somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ এ দেশীয় চলচ্চিত্রের ৬৬তম বার্ষিকী : ‘মুখ ও মুখোশ’ এবং আবদুল জব্বার খান

০৩ রা আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
কাজী হাসান


১৯৮৭ সালে চিত্রনায়ক ফারুক (বর্তমান সংসদ সদস্য) প্রযোজিত চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘মিয়াভাই’ নামে একটি ছবি মুক্তি পায়। ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয়ও করেছিলেন চিত্রনায়ক ফারুক। ছবিটির বেশিরভাগ শ্যুটিং হয়েছিলো ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ও বান্দুরা ইউনিয়নে। ছবির কলাকুশলী, লাইট, ক্যামেরা, প্রয়োজনীয় বাক্স-পেটরা ও টেকনিশিয়ানসহ একটি বিরাট ইউনিট সদরঘাট থেকে লঞ্চযোগে সেখানে পৌঁছে। যেদিন শ্যুটিং শুরু হবে, সকাল সকাল গণ্ডগোল লেগে গেলো। চাষী নজরুল ইসলাম, চিত্রনায়ক ভীষণ তর্কে লিপ্ত হলেন। যারা কারণ জানেন না তাঁরা ভড়কে গেলেন, ভড়কে গেলেন তাঁরাও যাঁরা জেনেছেন ঘটনাটা কি নিয়ে! ছবির স্ক্রীপ্ট না কি পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে হারিয়েছে না ঢাকায় রয়ে গেছে, কেউ নিশ্চিত নন। চাষী ভাই আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিলেন। চাষী ভাইয়ের অবসর সময়ে তাঁর জীবনের অনেক কথাই আমার শোনার সৌভাগ্য হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আমাকে বলা তাঁর ১১ ঘণ্টার কথার ধারণ করা অডিও ক্যাসেটও আমার সংগ্রহে রয়েছে। পারস্পরিক বোঝাপড়া, আলোচনা ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে স্ক্রীপ্ট ছাড়াই সেই ‘মিয়াভাই’ ছবির শ্যুটিং সম্পন্ন হয়েছিলো। যা বোধ করি বাংলাদেশের কোনও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে প্রথম।

বলাবাহুল্য এ দেশের চলচ্চিত্রের গোড়াপত্তনই হয়েছে আমাদের মুন্সীগঞ্জ জেলার একজন গুণী কৃতি সন্তানের হাত ধরে। পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে আমাদের মুন্সীগঞ্জ জেলার উদ্যোগী ও কৃতি সন্তানদের অবদান অগ্রগণ্য। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার উত্তর মসদগাঁও গ্রামের কৃতি সন্তান আবদুল জব্বার খান। যাঁর পরিচালনায় তৈরি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ মুক্তি পায় ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট। আর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ পরিচালনা করেন মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর গ্রামের কৃতি সন্তান চাষী নজরুল ইসলাম। ছবিটি এ দেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদের্ঘ্য চলচ্চিত্র। ‘ওরা ১১ জন’ মুক্তি পায় ১৯৭২ সালের ১১ আগস্ট। মুন্সীগঞ্জ জেলার এই দু’জন কৃতি সন্তান উদ্যোগী না হলে এদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাস অন্যরকম হতো।

পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে যে সকল নাট্যনির্দেশকগণ মঞ্চে নাটক নিয়ে উপস্থিত হতেন আবদুল জব্বার খান ছিলেন তাঁদের অন্যতম। চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন এমন কোনও পরিকল্পনা আবদুল জব্বার খানের ছিলো না। বরং অনেকটা জেদের বশে ১৯৫৩ সালে তিনি ঘোষণা দিয়ে বসেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম চলচ্চিত্রটি তিনি বানিয়ে দেখাবেন। সে সময়ে সারাদেশে সিনেমাহলের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯৩টি এবং সে সকল প্রেক্ষাগৃহে হিন্দী, উর্দু ও কলকাতার বাংলা ছবি প্রদর্শিত হতো। চলচ্চিত্র প্রযোজনা, পরিবেশনা, পরিদর্শন, স্টুডিও তথা সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র ব্যবসার সাথে জড়িত একজন ব্যবসায়ী, গুলিস্তান সিনেমার মালিক অবাঙালি খান বাহাদুর ফজল আহমেদ দোসানী বলেছিলেন, এদেশের আর্দ্র আবহাওয়া চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য উপযোগী নয়, বরং এই আবহাওয়ায় শ্যুটিং করতে হলে বিশেষ ধরনের নেগেটিভ তৈরি করতে হবে, যা এদেশে কখনওই সম্ভব নয়। দোসানী সাহেব এ কথা বলেছিলেন পূর্ববঙ্গ সরকারের পরিসংখ্যান বিভাগের পরিচালক ডঃ আবদুস সাদেকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আয়োজিত ‘স্থানীয়ভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তোলা’ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায়। উক্ত সভায় প্রায় জনাচল্লিশেক নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মী, স্থানীয় প্রদর্শক ও পরিবেশকদের মধ্যে আবদুল জব্বার খানও উপস্থিত ছিলেন এবং দোসানীর বক্তব্যের প্রতিবাদেই তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেছিলেন, এখানে তো ভারতীয় ছবির শুটিং হয়েছে। তবে কেন পূর্ণাঙ্গ একটি ছবি করা যাবে না? চ্যালেঞ্জ দিলেন তিনি। বললেন, ছবি করে দেখাবেন।

আবদুল জব্বার খানের সেই চ্যালেঞ্জ হয়তো শুধু চ্যালেঞ্জই থেকে যেত যদি না ডঃ সাদেকের বন্ধু সারোয়ার সাহেব এ ব্যাপারে অনুপ্রাণিত না করতেন। চ্যালেঞ্জ দেয়ার প্রায় সাত মাস পরে আবদুল জব্বার খানের নাটক ‘ডাকাত’ এর রিহার্সেল চলাকালীন সময়ে তিনি এ উৎসাহ দিয়েছিলেন। প্রায় একই সময়ে দেশবিভাগের পূর্বে কলকাতায় স্থাপিত ‘ইকবাল ফিল্মস’ পূর্ব পাকিস্তানে পুনর্গঠিত হয়। এর চেয়ারম্যান হন বলাকা সিনেমা হলের মালিক এম এ হাসান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর হন আবদুল জব্বার খানের সহকর্মী নুরুজ্জামান এবং আবদুল জব্বার খান হন পরিচালকদের একজন। ওই ‘ইকবাল ফিল্মস’ এর পক্ষ থেকে আবদুল জব্বার খানের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণের পুরো দায়িত্ব পড়ে।
‘মুখ ও মুখোশ’ নির্মাণের জন্য গল্প হিসেবে আবদুল জব্বার খান তাঁর ‘ডাকাত’ নাটকসহ কবি জসীমউদদীন, কাজী নজরুল ইসলামের কিছু বইকে বেছে নেন। যদিও কবি ফজল শাহাবুদ্দিন এর প্রস্তাবে ‘ডাকাত’ নামটি পরিবর্তন করে ছবির নাম রাখা হয় ‘মুখ ও মুখোশ’। ডাকাত নাটকের পাণ্ডুলিপি নিয়ে কলকাতায় যান তিনি। সাথে ছিলেন কিউ এম জামান, যিনি ‘মুখ ও মুখোশ’ এর চিত্রগ্রহণ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কলকাতায় বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার মণি বোসের সাথে দেখা করে চিত্রনাট্য লিখে দেয়ার অনুরোধ করেন তাঁরা। শর্ত জুড়ে দেন, এমন কোনও কাহিনী মনোনীত করতে হবে যাতে আউটডোরে কাজ করা যায় এবং কথা কম থাকে। মণি বোস সব যাচাই করে তাঁর ‘ডাকাত’ নাটকের পাণ্ডুলিপিকেই চিত্রনাট্য হিসেবে প্রস্তুত করার পরামর্শ দেন এবং তিনটা দৃশ্য লিখে বাকিটা লাইন আপ করে দেন। চিত্রনাট্যের বাকিটা নির্মাতা আবদুল জব্বার খানই তৈরি করে নেন।

