দেশটাকে কী আপনাদের কেউ কেউ ভাবছেন বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ? অথবা বাবার মালিকানা সুত্রে প্রাপ্ত কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না কী ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত কোন সম্পত্তি। আবার কেউ কেউ দেশটাকে কী ভেবেছেন স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তি যে ইচ্ছে মত ব্যবহার করা যাবে। যা ইচ্ছে তাই করবেন খেয়াল খুশি মত। আপনাদের কী মনে হয় যে দেশটা আপনাদের ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী আর স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তান- সন্ততি ভোগ করবেন। আপনারা কী ভাবছেন দেশটা একটা খাস জমি কিংবা আপনাদের দখলীক্রিত ভূ-খণ্ড। আমরা কী আপনাদের রাজত্বে গোলাম না কী চাকর। আপনাদের খেয়াল খুশিমত ব্যবহার করবেন আর আমরা নিশ্চুপ, মিইয়ে পড়া নত মুখ, মুখ বুজে সব সয়ে যাব। আমরা কী দেশটাতে দাস কিংবা চুক্তিবদ্ধ গোলাম নাকি যে আপনাদের ইচ্ছেমত ব্যবহার করবেন।
দেশটা আমাদেরও, আমাদের ও সম্পদ, কারো একার নয়। দেশটা কোনো একক শক্তি বা কোন এক ব্যক্তির নেতৃত্বে গঠিত হয়নি। এইদেশ কারো স্বামীর রেখে যাওয়া শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রাপ্ত সোনা চান্দি গয়না নয়, নয় কোন খাস জমি। এইদেশ কারো বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি নয়, নয় কোনো ফসলি জমি যে চাষ করবেন যাচ্ছেতাই আর চেষে- চুষে খাবেন জোঁক কেঁচোর মতন।
এ দেশ সকলের, আপামর জনতার।
এ দেশ নয় কোন পীর বা ধর্মীয় নেতার স্বপ্নে প্রাপ্ত সম্পত্তি যে কোনো একদঙ্গল অজ্ঞ লোভী ধর্মান্ধরা তা ভোগ করবেন। নয় কোন মসজিদ বা মাদ্রাসায় দানকৃত কিংবা ওয়াকফ্ করা সম্পত্তি।
এ দেশ নয় কোন মন্দিরে দেওয়া প্রাসাদ যা একদল লোভী শোষক ব্রাহ্মণ ভোগ করে যাবে।
এইদেশ নয় মুসলমানের, নয় হিন্দুর, নয় শুধু বৌদ্ধ- খ্রিষ্টানের। এইদেশ সবার, সকলের। প্রত্যেকের।
এ দেশের সংবিধান নয় কোন ঈশ্বর প্রেরিত ঐশীগ্রন্থ যে ঈশ্বর কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিই তার প্রচার প্রসার করবে। এ দেশ নয় কোন গীতা কিংবা গ্রন্থসাহেবে বর্ণিত কোনো এক উপাসক কে দান কৃত।
এদেশ সকলের। সবার। প্রত্যেকের। কুলি, মোটে, মজুরের।
আপনারা আমাদের বোকা ভাব্বেন না দয়া করে। এখনো সময় আছে, আপনারা এবার দেশের জন্য কাজ করুন। তা না হলে আমরা পল্টনের ভরা মাঠে সারিবদ্ধ হয়ে শাষক গোষ্ঠীর নামে পেচ্ছাব করে দেব। এখনো আমরা মুখ বন্ধ করে আছি আশায় আশায়। কিন্তু প্যান্টের জিপার খুলতে বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। সেইসব শহীদদের দোহায় দিচ্ছি যারা একটা সবুজ সময় এদেশকে দেবে বলে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছিল অকুণ্ঠচিত্তে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:৩৮