আমার স্ত্রী হাইহিল পায়ে অফিস করে না, মা লিপিস্টিক দিয়ে ঘুরতে বের হন না। এই কারণে তো আমার কখনো মনে হয়নি তারা অসুন্দর। লাক্স সাবান বা রং ফরসাকারী ক্রিম, হাইহিল জুতো কিংবা কড়া লিপিস্টিকে নারীর সৌন্দর্য এই রকম ধারণা যে পোষণ করে আমার কাছে মনে হয় এরা নারীদের অগ্রযাত্রায় প্রধান হুমকি। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানিসহ নানা দেশি প্রতিষ্ঠান-এর রং ফর্সাকারী ক্রিম, লোশন এবং সাবানের জমজমাট বাজার। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনের সিংহভাগই দখল করে আছে তাদের বিজ্ঞাপন। তাদের বিজ্ঞাপনে চাকরির সাফল্য, বিয়ে সবকিছু নির্ভর করছে রং ফর্সা হওয়ার ওপর।
প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি কথা বলি, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় স্তনের মাপ, কোমরের মাপ, উচ্চতা দিয়ে মাপা হচ্ছে সৌন্দর্য। এইসব অবমাননাকর মাপের ভিত্তিতে যে নির্বাচিত হবে সেরা সুন্দরী হিসেবে, সে হবে পণ্য-বিপণনের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি, ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’। সৌন্দর্যের এই ধারণাকে পুঁজি করে পৃথিবীজুড়ে চলছে বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার বাণিজ্য। সৌন্দর্যহীনতার হীনম্মন্যতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো নারীকে শেখাচ্ছে নিজের চেহারা কিংবা শরীরকে অপছন্দ করতে। নারীর সৌন্দর্য তার স্তন ও কোমরের মাপে নয়– তার মেধায়, মননে, চিন্তায়, চেতনায় ও আচরণে। নারীর সৌন্দর্য তার আত্মবিশ্বাসে, আত্মবিশ্বাস থেকেই জন্ম নেয় সৌন্দর্য। এটি শুধু নারী নয়, পুরুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪২