নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ূননামা

১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০২

১.
হুমায়ূন আহমেদের মূল প্রতিভা বাংলাদেশের মানুষদের আবেগের জায়গাগুলি ঠিকঠাক লোকেট করতে পারা, এবং তাতে যথাযথ চাড় দেয়া। আবেগী তরুণ বাঙ্গালীদের সবাই ই জোছনাবিলাসী, সবারই মনের খাহেশ জোছনারাতে ঘর ছেড়ে বিবাগি হয়ে যাওয়া। সব তরুণই চায় - তার সবচে পছন্দের যে মানুষটি, সে তাকে যেচে এসে 'রূপা'র মত ভালোবাসা নিবেদন করবে, আর সে হিমুর মত অতিপ্রাকৃত ক্ষমতায় তাকে ভালোবাসা - না বাসার মাঝামাঝি একটা জায়গায় ঝুলায়ে রাখবে। একইভাবে, তরুণীরাও নীল শাড়ি পরে - জোছনারাতে তাঁদের রুমের বারান্দা বা জানালায় গিয়ে দাঁড়ায় তাঁদের হিমুর অপেক্ষায়। হুমায়ূন আহমেদ আমাদের প্রেম করা শিখিয়েছেন। বাঙ্গালী রমণীর 'নাইট ইন শাইনিং আর্মর' -এর পোশাক বদলায়ে তার গায়ে চাপিয়েছেন হলুদ পাঞ্জাবী। তাকে হাঁটিয়েছেন খালি পায়ে। বাঙালীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের এই যে একান্ত নিজস্ব একটা ভাষা তৈরি করেছেন তিনি - এর ক্রেডিট তাকে দিতেই হবে।
.
২.
হুমায়ূন আহমেদের মূল ক্ষমতা, লেখক হিসেব - চরিত্র নির্মাণ, আর সংলাপ রচনা। হিমুর কথা আগেই বললাম। মিসির আলী প্রসঙ্গে দুটো কথা বলি। মিসির আলী তুখোড় মনোবিজ্ঞানী, সঙ্গে সঙ্গে দারুণ আবেগী মানুষ। জেন ফিলসফারদের মত শীতল মস্তিষ্কে যুক্তির চাষাবাদ করে একএকটা সমস্যার জট খোলেন, আবার সহচরিত্রের দুঃখ কষ্টে তাকে আলোড়িত হতে দেখা যায় দারুণভাবে। সময়ে অসময়ে ভিজে ওঠে তার চোখ। বিজ্ঞান মিসির আলীর চিন্তায় বেগের অতিরিক্ত সঞ্চার যেমন ঘটায় নি, একই সঙ্গে ছিনিয়ে নেয় নি তার আবেগও।
হুমায়ূনএর ক্যাচি, আহ্লাদি, ঈষৎ রহস্যের অবগুণ্ঠনে ঢাকা ডায়লগের ব্যাবহার তার নায়িকাদের প্রেমে পড়তে আমাদের বাধ্য করে। প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, বেকার প্রেমিক শূন্য পকেটে হেঁটে বেড়াচ্ছে ঢাকা শহরের সড়কপথে, অলিতে গলিতে - এইরকম স্যাড প্লট, আর ছ্যাঁক খাওয়া চরিত্রের সঙ্গে ইন্সট্যান্ট কানেক্ট করতে পারবে, বাংলার মাটিতে এরকম প্রেমিকপুরুষশুমারি করলে আজকেই মিনিমাম পঞ্চাশ লাখ পাবেন।
.
৩.
হুমায়ূন আহমেদের মূল প্যারাডক্স হইল, তার লেখার প্লট পরে আর মাথায় থাকে না। আমি পরিণত বয়সেও গভীর রাতে তার উপন্যাস পড়তে পড়তে চোখের পানি ফেলসি। আবার সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে আসলেই মনে করতে পারি নাই, উপন্যাসের প্লট ছিল কি।
.
৪.
হুমায়ূন আহমেদকে আমরা, যারা সাহিত্যের নাক উঁচা পাঠক, তারা কেন পছন্দ করি না, সেটা ভেঙ্গে বলি। কারন আমরা জানি, আমাদের পক্ষে হুমায়ূন আহমেদ হওয়া সম্ভব না। চেষ্টা করলে একজন বুদ্ধিবৃত্তিক লেখক হওয়া সম্ভব। কোদাল দিয়ে মাটি কোপানোর মত ধৈর্য নিয়ে, দিনের পর দিন কাগজ কলম হাতে বসে থাকলে একদিন না একদিন ইলিয়াসের খোয়াবনামা, আজিজুল হকের আগুনপাখি, অথবা শহিদুল জহিরের জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতার কাছাকাছি একটা কিছু লেখা সম্ভব। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের মত লেখা সম্ভব না। ইন্টেলেকচুয়াল হওয়া যায়। স্পন্টানিয়াস হওয়া যায় না। লেখালিখিতে স্পন্টানিয়াস আরও হওয়া যায় না, যদি না ঈশ্বরপ্রদত্ত মেধা থাকে। কবিগুরু তো সাধে বলেন নাই - সহজ কথা কইতে আমায় কহো যে, সহজ কথা যায় না বলা সহজে।
.
৫.
একজন লেখক হয়েও হুমায়ূন আহমেদ যে ক্রেজটা বাংলার মাটিতে সৃষ্টি করসিলেন, এটা অকল্পনীয়। সৈয়দ হক সাহেব জীবদ্দশায় তো হুমায়ূন আহমেদকে কম অপছন্দ করেন নাই। সুযোগ পাইলেই খোঁচা মারসেন এই বলে যে - আপনি গুনে গুনে পাঁচ ফর্মাতেই বই কীভাবে শেষ করেন হুমায়ূন? (হুমায়ূন আহমেদো বুদ্ধিদীপ্তভাবে উত্তর করতেন - যেভাবে আপনারা চৌদ্দ লাইনে সনেট লেখেন, সেইভাবে)। হুমায়ূন আহমেদের লাশ যখন শহীদ মিনারে আনা হয়, মূলমঞ্চে তার কফিনে কাঁধ দিতে নিজে থেকেই আগিয়ে গিয়েছিলেন সৈয়দ হক। মরেও জিতলেন হুমায়ূন।
.
৬.
হুমায়ূন আহমেদের মত কেউ লেখার চেষ্টা কইরেন না, এটা বলেই আমার হুমায়ূন আহমেদের জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলী শেষ করি। হুমায়ূন আহমেদের মত লেখা সম্ভব না। আর যদি পারেনও, লাভ নাই। লোকে দিনের শেষে হুমায়ূনের লেখাই পড়বে। তার জেরক্স কপির না।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রিয় লেখকের জন্মদিনে একরাশ প্রীতি ও শুভেচ্ছা

