somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামু ব্লগারদের সহযোগিতায় সিলেটে বন্যায় আক্রান্তদের মাঝে জরুরী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ (স্থির চিত্র সহ সর্বশেষ আপডেট)

১৯ শে জুন, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামু ব্লগারগণ বরাবরের মত এবারো দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যাপক ভুমিকা রেখেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন সিলেটবাসীর। বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর যে উদ্যোগটি কাল্পনিক ভালোবাসা ভাই নিয়েছিলেন তাতে ব্লগারদের অসম্ভব রকমের সহানুভূতি পূর্বক সহযোগিতা প্রদান ছিল প্রশংসার উর্ধ্বে। গতকাল বুধবার ব্লগারদের পক্ষ থেকে কাভা ভাই বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ পোঁছে দিয়েছেন। সিলেট এবং জগন্নাথপুরে গতকাল একই সাথে ব্লগারদের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। (নিম্নে তার কিছু স্থির চিত্র তুলে ধরা হল।)
কাল্পনিক ভালোবাসাভাইয় সিলেট বিভাগের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর ডাকে সারা দিয়ে আমি উনার সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। কাভা ভাইয়ের অনুরোধে ব্লগার আমিনুর রহমান ভাই সহ ব্লগের আরো যারা পুরানো ব্লগার আছেন, তারা এই ব্যাপারে যুক্ত হয়েছিলেন। কাভা ভাই এবং আমি মাঠ পর্যায়ে কিছু এলাকার বন্যার্তদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যত দ্রুত সম্ভব তাদের পাশে দাঁড়ানোর। বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আরব আমিরাতের বিভিন্ন রাষ্ট্র, নর্ডিক ভুক্ত অঞ্চল থেকেও আমাদের সামু ব্লগের বাংলাভাষী ব্লগারদের অনেকেই সিলেটের বানবাসী নিপীড়িত মানুষের জন্য সহযোগিতা পাঠিয়েছেন। জাদিদ ভাই আমার গ্রামেও ত্রাণ পাঠাতে চেয়েছিলেন। বন্যার্তদের সাহায্যে ব্লগারদের এমন উপস্থিতি আমাকে অসম্ভব সাহস জোগানোয় ব্লগারদের নামে আমি সেখানে ৩৫টি পরিবারকে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি। যদিও পরবর্তীতে আমার সাথে আমার একজন আত্মীয় যুক্ত হয়েছেন।

কাভা ভাই নিজ উদ্যোগে সব কিছু করার জন্য এগিয়ে আসলেও শত ব্যস্ততা উনাকে সময় বের করতে দিচ্ছিলো না। তারপরও উনার প্রচেষ্টা আমাকে বারবার অবাক করে দিয়েছে। কাভা ভাই ব্যক্তিগতভাবে চান নি উনার নাম পোস্টে যুক্ত হোক। কিন্তু এই পর্যন্ত উনি যে পরিশ্রম করেছেন তার বর্ণনা করা প্রকাশ শক্তির বাহিরে। যদিও কাভা ভাই অনুরোধ করেছিলেন, এখানে অন্য কেউ যুক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু কাউকে না পাওয়ায় কাভা ভাই একা একাই ঢাকার সকল কাজ সম্পাদন করে সিলেটের দিকে মঙ্গলবার রাতে যাত্রা করেছিলেন।

ব্লগার কাওসার চৌধুরী ভাইকে কাভা ভাই আগে থেকে জানিয়ে রাখায় কাওসার ভাই নিজের শত ব্যস্ততা উপেক্ষা করে কাভা ভাইয়ের জন্য অর্ধেকের বেশি রাত জেগে অপেক্ষা করেন। এদিকে রাতে প্রায় দু'টার দিকে কাভা ভাই সিলেট পৌঁছলে কাওসার ভাই আমাকে জানান, কাভা ভাই রাতে খাওয়ার সুযোগ পাননি! আমি যতটুকু জানি, কাভা ভাই ঐদিন লাঞ্চটাও ভালো ভাবে করতে পারেননি! যদিও উনি এটা কাওসার ভাইয়ের থেকে গোপন করেছেন মনে হয়। আমার দুর্ভাগ্য যে, আমার পরিবার গ্রামে থাকে। শহরে থাকা আমার আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদেরকে ঘুমে পাই। কেউ কল রিসিব না করায় আমি কাভা ভাইয়ের জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারিনি! এহেন কর্মের জন্য আমি কাভা ভাই সহ সকল ব্লগারদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখিত!