চিত্রনাট্য প্রস্তুত করার চেয়েও বড় বাধা ছিল, তখন এমন একটা সময় যখন পূর্ব পাকিস্তানে চলচ্চিত্র নির্মাণের কোনও ব্যবস্থাই ছিলো না। কারিগরি সকল সহায়তার জন্যই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা অথবা পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর নির্ভর করতে হতো। সিনেমা নির্মাণের মতো অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়ায় কারিগরি সহায়তা যদি অন্য দেশ থেকে নিয়ে আসতে হয় তবে তা নির্মাণ ব্যয়কে আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে ‘মুখ ও মুখোশ’ নির্মাণের আগেই আবদুল জব্বার খানকে এর কারিগরি দিকগুলো সম্পর্কে মনোযোগ দিতে হয়েছিলো। প্রাথমিকভাবে সারোয়ার সাহেবের মালিকানাধীন একটি ৩৫ মি.মি. ক্যামেরা এবং সারোয়ার সাহেবকে ক্যামেরাম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হলেও পরবর্তীতে বাতিল করতে হয় কিউ এম জামানের মতামতের কারণে। কিউ এম জামান কলকাতা এবং বোম্বেতে চিত্রগ্রাহকের সহকারী হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পর দেশে ফিরেছেন। সারোয়ার সাহেবের ক্যামেরায় সিনেমা নির্মাণ সম্ভব না জামানের এই মন্তব্যের পরে ক্যামেরা কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মণি বোসের কাছ থেকে চিত্রনাট্য সম্পর্কে ধারণা নেয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতা গমনের সময়ই নিউ থিয়েটার্সের চিফ ক্যামেরাম্যান মুরারী মোহন ঘোষের সহযোগিতায় একটি পুরাতন ‘আইমো’ ক্যামেরা কেনা হয়। একই সময় মুরারী মোহনের সাথে চুক্তি হয়-ভারতীয় পাঁচ হাজার রূপির বিনিময়ে ‘মুখ ও মুখোশ’ এর চিত্রগ্রহণের কাজও তিনি করবেন। উল্লেখ্য, কিউ এম জামান কলকাতায় মুরারী মোহনের দ্বিতীয় সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।

‘মুখ ও মুখোশ’ নির্মাণের জন্য গল্প নির্বাচন হলো, চিত্রনাট্য তৈরি হলো, ক্যামেরা কেনা হলো, ক্যামেরাম্যানও ঠিক হলো। এবার মাঠে নামার আগে শিল্পী বাছাই করতে হবে। শিল্পী বাছাইয়ের গল্প শোনার আগে ‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রের গল্প সম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া যাক—

‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রে এমন এক সময়ের গল্প বলা হয়েছে যখন সারা দেশ শমসের ডাকাতের অত্যাচার-নির্যাতনে বিপর্যস্ত। ডাকাতি, লুটতরাজ, খুন, নারী নির্যাতনসহ সব রকমের অন্যায়ে সিদ্ধহস্ত শমসের ডাকাত। এরকম সময়ে রহমান মৃধার প্রথম স্ত্রী একটি পুত্র সন্তান আফজালকে রেখে মারা যান, দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্মে দুটি সন্তান-পুত্র জালাল ও কন্যা রাশিদা। আফজালের যখন আট বছর বয়স তখন একদিন সৎ মার পিটুনি খেয়ে আফজাল অজ্ঞান হয়ে যায়, মরে গেছে ভেবে আফজালকে চুপিসারে কবর দিতে গেলে শমসের ডাকাতের হস্তগত হয় আফজাল। শমসের ডাকাতের ঘরে বড় হতে থাকে রহমান মৃধার পুত্র আফজাল।

