নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিন্তার কারখানা ২ - হিটলারের করায়ত্ত বিবর্তনবাদ

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৫

ডারউইন যখন শিশু, তখন পুরো ইউরোপ জুড়ে বৈজ্ঞানিক ও খ্রিস্টীয় যৌথ মতবাদ ছিল এই যে - অ্যাডাম অ্যান্ড ইভের পৃথিবীতে আগমন থেকে শুরু করে নোয়ার মহাপ্লাবন হয়ে তৎকালীন পৃথিবীর বয়স ছয় হাজার বছরের বেশী না। অথচ আজ আমরা জানি যে, পৃথিবীর বয়স প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর। সে কৃতিত্ব বহুলাংশে, ডারউইনেরই।

তরুণ ডারউইন দক্ষিণ অ্যামেরিকার গ্যালাপ্যাগোস আইল্যান্ডে গিয়ে ন্যাচারাল ফ্লোরা অ্যান্ড ফনা, তথা পশুপাখি ও গাছপালা নিয়ে যে জীববৈচিত্র্য - তা নিয়ে গবেষণা করেন। ডারউইনের সবচে বিখ্যাত বই অরিজিন অফ দা স্পিসিস ১৮৫৯ সালে ইংল্যান্ডে প্রকাশিত হয়। প্রকৃতিতত্ত্ববিদ হিসেবে ডারউইন দক্ষিণ অ্যামেরিকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বহু স্থানে ঘুরে বেড়িয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন, এবং সেই সঞ্চিত তথ্য - উপাত্ত ও গবেষণার মাধ্যমে যুক্তি দিয়ে আলোচনা করে বোঝালেন - কীরকম করে স্বাভাবিক অবস্থা নির্বাচনের ভেতর দিয়ে প্রত্যেক জাতের জীবজন্তু বদলে বদলে পরিণত রূপ ধারণ করেছে। ১৮৭১ সালে তাঁর প্রকাশিত "দা ডেসেন্ট অফ ম্যান" বইয়ে তিনি মানুষ ও অন্যান্য বিবিধ প্রাণীর মধ্যে মিল দেখিয়ে এই তত্ত্বের জন্ম দেন যে - মানুষ, এবং অ্যানথ্রপয়েড এইপস/ বানর/ শিম্পাঞ্জীর বিবিধ গোত্র সম্ভবত একই প্রজাতির জিন থেকে বিবর্তিত হয়ে এসেছে। ডারউইনের তত্ত্ব চার্চের কট্টর সমালোচনার মুখে পড়ে, কিন্তু ডারউইনের সৌভাগ্য, ততদিনে ইউরোপিয়ান এম্পায়ারগুলি চার্চের প্রভাব থেকে অনেকাংশেই বের হয়ে এসেছে। নইলে, ষোড়শ, এমনকি সপ্তদশ শতকের ইউরোপ হলেও ডারউইনকে চার্চের ইনকুইজেশনের সম্মুখীন হতে হত।

তবে, বিবর্তনবাদের সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য, বলা মুশকিল, বিবর্তনবাদকে নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ চরিতার্থ করবার জন্যে পলিটিকাল এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণ করে যারা , তারা মহামান্য হিটলারের নাজি বাহিনী।

বিবর্তনবাদী/বিবর্তনমুখী মানবতাবাদে বিশ্বাসীদের মানুষের সংজ্ঞা ঘোরতরভাবে ডারউইনের বিবর্তনবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত। নাজিরা বিশ্বাস করতো যে, হোমো স্যাপিয়েন্স 'মানুষ' - এর বৈশিষ্ট্যও এভালিউশনের বশবর্তী হয়ে কালে কালে বদলায়। আর এই বদল মানবজাতিকে উন্নতির দিকেও নিয়ে যেতে পারে, নিয়ে যেতে পারে অবনতির দিকেও।

নাজিদের প্রধান আগ্রহ ছিল মানবজাতির চরিত্রকে কলুষিত না করে, তাঁদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যকে অবনতির দিকে না নিয়ে গিয়ে একটা "প্রগ্রেসিভ এভলিউশনের" দিকে ধাবিত করা। এই সূত্র ধরেই তারা যুক্তি দাঁড়া করিয়েছিল যে, জর্মন অ্যারিয়েন / আর্যজাতির জেনেটিক বিশুদ্ধতা রক্ষা করতে হবে। এবং সেজন্যে নিম্নশ্রেণীর মানুষ যারা আছে - ইহুদী, সমকামী, পাগল - এদের কোয়ারেন্টাইনড করে রাখতে হবে, সম্ভব হলে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অস্কার জেতা দা পিয়ানিস্ট মুভিটি দেখে থাকলে প্রুশিয়ার ইহুদী ঘেঁটোগুলোর বা ইহুদী পার্সিকিউশনের ব্যাপারে আপনাদের ধারণা থাকার কথা।

নাজি'রা বিবর্তনবাদীদের সঙ্গেই কণ্ঠ মিলিয়ে বলতো - হোমো স্যাপিয়েন্স নামে একটি প্রজাতি প্রকৃতির ন্যাচারাল সিলেকশনের মাধ্যমে , সবচে ফিটেস্ট কন্টেস্টান্ট হিসেবে বের হয়ে এসেছে, হোমো নিয়েন্ডারথেলস, হোমো ইরেকটাস, অথবা হোমো সলেনসিসসহ 'হোমো' জিন বিশিষ্ট ভিন্ন ভিন্ন স্পিসিসকে পিছে ফেলে। কিন্তু, নাজিদের মতে, বিংশ শতাব্দীতে এসেও মানুষ, বা হোমো স্যাপিয়েন্সের জেনেটিক মিউটেশন শেষ হয় নি। বিবর্তন এখনো চলছে। পৃথিবীতে বিদ্যমান বিভিন্ন বর্ণ, গোত্র - এবং তাঁদের মধ্যে বিদ্যমান হানাহানিই তো তাঁর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। অতঃপর, নাজি'রা ইউরোপের রাজনীতির ময়দানে নামলেন এক "মহান" বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সাধন করতে, প্রকৃতির হয়ে ন্যাচারাল সিলেকশনের কাজটি করে দিতে। বর্ণে বর্ণে, গোত্রে গোত্রে বিদ্যমান নিচুজাতের মানুষের বিভেদ ও হানাহানিকে একেবারে, এবং চিরতরে শেষ করে দিতে, একটি মাত্র মহান যুদ্ধের দ্বারা। আমরা একে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামে চিনি।

