somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন ডিকশনারী যেদিন লিখিত হবে, কেউ আমাকে ভুলে যেও না (চিক্বুর সহ)...

০৪ ঠা মে, ২০১১ বিকাল ৫:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা জীবনের পড়া বাংলা মিডিয়ামে। পড়া মানে মুখস্থ করতে হবে। যা আপনাদের মেঘ একটুও পারে না। ফলাফল হাত পেতে মার খাওয়া। যাক্‌, সেসব নিয়ে হায় আফসোস নেই। ইংলিশ ফর টুডে পড়ে ই কেউ ইংরেজিতে কবিতা লিখে আর আমাদের মতো মাঝারীরা ভাবে - এভাবে কি ভাষা শেখা যায় (এভাবে কি তার সাথে প্রেম করা যায় - ফজলের সেই গান নোভা ব্যান্ড)। আরবীতে যখন ব্যাকরণ আর কবিতা লিখা শিখলাম ( শিখতে বাধ্য হলাম) তখন ভাবনার ষোলকলা পূর্ণ হলো। বাপস, আমি বাংলা জানি (আজো জানি না সত্যি জানি কি না), ইংরেজি জানি (ইংলিশ বই পড়তে দিলে আমার একমাস লাগে), আরবী জানি (পড়তে পারি কিন্তু আগের মতো কিছুতেই অর্থ বুঝি না) - আমরা ক্লাসের সবাই একদিন আলাপ করছিলাম আমরা আসলে বহু ভাষা বিশারদ এর খেতাব পাওয়া উচিত। এসব চিরতা গিলতে গিলতে এসএসসি র বৈতরণী পার হলাম। এবং খুব সুন্দরভাবে ঐ টিক মার্কের আমলেও ইংরেজিতে লেটার পেলাম না। সব দোষ আমার মুখস্থবিদ্যা না থাকার /:)
এইচএসসিতে সায়েন্সের স্টুডেন্টরা বাংলা ইংরেজি পড়ার টাইম পায় না। আমি কোনকিছু পড়ারই টাইম পাই না। সব বিষয়ে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে ডাব্বা মেরে নিজের চেহারা প্রতিটি টিচারের কাছে পরিচিত করলাম। তারা মতিঝিল আইডিয়াল থেকে আসা স্ট্যান্ড করা নীলাকে যেমন চেনে তেমনি আমাকেও চেনে। আমার বন্ধুরা (যারা আমারই মতো) আমাকে নিয়ে রীতিমতো গর্বিত B-)
আমাদের বছর এইচএসসির ইংরেজি প্রশ্ন হলো একেবারে যাকে বলে মায়েরে...বাঘা বাঘা পোলাপান পরীক্ষা ড্রপ করার কথা ভাবছে, আমি বীরদর্পে পরীক্ষা দিলাম। কমন পড়লেও আমার কিছু না, না পড়লেও কিছু না। কারণ আমার তো মুখস্থ নাই কিছুই। বানায়ে লিখাই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। যাক্‌, কানের পাশ দিয়ে গুলি যাবার মতো করে পাশ করলাম।
নিজের ইংরেজি নিয়ে খুব মন খারাপ করেছি যখন লন্ডন ইউনিভার্সিটির আন্ডারে আমাকে একবছর মনের দুঃখে কম্পিউটার স্টাডিজ পড়তে হয়েছে। সেটাও ঐ ইংরেজি নিয়েই কেমন কেমন করে যেন পাশ করলাম। অনার্স, মাস্টার্স, আবার মাস্টার্স উতরে এলাম অমন ইংরেজি নিয়েই।
চাকুরীতে ঢুকবার পরে আমার ইমিডিয়েট ইনচার্জ ছিল ইংলিশে পাশ করা ডিইউ থেকে। উনি আমাকে একদিন বললো ডেইলী স্টার বা অবজারভার পড়লে আমি অফিসিয়াল এসব গতবাঁধা জিনিস লিখা শিখে যাব। কার্যক্রম শুরু করলাম। ইনচার্জ চেঞ্জ হলেন। একসময় দেখলাম ম্যানেজার থেকে শুরু করে সবাই আমাকে দিয়ে সব করেসপনডেন্স করায়। এভাবে চলছে, সবাইকে শেখাতে চেষ্টা করি। কিন্তু কেউ সেটাকে ভালোভাবে নেয় কেউ আবার ম্যাডাম জ্ঞান ফলায় ভাব দেখায়ে তাচ্ছিল্য করে।
গত ২-৩ বছর সামান্য একটু সিনিয়র পজিশনে গিয়েছি। অনার্স মাস্টার্স শেষ করা ছেলে মেয়ে আমার সাথে কাজ করে, অনেকের ইন্টারভিউ নিতে হয়। খুব ভালো লেখাপড়া জানা ২-৩ জন পাই কিন্তু বাকীদের অবস্থা দেখে বেদনায় নীল হই আবার হাসিও পায়।
অফিসে এখন কেউ জ্যামে আটকালে বা আসতে দেরী হলে একটা এসএমএস দিয়ে রাখাই দস্তুর - আমার সাথে কমবেশি বারোজনের টিম এতদিন পর্যন্ত কাজ করছে। একজন ছাড়া বাকীরা আমাকে যেমন এসএমএস দেয় -
1. জ্যামে আটকানো - Madam, at frmgt, huge jam, some late happen
Ma'm, big trfk, little late
Gd mrng ma'm, in jatrabari, michhil, no whn ended
2. অসুস্থ - Apa, i m sick, direct connection.Nt come
Frm last nite my belly is sick, 8 times it happened, very weak.
3. হঠাত গ্রামের বাড়ী যাওয়া - ma'm i m goes to Comilla. nt come today, 2moro.


