প্রতিদিন খবরের কাগজ বা টিভি দেখলে দেখা যায় মুসলিমরা দিন দিন নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে৷ কেন আজকে আমাদের এই অবস্থা? আমরা কি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি নই? আমাদের মাঝে কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আসেনি? আল্লাহ তায়ালা কি আমাদের নিকট পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কুরআন পাঠান নি? তবুও কেন আজ অবহেলিত অপদস্থ? আমাদের কি মনে প্রশ্ন জাগে না? আর জাগলেও বা কি করার এর জবাব তো আমাদের কাছে নেই৷
আমাদের প্রথম ভুল, আমরা কোনো সমস্যায় পড়লে সেটা নিজেরা সমাধান করা বাদ দিয়ে অন্যদের কাছে যাই সমাধান করার জন্য৷ একটু ভেবে বলুন আমাদের পূর্বপুরুষদের কেমন নীতি ছিল? তারাও কি কোনো সমস্যার সমাধানের জন্য অন্যত্র ছুটে বেড়াত নাকি নিজেরাই সমাধান করত? না, তারা অন্যত্র ছুটে বেড়াত না৷ বরং নিজেরাই সেটার সমাধান করত৷ আরেকটু চিন্তা করেন আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআনে কি মানব জীবনের সমস্ত সমস্যার সমাধান নেই? যে গ্রন্থকে আল্লাহ আমাদের সংবিধানরুপে পাঠিয়েছেন৷ আজ আমাদের জ্ঞানের স্তর অনেক নিচে নেমে এসেছে৷ আমরা নিজেদের কাজ অন্যের উপর ফেলে রেখেছি বিধায় আমাদের আজ এই অবস্থা৷ যেমন ধরুন আজকে কোনো মুসলিম দেশে বা কোনো দেশে মুসলিমদের উপর নির্যাতন হলে আমরা এর প্রতিবাদ ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে যাই ন্যাটো ও জাতিসংঘের কাছে ৷ কিন্তু জাতিসংঘ আমাদের সাহায্য করার কে? তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এক না৷ তারা বহু খোদায় বিশ্বাসী আর আমরা একত্ববাদে বিশ্বাসী৷ শেষ পর্যন্ত দেখা যায় আমরা তাদের নিকট থেকে আশানুরুপ ভাবে কোনো সাহায্য পাই না৷ কিন্তু এতদিনে নির্যাতিত মুসলিমদের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছে৷
আমাদের দ্বিতীয় ভুল, অলসতা বা জ্ঞান অন্বেষণে বিমুখতা৷ মানব সভ্যতার শুরু থেকে দেখুন মানুষ আজ এত উন্নত কেন আর অন্য প্রাণীরাই বা উন্নত হচ্ছে না কেন? মানুষের এত উন্নত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, মানুষের সবকিছু নিয়ে জানার কৌতুহল ও মানুষ তার জীবনকে আরও সহজ সরল করতে চায়৷ চলুন এখন মুসলিমদের দিকে দেখা যাক৷ আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছেন কারা? কাদের মূলনীতি অনুসরণ করে আজ বিজ্ঞানের এই অবস্থা? এই প্রশ্নই যদি কোনো মুসলিম যুবক বা কিশোরকে করা হয় তাহলে সে সুন্দরভাবে উত্তর দেবে যে, অবশ্যই আইন্সটাইন, নিউটন বা স্টিফেন হকিং৷ এ থেকে মুসলিম যুবকদের ইতিহাস পাঠে বিমুখতা দেখা যায়৷ কিন্তু এই আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন কারা? ইউরোপিয়ান ও আমেরিকানরা সভ্যতার উচ্চ শিখরে উঠেছে কাদের মূলনীতি অনুসরণ করে? ইতিহাস পড়লে জানা যায় বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে মুসলিম বিজ্ঞানীরা৷ তৎকালীন মুসলিমদের জ্ঞানের স্তর ছিল অত্যন্ত উচু ও সমৃদ্ধ৷ সেটা হোক বৈজ্ঞানিক শাস্ত্রে কিংবা ধর্মীয় শাস্ত্রে৷ কিন্তু দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় আজ মুসলিম যুবকরা জ্ঞান অর্জনে বিমুখ৷ তারা আজ ইউরোপ বা আমেরিকার গবেষণার উপর নির্ভরশীল৷ এখন আপনারাই ভেবে বলুন আমাদের কি করা উচিৎ আর আমরা কি করছি৷ আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন৷ প্রত্যেক যুবকদের দ্বীনের বুঝ দান করুন৷ আমীন৷
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