেঞ্চার থাকতে হবে।
শোভন বলল,” দাঁড়া একটু ভাবতে দে, বাজেট এর মধ্যে কোথায় এডভেঞ্চার এ যাওয়া যায়।“
আমি বললাম,” তাড়াতাড়ি ভাবা শেষ করে আমারে জানা আর আমিও দেখি কই ফিক্সড করা যায়।“ শোভন,”আচ্ছা আমি রাতে তোকে নক দিবো।“ ওকে দিস।
রাত ১১.৩০
রাতের খাওয়া শেষ করে পিসি তে বসে ফেইসবুকে ঢুকতেই দেখি শোভন এর টেক্সট। শোভন লিখছে,” দোস্ত একটা টেক্সটিং গ্রুপ খুলছি ওইটাতে নক দে।“
আমি,“ দাঁড়া দিচ্ছি।“ ইনবক্স চেক করে দেখি চিটাগং ট্যুর নামে একটা গ্রুপ খুলছে শোভন। গ্রুপে আমাদের আরও এক বন্ধু অনিক ও এড আছে।
আমি টেক্সট দিলাম,” অনিক দোস্ত কি খবর?” অনিক,” ভাল, কি খবর তোর?”
আমি উত্তর দিলাম,”এইতো ভাল।“ শোভন কিছু বলছে তোরে ?
অনিক,” হ্যাঁ বলল তো।
“কিছু ঠিক করলি”, জিজ্ঞেস করলাম।
অনিক বলল,”দোস্ত আমি আর শোভন চট্টগ্রাম এর প্ল্যান করছি কারন ওইখানে নানা বাড়ী আছে, অল্প খরচে ঘুরা হয়ে যাবে।
” দ্যাটস গ্রেট বাট কি কি আছে অইখানে?”, লাফিং ইমো দিয়ে লিখালাম আমি। আর অবশ্যই কিন্তু এডভেঞ্চার থাকতে হবে নইলে তোদের দুইটারে আমি শেষ কইরা ফালামু।
”আরে রাখ বেটা কি নাই চট্টগ্রাম! সব পাবি আগে সব ফাইনাল কর।“লাফিং ইমো দিয়ে অনিক লিখলো।।
শোভন অনলাইনে এসেই,”হাই পিপল। কি ঠিক করলি ?”
আমি,”দোস্ত চট্টগ্রাম এর কথা বলতেছে অনিক, তুই কি বলিস?”
শোভন,” হ্যাঁ , অনিক এর সাথে কথা বললাম ও বলল ওইখানে ওর নানা বাড়ী সো আই থিংক এটাই বেটার কারন আমাদের কাছে বেশি টাকা নাই।“
হ্যাঁ এইটা ঠিক বলছিস। বাট অনিক বল কি কি আছে অইখানে যেইখনে আমরা ঘুরব?” আমি জিজ্ঞেস করলাম।
অনিক,” দাঁড়া একটু পর জানাচ্ছি।
অনিক,” দোস্ত , চট্টগ্রাম ঘোরার প্লেইস এর অভাব নাই। আমি কয়েকটার নাম বলি তোরা ফিক্সড কর।“
আমি বললাম ওকে বল।
শোভন ,” ওকে বল।“
অনিক ,” আমার নানা বাড়ী সীতাকুণ্ডতে, ওইখান থেকে কাছে আছে সিতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় আর পাহাড়ের উপরে আছে চন্দ্রনাথ মন্দির, খইয়াছরা ঝর্ণা, ইকো পার্ক ফটিকছরি এসব। আর ওমর তোকে তো বলি নাই। চন্দ্রনাথ পাহাড় নিয়ে অনেক রহসসময় গল্প আছে।তুই যেহেতু এডভেঞ্চার পাগল, আই থিংক তোর এডভেঞ্চার ওখানে মিটবে। আর চন্দ্রনাথ পাহাড় চট্টগ্রাম এর সবচেয়ে উঁচু পাহাড়।“
কি বলিস ! তাহলে আমরা ওখানেই যাবো ফাইনাল কর সব,” বললাম আমি।
শোভন,’সব ই ঠিক আছে বাট বাসায় ম্যানেজ করবি কিভাবে চিন্তা করছিস কিছু?”
আমি,”চিন্তা ভাবনার কিছু নাই এবার যাবই যাবো।“
ওকে দেখা যাবে বাট যদি মিস করিস, আর কিছু কইলাম না।“ এংরি ইমো দিয়ে শোভন লিখল। আমি,”না দোস্ত মিস হওয়ার চান্স নাই শিওর থাক।
অনিক,”আচ্ছা শোন, আম্মু ও যেতে চাচ্ছে আমাদের সাথে। আম্মু ওইখান থেকে ছোট খালার বাড়ী যাবে আর আমরা নানা বাড়ী থাকবো।“
আমি বললাম,”তাহলে তো ভালই হইলো , আন্টি গেলে বাসায় ম্যানেজ করা সহজ হবে।“
আমি জিজ্ঞেস করলাম,”শোভন , অনিক কবে টিকেট কাটতে চাচ্ছিস তোরা?”
অনিক,” বৃহস্পতি বারের টিকেট কাটি কি বলিস?”
ওকে কাট তাহলে।“ আমি লিখলাম
শোভন লিখল,” দোস্ত অনলাইনে টিকেট কাট তাহলে ডিস্কাউন্ট পাওয়া যাবে।“
অনিক,” দাঁড়া আম্মুর থেকে শিওর হয়ে টিকেট কাটছি।“
আন্টি ও বৃহস্পতিবার যেতে চাওয়ায় রাতেই অনিক অনলাইনে চারটা টিকেট বুকিং দিল।
চলবে.।