আমরা ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য যে এলাকা পর্যবেক্ষণ করেছিলাম সেটা ছিল সিলেট শহর সংলগ্ন।
এলাকার নামঃ মুক্তির চক।
সেখানে বন্যার পানিতে বন্দী আছে ৬৫টি পরিবার। পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি পায়।
এলাকার জনপ্রতিনিধি (মেম্বার সাহেব)-র নামঃ দেলোয়ার হুসেন, মাঠ পর্যায়ে আমাদের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন মোঃ সিদ্দিকুর রহমান।
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ সিলেটের বন্দর বাজার থেকে বোরহান উদ্দিন রোডে শাহপরান ব্রিজ সংলগ্ন। মুক্তির চক এলাকা। গাড়ি দিয়ে ২০ টাকার ভাড়া।

সাহায্যের সুবিধার্থে আমরা সেখানে পরিবার ভিত্তিক সাহায্য করেছি। একটি পরিবারের ১সাপ্তাহের খরচের একটা নমুনা আমরা তৈরি করেছিলাম। আপনাদের জানার সুবিধার্থে নিম্নে তা তুলে ধরছি। (এই তালিকা সকল ব্লগারদের মতামত ভিত্তিক গঠিত)

চাল ৫ কেজি দাম = ২২৫/-
তেল ১ লিটার = ১৮১/-
আলু – ৩ কেজি = ৭৫/-
ডাল – ১ কেজি = ১০৫/-
পেঁয়াজ ১ কেজি = ৩৫/-
চিড়া
মুড়ি
গুড়
বিস্কুট
মোমবাতি
ওরস্যালাইন (১বক্স করে)
পানি বিশুদ্ধ করনের টেবলেট
এছাড়াও বাচ্চাদের জন্য কিছু শুকনো খাবারও সাথে নেওয়া হয়েছিল।

মোটামুটি ৫ সদস্য ধরে নিয়ে একেকটা পরিবারের এক সপ্তাহের খাবার খরচ ধরেছিলাম ৮০০টাকা করে। (এসব বিষয়ে অনুরোধ থাকবে, সময় সুযোগ করে কাভা ভাই নিজে একটি পোস্ট দিবেন!)

আমরা যেই এলাকায় পর্যবেক্ষণ করেছি সেখানে ছিল সর্বমোট ৬৫টি পরিবার। উপরোক্ত হিসাবের আলোকে সম্মানিত ব্লগারদের অনেকেই এক বা একাধিক পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আবার অনেকে নিজ খুশি মত টাকা দিয়েছিলেন। এমন মানব বিপর্যয়ের মুহূর্তে ব্লগারদের এমন পাশে দাঁড়ানো বিরল হয়ে থাকবে আজীবন। আমরা তাদের শান্তি কামনা করত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আমাদের পুরাতন ব্লগারদের অনেকেই বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন। উনাদের সাথে নবীনদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। আমরা যেভাবে ইতিপূর্বে বাংলাদেশের সকল দূর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে গিয়েছি একই ভাবে সিলেটের বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের আবারো শক্ত প্রমাণ দাঁড় করিয়েছি। আমাদের এই পরিশ্রমে শান্তি ফিরেছে প্রায় ১০০টি পরিবারে।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাভা ভাই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি নিজে ব্লগারদের ত্রাণ পাঠানো এলাকায় যোগাযোগ করলে শুনতে পাই, কাভা ভাই ও কাওসার চৌধুরী ভাইয়ের প্রশংসা। এটা কেবলই ত্রাণ দেওয়ার জন্য নয়। সেখানেও উনারা সকল কাজে নিজেরা অংশগ্রহণ করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন। সবাই উনাদের আন্তরিকতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
উনারা ব্লগারদের নিকট অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। আমার মাধ্যমে উনারা নিজেদের এলাকায় ব্লগারদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ব্লগাররা ঐদিকে ঘুরতে গেলে উনারা অনেক খুশি হবেন বলে জানিয়েছেন।