ইতোমধ্যে বৈজ্ঞানিকরা নাজিদের সমর্থন ল্যাবে জড়ো করলেন প্রমাণের পাহাড়। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হল যে র‍্যাশনালিজম বা যুক্তিবাদ, শারীরিক সৌন্দর্য, ইন্টিগ্রিটি বা আত্মমর্যাদায় - সবচে অগ্রসর জাতি হচ্ছে জর্মন আর্যজাতি। পৃথিবীর সকল ইহুদী, নিগ্রো, সমকামী , এবং মানসিক ভারসাম্যহীনেরা বর্তমান পৃথিবীর হোমো নিয়েন্ডারথ্যালস। আর্যজাতির যেখানে সম্ভাবনা আছে মানুষকে সুপারম্যান বা অতিমানবীয় গুণাবলীতে গুণান্বিত করার - ইহুদী, নিগ্রো আর সমকামীরা আর্যজাতির সঙ্গে জিন মিক্স হয়ে গেলে আর্যজাতির সেই অপার সম্ভাবনা বিঘ্নিত হবে। অর্থাৎ, মানবতা, ইন জেনারেল, ঘোরতর বিপদের সম্মুখীন। পৃথিবী তাকিয়ে আছে , বিজ্ঞান তাকিয়ে আছে মানবতার রক্ষাকারী মহাপ্রভু হিটলারের দিকে।

১৯৩৩ সালের প্রেক্ষিতে পাশ্চাত্য বিশ্বের সেরা সব ইউনিভার্সিটির ল্যাবে বসে জীববিজ্ঞানীরা - নাজিদের এই থিওরিকে বৈজ্ঞানিক সত্য বলে ঘোষণা দিলেন। পেপারের পর পেপার পাবলিশ করে তারা প্রমাণ দেখালেন যে - শ্বেতাঙ্গরা আফ্রিকান, ইন্ডিয়ান, এবং আরব ইহুদীদের থেকে শ্রেষ্ঠতর। নাজিদের পলেটিকাল যজ্ঞের হোমঅগ্নিতে ঘৃত ঢাললেন তাবৎ বড়বড় জীববিজ্ঞানী, এবং সমাজবিজ্ঞানীরা।
ইউরোপে ইহুদীদের বিরুদ্ধে নাজিদের প্রোপ্যাগান্ডা মুভি, পোস্টারে শহরের পর শহর ছেয়ে গেল।

১৯৪২ সালের স্কুল পর্যায়ে শিশুদের জন্যে লেখা একটি টেক্সট বুকের অংশ সরাসরি তুলে দিচ্ছি, যার শিরোনাম ছিল দা ল'জ অফ নেচার অ্যান্ড ম্যানকাইন্ড (প্রকৃতির নিয়ম ও মানুষ) -

" প্রকৃতির সবচে চরম নিয়ম হল এই যে - প্রতিটি জীবন্ত সত্ত্বা নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে প্রতিনিয়ত সংগ্রামে লিপ্ত। এই যুদ্ধ নির্মম, ক্ষমাহীন। দয়া দেখানোর কোন সুযোগ এতে নেই। কিন্তু এই ন্যাচারাল সিলেকশনের নিয়মকে আমাদের ভালবাসতেই হবে, কারণ প্রকৃতিতে টিকে থাকার এই একমাত্র পথ। এই যুদ্ধে শুধু তারাই টিকে থাকে যারা যোগ্যতর। বাকিরা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। জীববিজ্ঞান আমাদের শেখায় এই নিয়ম কেবল গাছপালা, এবং পশুপাখির ক্ষেত্রে নয়, বরং আমাদের, তথা মানুষদের জন্যেও প্রযোজ্য। বিজ্ঞানের এ নীতি আমাদের ইস্পাতসদৃশ প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করে প্রকৃতির এ নিয়মকে শ্রদ্ধা দেখিয়ে টিকে থাকার এবং এই নিয়মকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। জীবনের অর্থই সংগ্রাম। তাঁদের প্রতি করুণা, যারা প্রকৃতির এই অমোঘ নিয়মের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার মত পাপ করে।"

বিবর্তনবাদকে কাজে লাগিয়ে অবোধ শিশুদের মধ্যেও "নিচুশ্রেণীর" মানুষ, তথা লেসার হিউম্যান বিয়িং, তথা ইহুদী - নিগ্রো - সমকামীদের খুন করাকে জাস্টিফাই এই সম্পূর্ণ টেক্সট বইটির সঙ্গে প্রায় লাইন বাই লাইন পাই জার্মানিতে ১৯২৫ সালে প্রকাশিত আর একটি বিখ্যাত বইয়ের সঙ্গে, যা প্রায় অর্ধ শতক ব্যান হয়ে থাকার পর সম্প্রতি আবার সুলভ ভার্শনে ঢাকা শহরের নিউমার্কেট, আজিজ, বা শাহবাগের মোড়ে পাওয়া যাচ্ছে।

সেই বইয়েও লেখা আছে -

"যে মানুষ ন্যাচারাল সিলেকশনের এই আয়রন লজিকের বিরুদ্ধাচরণ করে, সে যেন সে অমোঘ নিয়মের বিরুদ্ধেই দাঁড়ায় - যে নিয়মের উসিলায় বিবর্তিত হয়ে হয়ে সে আজকের সত্ত্বায় পরিণত হয়েছে। তাঁর জেনে রাখা উচিৎ, বিবর্তনবাদের বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবে, তাঁর পরিণতি ধ্বংস, এবং কেবলই ধ্বংস হওয়া।"

বলুন তো বইটি কার লেখা? বইটির নাম কি?

