আজ একটি বিশেষ দিন ৩৮ বছর পূর্বে এই পবিত্র দিনে জন মানুষের মহান নেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলা মুক্ত করার জন্য, জাতিকে পথ দেখানোর জন্য , মানুষের মুক্তির জন্য দেশে ফেরেন। দেশ যখন দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক সেইসময় দেশকে পিছিয়ে দেয়ার জন্য ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এটা জাতির সৌভাগ্য যে ওই সময়ে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা দেশে ছিলেন না। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে থাকলেও সব সময় তার মন পড়েছিল দেশের মধ্যে । জনগণের দুঃখ কষ্টের কথা তিনি সবসময় ভাবছিলেন। ঘাতকরা সব সময়েই সক্রিয় ছিল তাকে হত্যা করার জন্য। দেশের জন্য মন কাঁদলেও বাস্তবতার কারণে দেশে ফিরতে পারছিলেন না, অবস্থান করছিলেন ভ্রাতৃপ্রতিম একটি দেশে। তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হতে পারে এই আশঙ্কায় ঐ দেশের গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে তিনি অন্য নামে অন্য পরিচয়ে অবস্থান করলেও দেশের জন গনের অসহায় অবস্থার কথা ভেবে তাঁর মন ডুকরে কেঁদে উঠতো।
দেশ যখন গনতন্ত্রহীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলা মুক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগের গতিশীল কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই মহান এই নেত্রীকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত করা হয় ১৯৮১ সালের ১৬ ফেব্রয়ারী । অবশেষে প্রবল জনমত উপেক্ষা করতে না পেরে সামরিকজান্তা তাকে দেশে আসার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৮১ সালের এই দিনে(১৭ই মে) ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে তিনি সেই সময়ের কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশে ফেরেন। তাঁকে এক নজর দেখার জন্য বিমানবন্দর এলাকায় লক্ষ কোটি মানুষের ঢল নামে। গণতন্ত্রকামী মানুষের জয় বাংলা স্লোগান ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা দেশ। তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তায় হতবিহবল হয়ে পড়ে সামরিক জান্তা । ভবিষ্যৎদ্রষ্টা এই নেত্রী বলেছিলেন খুব শীঘ্রই বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। এর পর তাঁর দেশে ফেরার দুই সপ্তাহের মধ্যে সমরিক সরকার উৎখাত হয়। গনতন্ত্রের পথ খুলে যায়। ক্ষমতায় আসে বর্তমান গনতন্ত্রের সহযোগী দল জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাত জেনারেল হোমো এরশাদ। পরবর্তিতে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে, অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাত করে ক্ষমতায় আসে আওয়ামীলীগ এবং গনমানুষের এই নেত্রী হন প্রধানমন্ত্রী। গত চার দশক ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া মহীয়সী এই নেত্রীকে হত্যার জন্য বহু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হয়েছে। মানুষের ভালোবাসার কারণে এবং তাঁর বিচক্ষণতার কারণে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে। সর্বশেষ বিচারপতি সিনহা বাবুর নেতৃত্বে জুডিশিয়াল ক্যু করার চেষ্টা করা হয় যা জনগণের দোয়ায় তিনি অতিক্রম করতে সক্ষম হন।
(২০০৭এর জুলাইয়ে গ্রেফতারের সময় তাকে ষড়যন্ত্রীরা একবোতল evian পানি ছাড়া কিছু নিতে দেয় নি)
মাদার অফ হিউম্যানিটি এই নেত্রী শুধু মানুষের প্রতিই ভালোবাসা দেখান না, পশু পাখির প্রতি রয়েছে তার অসীম মমতা । ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কারাবরণের সময় তাঁর পোষা কুকুর গুলোর কাছ থেকে তাকে দূরে থাকতে হয় বলে কুকুর গুলোর জন্য মন সবসময় খারাপ থাকতো। বিদূষী এই নেত্রী এখন পর্যন্ত দুই ডজনের বেশি বই রচনা করেছেন, অর্জন করেছেন অসংখ্য দেশি ও বিদেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডক্টর অফ ফিলোসফি, ডক্টর অফ ল, ডি লিট, ডক্টর অফ ইউনিভার্সিটি সহ অগনিত ডিগ্রি । অর্জন করেছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সম্মান দেশের ও সংস্থার বিভিন্ন সম্মাননা । দেশের মানুষ তাকে ভালবেসে কওমি জননী, মাদার অফ হিউম্যানিটি সহ অসংখ্য উপাধিতে ভূষিত করেছে। নাইজেরিয়ার সংবাদপত্রে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সাদাসিদা জীবনযাপনকারী নেতাদের মধ্যে একজন বলা হয়েছে।
আজ এই পবিত্র দিনটাকে বিভিন্ন জায়গায় মসজিদে মসজিদে ঘরে ঘরে প্রার্থনা চলছে । বিকেল তিনটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিশেষ অালোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা কেউ সেখানে আসলে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে।
(মূলত নুরু ভাই এই ধরনের পোস্ট গুলো দিয়ে থাকেন, কিন্তু আজকে উনি এখন পর্যন্ত এ ধরনের পোস্ট দেন নি। কিছু দিন ধরে ব্লগে ও দেখছি না ওনাকে। ওনার খবর কেউ জানলে জানানোর অনুরোধ থাকলো।ছবিগুলো আমার নিজের তোলা না, প্রথমটি ইত্তেকাক থেকে নেয়া, দ্বিতীয়টি গার্ডিয়ান থেকে নেয়া। )