শিরোনামের উক্তিটি বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের। ওটা আমার পছন্দের উক্তি। আমরা জানি, "দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে"। তবে সমস্যা হল, আমাদের দেশের মহাসড়কের অবস্থা বেহাল। প্রতিবছর নিয়মিতভাবে পিচ উঠে যাচ্ছে, দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে, দুর্নীতির কথা না হয় বাদই রাখলাম।(স্বাধীনতার পর দেশে রাস্তা তৈরীর কাজে যে পরিমান বরাদ্দ হয়েছে, রাস্তাগুলো সোনা দিয়ে মুড়ে দেয়া যেত।) সুতরাং মহাসড়কে লম্ফঝম্প না করে, ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালাতে হবে। গাড়ির ও চালকের লাইসেন্স থাকাটাও বাধ্যতামূলক। তবে ক্ষমতা/পাওয়া থাকলে, আপনি উল্টোপথেও ভাঙা গাড়ি চালাতে পারেন। জানেনই তো মগের মুল্লুকে অনেক কিছুই সম্ভব/জায়েজ।।
পোস্টটি ১৫ই আগষ্ট দিতে চেয়েছিলাম। সেদিন শেখ সাহেবকে নিয়ে অনেকগুলো পোস্ট আসায় দেয়া হয় নি। ইচ্ছে ছিল লীগের নেতাদের একটু ঝাড়ব। স্পেশালি আমার ক্যাম্পাসের কিছু ছাত্রনেতা ও পাতি নেতাদের(কয়েকদিন আগে ওদের দু'গ্রুপে কামড়া কামড়ি লেগেছি। ওদের একজন ব্লগেও আছে)। হোস্টেলে ওদের পছন্দের স্লোগান ছিল "জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো"।(ফান করে আমি যেটা প্রায়ই বলে থাকি)। ২০১৮ সালে এসে, এখনো যদি ৭০ দশকের মত জ্বালাও পোড়াও করার কথা বলতে হয়! তবে ভাবার বিষয়, আমরা আগালাম কতটুকু?
আরেকটি কথা হল, যে কোন সময় শুধু ৭ই মার্চের ভাষনই বাজানো। এ ভাষন আমার মুখস্ত, শুনতে দারুন লাগে। এটা বাজবে বাজাক, ভালো কথা। কিন্তু অন্যগুলো বাদ কেন? মানে ১৯৭২এর ২৬মার্চের টা, বাকশালের টা(১৯৭৫) কিংবা অন্যসব! আমার তো মনে হয়, দেশ গঠনের জন্য এসব ভাষনই এখন বেশী প্রয়োজন। (আমার কাছে বেশ কয়টা ভাষন আছে। দারুন!)
মাঝে মধ্যে ভাবি, লীগের নেতারা চলছে কোন পথে? সেটি কি আসলেই বঙ্গবন্ধুর পথ? আচ্ছা, আমরা(তথা কথিত মুজিব সৈনিক) কি শেখ মুজিবের আদর্শ বুঝি? মানি?/কাজে লাগাই? নাকি সব লোক দেখানো?? (এখান শুধু লীগ নিয়ে কথা বলা হল। দল, জাশি, জাপা দুরে গিয়ে মরুক।)
উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদের জানা। জানা না থাকলে মাথা খাটিয়ে নীচ থেকে বের করুন। আমরা আজ কোন পথে...
★★★ বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় কিছু উক্তিঃ
১. অযোগ্য নেতৃত্ব, নীতিহীন নেতা ও কাপুরুষ রাজনীতিবিদদের সাথে কোন দিন একসাথে হয়ে দেশের কাজে নামতে নেই। তাতে দেশ সেবার চেয়ে দেশের ও জনগণের সর্বনাশই বেশি হয়।
২. এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে, যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণী আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।
৩. যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না।
৪. সমস্ত সরকারী কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন।
৫. যখন তুমি কোন ভদ্রলোকের সাথে খেলবে তখন তোমাকে ভদ্রলোক হতে হবে, যখন তুমি কোন বেজন্মার সাথে খেলবে তখন অবশ্যই তোমাকে তার চাইতে বড় বেজন্মা হতে হবে। নচেত পরাজয় নিশ্চিত। (এটা আমি ব্লগে কাজে লাগাই)
★★★ তাজউদ্দীন আহমদের কিছু উক্তিঃ
১. “লেখাপড়া জানতে হয় নিজের বিবেককে শান দেওয়ার জন্যে। শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র চাকরি নয়। শিক্ষা দিয়ে বিবেককে উন্নত করা- এই ব্রত নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”
২. “বক্তৃতা কমাতে হবে। এখন ভেবে দেখতে হবে বক্তৃতায় যা বলা হয়েছে তা করা হয়েছে কিনা।”
৩. “শুধু বড় বড় কথা বলে এবং অপরের কাঁধে দোষ চাপিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না।”
৪. “আমি দেশের জন্য এমনভাবে কাজ করবো যেন দেশের ইতিহাস লেখার সময় সবাই এদেশটাকেই খুঁজে পায়, কিন্তু আমাকে হারিয়ে ফেলে…”
উক্তিগুলো একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল মন্ত্র হওয়ার যোগ্যতা রাখে। নেতারা যে কবে এসব বুঝবে...
এসব উক্তি একটা সাইট থেকে কপি করা। বিস্তারিত জানতে পড়ুন:
১। বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরণীয় ২০ উক্তি।
২। তাজউদ্দীন আহমদের কিছু অসাধারণ উক্তি
উপসংহারঃ
প্রথমে মহাসড়ক নিয়ে প্যাচাল পাড়লেও পোস্টটা আসলে রাজনীতির সড়ক নিয়ে লেখা। স্বাধীনতার ৪৭বছর পরে এসে রাজনৈতিক পাওয়া, না পাওয়ার হিসেব মেলাতে পারছি না। হ্যাঁ অনেক কিছু পেয়েছি। গ্রামে গ্রামে ফ্রিজ, টিভি, ডিস, সোলার। শহরে তো আছেই।
তবে বড় কয়েকটা এখনো পাই নি: জাতীয় ঐক্য, দক্ষ প্রশাসন, সুস্থ রাজনীতি।
মাঝেমধ্যে কেন জানি থমকে দাঁড়াই; কৃষকের কষ্ট দেখে, হাতাশাগ্রস্ত বেকার যুবকটাকে দেখে, শিশুর হাসিমাখা মুখ দেখে, সুকান্তের সেই কবিতাটি পড়ে কিংবা জাতীয় সংগীত শুনে। আচ্ছা, সোনার বাংলাকে আমি কি সত্যিই ভালোবাসি? (আজ পোস্টের ভূমিকা যখন লেখা শুরু করি, পাশের স্কুলে সত্যিই জাতীয় সংগীত হচ্ছিল, "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি...")
(মন্তব্যে গঠনমূলক সমালোচনা কাম্য।)
জয় বাংলা।
.
[ফ্লাডিং-এর কারণে পোস্টে মন্তব্য সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। ]
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:১৩