এছাড়াও চিন্তার কারখানায় চিন্তা করবার জন্যে আজকের কিছু প্রশ্ন -

১। বাংলাদেশী ব্লগে যারা বিবর্তনবাদের সমর্থক, তারা কি হিটলারের চেয়ে বড় বিবর্তনবাদী? অর্থাৎ বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে হিটলার যেরকম ঝাড়ে বংশে উধাও হয়ে গেছেন - তারা কি বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে এতটুকু আত্মত্যাগ স্বীকার করতে পারবেন?

২। বাংলাদেশী ব্লগে যারা বিবর্তনবাদকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার চেষ্টা করেন, তারা কি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে বৈজ্ঞানিকভাবে জায়েজ করবার জন্যে হিটলারের এভলিউশনারি হিউম্যানিজম, তথা বিবর্তনবাদকে ব্যবহার করেছিলেন - এই ঐতিহাসিক ঘটনার ব্যাপারে ওয়াকেফহাল?

৩। যদি তারা বিবর্তনবাদকে কতটা বিপদজনকভাবে পলিটিক্যালি ইউজ কর সম্ভব, সে ব্যাপারে অবগত হয়ে থাকেন, এসমস্ত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বিপদজনক/ রেসিজম উস্কে দেয়া ব্যাবহারের ব্যাপারে সতর্কতামূলক কথাবার্তা তাঁদের মুখে কি বড় একটা শোনা যায়?

৪। বিবর্তনবাদী তত্ত্বের উপর ভর করে ২০২০ সালের পৃথিবীতে অন্য কোন রেসিজম চর্চা করা হচ্ছে, যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে আজকেও মানুষ পথে ঘাটে লড়াই করছে, প্রাণ দিচ্ছে?


বি। দ্রঃ মনে রাখতে হবে যে, চিন্তার কারখানার উদ্দেশ্য চিন্তাশীল মানুষদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বহুল প্রচলিত তত্ত্ব ও তথ্যকে অ্যাপ্রচ করতে অভ্যস্ত করে তোলা। উপর্যুক্ত প্রশ্নাবলীর উত্তর নিয়ে চিন্তাভাবনা করাই শ্রেয়। যদি মন্তব্যে লিখে জানাতে চান, স্বাগতম জানাই। কিন্তু , মূল পোস্টের বদলে মন্তব্যের সূত্র ধরে আলোচনার সূত্রপাত করতে চাইলে, বা প্রশ্নের ভাষা ব্যক্তি আক্রমণাত্মক হলে প্রত্যুত্তরের প্রত্যাশা না রাখাই ভালো।

তথ্যসুত্রঃ
১। ডারউইনের বিবর্তনবাদের তথ্যসমূহ নেয়া হয়েছে জওহরলাল নেহরুর গ্লিম্পস ওফ ওয়ার্ল্ড হিস্টোরি বইয়েরঃ ডারউইনিজম - দা ট্রায়াম্ফ অফ সায়েন্স নামক চ্যাপ্টার থেকে (পৃষ্ঠা ৪৯৯ - ৫০৫), এবং সোফি'স ওয়ার্ল্ডের "ডারউইন" - শীর্ষক অধ্যায় থেকে ( পৃষ্ঠা ৩৩৫ - ৩৫৫)।
২। নাজিবাদিদের বিবর্তনবাদের ব্যাবহার সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নেয়া হয়েছে ইউভাল নোয়াহ হারারির স্যাপিয়েন্স বইটির দা ল' অফ রিলিজিয়ন চ্যাপ্টারের ২৫৮ - ২৬৩ পৃষ্ঠা থেকে।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:২৯

সামি হারিছ বলেছেন: সহমত ভাই

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হজরত স্যাম হ্যারিস দামাতবারাকাথুম, আপনার ব্লগিয় জীবনের প্রথম মন্তব্যের উপস্থিতিতে আমার ব্লগ ধন্য হল। হজরত রিচারড ডকিন্সরে মেহদি হাসানের তরফ থেকে , আর ক্রিস্টোফার হিচেন্সরে তারেক রামাদানের তরফ থেকে লাল সালাম দিয়েন।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

আমি সাজিদ বলেছেন: আপনি একটানা ত্রিশ মিনিট বিবর্তনবাদ নিয়ে লাইভে বা সামনাসামনি কথা বলতে পারবেন? জেনেটিক্সের বেসিক বুঝেন? সেল বায়োলজি নিয়ে ধারনা আছে? মনে তো হয় না। কঠিন কঠিন শব্দ আর ইধার ওধার ধার করে একটা কিছু লিখে ফেলে সব বিষয়েই জ্ঞানী সাজতে চান কেন হযরত/ স্যার / হোয়াটএভার!

