somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসার (love) ইতিবৃত্ত। ফর ভ্যালেন্টাইনস ডে

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা। তবুও ভালোবাসাকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করা যায়। আবেগধর্মী ভালোবাসা সাধারণত গভীর হয়,বিশেষ কারো সাথে নিজের সকল মানবীয় অনুভূতি ভাগ করে নেয়া, এমনকি শরীরের ব্যাপারটাও এই ধরনের ভালোবাসা থেকে পৃথক করা যায়না। ভালোবাসা বিভিন্ন রকম হতে পারে। নিস্কাম ভালোবাসা, ধর্মীয় ভালোবাসা, আত্মীয়দের প্রতি ভালোবাসা ইত্যাদি। আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে, যে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর প্রতি অতিরিক্ত স্নেহ প্রায় সময় খুবই আনন্দদায়ক হতে পারে...এমনকি কোন কাজ কিংবা খাদ্যের প্রতিও। আর এটাই অতি আনন্দদায়ক অনুভূতিই হলো ভালোবাসা।

ভালোবাসার সংজ্ঞা বিতর্ক,অনুমান এবং অর্ন্তদর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত। অনেকেই ভালোবাসার মত একটি সর্বজনীন ধারণাকে আবেগপ্রবণ ভালোবাসা, কল্পনাপ্রবণ ভালোবাসা কিংবা প্রতিশ্রুতিপূর্ণ ভালোবাসা এসব ভাগে ভাগ করার পক্ষপাতী নন। তবে এসব ভালোবাসাকে শারীরিক আকর্ষণের ওপর ভিত্তি করে শ্রেণীবিন্যাস করা যেতে পারে। সাধারণ মতে, ভালোবাসাকে একটি ব্যক্তিগত অনুভূতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেটা একজন মানুষ অপর আরেকজন মানুষের প্রতি অনুভব করে। কারো প্রতি অতিরিক্ত যত্নশীলতা কিংবা প্রতিক্ষেত্রে কারো উপস্থিতি অনুভব করা ভালোবাসার সাথেই সম্পর্কযুক্ত। অধিকাংশ প্রচলিত ধারণায় ভালোবাসা, নিঃস্বার্থতা, স্বার্থপরতা, বন্ধুত্ব, মিলন, পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত।

ভালোবাসার সাধারণ এবং বিপরীত ধারণার তুলনা করে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভালোবাসাকে জটিলভাবে বিচার করা যায়। ধনাত্নক অনুভূতির কথা বিবেচনা করে ভালোবাসাকে ঘৃণার বিপরীতে স্থান দেয়া যায়। ভালোবাসায় যৌনকামনা কিংবা শারীরিক লিপ্সা একটা গৌণ বিষয়। এখানে মানবিক আবেগটাই বেশী গুরুত্ববহন করে। কল্পনাবিলাসীতার একটা ক্ষেত্র হচ্ছে এই ভালোবাসা। ভালোবাসা সাধারণত শুধুমাত্র বন্ধুত্ব্ব নয়। যদিও কিছু সম্পর্ককে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব বলেও অবিহিত করা যায়।

প্রিয়জনের কাছে লিখিত উপায়ে ভালোবাসা প্রকাশ করার একটি পন্থা হলো প্রেমপত্র। হাতে বা অন্য কোন মাধ্যমে, যে ভাবেই দাওয়া হোক না কেন, প্রেমপত্রে মনের অনুভূতি ব্যক্ত হয়ে থাকে।প্রেমপত্রের ইতিহাস সম্ভবত সভ্যতার মতই প্রাচীন। প্রাচীন গ্রীক, রোমান, চীনা সভ্যতার দলিলে প্রেমপত্র প্রদানের প্রচলনের প্রমান পাওয়া গিয়েছে। তবে সেগুলো খুবই সরল ভাষায় লেখা। মধ্যযুগীয় প্রেমপত্রগুলোতে লেখনীর দক্ষতার ক্রমবিকাশ লক্ষ্য করা যায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্যয়নের আগে এই প্রেমপত্রই ছিল প্রেমিক-প্রেমিকাদের যোগাযোগের প্রধান উপায়, বিশেষ করে যুদ্ধের সময়-যখন তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি। ঐ সব সময়ে যোদ্ধারা উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করে থাকতো তাদের প্রিয় মানুষটির পত্রের অপেক্ষায়।
এমনকি এই ইলেক্ট্রনিক যুগেও প্রেমপত্র তার ভূমিকা ঠিকই পালন করে যাচ্ছে। কাগুজে লেখার চেয়ে এখন মানুষ ই-মেইলের মাধ্যমেই বেশি প্রেমপত্র বিনিময় করে থাকে। তা সহজেই বোঝা যাবে প্রেমপত্র লেখার উপদেশমূলক ওয়েবসাইটগুলো দেখলে।
তবে কাগুজে লিখিত প্রেমপত্রের আবেদন এখনও কমেনি। প্রিয়জনের কাছ থেকে পাওয়া চিঠি পড়ার অনুভূতি সবসময়ই অন্যরকম।

