somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন নকীবের পোষ্টে ("কুরআনে বর্নিত বিশেষ দুআগুলোসহ কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত...";) উদাসী স্বপ্নের মিথ্যাচার ও আমার কিছু কথা।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



উদাসী স্বপ্ন বলেছেন, : এত কিছু করার দরকার কি! উটের মুত খেলেই তো হয়ে যায়। স্বয়ং নবী নিজে খাইতে বলছে।.....

মি. উদাসী স্বপ্ন,
নবীজী উটের মূত্র খাইতে বলেছেন কোন শ্রেণির লোকদের আপনার কি জানা আছে ? যারা মুসলমানদের জয়জয়কার দেখে উপর দিয়ে মুসলমান সেজে ছিলো, কিন্তু ভিতরে ভিতরে ছিলো মূর্তিপূজারী। আর দেবদেবী পূজারিদের জন্য পশুর মূত্র ভালো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। আপনি একটু ইন্ডিয়ার দিকে খেয়াল করলে বিষয়টি বুঝতে পারবেন। তাছাড়া হাদিসে বর্ণিত উকলা ও উরাইন গোত্রের লোকদের উট মূত্র খাওয়ার ফলে তাদের ইসলাম বিরুদ্ধাচারন এবং নাফরমানীর জজবা বেরে গিয়েছিলো বহুগুণে। ফল স্বরূপ ঐ নাফরমান লোকদের রোগ ভালো হওয়ার পর তারা রাখাল কে মেরে উটগুলো লুট করে পালিয়ে যেতে চেয়েছে। কিন্তু পরক্ষণে মুসলমানদের হাতে বন্ধি হয়ে বিচারে সন্মুখীন হতে হয়েছে। চুরি, মানুষ হত্যা এবং বিশ্বাস ঘাতকতার দায়ে তাদের নগদে হাতকাটা এবং মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়েছে। উটের মূত্র যদি মুসলমানদের জন্য প্রযোজ্য হতো তাহলে বোতল ভরে পান করত, ঘরে রাখত, বাজারে উষ্ট্রের মুত্র উটের দুধের চাইতে ভালো দামে বিক্রি হত, এবং কি অনেকে পবিত্র মনে করে গায়ে ছিটাতো। যেখানে সাহাবারা নবীর প্রতিটি কথাকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করত, নবীর সুন্নত পালন করার জন্য জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করত সেখানে উষ্ট্রের মুত্র প্রত্যাখান করা আশ্চার্য এবং বিচিত্র বটে। এই গ্রেট অফারটি তারা সহজে এড়িয়ে গেল, ভাবতেই কিযে কষ্ট হয়! হায় প্রকৃতি!!!

আপনি যে ওয়েব সাইটের ছয় নম্বর হাদিস বর্ণনা করেছেন, সে ওয়েব সাইটের মেডিসিন বিভাগের পাঁচ নম্বর হাদিসের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন, সেখানে উটের মুত্রের উল্লেখ নেই। অর্থাৎ এখানে হাদিস দুটির বর্ণনার মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে।

আবার উনি (উদাসী স্বপ্ন) বলেছেন; আবার কারো পেট ছুটলে বা ডায়রিয়া হইলে মধু গিলায় দেও। হাদিস অনুসারে পুরা পেট খালি করে দিবে। ন্যাস্টিকদের স্যালাইন কেন যে খাওয়ায় বুঝি না। এখন সুন্নত পালন করতে গিয়া যদি কেউ মারা যায় তাইলে মরনের পর জান্নাত আর ৭২ হুর তো আছেই। পালন করতে কি সমস্যা? সহী ধর্ম তো!!

