somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: ভাঙনের শব্দ শুনি

২৮ শে নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


উৎসর্গ: হুট করে আমার লিখা কিছু লাইন তুলে দিয়ে আমাকে মেইল করেন একজন মানুষ। তার পর বিষয়বস্তু “নারী” নিয়ে গল্পের মতো করে কিছু লাইনও লিখে দিলেন। বলল- এই লাইনগুলো দিয়ে সুন্দর একটা গল্প হতে পারে। আমার তোমার লেখায় বিশ্বাস আছে। শুরুটা আমি করে দিলাম। বাকিটা তোমার মত করেই লিখো।
সেই মানুষটাকে উৎসর্গ না করে পারলাম না। মানুষটির নাম হলো- ফাতেমা আবেদীন নাজলা।


ঝড় নেমেছে। আমার জানালার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া আম গাছটাকে রাতের ভুত মনে হচ্ছে। তার তীব্র বেগে নড়াচাড়ার আওয়াজ আর সাথে তার পাতার গন্ধ আমার নাকে এসে লাগে। এ তো সবুজের গন্ধ। আশেপাশে দালানের চাপে মাটির গন্ধটা আটকে আছে। আর জানালার গ্রীলের পাশে আটকে আছি রাত জাগা আমি। ছাড়ছি দীর্ঘশ্বাস। আর তা মিশে যাচ্ছে ঝড়ো বাতাসের সাথে। আমি বসে থাকি একা। একদম একা। রাত বাড়ে। রাত গভীর থেকে গভীর হয়। অন্ধকার গাড় হয়। ঝুম ঝুম বৃষ্টির আওয়াজ আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। আমার মনের ভেতর জমে থাকা হাজারো মেঘের সারিগুলো উন্মাদ হয়ে উঠে। আমার মাথা কাজ করছে না। একটা প্রজেক্ট প্যাপার তৈরি করার কথা। আর আমি তৈরি করছি বৃষ্টির শব্দের গান। কেউ বলে ঝুম ঝুম বৃষ্টি হয় আবার কেউ বলে রিমঝিম। আমার ধারণা বৃষ্টি তাল লয় মেনে ঝরে। গিটারের টিউনিং এর মত কেউ উপরে বসে বৃষ্টি টিউন করছে। যিনি করছেন তিনি পুরুষ না হয়ে যান না। কারণ মাঝে মাঝে যখন ঝড় হয় ব্যান্ডের ড্রামের বিটের মত কড়কড় করে বাজ পড়ে। ওটা কোনো মেয়ের পক্ষে করা সম্ভব না। মেয়েরা আমার কাছে খুব স্নিগ্ধ একটা অবয়ব নিয়ে আসে। ওদের কোনো নিষ্ঠুরতা নেই। মিথ্যা নেই। শুধুই দেবীতুল্য। তাই যখন পত্রিকার পাতা খুলে আমি কোনো হত্যাকারী মায়ের ছবি দেখি , মহিলা ক্যাডার এর ছবি, বা ইডেনের মেয়েদের চুলোচুলির ছবি দেখি আমি চোখ বন্ধ করে পাতা উল্টাই।ওগুলো নেহায়েত মিথ্যা আর বানানো গল্প। ছবি গুলো ফটোশপ দিয়ে করা।
জানালা দিয়ে পানি আসছে , বন্ধ করা দরকার । ইশ এমন কেউ যদি থাক্ত যে আমার এই ছোট খাটো কাজ গুলো করে দিবে। কলম পড়ে গেলে উঠিয়ে দিবে। শার্টের বোতাম লাগিয়ে দিবে।চুলায় ডিম ভাজি পুড়ে যাবার আগে নামিয়ে নিবে।
জানালা বন্ধ করতে করতেই তার অস্তিত্ব টের পেলাম। আমি তার চুলের ঘ্রাণ পেলাম। নাহ। কারও চুলের ঘ্রাণ আমার পাওয়ার কথা না। একসময় মায়ের চুলের ঘ্রাণ পেতাম। তখন খুব একটা পাত্তা দিতাম না। অনেককেই বলতে শুনতাম- মায়ের গন্ধ, মায়ের আচল। এই ব্যপারগুলার কোন মানে আমি বুঝতাম না। মা-তো মা।তার আবার গন্ধের কি বিষয় আছে!! হয়ত বুঝতে চাইতাম না বলে সৃষ্টিকর্তা আমাকে ভালো মতই বুঝিয়ে দিয়েছেন। মা’র পায়ের শব্দটাও যে কি বিশাল একটা ব্যাপার। তা এখন আমার চাইতে ভালো আর কেউ বলতে পারবে না। আমার মা অবশ্য বলত- বুঝবি বুঝবি, যেদিন থাকবো না সেদিন বুঝবি।আমি তো ভাবতাম, আরে মা আমাকে ছেড়ে কই যাবে? আমাকে ছেড়ে মা কি থাকতে পারবে? ধুর।এও কি সম্ভব?
