এটি একটি গল্প হতে পারত যদি আমি গুছিয়ে লিখতে পারতাম, তা পারি না বলে শুধু একটি থিম/ভাবনা শেয়ার করলাম। যদি কারও সাথে এই লেখার কোন মিল হয়ে যায় তবে তা কেবল কাকতাল, কাউকে হেয় করা বা কারও ব্যক্তিগত মূল্যবোধে আঘাত করা আমার এ লেখার উদ্দেশ্য নয়।
Image may contain: text
ছবি নেট থেকে নেওয়া
”এক গ্রামে, একটি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার, কোনমতে দিন এনে দিনে খায়, কোন সঞ্চয় না করতে পারা যায় এ ধরণের। সে পরিবারে অভাবের কারণে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাতে পারে না। বাবা তার কাজের সুবিধার জন্য তাদের মাঠে গরু, ছাগল চরাতে পাঠায়। এভাবে চলতে থাকে তাদের দিন।এভাবে চলার মাঝে সে অনেক ঋণগ্রস্থ হয়.... পাওনাদারের ক্রমাগত চাপে ভিটেমাটি ছাড়ার উপক্রম হয় তার। ঠিক এমন সময় তাদের কোন এক স্বজন ব্যবসা করে বেশ ভাল অবস্থায় চলত। তার চোখে বিষয়টি খারাপ লাগে, তখন তিনি তাদের সাহায্য করার জন্য তাদেরকে নিজের বাড়িতে এনে আশ্রয় দেয়, কাজ দেয়, যাতে তারা আগের চেয়ে বেশি টাকা আয় করতে পারে আর ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করাতে পারে আগের চেয়ে একটু উন্নত জীবন কাটাতে পারে, আর কিছু কিছু করে সঞ্চয় করে নিজের এবং বাচ্চাদের জীবনে চলার মত একটা পথ গড়ে দিতে পারে। এভাবে চলতে থাকে সময়। সময়ের পরিক্রমায় একসময় সবকিছু অতীত হয়ে যায়, সেই উপকারি স্বজন মারা যায়, আর তার সম্পত্তি নিয়ে তার পরিবারের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে রেষারেষি হয়... আর তা ভাগাভাগি করে সবাই যার যার মত চলতে থাকে। আর গল্পের শুরুর সেই পরিবার গ্রাম থেকে শহরে চলে যায়। সেখানে তাদের কিছুটা উন্নত জীবন চলতে থাকে। পরিবারের একটা মাত্র ছেলে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে, তবে ছোটবেলা থেকে কষ্ট করে বড় হওয়ার কারণে টিউশনী করে নিজের পড়ালেখা ও থাকা খাওয়ার খরচ জোগাড় করে নিত আর পড়াশোনা করত। এভাবে একসময় পড়ালেখা শেষ করে একসময় দেশের একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারী অফিসার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে। জীবনের যতপ্রকার রং, রূপ, স্বাদ-আহ্লাদ সব ধীরে ধীরে এসে পড়ে তার হাতের নাগালে।
মনে আছে সেই উপকার কারী ভদ্রলোকের কথা... যিনি নিজের টাকা দিয়ে...কাজ দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী হতে শেখায়... তারও এক ছেলে। কালক্রমে সেও সেই শহরেই বাস করে কিন্তু ভাগ্যের নিষ্পেষণে তার জীবনে নেমে আসে চরম দারিদ্রতা...। কোনমতে সে তার বউ-বাচ্চা নিয়ে শহরের কোন এক বস্তিতে বাস করে। কোন একদিন এই বস্তিবাসি বেড়াতে গেল সেই উপকারভোগী আত্মীয়ের বাসায়। তখন অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে... আর তাকে রাতে সেখানে থাকতে হয়... তাকে থাকতে দেওয়া হয় বাড়ির বাইরে একটা যায়গায়.. যেখানে বৃষ্টির প্রকোপে সে সারারাত ঘুমাতে পারে না। সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে সকালে যখন সেখান থেকে বিদায় নিয়ে আসবে... তখন ভদ্রতা করে আত্মীয় বলছে... কি রে বৃষ্টি কখন হল... তুই রাতে ঠিকমত ঘুমিয়েছিস তো.... আসলে ঘর তো অনেকগুলো খালি ছিল.. তুই এসে তো কোন একটা ঘরে থাকতে পারতি... ইত্যাদি... ইত্যাদি।”
ধন্যবাদ বন্ধুরা সময় নিয়ে আমার এই গল্পটা পড়ার জন্য... যদিও মাঝে অনেক কিছু আমি বাদ দিয়েছি... চেষ্টা করেছি শুধু গল্পের মূল বিষয়টা তুলে ধরতে... কতটুকু পেরেছি তা আপনারা মন্তব্য করুন। আর আপনাদের আশেপাশে যারা আপনাদের চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে তাদের একটু সাহায্য করার চেষ্টা করুন.. যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ততটুকুই করুন, যদিও কোন প্রতিদান আশা করবেন না তবু প্রতিদান পাবার সম্ভাবনা একটুও নেই.. এই দুনিয়ায়....
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৮