কাভা ভাইয়ের আহবানে আপনাদের আন্তরিক সাহায্য প্রদান কখনো ভুলার নয়। আমরা সামান্য সময় বিকাশ নাম্বারটি এখানে প্রকাশ করেছিলাম। আর তার মধ্যেই আমাদের টার্গেটে রাখা পরিবারগুলোর ত্রাণের খরচ উঠে যায়। যার কারণে আমরা বিকাশ নাম্বারটি সরিয়ে নেই। কিন্তু তারপরও আপনারা বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেওয়া বন্ধ করেননি। আপনাদের এই ভালোবাসার মূল্য দেওয়ার সামর্থ্য কারো নেই। আমাদের কাভা ভাই জানিয়েছিলেন, ঐ অঞ্চলে ত্রাণ দেওয়ার পর যদি অবশিষ্ট রয়ে যায় তবে তা পরামর্শ ক্রমেই কাজে লাগানো হবে। আশা করি, কাভা ভাই রেস্ট নেওয়ার পর সময় সুযোগ করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত একটি পোস্ট দিবেন।

যে সকল ব্লগারদের সহযোগিতা আমাদের হাতে পৌঁছেছে:
ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর
ব্লগার গেঁয়ো ভুত
ব্লগার নিরক্ষর
ব্লগার নতুন
ব্লগার মিরোরডডল
ব্লগার সৈয়দ মশিউর রহমান
ব্লগার ইফতেখার ভুঁইয়্যা
ব্লগার আহমেদ জী এস
ব্লগার পদাতিক চৌধুরী ইন্ডিয়া থেকে
ব্লগার শাহ আজিজ ভাই
ব্লগার মিথি মারজান
ব্লগার ফয়সাল রকি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্লগার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ব্লগার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ব্লগার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ব্লগার যুক্তরাজ্য থেকে
নর্ডিক দেশ ভুক্ত অঞ্চল থেকে একজন ব্লগার
ব্লগার জাফরুল মুবিন
ব্লগার অন্তরঅন্তর
ব্লগার জুবায়ের ভাই
ব্লগার কাজী ফাতেমা ছবি আপা
ব্লগার খায়রুল আহসান ভাই
ব্লগার ইফতেখার ভুঁইয়া ভাইয়ের এক বন্ধু
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্লগার



ত্রাণ বিষয়ক বর্তমান আপডেটঃ
# ব্লগার কাভা ভাই বিনয়ের সাথে জানাচ্ছেন, অনেকেই টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন। এই মুহুর্তে আর টাকা পাঠানোর প্রয়োজন নেই। সে কারণে আমরা নাম্বারটি আপাত সরিয়ে নিয়েছি। আমরা যে এলাকায় ত্রান বিতরন করব, সেখানে যে বাজেট আমরা নির্ধারন করেছি, সেই লক্ষ্য মাত্র আমাদের পূর্ন হয়ে গেছে। অনুগ্রহ করে আপনারা এখন আর টাকা পাঠাবেন না। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আবার জানানো হবে। এই মুহুর্তে আমাদের প্রথম কাজ আপনাদের অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে আদায় করতে বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া।

# হাজারো ব্যস্ততা উপেক্ষা করে কাভা ভাই আগামীকাল সিলেট অভিমুখী যাত্রা করবেন। আগামীকাল সেখানে পৌঁছার পর প্রাথমিক কাজ শেষ করে পরদিন থেকে শুরু করবেন ত্রাণ বিতরণ। অর্থাৎ আগামী বুধবার আপনাদের পাঠানো ত্রাণ পৌঁছে যাবে সিলেটের দুর্যোগপূর্ণ এলাকার নিপীড়িত মানুষের হাতে।

# সম্মানিত ব্লগারগণ, আপনাদের পরামর্শ ক্রমে আমরা খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন এনেছি। যা উপরে আপডেট করা হয়েছে।