হ্যা। সম্ভব। এখন বুঝি সম্ভব। এই পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমার এই নিরব নিঃসঙ্গ জীবনটার দিকে তাকালে মনে হয় জীবন একটা রাক্ষস। সর্বক্ষণ হা করে আছে আমাকে খাওয়ার জন্য। হয়তো ধীরে ধীরে তার ভেতর নিয়েই যাচ্ছে। তার ধারালো দাতের আঘাতে হয়ত ছিন্ন-ভিন্ন হচ্ছি। কিন্তু টের পাচ্ছি না।
যাইহোক। কথা হচ্ছিল নারী নিয়ে। আমার জীবনেও কিন্তু নারী ছিল। আরে, আপনারা আবার অন্য কিছু ভেবে বসবেন না। আমার মা ছিল। আমার বোন ছিল। এরাও তো নারীর মধ্যেই পড়ে। তাই না? তাহলে অন্য নারীর কি দরকার? পত্রিকায় যখন দেখি হত্যাকারী মায়ের ছবি। তখন কি যে অনুভব হয় তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। আরে এ কি? মা হত্যা করবে তার সন্তানকে? এও কি সম্ভব। আমি তো জানতাম পিতা সন্তানকে হত্যা করতে পারে। মাতাল পিতা- হাতাশাগ্রস্থ পিতা সন্তান মেরে ফেলার ঘটনা শুনেছি অনেক। কিন্তু নিজ গর্ভে ধারণ করা সন্তানকে সুস্থ মস্তিষ্কে কিভাবে একজন মা মেরে ফেলতে পারেন? আরও আছে না? স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পর অভিমানে অত্যাচারে মা তার দুই সন্তানকে নিয়ে বিষ খেয়ে মরে গেছে। এটা কোন মা করতে পারে? এতোদিন জানতাম পৃথিবীর সমস্ত মন্দ থেকে মা তার সন্তানকে দুরে রাখার চেষ্টা করে। সিকিউরিটি দেয় মা। এতোদিন তো জানতাম, মা একমাত্র সন্তানের জন্য সমস্ত কষ্ট বুকে নিয়ে বেড়াবে কিন্তু মুখ ফুটে একটা কথাও বলবে না। আর এখন দেখি উল্টো। সব হিসেব-নিকেশ যেনো মিছে হয়ে গেলো। পৃথিবীর মানুষ যে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে উঠছে তার প্রমাণ হয়তো এগুলোই।
২.
