সুদীর্ঘ কারাবাস তাঁর—দেশকে ভালোবেসে
সে যে দেশের মানুষকে বৈষম্য—পরাধীনতা থেকে
মুক্ত করে— নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে
বজ্র কন্ঠ এক—
“বাংলার মানুষ মুক্তি চায়
বাংলার মানুষ স্বাধীনতা চায়..
তোমাদের হাতে যা কিছু আছে..
মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি
আরও রক্ত দিবো—তবু এদেশের মানুষকে
মুক্ত করে ছাড়বো! ইনশাল্লাহ!”
কী সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা! প্রাণের সে কী আকূতি!!
দেশের জন্য— রক্তদানের; জীবন দানের
আরও রক্ত তিনি ঠিকই দিলেন,
পাকহানাদারদের প্রেতাত্নাদের হাতে
স্বাধীন বাংলায়— স্বপরিবারে
বক্ষ বিদীর্ণ হলো তাঁর;
শঠতা আর বুলেট বিস্ফোরণে বিপন্ন মানবতা
কেউ বেঁচে নেই আর—নিষ্পাপ শিশু রাসেলও নয়!
হায়েনার তান্ডবে—সবশেষ
তবু বেঁচেছিলেন পিতাহারা অভাগা এক
দূর পরবাসে—যেন রিক্ত হস্ত; ফেরারি
মৃত্যুদুত যার সঙ্গী সদা—
বাংলার আকাশ মাটি সেদিন
বুকে পাষাণ বেঁধেছিল—
অবণীর বুকে এমন বর্বরতা—ইতিহাস দেখেনি আর
বঙ্গ বন্ধুর রক্তে রঞ্জিত
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকা; বত্রিশ নম্বর বাড়ি
মেঝেতে ছুপছাপ রক্ত—যেন সন্তানহারা বাংলার মানচিত্র
রঙতুলিতে আঁকা—সেই ছবি আজও ভাসে
প্রতিটি বাঙালির মানসপটে—ক্রান্তিকালের নির্মম স্বাক্ষ্য যেন
বুকচাপা অভিমানে—লজ্জায়; মানুষ না হয়ে বাঙালি থেকে
বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের সেই দরাজ কন্ঠ—
হায়! রুদ্ধ হয়ে গেছে চিরতরে
যেমন অস্তরবি লালিমা মেখে গায়ে
ডুবে গেল হারিয়ে গেলো পশ্চিমের আকাশে।
তারপর যেন ডুবে গেল স্বদেশ—চারিদিকে হতাশার অদ্ভুত আঁধার
দিনশেষে রাত্রি যেমন আসে—বাঙালি জাতি তাই মহাশোকে
মহাপ্রয়াণ স্মরণে তাঁর..
রূপকথা-কল্পনা—কোন অলীক গল্প না।
আরও একটি নির্ঘুম রাত!
কষ্টের শেকড় গুলো—একে একে উপড়ে ফেলে
একটি ফুল পরম মমতায় বুকে
আগলে রেখে—ধরে নিতে পারো
সেই আগের মতই— তোমার আমার রাতজাগা
শুধু দু’জনার রঙিন স্বপ্নগুলো সাজিয়ে রাখা নেই
ভালোবাসার প্রদীপ জ্বেলে
কারণ এইখানে তুমি নেই—প্রিয়তমা দূর তফাত
বন্দী থেকেই—তোমার বিচরণ;
তুমি চাইতে মুক্ত বিহঙ্গ হতে—
তাই আমি হতাম ডানা কামনার শ্রাদ্ধ করে;
তুমি হতে রূপকথা—আমি কল্পনা।
হ্যা, আরও একটি নির্ঘুম রাত!
সুতীব্র প্রতীক্ষায়!!—করিতেছি তাঁর মঙ্গল কামনা
এইখানে কী তুমি নেই?
এমনতো কথা ছিল না!
তাই বলি তুমিও আছো আমার সাথেই
রূপকথা-কল্পনা—কোন অলীক গল্প না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:৩৪