আফজাল চরিত্রে কলিম শরাফীর কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে চট্টগ্রামে যান আবদুল জব্বার খান ও তাঁর দল। কিন্তু নায়ক চরিত্রের জন্য পারিশ্রমিক দেয়ার প্রস্তাব করেন শরাফীর বন্ধুরা। অগত্যা কলিম শরাফীকে কাস্ট করার চিন্তা বাদ দিতে হয়। কিন্তু চট্টগ্রামেই পাথরঘাটাস্থ মঞ্চ অভিনেত্রী পূর্ণিমা সেনগুপ্ত’র খবর পান জব্বার খান। পূর্ণিমার বাড়িতে গিয়ে ছবির নায়িকা চরিত্রের জন্য নির্বাচিত করেন তাঁকে।

ঢাকায় ফেরার পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয় অন্যান্য চরিত্রের অভিনেতা, অভিনেত্রী বাছাইয়ের জন্য। বিজ্ঞাপন দেখে গোপনে যোগাযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়লের স্নাতক অধ্যয়নরত ছাত্রী জহরত আরা এবং ইডেন কলেজের আই.এ’র ছাত্রী পিয়ারী বেগম। ক্যামেরাম্যান মুরারী মোহন ঘোষ পিয়ারী বেগমকে দুজন প্রধান নায়িকার একজন হিসেবে নির্বাচিত করেন। শমসের ডাকাত চরিত্রে নেয়া হয় ইনাম আহমদকে, আফজাল চরিত্রে আবদুল জব্বার খান নিজেই অভিনয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তাঁর ছেলেবেলার চরিত্রের জন্য নির্বাচন করেন তাঁর পুত্র জুলু খানকে। এ দেশের চলচ্চিত্রের প্রথম শিশুশিল্পী জুলু খান। আরও অনেক চরিত্রের মধ্যে সাইফুদ্দিন আহমেদ, আমিনুল হক, নূরুল আনাম খাঁ, গওহর জামিল, ভবেশ মুখার্জী, বিনয় বিশ্বাস, আউয়াল খান প্রমুখ নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে ‘মুখ ও মুখোশ’ এর জন্য অভিনেতা, অভিনেত্রী নির্বাচনের কাজ শেষ হয়।

‘মুখ ও মুখোশ’ গান আছে মোট দু’টি। আবদুল জব্বার খানের বন্ধু গীতিকার গফুর সাহেব বিনা পারিশ্রমিকে চারটি গান লিখে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু কাহিনীর প্রয়োজনে দুটি গানেই প্রয়োজন শেষ হয়। সমর দাসকে সঙ্গীত পরিচালক ও সহকারী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নেয়া হয় মুন্সীগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান ধীর আলীকে। কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আবদুল আলীম ও মাহবুবা রহমানকে ঠিক করা হয়। সে সময় কোনও রেকর্ডিং স্টুডিও বা গ্রামোফোন কোম্পানী গড়ে ওঠেনি, ফলে গান রেকর্ড করা হয় টেপে। ইকবাল ফিল্মস এর অফিস রুমে কাপড় টাঙিয়ে স্টুডিও তৈরি করা হয়েছিলো! ছবির নৃত্যপরিচালক ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান গওহর জামিল। এ দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রথম নৃত্য পরিচালক তিনি।