এবার জেনে নিই হাদিসে কি লেখা আছেঃ
"রাসূলুল্লাহ (সা.)- এর কাছে কোন এক সাহাবি তার ভাইয়ের অসুখের বিবরণ (উদরে সমস্যা বা পেটে সমস্যা বা অন্ত্রে সমস্যা) দিলে তিনি তাকে মধু পান করানোর পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিনও এসে আবার সাহাবি বললেন- অসুখ পূর্ববৎ বহাল রয়েছে। তিনি আবারো একই পরামর্শ দিলেন। তৃতীয় দিনও যখন সংবাদ এল যে, অসুখের কোন পার্থক্য হয়নি, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন- আল্লাহর উক্তি নিঃসন্দেহে সত্য, তোমার ভাইয়ের পেট মিথ্যাবাদী। উদ্দেশ্য এই যে, ওষুধের কোনো দোষ নেই। রোগীর বিশেষ মেজাজের কারণে ওষুধ দ্রুত কাজ করেনি। এর পর রোগীকে আবার মধু পান করানো হয় এবং সে সুস্থ হয়ে উঠে।"

এখানে জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিটি পেটের সমস্যা কে সরাসরি ডায়রিয়া হিসেবে দেখিয়েছেন। পেট বা উদরে সমস্যা বলতে কি শুধু ডায়রিয়া কে বুঝায়? পেট বা উদরে বা অন্ত্রে অনেক ধরণের ওসুখ থাকতে পারে। আর ডায়রিয়ার আরবি কি উনি কি ভালোভাবে জানেন? বুঝুন এবার অবস্থা!


আলোচিত হাদিস।

আবার উনি লিখেছেন- "পুরো পেট খালি করে দিবে..."
হাদিসে কোথায় পেট খালি করার কথা লিখা আছে, দেখাতে পারবেন কি?

এবং তার ভাষ্যঃ স্যালাইন নাস্তিকের আবিস্কার!! এমন ঠাডা পড়া মিছা কথা মানুষ কেমতে বলে! মাথায় আসেনা।

এবার আসুন জেনে নেই স্যালাইন কে আবিস্কার করেছে-
খাবার স্যালাইনের আবিস্কারক হলেন ডাঃ রফিকুল ইসলাম এবং উনি সর্বজন নন্দিত (একটু গুগুল কে জিঙ্গেস করলেই বলে দিবে)এখানে দেখুন।।। অপর একটি দুর্বল রেফারেন্সে দেখলাম হেমন্ত নাথ নামক এক ভদ্র লোক স্যালাইন আবিস্কারের প্রচেষ্টা চালান। এবার বুঝুন মিথ্যাচারের ঠেলা।

এছাড়া তিনি (উদাসী স্বপ্ন) মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন-
“এছাড়া হারাম প্রানীর হাবিজাবি দিয়া এই যে ভ্যাক্সিন বানায় শিশুদের জন্য এটা তো সত্য ধর্মে হারাম। বুঝি না সত্যি ধর্মের মাসলম্যানরা কেন যে শিশুদের টিকা দেয়। কারন নবী তো টিকার অল্টারনেটিভ দিয়েই দিছে হাদিসে প্রতিদিন ৭ টা খেজুর খাইলে সব রোগের থিকা শেফা পাওয়া যাইবো। এখন আবার যদি কোনো নাস্তিক জিগায় যদি শিশু জন্মগত ডায়বেটিস থাকে বা যার দাঁত গজায় নাই? উত্তরে বলা উচিত তুই সত্য নবীর থিকা বেশী জানস? কালা জিরা তো সর্বরোগের অসুখ।”



সব ভ্যাকসিন ইসলাম ধর্মে হারাম এই কথা হেতায় পাইলো কই? এন্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন ইত্যাদি নেওয়া যাবে যদি সেগুলোতে কোন নাফরমানী (দেব দেবীর নামে হত্যাকৃত প্রাণীর রক্ত কিংবা কুরআনে যে সমস্ত পশুকে হারাম করেছে সে সমস্ত পশুর রক্ত মাংস না থাকে। এবার আসি মূল পয়েন্টে, বাংলাদেশে বহুল আলোচিত পোলি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। আর ভাইরাসের প্রতিষেধক কি দিয়ে তৈরী হয় জানেন তো? সংশ্লিষ্ট ভাইরাস কে মৃত করে এন্টি বডি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