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: খুব কঠিন বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আমি সব সময় ডারউইন এর পক্ষে।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। এই নেন, আপনার জন্যে আমার ছোট উপহার - view this link

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৩০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট আবির! আপনি যে বিষয়গুলো তুলেছেন সরাসরি সেখানে চলে যাই-
১। প্রথম কথা হচ্ছে নানারকম বিষয়ে 'বাদী' হবার বিষয়ে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু অন্যরকম, সে নিজেই বলে যে শেষ কথা বলে কিছু নেই, সে নিজেকে ক্রমাগত অধিকতর সত্যের কাছাকাছি পৌঁছানোর সাধনায় লিপ্ত। সেই হিসেবে হিটলারকে 'বিবর্তনবাদী' বললে আমার আপত্তি আছে। ইতিহাসে চোখ ফেরালে দেখা যায় শাসক তার ক্ষমতার বিস্তার বাড়াতে এবং টেকসই করতে যা কিছু সামনে থাকে তাই সে ব্যবহার করে। কখনো ধর্ম, কখনো বিজ্ঞান, কখনো তন্ত্র- কোনো বাছবিচার নাই। পাব্লিক যখন যা খায়, তাই তারে দাও। সেক্ষেত্রে হিটলার বিবর্তনবাদকে কীভাবে ব্যবহার করেছে তা দিয়ে বিবর্তনবাদের কিছুই যায় আসে না। সে নিজে এই বিষয়ে পন্ডিত-বিজ্ঞানী হলে না হয় ভাবা যেত। আমার হিসেবে ১ নম্বর প্রশ্ন নিজেকে প্রশ্ন হিসেবেই দাঁড় করাতে পারে নাই।
২। বিবর্তনবাদ প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার 'চেষ্টা' চিন্তাটা ভাবালো। যার ভেতরে সত্যের জন্য যতটুকু তৃষ্ণা, সে তো ততটুকুই যাবে। এখন যদি কেউ বলে মোল্লার দৌড় মসজিদ, ডারউইনের দৌড় গ্যালাপাগোস- তা সে বলতেই পারে। আমাদের ব্লগারদের দৌড় বিশদ বোঝা যাবে আপনাকে মন্তব্য করলে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ওয়াকিবহাল আছি।
৩। আচ্ছা, বিবর্তনবাদ যারা প্রেসক্রাইব করেন তারা এর বদহজমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সাবধান করেন কিনা, এই তো? আমাদের এখানে বলতে পারি না, বাঙালির গোল্ড ফিশ মেমরিতে এরে কিছু বললেও সে বুঝে বা মনে রাখতে পারে কিনা আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু মানবজাতির মুল ধারা একটা বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে অনেক ভুলের সাথে বিবর্তনবাদের এই বদব্যবহার নিয়ে সচেতন। বিবর্তনবাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মূল কারণ বা চালিকা শক্তি- এরকম দাবি নিশ্চয় করছেন না? আরও অনেক বিষয়ের সাথে নাজিরা এটাকেও ব্যবহার করেছে নিজেদের প্রোপাগান্ডা প্রচারে।
৪। হবার তো কথা, মানুষের চিন্তাজগতে এমন কিছু আসে নি যার জন্য সে রেসিজম ক্রিয়েট করে হানাহানি শুরু করে নাই।

১৯২৫ সালের বইটা তো সেই সাইকোপ্যাথটার আত্মজীবনী হবার কথা, বাঙালির খুব পছন্দের চরিত্র।
টু দ্য পয়েন্ট এর আশেপাশে কিছু কথা চলে আসছে, কিন্তু চিন্তার কারখানায় ঢুকে তো এইসব হবেই, তাই না?
চিন্তার একটা খোরাক দিয়ে যাই, আপনি যে অ্যাাঙ্গেলে বিবর্তনবাদ ব্যবচ্ছেদ করলেন তাকে আমি সাধুবাদ জানাই। বিবর্তনবাদকে 'ধর্ম' বা ‘পুঁজিবাদ’ বা ‘সমাজতন্ত্র’ দিয়ে রিপ্লেস করে একই রকম আলাপ করা যায় কি? এই পার্স্পেকটিভে আপনার চিন্তাটা কেমন জানতে ইচ্ছে হল।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ ইফতি ভাই , আপনার বিষদ মন্তব্যে।

১ম প্রশ্নের জবাবে হিটলার বিবর্তনবাদকে কীভাবে ব্যবহার করছে তাতে বিবর্তনবাদের কিছুই যায় আসে না - এই ধরণের মন্তব্য আক্ষরিক অর্থে আর একটা বিশ্বযুদ্ধ উস্কে দিতে পারে। এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এটা বোঝানো যে, যেকোনো ইডিওলজি বিজ্ঞান সমর্থিত হলেই যে সেটা মানবতার জন্যে সুফল বয়ে আনবে, এমনটা নয়। বিবর্তনবাদ সহ প্রচলিত যেসমস্ত কথা / উপকথাই এখন বিজ্ঞানের নামে আমাদের উপকারী অ্যান্টি বায়োটিক সিরাপের মত খাওয়ানোর চেষ্টা চলে সাম্রাজ্যবাদী পাশ্চাত্য থেকে, আমাদের সঙ্গে সঙ্গে তা গলকধরন না করে , একটু থেমে, নেড়ে চেড়ে দেখে, ভেবে চিন্তে অ্যাপ্রচ করা লাগবে।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: দ্বিতীয়ত ,বিবর্তনবাদকে প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে এই লেখায় , এমন একটা সম্ভাবনার দোলাচালে থাকাটা - আপনার একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে লেখাটিকে অ্যাপ্রোচ করার ফসল। সেটা নিরপেক্ষ পয়েন্ট অফ ভিউ নয়। আপনার মধ্যে এই পূর্বানুমান উপস্থিত যে, অর্বাচীনের মত বিবর্তনবাদরে কাইচা দেবার জন্যে আমি এই লেখা লিখছি। নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন যে, এই মতলব আমার নাই। আর বিবর্তনবাদের ধ্বংসাত্মক ব্যবহারের ব্যাপারে আপনি যে কেবল আপনার জ্ঞাত থাকার বিষয়েই অবগত করলেন, এ জন্যে বিশেষ ধন্যবাদ। অনেকেই আছে জেনারালাইজড মন্তব্য করে।

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: তৃতীয়ত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজি জার্মানিদের আদর্শিক ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল বিবর্তনবাদ, এ ব্যাপারে স্যাপিয়েন্সের হারারির কোন সন্দেহ নাই, আমারও নাই। তৎকালীন জার্মানিতে বিগত একদশকের অর্থনৈতিক মন্দাও একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ তো বটেই। কিন্তু টেকাপয়সার লোভে ৪৫ লাখ জার্মান সোলজার প্রাণ দিয়েছিল - এটা অনেকে বিশ্বাস করলেও আমি করি না। মানুষরে হিরোইজমের স্বপ্ন দেখায়ে আত্মঘাতি বানানো যত সহজ, একটা নির্দিষ্ট আদর্শকে রক্ষা করবার জন্যে আত্মহুতি দিতে প্রলুব্ধ করা যত সহজ, টাকা পয়সার লোভ দেখায়ে তত সহজ না। ধর্মের ব্যাপারে এই ধরণের ব্যাখ্যা তো প্রায়ই দেয়া হয়, একটা ইডিওলজি বিজ্ঞানের দ্বারা ব্যাকআপ পাইলে কেন তারে এই অপরাধ থেকে মুক্তি দেয়া হয়, আমি তা বুঝি না।


৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: চতুর্থত, চার নম্বর প্রশ্নটাই সবচে গুরুত্বপূর্ণ, এইটার উত্তর আরও নিখুঁত হওয়া বাঞ্ছনীয়। দেখি আর কেউ কিছু বলে কিনা।
বইয়ের লেখকের ব্যাপারে আপনার গেস সঠিক। আপনার জন্যে কেয়া কসমেটিক্সের পক্ষ থেকে পরিবেশবান্ধব গাছ উপহার।

আর আপনি যে সম্পুরক প্রশ্ন টি আপনার মন্তব্যের সঙ্গে যুক্ত করে দিলেন উত্তর নিয়া চিন্তাভাবনা করতেই পারি। আপাতভাবে সংক্ষেপে মতামত জানাই এই বলে যে - অবশ্যই ডারউইনিজমের জায়গায় ধর্ম, পুঁজি বা সোশ্যালিজমকে বসায়ে একই রকম একটা সিনপসিস করা সম্ভব। তবে জেনে রাখা ভালো যে, ফরাসী বিপ্লবের সময়কাল থেকে ধর্মের জায়গা আস্তে আস্তে রিপ্লেস করে ফেলছে ইডিওলজিগুলি। যেমন, মার্ক্সিজম, লিবারেলিজম, সোশ্যালিজম, এইথিজম, ডারউইনিজম। এগুলি প্রত্যেকটাই মানুষের উপকারে এবং অপকারে ব্যাবহার করা সম্ভব। কিন্তু কোন একটা ইডিওলজি যখন একটা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিক থেকে বেদবাক্যের মত প্রচার করা হয়, তখন তাকে প্রাথমিকভাবে সন্দেহের চোখেই দেখতে হবে।

আমি মনে করি - পৃথিবীর মূল সমস্যা অর্থের বণ্টন ব্যবস্থার বৈষম্য। পুঁজিবাদীরা এই বৈষম্য টিকায়ে রাখার জন্যেই , নিজেদের লিবারেল চেহারার উপর মেকআপ ঘসার জন্যে বিবিধ ফেইক লড়াই টিকায়ে রেখেছে, যেগুলি মূল লড়াই না।

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার লেখা থেকে মনে হচ্ছে, ২য় বিশ্বযু্দ্ধ হয়েছে, হিটলার ও জার্মানরা "বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী হয়ে" সুপার আর্য জার্মান জাতি (ককেশীয়) সৃষ্টি করতে!

২য় বিশ্বযু্দ্ধ হয়েছে, ভার্সাই চুক্তির (১ম বিশ্বযু্ধের শাস্তি) ফলে জার্মান জাতির অর্থনীতি ভেংগ পড়ার কারণে, বেকার ও দারিদ্রতায় জার্মানরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলো বৃটিশ, ফান্স ও মিত্রশক্তির বিপক্ষে।

আপনি কিসব আবোল তাবোল বুঝেন ও বলেন; আপনি প্রশ্নফাঁস জেনারেশনের লোক?

৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:১৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আরে স্যার, আমি তো ভাবলাম যে আমরা ধীরে ধীরে ফ্রেন্ড হয়ে উঠতেসি। এখন দেখি আপনি আবার বিলাপ করা শুরু করলেন!

যাই হোক, গুহায় থাকসেন জীবনে? গুহার নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ বসবাসের জন্যে বড়ই আরামদায়ক। ইলেক্ট্রিসিটি, পড়বার মত এক রেক বই, খাবার দাবারের জন্যে একটা ফ্রিজ থাকলে খুব আরামে একটা জীবন কাটায়ে দেয়া যায়। ইন্টারনেটের প্রয়োজন নাই। সময় নষ্ট করে। ব্লগিং ক্যাচাল না করে এই সময় পড়লেও তো কিছু লাভ হইত, তাই না?

ভালো থাকেন। আপনার আওয়ামীলীগ নিয়া লেখাটা ভালো লাগসিল। কিন্তু আপনার কথাবার্তায় আমি কষ্ট পাইসি। ফলে এখন আর মন্তব্য করতে যাবো না।

৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্লগারদের কাছে বিবর্তনবাদ অনেকভাবে পরিস্কার; হিটলারের যেসব ভুল (পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলো ও সোভিয়েতের বিপক্ষে যুদ্ধে যাওয়া) করেছ, ব্লগারদের অনেকের কাছে পরিস্কার; ফলে বলা যায় যে, ব্লগারেরা হিটলার থেকে বিবর্তনবাদ ভালো বুঝেন; আপনার ভাবনা দেখে মনে হচ্ছে, আপনি এখনো গুহায় বাস করছেন।

৭| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি আপনার লেখায়, বর বড় (অনেক সময় মধ্যযুগীয় দার্শনিক) মানুষদের রেফারেন্স দেন; আপনি ওঁদের ভাবনাচিন্তা কি সঠিকভাবে বুঝেন?

৮| ৩০ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। এই নেন, আপনার জন্যে আমার ছোট উপহার - view this link

৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ড মুগ্ধ হয়ে থাকলাম।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৪৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার। এবার এটা দেখেন, অরিজিন্যালটা। view this link । নোরা ফাতহির নৃত্য অসাধারণ হলেও, এই গানটায় কোয়েনা মিত্রার সঙ্গে সঞ্জয় দত্তের উপস্থিতি অরিজিন্যাল ভার্শনটাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

৯| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:১৪

বিপ্লব06 বলেছেন: বিবর্তনবাদ হইল একটা থিওরি। মলিকুলার/ইভলিউশনারি বায়োলজিস্টরা এখন পর্যন্ত গবেষণা করে যেই ব্যাপারগুলা বাইর করতে পারছেন সেই ব্যাপারগুলা মূলত বিবর্তনবাদকে সমর্থন করে। আপনি চাইলে রিসার্চ কইরা আরেকটা সায়েন্টিফিক্যালি সাউন্ড থিওরি প্রপোজ কইরা দেখতে পারেন। আপনি রাইট হইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আপনারে ডারউইনের মতই মনে রাখবে।

এইবার আপনার প্রশ্নগুলাতে হাত দেইঃ
আপনি দাবি করছেন যে হিটলার বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাড়ে-বংশে উধাও হয়েছে। এই স্টেটমেন্ট মিন করছে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠা করা। আমি যেমন জানি আপনিও তেমন জানেন যে সেইটা কারণ না। তাছাড়া বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাড়ে-বংশে উধাও হইতে হবে কেন? এইয়া একটা সায়েন্টিফিক থিওরি, ভুল প্রমাণ করলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। নাকি এইটা কোন প্রচ্ছন্ন হুমকি?

বিবর্তনবাদকে হিটলার ব্যাবহার করছে বলে কি বিবর্তনবাদ ভুল? পাকিস্তানিরা বন্দুক দিয়া বাংলাদেশিদের মারছে বইলা কেউ তো বলে না যে এইটা বন্দুকের দোষ, সবাই পাকিদের দোষই তো দ্যায় নাকি? আমার কাছে আপনার লজিকটা সাউন্ড মনে হয় নাই।

তিন নম্বর প্রশ্ন, এগেইন একটা টুলকে আপনি ক্যামনে ইউজ করবেন সেইটা আপনার ব্যাপার।টুলের দোষ না। একজাম্পলঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার। আপনি ওইটা দিয়া বোমা বানাইতে পারে আবার ইলেক্ট্রিসিটি বানাইতে পারেন। চয়েস আপনার। বিবর্তনবাদও এইরকম একটা টুল।

চার নম্বরঃ এগেইন, সায়েন্সের কাজ হইল কোন জিনিসটা ক্যামনে কাজ করে সেইটার উত্তর জানার চেষ্টা করা। সেই সায়েন্স দিয়া কেউ যদি রেসিজমরে হালাল করার চেষ্টা করে তাইলে সায়েন্স কি করবে? আর সায়েন্টিফিক নলেজ যে মানুষের উপকারেই আসবে এমন কথা তো কোথাও নাই। সেইরকম খারাপ সিচুয়েশন হইলে, দেশগুলা নিজের মত কইরা আইন কইরা বলে যে এইটা করা যাবে না। কেউ কিন্তু বলে না সায়েন্সের দোষ।

এই টপিকগুলা সিরিয়াস টপিক। এইগুলা ডিসকাস করতে একজনের আরেকজনকে রেস্পেক্ট দিয়া কথা না বললে ক্যামনে হবে। সম্ভব হইলে পারসোনাল এটাক বাদ দিয়া আলোচনা করেন। না হইলে টপিকটা গুরুত্ব হারাবে।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৫০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: স্বাগতম স্যার চিন্তার কারখানায়। সভ্য কায়দায় একটা আলোচনার সূত্রপাত করবার জন্যে শুকরিয়া জানাই।

বললেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ বিবর্তনবাদকে প্রতিষ্ঠা করা না - এইটা আপনিও জানেন , আমিও জানি বললেন। কিন্তু আমি যেটা জানি সেটা হচ্ছে, হিটলার, এবং নাজিদের মাথায় কি চলছিল, সেটা আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। ভূসম্পত্তির দখল, বিশ্বব্যাপী শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার ব্যাপারতো ছিলই, কিন্তু সেটারে লিগালাইজ করবার পেছনে কোন আদর্শ কাজ করেছে ? আর্যরক্তের গরিমাই তো, নাকি অন্য কিছু? আর্যরক্তের গরিমাকে সায়েন্টিফিকালি জাস্টিফিয়েবল সে যুগের সায়েন্সিস্টরাই করেছে কিনা? ইউভাল নোয়াহ হারারি বলেন এবং প্রমাণ দেখান, তারা সেটা করেছে। আমিও হারারির সঙ্গে একমত। আপনি একমত না হইলেও জোর করার কি আছে। আপনি আপনার মতামতের সততা নিয়া সন্তুষ্ট থাকলেই তো রাতের ঘুম সুন্দর হবে।

চার নম্বর প্রশ্নের উত্তর এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে পেলাম না। এই যে হালের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস আন্দোলন চলছে, এর সূত্র তো অনেক সুদূর অতীতে প্রোথিত, মানেন হয়তো। নিগ্রোরা যে আন্ডারডেভলাপড হিউম্যান বিয়িং, এটাও বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছিল। এখনো যে সমস্ত হোয়াইট সুপ্রিমিস্টরা কালোদের উপর নিপীড়ন চালায়, বৈষম্যসূচক আচরণ করে, তাঁদের মনে এই প্রিকনসিভড নোশন আছে যে সৃষ্টিগতভাবেই সাদারা কালারড পিপলদের থেকে সুপ্যেরিয়র।

যাই হোক, বিজ্ঞানের বা প্রযুক্তির যে নিজস্ব হাত পা মাথা নাই, চাইলে বৈজ্ঞানিক থিওরিকে প্রয়োগ করে মানবতার উপর চরমতম আঘাত হানা যায়, এবং পৃথিবীর সবচে শিক্ষিত বিজ্ঞানীরাই একসময়, ইভেন এখনো সাম্রাজ্যবাদীদের তরফ থেকে মানবতা বিধ্বংসী তথ্য, তত্ত্ব ও প্রযুক্তি ডেভলাপ করে চলেছে - এতটুকুতে একমত হইতে পারলেই ল্যাঠা চুকে যায়।

আমি বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী না, তা না। আমি বিবর্তনবাদের উপকারে বিশ্বাসী না, তাও না। কিন্তু বিবর্তনবাদের তত্ত্বটাকেই কত ভয়াবহভাবে একদা মানবতার উন্নয়নের / উপকারের নামে ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল, সে তথ্যটাকে প্রাসঙ্গিকিকরণের জরুরত আছে বলে আমি মনে করি।

১০| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:২৮

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: বিবর্তনবাদসহ বিজ্ঞানের অনেক তত্ব ও আবিষ্কারকে কেহ মানুষের মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করতে পারে আবার কেহ মানব সভ্যতা ধ্বংসেও ব্যবহার করতে পারে। হিটলার তাকে এরিয়ান ব্যাতিত অন্যান্যদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য প্রয়োগ করেছিল, কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক যুগান্তরী আবিষ্কারেও এই তত্বের প্রয়োগ হচ্ছে এবং মানব সভ্যতার কল্যানেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
ঠিক একই যুক্তি খাটে ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজতত্বের প্রয়োগের ক্ষেত্রেও। মানব জীবনে ধর্মের সুস্থ চর্চার মাধ্যমে অভাবনীয় প্রভাব ফেলে তার প্রমান সমাজের সর্বস্তরে প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান। ভারতীয় উপমহাদেশে সুফীদের আগমন ও তাদের সহজ সরল জীবনযাপনে প্রভাবান্বিত হয়ে দলিতরা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়া অথবা খ্রিস্টান মিশনারিদের দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে ফিলিপিন বা ইস্ট তিমুরের স্থানীয়দের ধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ এরই উৎকৃষ্ট প্রমান। আবার অন্য দিকে ধর্মের অপব্যবহার করে মানুষকে অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট ও নির্যাতনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত করারও প্রমানেরও অভাব নেই। ব্রুনোকে এই ধর্মঅপব্যবহার কারীদের হাতেই প্রাণ দিতে হয়েছিল, এখন হাজার হাজার নিরীহ লোকদের প্রাণ দিতে হচ্ছে আইসিস নামক এক ধর্মীয় দানবের হাতেই। আর রাজনীতি ও সমাজনীতির অপব্যবহার করে জনগণকে নিষ্পেষিত করার প্রমান তো আপনার আমার চোখের সামনেই হচ্ছে।

আপনি এক হিটলারের অপপ্রয়োগ দেখেই গোটা বিবর্তনবাদের প্রতি আতংকিত হয়ে পড়েছেন মনে হচ্ছে। তাই ডারউইনের বাংলাদেশী সর্মথকদেরও এক কাতারে ফেলে দিলেন ? ইদানিং আপনার পোস্ট ও মন্তব্যে আপনাকে অনেক আগ্রাসী ও মানসিকভাবে ডিস্টার্ব মনে হচ্ছে যা আপনার আগের পোস্টগুলোর সাথে যায় না।

যাহোক, ব্লগ হচ্ছে চিন্তাভাবনার মুক্তাঙ্গন , সেখানে আপনি আপনার মতামত স্বাধীনভাবেই লিখুন - হেপি ব্লগিং।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: স্বামীজী, বহুদিন পর আপনাকে আমার লেখার পীঠে পেয়ে ভালো লাগছে। প্রথম প্যারায় যা কিছু বললেন, তাতে আপত্তি করবার মত তো কিছু নেই।