তারপরও ঐ যে বললাম। মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হয় আমার পাশে একজন থাকবে। যার সাথে এই বৃষ্টির মাঝে আমি গল্প করে যেতাম। যাকে আমি কবিতা পড়ে শোনাতাম। আমার কবিতা পড়া দেখে মুগ্ধ হয়ে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো। এমনই একজন। সর্বক্ষণ। আমার পাশে। অভিমান করতো। চোখের জলে ভেজে একাকার হতো। আমি চোখের জল মুছে দিতাম। আমি তাকে হাসাতাম। পৃথিবীর সর্বসুখ আমি তার হাতের মুঠোয় এনে দিতাম। এমন অনুভূতি আমার যে দরকার। বন্ধুরা মাঝে মাঝে বলে, বিয়ে করে ফেল। কিন্তু আপনারাই বলেন, যে মানুষটা সম্পর্কের মর্ম বোঝা ভুলে গেছে সে মানুষটার কি বিয়ে করা সম্ভব? সত্যিই বলছি কিন্তু। আমি সম্পর্কের মর্ম বোঝা ভুলে গেছি। পৃথিবীর সমস্ত সম্পর্কের প্রতি আমার একটা অবিশ্বাস দাড়িয়ে গেছে। মনে হয় এই সম্পর্ক শুধু একটা নাটক মাত্র। এই নাটকে সর্বক্ষণ চলছে অভিনয়। অভিনয় দিয়ে মাতিয়ে রাখছি নিজের আত্বাকে। অনেকটা শিশুর মতো। শিশুকে যেমন আমরা খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে-ভালিয়ে রাখি। ঠিক সেরকম সম্পর্কটাও সেই খেলনার মতো। আমাদের হাতে সম্পর্ক নামক একটা খেলনা আমাদের সৃষ্টিকর্তা দিয়ে দিয়েছেন। আমরা সেটাকে নিয়ে খেলি। সারাক্ষণ খেলে যাই। খেলতে খেলতে আমরা এই খেলাতে অভ্যস্থ হয়ে যাই। এই অভ্যস্থ হওয়াটাকে অনেকে বলে পরিণতি। অনেকে আবার আপনারা ট্র্যাজেডিও বলতে পারেন। তো, আপনারা তো বুঝতে পারছেন আমি সম্পর্কটাকে কিভাবে দেখি? এধরনের ধ্যান-ধারণার একটা ছেলের কি উচিত বিয়ে করা?
আর তাছাড়া বিয়েটার প্রতিও আমার একটা অসম্মান চলে এসেছে। বিয়ে করে কি হবে? বছরের পর বছর একটা মানুষের সাথে শুধু মানিয়ে চলতে হবে। সংসার টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যেতে হবে। আমার সুখ-শান্তি ভুলে গিয়ে আমাকে টিকিয়ে রাখতে হবে সংসার। ব্যপারটা অনেকটা এরকম না? এখন ধরুন আমি চাইলাম সব অশান্তি সহ্য করেও সংসার করতে; কিন্তু আমার সঙ্গী চাচ্ছে না সহ্য করতে। সে নিস্তার চায়। তখন? তখন কি করা যাবে? জীবনসঙ্গী এসে যদি বলে, আমাকে মুক্তি দাও। তখন কি হবে? কিংবা বলতে পারেন তখন কি করা উচিত?
ভাবছেন এমনটা সমাজে হয় কিনা? হয়। অবশ্যই হয়। বিশ্বাস করুন। এমনটাই হচ্ছে। আপনাদের একটা গল্প বলি আসেন। একটা মেয়ে পড়াশুনার শেষ প্রান্তে। ঠিক সেই মুহূর্তে সে প্রেমে পড়লো একটি ছেলের। ধরে নেই মেয়েটির নাম ঐশি। আর ছেলেটির নাম মুনির।
ঐশি-মুনিরের প্রেমের চাকা ঘোরা শুরু করেছে ট্রেনের চেয়েও দ্রুতবেগে। ঐশি ভেবে নিয়েছে মুনিরকে তার পরিবার মেনে নেবে। কারণ, মুনির তো শিক্ষিত। ভালো বেতনের চাকরী করে। সুতরাং মেনে না নেয়ার তো কোন কারণ নেই। তাই সে চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছে। তাদের প্রেমের কথাটা সে প্রথম তার মা’কে বলে। মাও চিন্তা করলো, মেয়ে বড় হয়েছে। তারটা সে ভালো মতই বুঝতে শিখেছে। সুতরাং মেয়ের পছন্দটাই মায়ের পছন্দ। কিন্তু বিপত্তিটা বাধে বাবার অমতের পর।
বাবা বলে, ছেলে গ্রামে বড় হয়েছে। এই ছেলে ভালো হবে না। ছেলে ভালো চাকরী করে এটাই বড় না। স্ট্যাটাসটাও বড় বিষয়। ও একটা অশিক্ষিত পরিবারের ছেলে। সেই ছেলের মাথা যে কোন সময় বিগড়ে যেতে পারে। আজ তার আমার মেয়েকে ভালো লেগেছে। কাল সে যখন আরও উপরে উঠবে তার তখন অন্য মেয়েকে ভালো লাগা অস্বাভাবিক কিছু না।
পুরো বাড়িটা তখন নিরবতায় ছেয়ে গেলো। মা-মেয়ে শুধু কাঁদে। ছোট ভাই দেখে। দেখেই যায়। মা অনেক চেষ্টা করে বাবাকে বোঝানোর কিন্তু কোন মতেই বাবা রাজি হয় না। তিনি অটল। মেয়েকে তিনি কোন অশিক্ষিত পরিবারের হাতে তুলে দিতে পারেন না।
একদিন মা রাগে বলেই ফেললেন- তোমার পরিবারও একটা অশিক্ষিত পরিবার ছিল। তাই বলে কি আমি তোমাকে বিয়ে করিনি? তোমার শিক্ষার দিকে তাকিয়েই তো আমি তোমাকে বিয়ে করেছিলাম। আজকে আমার মেয়ে ঠিক একই জায়গায় দাড়িয়ে আছে যেখানে আমি ছিলাম ৩০ বছর আগে। তাহলে কেন ওকে তুমি সাপোর্ট করতে পারছো না?
স্ত্রীর মুখে নিজের পরিবারকে অশিক্ষিত বলতে শুনে কষ্টে চোখ দিয়ে পানিই বের হয়ে গিয়েছিল সেদিন মেয়েটির বাবার।অনেক অভিমান নিয়ে; বুকে অপমান নিয়ে স্ত্রীর সেই কটু কথাটির জবাব তিনি দিলেন মেয়ের সাথে ঐ ছেলেটির বিয়ে দিয়ে। সবাই খুব খশী। মেয়েটিও মানে ঐশিও খুব খুশী। ঐশির মা, ছোট ভাই সবাই খুব খুশী। মেয়েটি সুখে শান্তিতে থাকতে শুরু করলো। একদিন ঐশির মা মেয়েটির জন্য ঘরের সব আসবাবপত্র কিনে পাঠিয়ে দিলেন। ছোটভাইটি নিজ হাতে সব কিছু নিয়ে গেলো। বোনের পুরো ঘরটি নিজ হাতে ঝাড়ু দিয়ে একটা-একটা করে আসবাবপত্রগুলো সেট করে দিলো। বোনতো সেদিন কি খুশী। ভাই তার নিজ হাতে ঘর গুছিয়ে দিচ্ছে। ভালোই চলছিল সব। মেয়ে আসে বাবার বাসায়। সব কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু বাবা কথা বলতো না মেয়ের সাথে। অনেক অভিমান নিয়ে বাবা চুপ করে থাকতেন। এমনকি মেয়ের জামাইয়ের সাথেও তিনি কথা বলেন না।এইতো।বাকি সব ঠিক ছিল। হ্যাপি ফ্যামিলী যাকে বলে।
হঠাৎ একদিন ঐশী তার সব কাপড়-চোপড় নিয়ে চলে আসলো বাবার বাসায়। মা আর ভাই মুচকি মুচকি হাসে। শুরু হলো মান-অভিমানের পালা। মা একটু ভান করে রাগ দেখিয়ে বলল- এই মেয়ে, রাগ করে বাপের বাসায় আসা…..এগুলা আবার কি? যাহ্ স্বামীর ঘরে যা। খবরদার এখানে কোন ঢং করবি না। কিন্তু মেয়ে তো কিছুই বলে না। সপ্তাহ পার হয়ে যায়। ঘটনা কি? জামাই তো আসে না বউকে নিতে। মায়ের মনে একটু খটকা লাগলো।
মা সাহস করে লজ্জা নিয়েই জামাইকে ফোন দিয়ে বলল- বাবা কি হয়েছে তোমাদের? ঐশী এখানে থাকছে। সারাক্ষণ কাদে। কিছু বলেও না।
জামাই তখন হুংকার দিয়ে উঠল। বলল- আপনি কেমন মা? এক সপ্তাহ পরে এসে আমাকে প্রশ্ন করছেন এই বিষয়ে।
জামাইয়ের এই কথা শুনে টলটল করে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল মায়ের। কি বলে? আমার এতো ভালো জামাই আমাকে এইটা কি বলল?
- বাবা তুমি কি বলছ এগুলা?
মেয়ের জামাই আবার হুংকার দিয়ে উঠে। বলে, হ্যা। ঠিকই তো বলেছি। আপনার মেয়ে আমার ঘর থেকে চলে গেছে। সে আমাকে সন্দেহ করে। কোনক্রমেই আপনার মেয়ের সাথে আমি সংসার করবো না।
মা- তো আরও ভড়কে যায়। লাইন কেটে মেয়েকে ধরে কাদে। মেয়েও তখন ভড়কে গিয়ে ছোট ভাইকে ধরে। ছোট ভাই তেমন কিছুই জানে না। সাথে সাথে বোনকে নিয়ে চলে যায় দুলাইভাইয়ের বাসায়। সেদিনই হোচট খেলো ছোট ভাই। যে দুলাভাই তাকে এতো আদর করতো। সব সময় খোজ খবর নিতো। সেই দুলাভাইয়ে এক অন্যরকম চেহারা দেখল সে। অবাক- বিস্ময় হয়ে সে শুধু সেদিন পছন্দের দুলাভাইয়ের গালি খেলো। চিৎকার চেচামেচিতে সে অনেকটা খেই হারিয়ে ফেলছিল। ঠিক কি হচ্ছে। কেন হচ্ছে। বার বার দুলাভাই বলছে, তোর বোনকে নিয়ে যা এখান থেকে। আমি তার সাথে থাকবো না। গো টু হেল উইথ ইউর সিস্টার।
ছোটভাই চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বের হয়ে আসলো। কি করবে সে? বোনকে রেখে নিজ ঘরে ফিরল। দুশ্চিন্তায় মা বারান্দার গ্রিল ধরে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিল। ছেলে ঘরে ঢুকে বলল- মা, আমাদের খারাপ সময় মনে হয় শুরু হলো।
মা যেন আরও দুশ্চিন্তায় মগ্ন। জামাইকে ফোন দেয়। সে কোন ভাবেই মেয়েকে রাখবে না। অবশেষে বাধ্য হয়ে ছেলের মাকে ফোন দিয়ে সব ঘটনা খুলে বলে ঐশির মা। কিন্তু “সন্দেহ করে, সন্দেহ করে” বলে জামাইয়ের মুখের চিৎকার কোন ভাবেই তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।
মামুনের বাবা-মা গ্রাম থেকে আসলেন। পারিবারিক বৈঠক বসল। কিন্তু মামুন তার পরিবারকে জব্দ করে ফেলল। কারণ পুরো পরিবার মামুনের উপর নির্ভর। মামুন যা বলবে তাই তাদের শুনতে হবে। তারাও একটা নোংরা রাজনীতির অংশ হয়ে ঐশিকে বের করে দিলো ঘর থেকে। তখনও ব্যপারটা কেউ জানে না। আসলে ঠিক কি হচ্ছে? সন্দেহ করে বলে, একটা সংসার টিকানো যাবে না। ঐশি তখনও মুখ খুলছে না। কিন্তু তারপরও একদম নিরাশ হয়নি ঐশি। সে তার কিছু কাপড় নিয়ে বের হয়ে আসলো। তারপর ভাবলো ভালোবাসা দিয়ে নিজের স্বামীর ক্ষোভে ভরা মন সে আবার জয় করবে। কিন্তু না। এমনটা হলো না। একমাস যায়-দুই মাস যায়। কোন ভাবেই স্বামীকে সে ভালোবাসার চাদরে জড়াতে পারে না। উল্টো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ঐশি দেখলো- ডিভোর্স নোটিশ।
এরপর মুখ খুলল ঐশি।

ঐশি যা বলল:

আমার সাথে সম্পর্কের আগে ওর আরেকটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল। মেয়েটার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর আমার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে মামুনের। আমরা খুব ভালোই ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমি দেখলাম মামুনের মোবাইলে একটি মেয়ের ছবি। আমার তখন একটু খটকা লাগলো। এইটা কার ছবি? আমি মামুনকে প্রশ্ন করি। সে বলে- এটা বন্ধুর বউয়ের ছবি। ও নিয়েছিল। তখন মনে ছবি তুলেছে।