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ ভাই।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৩

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনে জানাই অন্তরের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
অল্প কথায় এক্কেবারে নির্যাস তুলে ধরেছেন।
ব্যক্তি বিশেষে মতামত সামান্য হেরফের হতেই পারে। আইটেম নাম্বার তিনে- প্লট মনে রাখা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছি। বাকি সর্বক্ষেত্রে সহমত আপনার সঙ্গে।বলা যেতে পারে হুমায়ূন আহমেদকে গুলে না খেলে এমন লেখা সম্ভব নয়।++
পোস্টে প্রথম লাইক।

শুভেচ্ছা জানবেন।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার জন্যেও শুভেচ্ছা।

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি তো হুমায়ুন আহমদের লেখার মুল বিষয়গুলো বুঝে ফেলেছেন, আপনি উনার মতো চেষ্টা করবেন?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: না। আমি আমার মত লিখি। মানুষ আমাকে আমার নামেই মনে রাখবে।

৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:৫৭

স্থিতধী বলেছেন: তিন নং পয়েন্টে আপনি যে প্যারাডক্স টির কথা বললেন, আমার কাছে সেটার ব্যাখ্যা হচ্ছে হূমায়ুন আহমেদের বেশীরভাগ উপন্যাসের একটি ক্ষণস্থায়ী গীতিগল্প টাইপ বৈশিষ্ট্য। এমন অনেক গান থাকে যা মানুষ হয়তো গভীর রাতে শুনে চোখের পানি ফেললেও সকালে উঠে ঠিক মনে করতে পারেনা যে রাতে ঐ গানটা শুনেছিলো বা এমনকি কেঁদেওছিলো কিনা । তাঁর সেই জাতীয় উপন্যাসগুলোর সমালোচক একজন নাম দিয়েছিলো “ অপন্যাস” হিসেবে। বাঙ্গালীর অন্তরে অমন কিছুর প্রতি সহজাত ভালো লাগার বিষয়টিকে খুব সুন্দর করে এক প্রবন্ধে লিখেছিলেন ডঃ আহমেদ শরীফ , লেখার অংশটুকু এরুপ;
“ বাঙালী ভাবপ্রবণ ও কল্পনাপ্রিয়। উচ্ছ্বাস ও উত্তেজনাতেই এর প্রকাশ । তাই বাঙালী যখন কাঁদে তখন কেঁদে ভাসায়। আর যখন হাসে, তখন সে দাঁত বের করে হাসে । যখন উত্তেজিত হয়, তখন আগুন জ্বালায় । তার সবকিছুতেই মাত্রাতিরিক্ত । তার অনুভূতি- ফলে অভিভূতি – গভীর । কেঁদে ভাসানো, হেসে লুটানো আর আগুন জ্বালানো আছে বটে, কিন্তু কোনটাই দীর্ঘস্থায়ী নয় – যেহেতু উচ্ছ্বাস-উত্তেজনা মাত্রই তাৎক্ষণিক ও ক্ষণজীবী । বাঙালীর গীতিপ্রাণতার উৎস এখানেই ।“

হুমায়ূন আহমেদ ঘোড় ভক্তরা তাকে ভালোবাসেন সম্বভত একারনে যে হুমায়ূন তাঁদের জীবনযাত্রার আবেগী মোড় গুলোকে স্পর্শ করতে পেরেছেন, তাঁদের কাঁদাতে পেরেছেন । আমি তাঁর একান্ত ভক্ত পাঠক না হবার কারনে, তাঁর বই পড়ে কখনো কাঁদিনি, কিছু কাহিনীতে একটু মন খারাপ হয়েছে হয়তো । কোন ফিকশন পড়ে আমি এখন পর্যন্ত দুবার কেঁদেছি, একবার ভিক্টর হুগোর ক্লাসিক “লা মিজারেবল” এ, আরেকবার সঞ্জীব চট্টপাধ্যেয়ের “ইতি পলাশ” এ; দুটো বই এ আমি মাত্র একবারই পড়েছি, তবু প্লট মনে গেঁথে গেছে। লেখক হুমায়ূন আমাকে তবু টানতো কারন তিনি আমাকে হাসাতে পেরেছেন অনেক । আমি হিমু কখনোই কোন রোমান্টিকতার জন্য পড়িনি। হিমু আমার বেশী ভালো লাগতো হিমুর গল্পের ভেতরকার হাসির এলিমেন্ট গুলোর কারনে, বিশেষত, সংলাপ চালাচালিতে । যেমনটা আপনি বলেছেন, সংলাপ রচনা করা তাঁর অন্যতম সাহিত্যিক শক্তি ছিলো । যেমন হিমু চরিত্রটির ইন্সপায়রেশন খুবি সম্ভব সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের “নীললোহিত” ছদ্দনামে লেখা নীলু নামক চরিত্রটি । নীলুও ৭০- ৮০ দশকের কলকাতার এক বেকার যুবক, সেও কেবল এদিক ওদিক ঘুড়ে বেড়ায় আর বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিভিন্ন আত্মীয়, বন্ধু বান্ধব, চেনা জানাদের সাথে হুট হাট দেখা করতে যায়, তাঁদের জীবনের কাহিনীর ভেতরে জড়িয়ে যায়। সেও বেশ রসিক, হাস্য রসের অনেক মুহূর্ত তৈরি করে বেদনার সাথে। তবে মূল পার্থক্য সে হিমুর মতো এক্সসেন্ট্রিক নয়, সে জুতা পায়েই ঘুড়ে বেরায় আর তাঁর প্যান্টে শার্টে পকেটও থাকে । হিমু যে ভঙ্গিতে খুব ক্ষমতাধর কোন ব্যাক্তির সামনে বসে থেকে অত্যন্ত সিলি কিছু প্রশ্ন করে তাঁদের বিব্রত করে দিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করতে পরে ওমন করে নীলুকে তেমন দেখা যায়না। ফলে হিমু আর হিমুর মতো তাঁর অন্যান্য গল্পের আরো কিছু হিঊমারাস চরিত্রের সংলাপ বাজি আমার মূল আকর্ষণ থাকতো তাঁর লেখাতে । ব্যাক্তিজীবনেও হুমায়ূন আহমেদ প্রছন্ড রসিক এবং প্র্যাঙ্কস্টার ছিলেন সেটা তাঁর সাথে দেখা সাক্ষ্যাত থাকা মানুষের কাছে শুনেছি । আমি তাঁর স্মৃতিচারণ মূলক লেখাগুলোর বেশী সমাদর করেছি তাঁর অন্য যেকোন লেখার চাই তে; যেমন তাঁর “ আমার ছেলেবেলা” নামের বইটি অত্যন্ত সুখপাঠ্য লেগেছে নানা আঙ্গিক থেকেই। অন্যদিকে বাংলাদেশের লেখকদের মধ্যে “ ভয়” নামক আবেগটিকে তিনি ই সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে পেরেছেন। ফলে প্যারাসাইকোলজি সহ তাঁর অন্যান্য ভৌতিক গল্পগুলো বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অবশ্যই ।

