অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ইউনুস স্যার এইম ইন লাইফ রচনা মুখস্ত করেননি, কুটির শিল্প ছিলো তার পছন্দের রচনা। ফিক্সিং দ্য এইম ইন লাইফ ইজ ভেরী ইমপরট্যান্ট। এ লাইফ উইদাউট এম ইজ লাইক আ শিপ উইদাউট আ রাডার। এইটা না জানার কারণে ইউনুস স্যার চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি থেকে ক্লাস নিয়ে ফিরে কাঁথা মুড়ি দিয়ে না ঘুমিয়ে জোবরা গ্রামে গিয়েছিলেন কোন কুক্ষণে আচরি।
ঘুম থেকে উঠে টিচার্স ক্লাবে গিয়ে কেরামবোর্ড খেলার পরিবর্তে লোক ঠকাতে জোবরা গ্রামে গিয়েছেন। সওদাগরের ছেলে বলেই কঠিন ব্যবসার পোকা মাথায় ছিল, কিন্তু অলস মধ্যবিত্তের মতো সহজ ব্যবসার বুদ্ধি ছিলো না।
টিচার্স ক্লাবে লাল নীল হলুদ প্যানেলের সঙ্গে কচলাকচলি করার বুদ্ধি উনার ছিলো না। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যারের মতো সবচেয়ে যোগ্য শিক্ষক উপাচার্য হবার সুযোগ পাননি। সেইখানে ইউনুস স্যারের পক্ষে ভিসি হওয়া সম্ভব হতো না। তবে ইউনুস স্যারের যে ব্যবসায়ী বুদ্ধি তাতে আপাকে বা ম্যাডামকে ইমপ্রেস করে অর্থমন্ত্রী উনি হতে পারতেন। সেটা না করে উনি হিলারীকে ইমপ্রেস করেছেন।ফলে খেলাটা মাইক্রো থেকে ম্যাক্রো পলিটিক্সে চলে গেছে। এর কোন কিছু যদি উনি করতে না পারতেন তাহলে এখন উনি চট্টগ্রামে ইউনুস জুয়েলারীর মালিক হতেন। সেটা চট্টগ্রামের লোকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতো। সরকার সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীকে বুদ্ধি দিয়ে বাগে আনতে বারবার ব্যর্থ হলেও ইউনুস স্যার উনার সুদের ব্যবসার ফাঁদে ফেলে সাকার বাংলোর ঝাড়বাতি খুলে নিতেন। অর্থাৎ ইউনুস স্যারকে আটকে রাখা কঠিন হতো যে কোন পেশায়।
অমর্ত্য সেন বিছানায় শুয়ে অর্থনীতির দর্শন চিন্তা করে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে যখন নোবেল পুরস্কার পেলেন, বললেন প্রত্যেক বছরি লোকজন বলে এবার আপনি নোবেল পাচ্ছেন, পরে অন্যলোক পায়। যাক শেষ পর্যন্ত দিলো। এই ছিল তার প্রতিক্রিয়া। আর ইউনুস স্যার দৌড়ঝাঁপ করা লোক। এর আগে কয়েক বছর ইউনুস স্যারের এনজিও সতীর্থরা তার বিরুদ্ধে উড়ো ফ্যাক্স করে ইউনুস স্যারের প্রশংসা করেছে। ফলে নোবেল কমিটি রীতিমত পুলিশ ভেরিকিকেশন করে অবশেষ নোবেল দিয়েছে। অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার মতো মানুষ কলকাতায় নেই। থাকলেও ফ্যাক্স করার লোক নেই। কলকাতার ফ্যাক্সের খরচ বাঁচানোর মিতব্যায়িতা অমর্ত্য স্যারকে দুদন্ড শান্তি দিয়েছে।
নোবেল বিজয়ী আবদুস সালামের মরণেও পাকিস্তানের ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাকে নিষ্কৃতি দেয়নি, উনি জন্মগতভাবে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের লোক হিসেবে উতসাহী সুন্নীরা তার কবরের এপিটাফ ভেঙ্গে রেখেছে। ভারতের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গুরু ফৈয়াজখাঁর কবরটি ধুলোমলিন।তবে ভারতে শ্রদ্ধা জানানোর সংস্কৃতি অপেক্ষাকৃত বেশী সচল।
উল্লিখিত ঘটনাবলী থেকে প্রতীয়মান হয় দক্ষিণ এশিয়ার মাজার সংস্কৃতি রাজনৈতিক। এইখানে নোবেল বিজয়ীদের দেহ না রাখাই ভালো।আর কিছু যদি নাও পারে পায়জামা খুলে পড়া রাজনৈতিক সংস্কৃতি অন্তত কবরের এপিটাফ খুলে নেবে।
আর আমরা যারা গবেষণা করে ইউনুস স্যারকে শিকারের চেষ্টা করছি তাদের জেনে রাখা ভালো, লবি না করে আরেকটা নোবেল শান্তি পুরষ্কার না পেলে উনাকে ভুল প্রমাণ করা অসম্ভব।আমাকে গত দুদিন ধরে ইউনুস তোষণ করতে দেখে অবাক হবার কিছু নাই। উনি নোবেল বিজয়ের পর জার্মানীতে এসেছিলেন জার্মান চ্যাঞ্চেলর আঙ্গেলা মেয়ারকেলের আমন্ত্রণে।
উনার সমভিব্যহারে বার্লিনে আর কোলনে বাঙ্গালী রেস্টুরেন্টে ফ্রি লোডিং করেছি। বাঙ্গালীরা বাঙ্গালী আত্মীয়ের কাছে মাছ-ভাতের বিল নেয়না। ইউনুস স্যার তবুও ডয়চেভেলের ফারুক ভাইকে বলেছিলেন, এরা এতো খরচ করছে,এটা ভালো দেখায় না। ফারুক ভাই বিল দিতে চেষ্টা করলে বাঙ্গালী রেস্টুরেন্ট মালিক স্তম্ভিত হয়ে যান।যাই হোক এখন বুঝতে পারছি উনি নরওয়ের পয়সায় বিল দিতে চেয়েছিলেন।রেস্টুরেন্টে জার্মান খাদকরা ইউনুস স্যারকে দেখে দৌড়ে আসলো, কাগজ নাই বিয়ার কোস্টারে বাংলায় লিখে দিলেন, ইউনুস।স্যারকে নিয়ে বিদেশীদের আদিখ্যেতা দেখে খুব বাঙ্গু হিংসায় কয়লা হচ্ছিলাম। কেজানে বছর দশেক শুয়ে শুয়ে ট্র্যাশ ইংজিরি বই লিখে নোবাল কমিটির জুতা মুছেও ব্যর্থ হবার পর আমিই স্যারের এপিটাফ খুলে নেবো। কিন্তু এমেরিকায়,আফ্রিকায়,ইউরোপে ছোট খাটো মানুষের বিয়ার কোস্টারে যে ইউনুস নামটা থেকে যাবে সেইটার কী হবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৮