আলহামদুলিল্লাহ, সিলেট বিভাগের কিছু এলাকার পানি কমতে শুরু হয়েছে। কিন্তু এই পানি নিম্নাঞ্চলের দিকে এগুচ্ছে। সে কারণে নতুন করে আরো অনেক উপজেলার লোকজন আক্রান্ত হচ্ছেন। (আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের সাথে যোগাযোগ করতে পারি না!) কিন্তু সুনামগঞ্জ সহ অনেক জেলার পানি এখনো কমেনি। হঠাৎ করে আসা এমন পানির কারণে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্য পরিবারের সদস্যগণ।
আমাদের সকলের প্রিয় সহ ব্লগার কাল্পনিক ভালোবাসা ও জ্যোতির্ময় দা সহ আরো অনেকে সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সামর্থ্য অনুযায়ী সিলেটের অনেকেই হেল্প করে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এখনো অনেক এলাকায় কোন ত্রাণ সংস্থা যেতে পারেনি। অনেকে সেসব এলাকা সম্পর্কে অবগত নন। ঐসব এলাকার মানুষের বর্তমান অবস্থার কথা কল্পনা করলেই শিউরে উঠতে হয়। আমার দুর্ভাগ্য যে, আমিও সেরকম এলাকার তথ্য দিয়ে আপনাদেরকে সাহায্য করতে পারছি না। অনুরোধ থাকবে দয়া করে, যেসব এলাকায় ত্রাণ নিয়ে কেউ যায়নি বা সেনাবাহিনী যে এলাকায় এখনো যেতে পারেনি সেসব এলাকার তথ্য দিয়ে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে সহায়তা করুন।
ইতিপূর্বে একাধিকবার সিলেট বিভাগের মানুষ বন্যার পানিতে আক্রান্ত হলেন। সুনামগঞ্জ জেলা সহ আরো অনেক এলাকার কৃষক এবারের বৈশাখী ধান ঘরে তুলতে পারেননি। মাসের প্রথম দিকে পানি এসে ধানে আক্রমণ করে। যে সময়টায় ধানে কেটে নিয়ে যাওয়া মানে খড় নিয়ে যাওয়া সমান। এমন অবস্থায় ঐ পরিশ্রমী কৃষক হৃদয় ভাঙা মন নিয়ে চেয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই! যদি তার গৃহপালিত পশু থেকে থাকে, তবে হয়ত খড় কেটে নিয়ে আসবে। অতপর যখন গৃহপালিত পশুটি মারা যায় তখন কেমন হয় তার মনের অবস্থা? তার পরিবারের অবস্থা? কল্পনা করতে পারেন তার কষ্ট? (অনুভব করার প্রশ্ন নাই করলাম!)
এই মানুষগুলো যখন মানব কর্তৃক সৃষ্ট বন্যা আগ্রাসন কাটিয়ে উঠার পর এলাকার মেম্বার/মাতব্বর বা ব্যাংক থেকে আনা লোন পরিশোধের মুখোমুখি তখন তাদের কী অবস্থা হয় আমরা কী কখনো একবার ভেবে দেখেছি? তবু আমরা বলি শিক্ষা চাই সবার ঘরে। শিক্ষিত হলেই সব কাটিয়ে উঠা যায়! আচ্ছা, এরা শিক্ষিত হবে কীভাবে? এরা এগুলো কাটিয়ে উঠতে না পারলে কী শিক্ষিত হতে পারবে? কারণ শিক্ষিত হতে না পারলে তো এগুলো কাটিয়ে উঠা যাবে না!
সে যাই হোক, প্রসঙ্গ ভিন্ন মুখি নয়। এগুলো সবই প্রাসঙ্গিক, তবে এই মূহুর্তে প্রয়োজন আমাদের সকলের প্রচেষ্টা। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সিলেটবাসীর সাহায্যে এগিয়ে আসুন। এটা মানুষের জন্য মানুষের যে ভালোবাসা সেটারই দাবী। আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে চাইলে আপনারা কাভা ভাই ও জ্যোতির্ময় দা'র সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেহেতু উনারা ইতিপূর্বে বিষয়টি নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন সেহেতু তারা সে ব্যাপারে যথেষ্ট অবগত। তাছাড়া এই মুহূর্তে সেসব এলাকায় আমাদের কোন ব্লগার অবস্থান করে থাকলে কাভা ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করুন। সবশেষে, আসুন সকলে মিলে চেষ্টা করি দুর্যোগ মোকাবেলার। আমাদের নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টাই আমাদের মুক্তির পাথেয়।
সবাই ভালো থাকুন।
নিজের ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে অন্যের বিপদে পাশে থাকুন।
শুভ ব্লগিং।
১৭ই জুন
২০২২ খৃষ্টাব্দ
ছবিঃ ইন্টারনেট
—————————————————
প্রাসঙ্গিক নিউজঃ
বাংলাদেশ টাইমঃ
সম্ভাব্য সময়ঃ বিকেল ৫টা
এইমাত্র জানা গেল, গোয়াইনঘাট ৯নং ডৌবাড়ি ইউনিয়নের দুইটি গ্রামের ২০০/২৩০ মানুষকে নিয়ে দুইটি লঞ্চে করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার সময় গোয়াইন নদী থেকে পানির স্রোতে দুটি লঞ্চকে হারিয়ে ফেলেছে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রাত ৯.১০
সুরমার পানির গতি বেগ যথেষ্ট দ্রুত। যদি বৃষ্টি না হয় তবে আগামী দুদিনের মধ্যে সুরমা নদী সংলগ্ন এলাকার পানি শুকিয়ে যাবে। তবে আমাদের সহ ব্লগার আবহাওয়া পূর্বাভাসকারী জনাব মোস্তফা কামাল পলাশ ভাইয়ের মতে আজকের মত আগামী তিন দিন সিলেট শহর জুড়ে একই রকমের প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। সুতরাং সিলেট থেকে বন্যার পানি নামতে আরো সময় নিবে। মানুষের দুর্যোগ বেড়েই চলেছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২২ রাত ১১:৩৪