#কাভা ভাই খোঁজ নিয়ে জানিয়েছেন, আমাদেরকে হয়ত ত্রাণের পরিমাণ ৬৫এর উপরেও করতে হতে পারে। আমরা টার্গেটে রাখবো এর চেয়ে কিছু অধিক পরিবারের ব্যবস্থা করা যায় কিনা।

# আপনাদের থেকে প্রাপ্ত টাকায় প্রত্যেক পরিবারকে এক সপ্তাহের খাবার দেওয়ার চেষ্টা করছি। যদি আমাদের টার্গেটে থাকা এলাকায় ত্রাণ পোঁছে দেওয়ার পর জমাকৃত টাকা থেকে কিছু টাকা রয়ে যায়। তবে আমরা সিলেটের বাইশঠিলায় ত্রাণ পৌছানোর চেষ্টা করবো। সেখানে আমাদের আরেকজন পর্যবেক্ষক মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। অথবা উপস্থিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ পূর্বক অন্য কোন নিপীড়িত এলাকায়। এমনটা করতে হলে আপনাদেরকে জানানো হবে। এ বিষয়ে আপনাদের কোন পরামর্শ থাকলে মন্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন।

# আমাদের পর্যবেক্ষণে রাখা সেই নিপীড়িত এলাকায় সিলেটের ব্লগার কাওসার চৌধুরী ভাই থাকবেন বলে কাভা ভাই নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও কাভা ভাই সম্ভবত সিলেটে থাকা উনার ভক্তকুল থেকে কয়েকজনকে সাথে রাখবেন। (আমি দেশে না থাকায় উনার সাথে থাকতে পারবো না। যদিও কাওসার ভাই ও অন্যান্যরা কাভা ভাইয়ের সাথে থাকবেন বলে কিছুটা সাহস পাচ্ছি তবু আমার মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করছে! )
কাভা ভাই, এই পর্যন্ত নিজে থেকে যা করছেন তা প্রশংসার উর্ধ্বে। উনি সহ সকল ব্লগারদের আন্তরিকতার প্রতি নতজানু কৃতজ্ঞতা। সিলেটবাসী ব্লগারদের এই প্রচেষ্টা কখনো ভুলবে না।

২২- জুন, রাত ১:৩৬
# এইমাত্র আমাদের কাভা ভাই সিলেট পৌঁছলেন। অনেক পরিশ্রম করলেন কাভা ভাই। উনার পরিশ্রম আমার আজীবন মনে থাকবে।
ব্লগার লেখক কাওসার চৌধুরী ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন। এই কাওসার ভাই মানুষটা অদ্ভুত। উনার লেখার মতই উনি এক ব্যতিক্রম মানুষ। রাত জেগে কাভা ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা, ব্লগারদের প্রতি উনার অগাধ ভালোবাসা, মানুষের প্রতি প্রেম। উনার মধ্যে এই সবের উপস্থিতি দেখার কারণে সিলেটে গেলেই উনাকে বিরক্ত করতাম।

# আগামীকাল ভোর থেকেই শুরু হবে ব্লগারদের পক্ষ থেকে সিলেটের বন্যার্তদের কাছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।

# সম্ভবত আমরা আমাদের টার্গেটের বেশি পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করতে পারবো।
আমরা যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সেই জন্য সকলের শুভ কামনা প্রার্থনা করছি।

সিলেট থেকে কেউ যদি অংশগ্রহণ করতে চান, তাহলে এই মুহূর্তে জাদিদ ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করুন প্লিজ!

সকাল ৯.৫০
সিলেট থেকে জাদিদ ভাইঃ সকাল থেকে সিলেটে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই আমরা বেরিয়ে পড়বো।

আলহামদুলিল্লাহ আমি সৈয়দ তাজুল গতকাল সকালে বাংলাদেশ টাইম ১১টার দিকে আমার পরিবারের সাথে কথা বলতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ আমার মা সহ আমার এলাকার মানুষ ভালো আছেন। যারা আমার জন্য উৎকন্ঠিত ছিলেন এবং আমার মায়ের খবর নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তাদের নিকট কৃতজ্ঞ। আমি নিজে ব্যাক্তিগত ভাবে ৩০টি পরিবারে আপনাদের দেওয়া তালিকা অনুসরণ করে ত্রাণ বিতরণ করবো আগামীকাল। ব্লগারদের পরিচয়ে একই সাথে দু'টি যায়াগায় ত্রাণ পৌঁছে যাবে ইন শা আল্লাহ। অফিসের কাজ শেষে ত্রাণ নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া সহ বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে যথাযথ সময়ে পোস্টটি আপডেট করতে না পারার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।