প্রেমপত্র লেখার কোন নির্দিষ্ট কাঠামো নেই। একজন যে উপায়ে তার মনের অনুভূতিগুলো লিপিবদ্ধ করতে পারবে তার সেভাবেই প্রেমপত্র লেখা উচিৎ। সেকারনে প্রেমপত্রের ধরণ বিভিন্ন। ঐতিহাসিক ভাবে সমাদৃত ধরণ হলো কাব্যিক উপায়ে লেখা। উইলিয়াম শেকসপিয়রের সনেটগুলো মাঝেমাঝেই আবেগী পত্রের উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
একটি সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার সময় প্রেমপত্র ফেরত দাওয়া রীতি প্রচলিত আছে।

ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত মানুষই তার প্রিয়জনের কাছে প্রেমপত্র লিখেছেন। তাদের মধ্যে নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, লর্ড বাইরন, বেথোভেম, উইনস্টন চার্চিল, ভিক্টর হুগো, জন কিটস –এর প্রেমপত্র দলিল হিসেবে আজও রয়ে গেছে।

ভালোবাসা দিবস বা সেন্ট ভ্যালেন্টাইন'স ডে (Valentine's Day) (সংক্ষেপে ভ্যালেন্টাইন'স ডে নাম পরিচিত) একটি বার্ষিক উৎসবের দিন যা ১৪ই ফেব্রুয়ারি প্রেম এবং অনুরাগের মধ্যে উদযাপিত করা হয়। এই দিনে মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে ফুল, চিঠি, কার্ড, গহনা প্রভৃতি উপহার প্রদান করে দিনটি উদ্‌যাপন করে থাকে।

প্রায় 269 খ্রিস্টাব্দে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন'স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন। খৃষ্টানজগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। যেমন: ২৩ এপ্রিল - সেন্ট জজ ডে, ১১ নভেম্বর - সেন্ট মার্টিন ডে, ২৪ আগস্ট - সেন্ট বার্থোলোমিজম ডে, ১ নভেম্বর - আল সেইন্টম ডে, ৩০ নভেম্বর - সেন্ট এন্ড্রু ডে, ১৭ মার্চ - সেন্ট প‌যাট্রিক ডে।

পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। খৃস্টীয় এই ভ্যালেন্টাইন দিবসের চেতনা বিনষ্ট হওয়ায় ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ভ্যালেইটাইন উৎসব নিষিদ্ধ হয়। ইংল্যান্ডে ক্ষমতাসীন উৎসব পিউরিটানরাও একসময় প্রশাসনিকভাবে এ দিবস উদযাপন করা থেকে বিরত থাকার জন্যে নিষিদ্ধ ঘোষনা করে। এছাড়া অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে বিভিন্ন সময়ে এ দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়।

বর্তমানকালে, পাশ্চাত্যে এ উৎসব মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়। যুক্তরাজ্যে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক প্রায় ১০০ কোটি পাউন্ড ব্যয় করে এই ভালোবাসা দিবসের জন্য কার্ড, ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহারসামগ্রী ও শুভেচ্ছা কার্ড ক্রয় করতে, এবং আনুমানিক প্রায় ২.৫ কোটি শুভেচ্ছা কার্ড আদান-প্রদান করা হয়। এই দিবস কে বেহায়াপনা দিবস বললে যথার্থ হয়।







**আকাশগঙ্গা (Milky Way) একটি ছায়াপথ। সৌরজগতের কেন্দ্র সূর্য এই ছায়াপথের অংশ। অর্থাৎ আমরা থাকি এই ছায়াপথে। এটি একটি সর্পিলাকার ছায়াপথ।


তথ্যসূত্র ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×