পরে বিয়ের ঠিক দুইদিন আগে আমি বৃষ্টির ম্যাসেজ দেখি। তখন তো আমার মাথায় হাত। আমি তাড়াতাড়ি এই বিষয়টি নিয়ে মামুনের সাথে সরাসরি কথা বলি। আমি বলি- তুমি যদি ওর কাছেই ফিরে যেতে চাও তাহলে প্লিজ আমাকে বলে দাও। এখনও সময় আছে।
মামুন তখন বলে- ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে। ও আমাকে মাঝে মাঝে ম্যাসেজ পাঠায়। এখানে তো রাগের কিছু্ নেই। এতোদিনের সম্পর্ক ছিল। একটু টান থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর এখন বিয়ের দুইদিন আগে তুমি এতো মাথা গরম করো না। আমি তোমার মাথা ছুয়ে বলছি আমি আর ওর সাথে কোন যোগাযোগ করবো না।
আমি মামুনকে বিয়ে করি ঠিকই। কিন্তু সেদিন আমি বিশ্বাস নামক শব্দটা হারিয়ে ফেলি।আমার ভেতর আমি একটা ইনসিকিউরিটি অনুভব করতে শুরু করি। তাই প্রায়ই আমি তার মোবাইল চেক করতাম। কোথায় যায়- কি করে সেই খোজ নিতাম। আমি জানি এটা অন্যায়। এভাবে সন্দেহ করাটা ঠিক না। কিন্তু তারপরও কিছু করার নাই। আমাকে খেয়াল রাখতে হবে। এগুলা নিয়ে আমাদের প্রায়ই ঝগড়া হয়। সবচাইতে আশ্চর্য হই, একদিন ও মোবাইলের মিগ চ্যাটিং বক্স ওপেন করে টয়লেটে যায়। আমি সাথে সাথে মোবাইলটা হাতে নেই। দেখি, ছি! বলতেও লজ্জা হয়। মেয়েদের সাথে কি সব খারাপ খারাপ ব্যপারে কথা বলছে। নোংরা নোংরা ভাবে মেয়েদের শরীর নিয়ে কথা বলছে। আমি সেদিন সমস্ত বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। বুঝতে পারলাম এটা ওর একটা রোগ। ভাবলাম ডাক্তার দেখাবো। কিন্তু তার আগে আমার ওকে বোঝাতে হবে যে আমি ওকে আর সন্দেহ করি না। আমি সেই চেষ্টাই করতে থাকলাম। ওর মোবাইল ফোন চেক করা বন্ধ করলাম। ও কখন কোথায় কি করে সেই বিষয়েও খোজ খবর নেয়া বন্ধ করলাম। কিন্তু হলো উল্টো। ও প্রতিদিন রাত ১টা-২টায় ঘরে ঢোকে। আর মদ খেয়ে আসে। আমার কাছে লুকানোর জন্য চুপচাপ শুয়ে পড়ে। আমি একদিন এই মদ খাওয়া নিয়ে ধরলাম। বাধ্য হয়েই ধরলাম। সেদিন ও আমাকে যা-তা বলে গালাগাল করল। পরে আমি হুমকি দিলাম। তুমি যদি আর মদ খেয়ে আসো তাহলে কিন্তু আমি তোমার মা-বাবাকে সব কিছু বলে এই ঘর থেকে চলে যাবো। এরপর থেকে দেখলাম, না ভালো হয়ে গেছে। মদ খায় না। সময় মতো বাসাতেও আসে। এরপর একদিন এমনেই আমি মোবাইলটা হাতে নেই। সেদিন আমি পুরই ভেঙে পড়লাম। দেখি পুরো মোবাইল ভরা বৃষ্টির ম্যাসেজ। আমি সাথে সাথেই কাদতে কাদতে বৃষ্টিকে ফোন দিলাম। বৃষ্টি উল্টো আমাকে গালি দিয়ে বলল- তোর জামাই আমার কাছে আসলে আমি কি করবো। পারলে তোর জামাইকে ঠেকা।
সেদিন আমি মামুনের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে বসি। এবং বলি, তুমি যদি এগুলা কন্টিনিউ করো তাহলে আমি তোমার সংসার করবো না। চলে যাবো।
মামুন কিছুক্ষণ চুপ করে ছিল। তারপর বের হয়ে গেলো। আমি অনেক চাচ্ছিলাম মামুন আমাকে একবার সরি বলুক। আমাকে বাধা দিক। কিন্তু দেখি ও ঘর থেকে বের হয়ে চলেই গেছে আর ফিরছে না। আমি তখন মামুনকে ফোন দেই। বলি, কি ব্যপার? কি বললাম তোমাকে? মামুন বলল- যা বলেছ শুনেছি। বলেছ যেহেতু সেহেতু বসে আছ কেন? গো টু হেল।