এসব ১৯৫৩ সালের ঘটনা। ১৯৫৪ সালের ৬ আগস্ট শাহবাগ হোটেলের ছাদে ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। মহরত উদ্বোধন করেন তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ইসকান্দার মীর্জা। মহরতের পর শ্যুটিং শুরু হয়ে চলে ১৯৫৫ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। শ্যুটিং হয় বুড়িগঙ্গার ওপারে কালীগঞ্জ, সিদ্ধেশ্বরী, লালমাটিয়ার ধানক্ষেত, তেজগাঁওয়ের জঙ্গল, জিঞ্জিরা ও টঙ্গীর তুরাগ নদের পাড়ে। ১৯৫৩ সালের নভেম্বরে অভিনেতা, অভিনেত্রী নির্বাচন করার পর চিত্রগ্রহণের কাজ শেষ করতে করতে ১৯৫৫ সালের মাঝের সময়টা নানা প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে পরিপূর্ণ ছিলো। ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় আট মাস আগেই শ্যুটিং শুরু হয়েছিলো কোনও প্রকার মহরত ছাড়াই। শুরুর এই চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন কলকাতার ক্যামেরাম্যান মুরারী মোহন ঘোষ। কিছুদিন চিত্রগ্রহণ করার পর ডাকাত দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মোহাম্মদ হোসেন (পরে বিচারপতি) শ্যুটিং এ আসা বন্ধ করে দেন। ফলে চিত্রগ্রহণ বন্ধ রাখতে হয় এবং চিত্রনাট্যে পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দেয়। তারও কিছুদিন পরে শুরু হয় ১৯৫৪ সালের ভয়াবহ বন্যা, ফলে চিত্রগ্রহণের কাজ বন্ধ হয়ে যায় দীর্ঘ সময়ের জন্য। ওই সময়ে চলচ্চিত্রের ফুটেজ লাহোরে শাহনূর স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রিন্ট করার পর নানারকম ত্রুটি চিহ্নিত করা হয়। স্টুডিওর মালিক ও টেকনেশিয়ানরা বিভিন্ন রকম পরামর্শ দেন ত্রুটিমুক্ত চিত্রগ্রহণের ব্যাপারে।

নতুন উদ্যমে শুরু করার জন্য আবদুল জব্বার খানরা দেশে ফিরে এলেও ফিরলেন না ক্যামেরাম্যান মুরারী মোহন। চলচ্চিত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই যখন হতাশ প্রায়, তখন একদিন পরিচালক জব্বার খান কিউ এম জামানকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন চলচ্চিত্রের বাকি চিত্রগ্রহণ সে করতে পারবে কিনা। কিউ এম জামানের প্রত্যয়দীপ্ত উত্তর নতুন প্রেরণা জোগায়। মহরতের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। মহরতের অনুষ্ঠানও দুর্যোগ কবলিত ছিলো। জানা যায়, ‘মুখ ও মুখোশ’ এর মহরত অনুষ্ঠানের আগে বিপুল বর্ষণে শাহবাগ এলাকায় হাঁটু পরিমাণ পানি জমে গিয়েছিলো। গভর্নর ইসকান্দার মীর্জা এর মধ্যেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে শ্যুটিং শেষ হওয়ার আগে আরও একবার বন্যার কবলে পড়তে হয়েছিলো ‘মুখ ও মুখোশ’ এর টিমকে। বন্যা শেষে আবার চিত্রগ্রহণের কাজ শুরু করে শেষ করা হয় ছবির কাজ।

‘মুখ ও মুখোশ’ এর সম্পাদনার কাজ করা হয়েছিল লাহোরের শাহনূর স্টুডিওতে। চিত্রগ্রহণ করার সময়েই ছবির ফুটেজ পোস্টাল পার্সেলে করে শাহনূর স্টুডিওতে পাঠানো হয়, তারা প্রিন্ট করে ফলাফল জানিয়ে দিতেন। লাহোরে তিনমাস অবস্থান করে অভিজ্ঞ সম্পাদক লতিফ সাহেবের তত্ত্বাবধানে ছবির সম্পাদনা শেষ করেন। কিন্তু সম্পাদিত ছবির শব্দের অবস্থা ছিল করুণ। সম্পাদকের পরামর্শে আবদুল জব্বার খান পশ্চিম পাকিস্তানের শিল্পীদের দিয়ে ডাবিং করানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু সফল হলেন না। কারণ শিল্পীরা বাংলা বলতে পারছিলো না। পরে সম্পাদক অনেক সময় শব্দের প্রত্যেকটা অক্ষর ফ্রেম কেটে জোড়া দিয়ে সম্পাদনা শেষ করেন।
সম্পাদিত ফিল্ম পূর্ব পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও আবদুল জব্বার খানকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিচারপতি আবদুস সাত্তার (বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট) এর সহায়তা গ্রহণ করতে হয়েছিলো। বিমানে ফিল্ম এবং স্বর্ণ পরিবহন করা যাবে না—এই খোড়া অজুহাতে বিমান থেকে ফিল্ম নামিয়ে দেয়া হয়েছিলো। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে আবদুল জব্বার খানসহ ফিল্ম পূর্ব পাকিস্তানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

‘মুখ ও মুখোশ’ নিয়ে ফিরে আসা গেলেও ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করা যাচ্ছিলো না। হল মালিকরা ছবি চালাতে রাজি হচ্ছিলেন না, তাদের ধারণা ছিলো ছবিটি ভালো হয় নি। দর্শকরা ছবি দেখে চেয়ার ভাংচুর করবে হয়তো। পাকিস্তান ফিল্ম ট্রাস্টের মোশাররফ হোসেন চৌধুরী এবং পাকিস্তান ফিল্ম সার্ভিসের আউয়াল সাহেবকে পরিবশনার দায়িত্ব দেয়া হলে তারা নারায়ণগঞ্জসহ দু’য়েকটি হল ঠিক করতে পারলেন। ঢাকার হলে মুক্তির জন্য মুকুল (পরে আজাদ) এবং রূপমহলের মালিক কমল বাবুর কাছে প্রস্তাব নিয়ে গেলে তিনি রাজি হন। ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট তারিখ ঠিক হয়। তৎকালীন গভর্নর এ কে ফজলুল হক ছবির উদ্বোধন করেন। মুকুল সিনেমা হলে বিকেল ৩টার শো-তে দেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ মুক্তি দেয়া হলো।

একদম শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন আবদুল জব্বার খান। তারপর একটু একটু করে শত বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তৈরি করেছেন স্বপ্নের চলচ্চিত্র। রূপকথার গল্পের মতোই ‘মুখ ও মুখোশ’ এর নির্মাণ কাহিনীর শেষাংশ। মুক্তি দেয়ার পর টানা চার সপ্তাহ হাউজফুল চলেছিলো ‘মুখ ও মুখোশ’। ৯৯ মিনিট ব্যাপ্তিকালের ‘মুখ ও মুখোশ’ এর নির্মাণে ব্যয় হয়েছিলো ৬৪,০০০ রুপি। আয় হয়েছিলো ৪৮,০০০ রুপি। ছবিটির পোস্টার ডিজাইন করেছিলেন সুভাষ দত্ত।

আবদুল জব্বার খান বাংলা ১৩২২ সালের ৭ বৈশাখ (১৯১৬ ইং) তারিখে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার উত্তর মসদগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী মোহাম্মদ জমশের খান। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তিনি ১৯৯৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কমলাপুরের নিজ বাসভবনে মারা যান।

আসামের ধুবড়ি এলাকায় তাঁর বাবা পাটের ব্যবসা করতেন। সেখানেই শৈশবে তিনি স্কুলে ভর্তি হন। পড়াকালীন জড়িয়ে পড়েন নাটকের সঙ্গে। তিনি অভিনয় করেন ‘বেহুলা’, ‘সোহরাব রোস্তম’ নাটকে। প্রমথেশ বড়ুয়া পরিচালিত ‘সিন্ধু বিজয়’ নাটকেও তিনি অভিনয় করেন। নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তিনি নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। প্রমথেশ বড়ুয়ার সাথে পরিচয়ের কারণে তিনি কলকাতায় গিয়ে তাঁর বাসায় থেকে নাটক দেখতেন। প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘মুক্তি’ চলচ্চিত্রে আব্দুল জব্বার খানের অভিনয়ের কথা থাকলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পরে তিনি তা করতে পারেননি। এরপর তিনি প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘শাপমুক্তি’ চলচ্চিত্রের জন্য নির্বাচিত হন কিন্তু পিতার কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়াতে তিনি সেই চলচ্চিত্রটিও করতে পারেননি। তবে তিনি নিয়মিত মঞ্চ নাটক করেছেন। তিনি ‘সমাজপতি ও মাটির ঘর’ নাটকে অভিনয় করে স্বর্ণপদক পান। গৌহাটিতে পরিচালনা করেন ‘টিপু সুলতান’। ১৯৪১ সালে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল থেকে ডিপ্লোমা নিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে চলে আসেন তাঁরা। ঢাকায় এসে সংগঠিত করেন ‘কমলাপুর ড্রামাটিক এসোসিয়েশন'। ওই সংগঠনের উদ্যোগে তিনি ‘টিপু সুলতান’ ও ‘আলীবর্দী খান’ নাটক মঞ্চায়ন করেন। পরে তিনি ‘ঈসা খাঁ’ (১৯৫০), ‘প্রতিজ্ঞা’ (১৯৫১), ‘ডাকাত’ (১৯৫৩), ‘জাগো দেশ’ (১৯৫৯) রচনা করেন।