চার নং পয়েন্টে হুমায়ূন আহমেদের যে স্পন্টেনিয়াস রাইটিং এর কথা বলছেন সেটার জন্য তাঁর যৌক্তিক সমালোচনাও তো কম নয় । এই সমালোচকদের মধ্যে তাঁকে লেখক হিসেবে তৈরি করার অন্যতম কারিগর তাঁর পিতাও রয়েছেন; ‘আমার ছেলেবেলায়’ সেটার উল্লেখ আছে । তিনি যখন সত্যিই তাঁর লেখক সত্ত্বাকে শ্রদ্ধা করে লিখতে বসেছেন তখন তিনি আমাদের উপহার দিতে পেরেছেন মধ্যাহ্ন , বাদশাহ নামদার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো কিছু উপন্যাস । অন্যদিকে প্রকাশকদের লোভের ক্রমাগত তাগাদায় বা নিজে একান্তই বাণিজ্যিক চিন্তায় লেখা তাঁর অনেক স্পন্টেনিয়াস রাইটিং আমাদের দিয়েছে ‘ কুটু মিয়ার’ মতো অখাদ্য অথবা রাতে পড়ে দিনে ভুলে যাবার মতো অনেক উপন্যাস। এটা ভালো লাগে দেখে যে তিনি নিজে এই অভিযোগগুলো কখনো একদম নাকচ করে দেন নি বরং ক্ষেত্রবিশেষে স্বীকারও করেছেন কিছু স্মৃতিচারণ বা ইন্টারভিউতে । যেমন শক্তিমান অভিনেতা আবুল খায়ের তাঁর উপর একবার রাগান্বিত হয়েছিলেন নাটক সংশ্লিষ্ট এমনি কিছু একটা বিষয়ে । হুমায়ূন আহমেদ আবুল খায়ের কে তাঁর নিজ বাড়িতে নিয়ে যান এবং দেখান যে একটা বড় রঙিন টেলেভিশন দেখে তাঁর মেয়েরা কত খুশি। তিনি জানান যে হ্যাঁ, ইচ্ছা করেই তিনি ধারাবাহিক নাটকটির আরো তিন- চার পর্বের মতো লিখে সেটা আরো লম্বা করেছেন যাতে পর্ব প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক বেশী আসে যা দিয়ে তিনি এই দামী টিভি সেট কিনতে পারবেন । আবুল খায়ের তাঁকে ক্ষমা করে দেন। এখন কনজিউমারিজমের যুগে এসে কোন লেখক যদি তাঁর লেখার মেধাকে সেন্ট মারটিনে বাড়ি বা গাজীপুরে আরেকটি বিশাল বাগান বাড়ী বা ধানমণ্ডিতে দুটো ফ্ল্যাট কেনার জন্য ব্যাবহার করতে চান তাহলে সেটার জন্য আমরা যেমন তাঁকে খুব বেশী দায়ী করতে পারিনা ঠিক একইভাবে কিছু বিদগ্ধ পাঠক ও লেখকরা যদি মনে করেন যে এই মেধাবী লেখকটি তাঁর লেখনীর সক্ষমতাটি আরো কিছু উঁচু মান সম্পন্ন লেখা উপহার দিয়ে পাঠকদের পঠন রুচি ও সাহিত্যঅঙ্গনকে আরো পুষ্ট করতেই পারতেন তবে তাঁদের সেই সমালোচনা বা অনুযোগ টুকুও অগ্রহণযোগ্য নয় । সেকারনেই হয়তো পেশাদারি / সাহিত্যিকের জায়গা থেকে কিছু প্রয়োজনীয় টাসলিং করলেও ব্যক্তিগত পর্যায়তে গিয়ে এমনকি মৃত্যুর পরেও কোন রকম রেষারেষি বজায় রাখার মতো রুচি শামসুল হক বা হুমায়ূন আজাদেরা দেখান নি যেটা কিনা হুমায়ূন আহমেদ নিজেও করতে যেতেন না । মৃত্যুর পরেও যদি অমন কিছু কেঊ পুষে রাখতো তবে তাঁদের সকলের সাহিত্যিক সত্ত্বাটি নিয়েই প্রশ্ন থাকতো ।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: বিস্তারিত মন্তব্যে ধন্যবাদ। এ মন্তব্যটা একটা আলাদা পোস্ট হতে পারতো।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদকে আমি আমার ওস্তাদ মনে করি।
একজন গ্রেট ম্যান। যাদুকর।
বাংলাদেশে তার মতো লেখক নাট্যকার নাই।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: শুকরিয়া রাজীব ভাই! ভালো আছেন আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.