ঠিক তখনই আমি কাদতে কাদতে বের হয়ে আসি। আমি তোমাদের বলি নাই এগুলা। কারণ, মামুনকে তোমরা এতো পছন্দ করো। ওর এই ভালো মানুষী চেহারার পেছনে যে একটা নোংরা জানোয়ার আছে সেইটা আমি উন্মোচন করতে চাই নাই। কিন্তু আজকে এখন আমি আর কি করবো।
আমি তো তারপরও ওর সংসার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওর পরিবার শুদ্ধ ওকে বাচানোর জন্য আমার সাথে নোংরা রাজনীতি করল। সব দোষ তারা এখন আমার ঘাড়ে দিচ্ছে। এটা কেমন বিচার। ওর মা, ওর বোনও তো একটা মেয়ে। তারা কি মানুষ? আমি তাদের সামনে তার ছেলের পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি। বলেছি- তুমি আমাকে মারো। গালি দাও। তারপরও আমাদের সাজানো সংসারটাকে নষ্ট করো না।সে আমাকে পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলে- কেন? কই তোমার বাপ? এতো অহংকার তোমার বাপকে নিয়া। তোমার এতো অহংকার এখন কই? বুঝলা এবার? মেয়ে মানুষ হলো মেয়ে মানুষ।
আমি আবার কাদতে কাদতে বললাম। বলো। আরও বলো কিন্তু প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিও না। মামুন আমাকে বলে, তোমার পায়ে পড়ি আমি। আমাকে তুমি মুক্তি দাও।
৩.
প্রিয় পাঠক, কি বুঝলেন? ধরুণ এই গল্পটি আমার চোখের সামনে দেখা। ধরুন আমি এই ঘটনাটির একজন সাক্ষি। ধরুন আমি ঐশির ছোট ভাই। ডিফোর্স হলো। যেই ছোটভাই নিজ হাতে বোনের সংসার সাজিয়ে দিয়ে এসেছিল। সেই ছোটভাই হয়ে আমি নিজ হাতে আমাদের দেয়া সব আসবাবপত্রগুলো খুলে খুলে ঠেলাগাড়িতে উঠিয়েছি। আমি নিজ হাতে যেই শূণ্য ঘরটিকে ভরে দিয়ে এসেছিলাম। সেই ভরা ঘরটিকে আমি শূণ্য করে দিয়ে আসলাম। আমি সেই বাসায় গিয়ে দেখি- বিয়ের একগাদা ছবিগুলো ছিড়ে টুকরো টুকরো করে রাখা হয়েছে। আমি গিয়ে দেখি আমার বোনের প্রাক্তন স্বামী আমার দিকে হুংকার দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে থাকে। আমি জানি এই দৃষ্টি কেন। পরিণত ভাইকে সে ভয় পাচ্ছে। সেই ভয় কাটানোর জন্য সেই আমার দিকে এভাবে তাকায় যাতে আমি ভয় পাই। হারামিটা জানে না এইসব আমি বুঝি। আমাকে আমার বাবা কঠিন নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছে- জানোয়ারগুলোর সামনে নিজেকে জানোয়ার প্রমাণ করবে না। আমরা মানুষ। আর তোমার বোনের ভবিষ্যত আছে। তাই ওখানে কোন বাজে কিছু করবে না।
বাবার অমতে বিয়েটি হওয়ার কারণে বাবা নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলেন। এখন বাবা মেয়ের বিপদে সহযোগিতা করছেন। ছেলের কাছে অনুরোধ করলেন কারণ বৃদ্ধ বয়সে ছেলের ঝোকের মাথায় করে বসা কোন কাজ তিনি সহ্য করতে পারবেন না। এটাই ছেলেকে বোঝানোর উদ্দেশ্য ছিল। ছেলে বুঝেছে। এবং খুব শান্ত মাথায়। ঠান্ডা মাথায় সেদিন বোনের সব কিছু নিয়ে আসলো।

শেষ:
