মুমিনত্বের বীর আমাদের মুজাহিদ ভাইদের নৈতিকতার স্খলন এতোটাই বেগবান হয়ে উঠেছে যে, আপোন পন্থীদের পাপাচারকে জায়েজের উর্ধ্বে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেদের প্রাণটাকে পর্যন্ত বাজি রাখতে রাজি। তাদের এহেনকর্মের আলাদাভাবে উদাহরণ টানতে গেলে তাদেরকে অপমান করা হয়ে যায়। তাছাড়া তারা তো আমাদের দেশের ইমানত্বের বীর মুজাহিদ তাদের বিরোদ্ধে কথা বললে তো আমাদের জিহবা খসে পড়বে, আমাদের ইমানত্বের গেরান্টি তো তাদের জবানে ছোট্ট একটা বাক্যের উপর নির্ভর করে। বলৎকারীকে রক্ষায় যেমন তারা কৌশলী তেমনি নিজেদের পাপিষ্ঠদেরকে উঁচু আসনে বসিয়ে অকর্মকে নিজেদের জন্য জায়েজ করণে তারা খুবই পারদর্শী।
যারা পীর/আমীরকে গালি দেওয়া মানে ইসলামকে গালি দেওয়া বুঝেন তারা স্পষ্টতই সেই পীর/আমীরকে দেবতার আসনে বসিয়েছেন। এমন কুধর্ম প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকেই সকল ধর্মভিত্তিক সংগঠনের আশিকানরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেব। যা প্রকৃত ভাবে ইসলামকে ধ্বংস করা ছাড়া অন্য কিছু নয়। মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু এই মানুষের (তাদের পীর/আমীরের) দ্বারা ভুল হওয়াকে তারা মোটেও স্বীকার করতে রাজি নয়। তারা নিজ পীর/আমীরকে না বলছে ফেরেশতা না নবী-রাসুল। কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ড দাবী করে ইহা দেবতার পূজা। পৃথিবীর সব মানুষের দ্বারা ভুল সংঘটিত হলেও তাদের পীর/আমীরদের দ্বারা ভুল হয় না। তারা যাই করে তাহাই জায়েজ। এগুলো হেকমতি ফজিলতি কারবার-সারবার। এরকমই বিশ্বাস লালন করেন আমাদের পীর/আমীরের আশিকানেকুল। আর বাংলাদেশের ধর্ম বিশ্বাসী শ্রেণির বিরাট একটি অংশ এই পীর/আমীরদের দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে আছেন। যার কারণে এই অধিকাংশদের দ্বারা সাধারণ ধর্মালম্বীরাও প্রভাবিত হচ্ছেন। যা আমাদের মধ্যে প্রকৃত ধর্মাবলম্বী সৃষ্টির প্রধান অন্তরায়।
বাংলাদেশের সবরকমের প্রতিষ্ঠানই নিজেদের সুনাম রক্ষায় সুষ্ঠু বিচারকে দাফন করে নিরব ছায়ায়। মনে করুন, ধর্ষণ বা এই রকমের জঘন্য অপরাধের বিচার করার পরিবর্তে গোপনে নাম-কা-ওয়াস্তে কোন রকমে বিচারকার্য পরিচালনার মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচারকে দাফন করছে তারা। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের বিশ্বাসের দাবী থাকে ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এই যেমন, মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও তাদের দ্বারা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অন্তত পক্ষে এসব কুকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে। কিন্তু আসলেই আফসোসের বিষয়, যে ঔষধ আপনাকে দেওয়ার কথা নিরাময় সেটাই আপনাকে নিয়ে যায় অন্ধকার জীবনের গভীর গর্তে।
নিজেদের ক্যাম্পাসে ঘটিত ধর্ষণের ঘটনা ঢাকতে যেমন কৌশলী আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি তেমনি নিজেদের আঙ্গিনায় ঘটা বলৎকারের কাহিনী ঢাকতেও চতুর আমাদের ধর্মভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কমিটি। ধারণা থেকে বলা যায়, এটা তাদের পাপ গোপন করার অভ্যাসের কারণেও হতে পারে। কেউ থেকে কেউ কম না। কিন্তু সাধারণ মানুষের আশা থাকে ধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্তত এসবের কঠোর প্রতিবাদ হোক। হোক কঠোর বিচার। হোক তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসার কৌশলী প্রচেষ্টার প্রয়োগ। তারা যা দাবী করে তার সত্যিকার অর্থের প্রকাশ ঘটুক।
ছবিঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৯