উল্লেখ করলেন, লেখায় মন্তব্যে আমাকে ইদানীং কিছুটা আগ্রাসী, ডিস্টার্বড মনে হচ্ছে। আমারও তাই মনে হয়। এর একটা কারণ হল হয়তো এই যে, মানসিকভাবে আমি একটা ইউটোপিয়ান পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে সবার মতামতের প্রতি সবাই শ্রদ্ধাশীল। ধার্মিক - নাস্তিক - অ্যাগনষ্টিক। কিন্তু ব্লগে আমি মহা ফাঁপরে পড়ে গেছি। এখানে নাস্তিকরা এতই উগ্র নাস্তিক, যে তাঁদের উপস্থিতি যেন বিশ্বাসীদের অস্তিত্ব, আত্মমর্যাদাকে মাটির সঙ্গে পিশে মিশিয়ে দেবার জন্যেই কেবল। আবার আমরা যারা আস্তিক তারাও এতই আস্তিক, যে আমরা আমাদের নিজ ধর্মের লোকেদের খারাপ কাজের সমালোচনা করতে আগ্রহী না। খেয়াল করলে দেখবেন যে আমি ধর্ম কর্মে বিশ্বাস করে এমন ব্লগারদের পোস্টে গিয়ে মাঝে মাঝে বলি যে ভাই , হয়তো আমরা ভুল জিনিসকে ধর্মের বিজয় হিসেবে মনে করছি, আমাদের একটু রয়ে সয়ে চলা উচিৎ। এবং আরও খেয়াল করলে দেখবেন, আমি সচরাচর কোন স্বস্বীকৃত নাস্তিক - মুক্তমনার ব্লগে গিয়ে ক্যাচাল পাড়ি না। কালকেই ব্লগিয় জীবনে প্রথমবারের মত একজন স্বস্বীকৃত মুক্তমনার ব্লগে গিয়ে প্রতিবাদ করলাম, কোরআনের ব্যাকরনিক কিছু পরিবর্তন আনার পোস্টকে উনি কোরআনকে পরিবর্তন করবার প্রকল্প হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছিলেন বলে।

এছাড়াও, আমার পোস্টে বিনা প্ররোচনাতেই মাঝে মাঝে খুবই আক্রমণাত্মক/ ব্যক্তি আক্রমণাত্মক কমেন্ট আসে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করি প্ররোচনায় পা না দিতে। খেয়াল করে দেখুন, এই পোস্টেও ব্যক্তি আক্রমণ সুলভ মন্তব্য এসেছে ছ'টি। আমি উত্তর দিয়েছি দুটির। এর আগেও এদের দুজন আমাকে পকেটে রগকাটা মেশিন নিয়ে ঘুরি - বিনা প্ররোচনায়, বিনা প্রমানে এমন মন্তব্য করেছে। কেউ সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়ে বলে নি যে আপনারা বিনা প্রমাণে একজন লোকের এভাবে চরিত্রহননের চেষ্টা করতে পারেন না। যাই হোক, এরা কমবেশী সিন্ডিকেট ব্লগিং করে, এবং এদের উত্তেজক মন্তব্যের বিপরীতে আমার নীরবতা কারো কাছ থেকে প্রশংসা না পেলেও, যখন এদের কেউ কেউ সীমা ছাড়িয়ে যায়, স্রেফ তর্কে জেতার জন্যেই হলোকাস্ট / গণহত্যাকে জায়েজ করার চেষ্টা করে, আর আমি রুখে দাঁড়াই, তখন এরা দলবদ্ধভাবে মরাকান্না জুড়ে দেয়। আমারও ইমেজ খারাপ হয়।

আর বাকি রইল বিবর্তনবাদীদের নিয়ে ভয়ে থাকার প্রসঙ্গ। ভয়ে নেই আমি। একতরফা ভাবে বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারকে মানবতার বিজয় হিসেবে না দেখে বিজ্ঞানের অনেক আবিষ্কার আমাদের নিজেদের জীবন থেকেই নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক করে তুলছে, একই সঙ্গে বিজ্ঞান মানবজাতির ধংসের কাজে কীভাবে ব্যবহার করা সম্ভব - সে সমস্ত ব্যাপার নিয়ে চিন্তা ফিকির করতে আমি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করি। ব্যক্তিজীবনেও, এখানেও।

আপনি ভালো থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন, যেখানেই থাকেন।

১১| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: এবার ৪ মিনিট ৫৫। মন্দ নয়।

দেশী কিছু নাই?

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ভিন্ন কিছু দিই এবার স্যার। পণ্ডিত নিখিল ব্যানারজির সিতারে দক্ষিণী রাগ চারুকেশি। ভারতীয় ক্লাসিক্যাল মিউজিকে আমার সবচে পছন্দের রাগ। নিখিল ব্যানারজি সাহেব বাবা আলাউদ্দিন খাঁ'র শেষ বয়েসের ছাত্র ছিলেন। এইটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে রেখে আমি সাধারণত লিখি বা পড়ি - view this link

১২| ৩১ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

এভো বলেছেন: ভাই কয়েক দিন আপনি অন্য পোস্টে লিখেছিলেন ডারউইন নাকি বলেছে মানুষ নাকি বাদর থেকে হয়েছে কিন্তু এখন লিখলেন মানুষ, বাদর, শিম্পান্জী ,গরিলা সব গুলো একটা কমন এপ থেকে বিবর্তিত হয়ে আলাদা হয়েছে ।
ব্যপারটা বুঝলাম না ?
আমরা তো শুনে এসেছি ডারউইন বলেছে মানুষ বাদর থেকে হয়েছে এবং আপনি তো সেই কথাই লিখেছিলেন আগে ।

৩১ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমার মূল লেখায় অ্যানথ্রোপয়েড এইপস নামে একটা ফ্রেইজ ছিল স্যার। ঐটা বাদ দিয়ে গেলেন কেন বুঝলাম না। কষ্ট করে একটু গুগল করে অ্যানথ্রোপয়েড এইপসের ক্লাসিফিকেশনগুলো দেখেন। হালের হোমো স্যাপিয়েন্স এদের সাথে একই জিন শেয়ার করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.