এখন ধরুণ, একজন ব্যক্তির শরীলে ডেঙ্গুর জীবানু আছে অথবা রুবিয়ানা আছে, এখন এই ব্যক্তির শরীর জীবানু বা ভাইরাস থাকার কারণে নাপাক হয়ে যাবেনা। এমন কি তার জন্য ইসলামের ইবাদতের হুকুম রহিত হয়ে যাবেনা।তাই উক্ত রোগের প্রতিকার হিসেবে যদি সংশ্লিষ্ট ভ্যাকসিন দেয়া হয় সেটিও নাজায়েয হবেনা
এবং,
হাদিসে খেঁজুর খেতে বলা হয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য, ঔষধ হিসেবে নয়। কালিজিরাও অনুরুপ, কেননা হাদিসে এসেছে কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের প্রতিষেধক । যেহেতু কালিজিরা মৃত্যু ঠেকাতে পারেনা সেহেতু কালিজিরা মৃত্যু ঘটানোর জন্য মানব দেহে প্রভাবকে আটকিয়ে রাখতে পারেনা। মানে কি? মানে হলো প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করলেও ঘটনা সংঘটনের পর যেমন রোগ, শোক, বয়সজনিত অসুখ) রোগের প্রতিরোধ করতে পারেনা।

উনি জন্মগত রোগের কথা বলেছেন, যে ব্যক্তি জন্মের আগে কালোজিরা খেতে পারেন না, তার তো প্রতিষেধকের প্রশ্নই আসেনা। এখন একজন ব্যক্তির পক্ষে কি জন্মের আগে কালিজিরা খাওয়া সম্ভব? অবশ্যই না।
এবার বুঝুন, কোন খানের জল কোন খানে মেশায়!


উনি লিখেছেনঃ মাঝে মাঝে শরীর রোগের বিরুদ্ধে ফর্টিফাইড করতে চাইলে মাছির দুইটা ডানা ছিড়ে খেয়ে ফেলতে পারেন।
কোরআন বা হাদিসের কোথায় লেখা আছে- " মাঝে মাঝে শরীর রোগের বিরুদ্ধে ফর্টিফাইড করতে চাইলে মাছির দুইটা ডানা ছিড়ে খেয়ে ফেলতে পারেন।" দেখাতে পারবেন?

পানিতে বা তরল দ্রব্যে মাছি বসার সমন্ধে যে হাদিস রয়েছে সে হাদিস টি বহুল আলোচিত। সেখানে লেখা আছে যদি কারো ঘরে তরল দ্রব্যের মধ্যে উড়ন্ত মাছি বসে সে দ্রব্যে মাছিকে ডুবিয়ে পান করতে হবে। কেননা তার এক পায়ে জীবানু থাকলেও অন্য পায়ে রয়েছে
রোগ প্রতিষেধক।


বহুল আলোচিত হাদিস।।
এই হাদিসটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। এই হাদিস সম্পন্ধে একটি প্রবন্ধ।

তার ভাষ্য (উদাসী স্বপ্রের)
“আর কোনো চিন্তা নাই মাসলম্যানদের এখন। বেশী বেশী যুদ্ধ করে বিধর্মী নারী শিশুদের সাথে নিশ্চিন্তে আজল পদ্ধতিতে ধর্ষন করুন। এইডস হইলে ওপরের চিকিত্সা তো আছেই। নবীর পথে জীবন গড়ুন।। ”

এইডস হওয়ার জন্য যে সমস্ত কারণ রয়েছে যেমন, শুকুরের মত যৌনচার, পরকীয়া, পর পুরুষ কিংবা পর নারীর সাথে পশুর মত অবাধে মেলামেশা, এগুলো ইসলামে নিষিদ্ধ। আর ইসলামের প্রথম যুগে এধরণের রোগের আবিভার্বও ঘটে নাই। ইতিহাসে তার প্রমাণও নাই।

তাছাড়া,
মুসলমানরা যদি যুদ্ধের পর আজল পদ্ধতিতে ধর্ষন করত তাহলে মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া কিংবা ভারতে কোন ভিন্নধর্মী নারীর উদরে সন্তান পয়দা হইত না। আর মুসলমান বিজিত অঞ্চলে কোন বিধর্মী থাকারও কথা ছিলো না। যদি তার (উদাসী স্বপ্রের) কথা সত্য হয় তাহলে বলতে হবে- মুসলমানদের আজল কামিতার ফসল (অন্য ধর্মের লোক) এখন ঘরে তোলার (মুসলমান হওয়ার) সময় হয়েছে।

আরে ভাই আলোচনা করুন আর সমালোচনা করুন তথ্য ঠিক রেখে করুন। তথ্য আংশিক কিংবা বিকৃতি বা মনগড়া কেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:১০
৩৩টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×