এরপর গল্প আর কি হতে পারে? বাবা চলে গেলো হুট করে। মাও চলে গেলো হুট করে। আমি দেখি একটি পরিবারকে মুখ থুবড়ে পড়তে। খুব সামনে থেকে দেখি সম্পর্কগুলো কিভাবে একে অন্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমার বোন প্রতিদিন কাদতো। আসবাবপত্রগুলো ধরে ধরে কাদতো। তার স্বপ্ন এভাবে ধ্বসে পড়বে এই বাস্তবতাটা হয়তো সে মেনে নিতে পারেনি। পাগলপ্রায় বোনকে নিয়ে আমারও বিপাকে পড়তে হলো। শেষে মাকে বললাম- ওকে বাইরে পাঠিয়ে দাও। আমি দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। তোমরা আমাকে অসুস্থ বানিয়ে ফেলছ। ছেলের কাছে এমন নিষ্ঠুর আচরণ মা হয়তো আশা করেননি। টাকা পয়সা খরচ করে মেয়েকে পাঠিয়ে দিলেন সুদূর কানাডায়। আমি তার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করলাম। কারণ, আমি কেন জানি তাকে মাফ করতে পারছি না। প্রতিটি সম্পর্কের প্রতি আমার এই অনাস্থার পেছনে সর্বত্র আমার কেন জানি তাকেই দায়ি মনে হয়। ও যদি প্রেমটা না করতো। বিয়ের আগে যখন ছেলেটা তার কাছে ধরা খেলো তখন যদি বিয়ে না করতে চাইত। যদি শুরুতেই পরিবারকে ও এই সমস্যাগুলোর কথা জানাতো। যদি সেদিন ও বাড়ি ছেলে বের হয়ে না আসতো। হয়তো। হয়তো এতো সব ভাঙনের মুখোমুখি আমাকে হতে হতো না। এতো পছন্দ করতাম আমার দুলাভাইকে। তার এই নোংরা চেহারাটাই আমি মেনে নিতে পারছি না আজও। তখন আমি ভাবছিলাম আমার বোনই নিজেকে বাচাবার জন্য মিথ্যা বলছে। তাই পরে এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইল ফোনের সমস্ত রেকর্ড আমি বের করলাম। দেখি আমার বোনের অভিযোগ সঠিক। ঘন্টার পর ঘন্টা বৃষ্টির নম্বরে সে কথা বলেছে। এ সব কিছু আমাকে বিশ্বাস করতে হয়েছে। হয়ত সম্পর্কের প্রতি আস্থাটা ফিরে পেতাম যদি ঐ নোংরা লোকটাকে খুন করতে পারতাম। এতো এতো প্রমাণ হাতের মুঠোয় থাকা স্বত্ত্বেও শুধুমাত্র নিজেকে মানুষ প্রমাণ করার জন্য আমাকে চুপ থাকতে বলা হয়েছে। আমি চুপ থেকেছি।
তাই নিজের পৌরষত্ব নিয়ে নিজের কাছেই মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে। আমি কিছুই করতে পারলাম না। একটা হিজড়া ছাড়া আমি তো কিছুই না। এরপর একবার ভেবেছিলাম ব্যাটাকে একদিন হলেও জেলের ভাত খাওয়াবো। সেটাও হলো না। আব্বুর কড়া কথা। তোমার বোনকে কোর্টে দাড়াতে হবে। নোংরা নোংরা প্রশ্ন করা শুরু করবে তারা। তারাও তো নিজেদের বাচানোর জন্য হাজার হাজার অভিযোগ দাড়া করাবে। আর যদি মিডিয়াতে যায় তাহলে তো আরও শেষ। অনেক হয়েছে। এই বুড়ো বয়সে আমি আর এসব দেখতে পারবো না।
কিন্তু হায়। যাদের দিকে তাকিয়ে চুপ থেকেছি। হিজড়া হয়েছি। তারাই কেউ নেই এই পৃথিবীতে। আমাকে দিয়ে গেছে পাহাড় সমান বোঝা। সর্বত্র নিজের ভেতর এই ক্ষোভ নিয়ে বেড়াচ্ছি। বুকের ভেতরের আগুনটাকে কোন ভাবেই নেভাতে পারছি না। কোন ভাবেই না। সেই আগুনে প্রতিনিয়ত ভস্মিভূত হচ্ছে সম্পর্ক নামক সব কিছু।
তাই আপনারাই বলুন, সম্পর্কগুলোকে আমি বিশ্বাস করি কি করে? যখন কোথাও সম্পর্ক নামক শব্দটা শুনি ঠিক তখন আমি সেখানে ভাঙনের শব্দ শুনি।



সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৬
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×