পাশের কলিগের সাথে আরেক কলিগের কথা কাটাকাটি হয়েছে। দুজনকেই বকলাম কি বাচ্চাদের মতো কাজ কারবার করেন! যার দোষ বেশি সে আরেকজনকে এসএমএস দিয়েছে "don't take it personality"

সবচাইতে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ইন্টারভিউ এর সময়। নাম বললো, কোন সাবজেক্টে জিজ্ঞেস করলাম, ম্যাথ .. কাগজ কলম দিলাম, "আপনি যদি ৪০০ তে ২৭০ পান তবে কত শতাংশ নম্বর পেয়েছেন?" পারলো না। বাইরে এসে বলেছে এক শুকনা মতো মহিলা স্যারদের সাথে বসা এমন ছাই দিয়ে ধরে প্রশ্ন করছে!

ছেলেটাকে দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। যেমন লম্বা তেমন ইনোসেন্ট চেহারা, আমার বিদেশ থাকা ছোটভাইটার কথা মনে হলো। কোথা থেকে এলেন আপনি বাড়ী কোথায়? "রাজশাহী ম্যাডাম"। আমার স্যার এবং অন্যান্যরা মুচকি হাসছেন। কারণ ছেলেটার বিরাট রেফারেন্স। তাকে নিতেই হবে। কাগজ কলম এগিয়ে দিয়ে বললাম ইংরেজিতে লিখুন "আমি রাজশাহী থেকে এসেছি" , লিখলো
"I came in Razsahi"
তার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলাম ইকনোমিক্সে অনার্স, ইউনিভার্সিটির নাম আর নাই বা লিখলাম।

বাপরে এ তো আবার দেখি ইংলিশে পড়াশোনা, সেকেন্ড ক্লাস পাওয়া। আমি খুবই আশাবাদী হয়ে উঠলাম। ইন্টারভিউতে থকা আমরা সবাই আশাবাদী। আমার স্যার জিজ্ঞেসই করে ফেললেন "এ চাক্‌রী আপনি করবেন?"। সে করবে।
আমার কোর্টে বল। আমি বললাম আপনাকে একটা সহজ ট্রান্সলেশন দেই বলুন তো "আমার শরীর আজ কেমন কেমন করছে"
ঝটপট উত্তর এলো "My body is doing how how today"


এরপর থেকে আমি আর কোন ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকি না :((

***http://www.amrabondhu.com/meghkanya/2967 ইতিমধ্যে এখানে প্রকাশিত, যারা আগেই পড়েছেন তাদের জন্য সতর্কসংকেত :D
২৫টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×