১৯৫৬ সালে তাঁর রচিত নাটক ‘ডাকাত’ (পরবর্তীতে উপন্যাস হিসেবে প্রকাশিত) অবলম্বনে তৈরি করেন ‘মুখ ও মুখোশ’ নামক চলচ্চিত্র। এরপর তিনি পরিচালনা করেন ‘জোয়ার এলো’ (১৯৬২), উর্দুতে ‘নাচঘর’ (১৯৬৩), ‘বনসারি’ (১৯৬৮), ‘কাঁচ কাটা হীরে’ (১৯৭০), ‘খেলারাম’ (১৯৭৩) চলচ্চিত্র।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার খান মুজিবনগর সরকারের চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও পরিবেশনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। তিনি পরবর্তীতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জুরি বোর্ড, অনুদান কমিটি, সেন্সর বোর্ড, ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও আর্কাইভে সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ষাট দশকের প্রথম ভাগে গঠিত ‘পাকিস্তান পরিচালক সমিতি’র অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর তিনি তেমন কোনও স্বীকৃতি পাননি। কেবলমাত্র এফডিসিতে তাঁর নামে একটি পাঠাগার রয়েছে। পরিচালক সমিতি বর্তমান সরকারের কাছে আবেদন করায় ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ের পাশের সার্ক ফোয়ারা থেকে এফডিসি ছাড়িয়ে টঙ্গী ডাইভারশন রোড পর্যন্ত সড়কটি ‘আবদুল জব্বার খান সড়ক’ নামে পরিচিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে।

জেদের বশে চ্যালেঞ্জ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন মুন্সীগঞ্জের সন্তান, সংস্কৃতিজন আবদুল জব্বার খান। সেই চলচ্চিত্র বহু ডালপালা মেলে এখন একটি বৃহৎ ইন্ডাস্ট্রি। আমাদের সংস্কৃতি ও বিনোদনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৫৭ সালের ২৭ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান (বঙ্গবন্ধু, পরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি) ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল, ১৯৫৭’ পেশ করেন। ৩ এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে বিল পাসের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন’ প্রতিষ্ঠিত হবার আইন পাশ হয়। ২০১২ খ্রি. থেকে ৩ এপ্রিল ‘জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। আইনটি ১৯ জুন, ১৯৫৭খ্রি. থেকে কার্যকর হয়। ১৯৫৭ এবং ১৯৫৮ সালে এ দেশে কোনও চলচ্চিত্র মুক্তি পায়নি। ১৯৫৯ সাল থেকে এফডিসি থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে থাকে। পরবর্তীতে স্বাধীনতার পর এর নামকরণ হয় ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন’। এই প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিয়ে এ পর্যন্ত ৩০০০ এর ওপর চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
আমরা পথিকৃৎ চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আবদুল জব্বার খানকে নিয়ে গর্বিত।

কাজী হাসান : গবেষক, লেখক। নির্বাহী পরিচালক, সোনারং তরুছায়া
[email protected]
www.facebook.com/kazihasan0

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, অনুপম হায়াৎ, চলচ্চিত্রবিষয়ক গবেষক, লেখক, দারাশিকো
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৪৪
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×