| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রশ্নটা খুবই সাধারণ। এতটাই সাধারণ যে অনেক সময় এটাকে গভীরভাবে ভেবে দেখার প্রয়োজনই অনুভব করি না।
আমরা, বা আমাদের পরিচিত কেউ, যারা দেশের বাইরে থাকেন, তারা কি সত্যিই বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে এই ভাবনা থেকেই বিদেশ গেছেন? নাকি ব্যক্তিগত উন্নতি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীল জীবন, সন্তানের ভবিষ্যৎ এই বিষয়গুলোই ছিল মূল বিবেচনা?
অনেকে বলবেন, “দুটোই।” এই উত্তরটা শুনতে স্বস্তিদায়ক। কিন্তু প্রশ্নটা কি আসলেই এত সহজ?
বিদেশ গেলে দেশের উপকার হয়, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। রেমিট্যান্স আসে, বৈদেশিক মুদ্রা বাড়ে, কিছু জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ফিরে আসে। রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে এর প্রভাব স্পষ্ট। কিন্তু এখানে প্রশ্নটা ফলাফল নিয়ে নয়, উদ্দেশ্য নিয়ে।
আমরা কি দেশের উন্নয়নের কথা ভেবে দেশ ছেড়েছিলাম, নাকি দেশ আমাদের সেই সুযোগটা দিতে পারেনি বলেই আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম?
বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ মানুষই বিদেশ যায় নিজের জন্য। ভালো চাকরি, সম্মানজনক আয়, নিরাপদ জীবন, পরিবারের স্বস্তি এগুলো খুব স্বাভাবিক চাওয়া। এতে কোনো অপরাধ নেই। সমস্যা শুরু হয় তখনই, যখন এই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে আমরা অতিরিক্ত দেশপ্রেমের ভাষায় বৈধতা দিতে চাই।
আমরা বলি, “আমি দেশের জন্যই বিদেশে আছি।” কিন্তু নিজের কাছে সৎ হয়ে প্রশ্ন করলে দেখা যায়, দেশ ছিল না প্রথম অগ্রাধিকার। জীবন ছিল।
এখানেই আসে আরেকটি জটিল বাস্তবতা।
দেখা যায়, আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, তারা অনেক সময় দেশের জন্য আরও বেশি দেশপ্রেম দেখাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, আলোচনায়, মন্তব্যে বাংলাদেশের প্রতি আমাদের আবেগ, ক্ষোভ, আশা অনেক বেশি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এটা খুবই স্বাভাবিক। বছরের পর বছর দেশের বাইরে থাকলে দেশকে নিয়ে নস্টালজিয়া তৈরি হয়, স্মৃতি জমে, একধরনের শূন্যতা কাজ করে।
কিন্তু প্রশ্নটা এখানে, এই দেশপ্রেম কি সবসময় বাস্তবতার সঙ্গে সমানুপাতিক? নাকি অনেক ক্ষেত্রেই তা অতিরঞ্জিত?
দূরত্ব অনেক সময় আবেগকে বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিনের ছোট ছোট আপস, কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, বাস্তব সংকট এসব থেকে দূরে থাকলে দেশকে আমরা প্রায়ই একটি কল্পিত রূপে দেখতে শুরু করি। তখন দেশ হয়ে ওঠে স্মৃতির দেশ, শৈশবের দেশ, অথবা এক ধরনের “হওয়া উচিত ছিল” এমন দেশ।
ফলে বাইরে বসে আমরা অনেক সময় খুব সহজে বড় বড় কথা বলি। কী হওয়া উচিত, কে ব্যর্থ, কে দেশপ্রেমিক, কে নয়। অথচ ভেতরে থেকে প্রতিদিনের বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করা মানুষগুলোর সীমাবদ্ধতা আমাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায়।
এটা মানেই এই নয় যে প্রবাসীদের অনুভূতি ভুয়া বা অপ্রয়োজনীয়। বরং বলা যায়, এই দেশপ্রেমের ভেতরেও একধরনের দ্বন্দ্ব আছে। ভালোবাসা আছে, কিন্তু দূরত্বও আছে। দায়বদ্ধতার কথা আছে, কিন্তু প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নেই।
হয়তো এই প্রশ্নটাই আমাদের নতুন করে করা দরকার।
আমরা কি দেশের জন্য বিদেশ যাই? নাকি আমরা বিদেশ যাই, আর পরে সেই সিদ্ধান্তের অর্থ খুঁজে নিতে দেশের কথা বলি?
এই প্রশ্নের কোনো একক উত্তর নেই। কিন্তু প্রশ্নটা করা জরুরি। কারণ নিজের সঙ্গে সৎ না হলে দেশের সঙ্গেও সৎ থাকা যায় না।
২|
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪১
কিরকুট বলেছেন: না, আমরা বিদেশ যাই নিজের প্রয়োজনে , পেটের দায়ে কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা ভাব দেখাই আমরা দেশের জন্য যেয়ে দেশ উল্টায় ফেলছি ।
৩|
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে দেশ নিয়ে কেউ চিন্তিত নয়। সবাই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে চিন্তিত।
দেশের প্রতি কারো ভালোবাসা নেই। দেশের প্রতি টান ছিলো- ১৯৭১ সালের মানুষদের।
৪|
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩০
যবড়জং বলেছেন: আমরা বিদেশ যাই তুষারপাতে ছবি তুলতে আর গাছ থেকে আপেল পেড়ে খেতে (ইুরুপ- এমিরিকা)
আরব দেশের কথা আর নাই বলি !
৫|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৮
কামাল১৮ বলেছেন: বিদেশে থাকলেও দেশের জন্য ভালোবাসা আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৭
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: দেশের জন্য আসলে কেউ'ই কিছু করে না, যা করে সব ব্যক্তি স্বার্থে, তাদের কার্যক্রম যখন দেশের পক্ষে যায় তখন আলগা ক্রেডিট নেয়, আর যখন বিপক্ষে যায় তখন হয়ে যায় বিপ্লবী।