সকাল ১১টা
কাভা ভাই ও কাওসার চৌধুরী ভাই মাঠপর্যায়ে নেমে পড়েছেন। তারা এখন আমাদের পর্যবেক্ষণে রাখা গ্রামেই আছেন। তারা সকল ব্লগারদের শুভকামনার প্রত্যাশি।




সম্মানিত ব্লগার, আপনি আজ আপনার অভ্যাস মত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কারণে বেঁচে গেলো শতাধিক প্রাণ। 'ব্লগাররা সবসময় মানবতার জন্য এগিয়ে থাকে' এমন দাবী আবারো প্রমাণিত হল। ব্লগাররা জ্ঞান, বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন চর্চার পাশাপাশি নিপীড়ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে মহৎগুণটি হৃদয়ে লালন করত বাস্তবে মাঠপর্যায়ে কাজ করে, তা সর্বদাই সবার চেয়ে এগিয়ে।
সিলেট ও জগন্নাথপুরে ব্লগারদের মাধ্যমে পাঠানো ত্রাণগুলো যে কী পরিমাণ উপকার করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। আমাকে জানানো হয়েছে, ত্রাণ হাতে পেয়ে নিপীড়িতদের অনেকেই নাকি সুখে কেঁদে দিয়েছেন। নিপীড়িতদের এই শান্তিটুকুই আমাদের প্রাপ্তি।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাভা ভাই, কাওসার চৌধুরী ভাই ও সকল ব্লগারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অজস্র ভালোবাসা সবার জন্য। ভালো থাকুন সকলে। পরিবারকে নিয়ে থাকুন পরম শান্তিতে।
শুভ ব্লগিং




সিলেটঃ

ব্লগারদের দেওয়া তালিকা অনুসারে দ্রব্যাদি প্যাকেট করণঃ













কাওসার চৌধুরী ভাইকে দেখা যাচ্ছে টিস্যু প্যাকেট করণে স্বয়ং নিজে কাজ করছেন।



পাইকারি দোকানে কাজের ফাঁকে কাভা ভাইয়ের দাঁড়ানোর চিত্র।




প্যাকেট গাড়িতে উঠানোর পর নিপীড়িত এলাকার দিকে এগিয়ে চলা






সম্ভবত কাভা ভাই এরকম পাহারা দিয়েই নিয়ে গেছিলেন মালামালগুলো অথবা চ্যাক করছেন।




ত্রাণ নিয়ে নিপীড়িত এলাকায় পৌঁছলেন আমাদের কাভা ভাই ও কাওসার চৌধুরী ভাই




অত:পর শুরু হল, ব্লগারদের পক্ষ থেকে কাভা ভাই ও কাওসার ভাইয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ।



























জগন্নাথপুরঃ (এখানে কারেন্ট ও নেটওয়ার্ক না থাকায় এই দু'টি ছবি ছাড়া আর কোন ছবি পাইনি)





## আমি আমার উপকারীদের সুন্দর প্রশংসা করতে পারি না। দয়া করে, আমার এই অযোগ্যতা সহ এই পোস্টের সকল ভুলোগুলো আপনারা নিজ গুণে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের এই সহযোগিতা আমি সৈয়দ কোন দিন ভুলব না। আপনারা আমাদের সিলেটের পাশে দাঁড়ানোর এই ইতিহাস সিলেটের মাটি ও মানুষের হৃদয়ে আজীবনের জন্য গেঁথে থাকবে।


কাভা ভাই, বন্যা সংক্রান্ত কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে জরুরী আলোচনা করেছেন। লিংকে ক্লিক করলেই তা জানতে পারবেন।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০২২ বিকাল ৩:৪৪
৭৫টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×