নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই পৃথিবী আমাদের সকলের

আমার সম্পর্কে বলার মতো কিছু নেই।

সৈয়দ আমিরুজ্জামান্

প্রাবন্ধিক, লেখক

সৈয়দ আমিরুজ্জামান্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্গা চাষ সংক্রান্ত আইন

০৩ রা আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০২

বর্গা চাষ সংক্রান্ত আইন

বর্গা চাষ কি?

কোনো ব্যক্তি যখন কোনো জমির মূল মালিকের নিকট হতে কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঐ জমি হতে ফসলের ভাগ দেবার শর্তে জমি চাষাবাদ করে তখন ঐ ধরনের চাষাবাদকে বর্গা চাষ বলে।

( ১৯৮৪ সালের ভুমি সংস্কার অধ্যাদেশ মতে )

বর্গা চাষ সংক্রান্ত অধিকার:

বর্গাদারের সাথে জমির মালিকের বর্গাচাষ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদনের অধিকার এবং চুক্তির ব্যাপারে একমত হওয়ার পর চুক্তি সম্পাদনের জন্য সময় পাবার অধিকার। (১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(১) ধারা)

জমি বর্গা দেওয়ার অধিকার এবং বর্গা চাষ করার অধিকার (১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৮(১) ধারা)

বর্গা জমি হতে উত্পন্ন ফসলের ভাগ পাবার অধিকার।(১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১২ ধারা)

বর্গাকৃত জমিটি নির্ধারিত সময়ের জন্য ভোগ দখলের অধিকার।{১ঌ৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৮(২)ধারা}

চুক্তি সম্পাদন নিয়ে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার অধিকার ।{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(৩) ধারা}

বর্গাদার কোনো বর্গাচুক্তির কোনো শর্ত লংঘন করলে জমির মালিক কর্তৃক জমি ফিরিয়ে নেয়ার অধিকার।{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১১ ধারা}

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ব্যক্তি যদি বর্গাজমির ফসল বিক্রির করার দায়িত্ব নিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বর্গাদারের রশিদ পাবার অধিকার।{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১২(৮) ধারা}

বর্গা জমিটি যদি জমির মালিক বিক্রির ইচ্ছা পোষণ করে সেক্ষেত্রে জমিটি ক্রয়ের জন্য বর্গাদারের অধিকার ৷ {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১৩) ধারা}

নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি বর্গা নেয়ার অধিকার। {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১৪ধারা}

বর্গা জমির উত্‌পন্ন ফসল গোলাজাত করার জন্য জমির মালিক ও বর্গাদারের মধ্যে আলোচনার অধিকার। {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১২(২) ধারা}

গোলাজাত সংক্রান্ত ব্যাপারে মনিব ও বর্গাদারের মধ্যে আপোষ মীমাংসা না হলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করার অধিকার ৷

নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট আপিলের অধিকার

{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১৭(২)ধারা}

লঙ্ঘন:

চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে একমত হওয়ার পর চুক্তি সম্পাদনের জন্য সময় না পাওয়া ৷

জমি বর্গা দেওয়ার পর বর্গা জমি চাষ করতে না দেওয়া ৷

বর্গা জমি হতে উত্‌পন্ন ফসলের ভাগ না দেওয়া ৷

বর্গাকৃত জমিটি নির্ধারিত সময়ের জন্য ভোগ দখল করতে না দেওয়া ৷

চুক্তি সম্পাদন নিয়ে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে বাধা দেওয়া ৷

বর্গাদার কোনো বর্গাচুক্তির কোন শর্ত লংঘন করলে জমির মালিককে বর্গা জমি ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করা ৷

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ব্যক্তি যদি বর্গাজমির ফসল বিক্রির করার দায়িত্ব নিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বর্গাদারকে রশিদ প্রদান না করা ৷

বর্গা জমিটি যদি জমির বিক্রির ইচ্ছা পোষণ করে সেক্ষেত্রে জমিটি ক্রয়ের জন্য বর্গাদারকে সুযোগ না দেওয়া ৷

বর্গা জমির উত্‌পন্ন ফসল গোলাজাত করার জন্য জমির মালিক ও বর্গাদারের মধ্যে আলোচনা না করা ৷

প্রতিকার:

বর্গা জমি কিংবা বর্গা জমির চাষ সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে কোন সমস্যার সৃষ্টি হলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট যোগাযোগ করতে হবে ৷

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোন আদেশের ফলে যদি কোন ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হন তাহলে তিনি আপিল করতে পারবেন ৷

কোথায় আপিল করতে হবে?

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট ।

কতদিনের মধ্যে?

সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে৷

বর্গাদার: ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ২(ক) ধারায় বর্গাদার বলতে যে ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তির জমি আধি বা বর্গা বা ভাগ বলে সাধারণভাবে পরিচিত পদ্ধতিতে এই শর্তে জমি চাষ করেন যে ঐ জমির উত্‌পন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে দিবেন সেই জমি চাষকারী ব্যক্তিকে বর্গাদার বলে ৷

মালিক: ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ২(চ) ধারায় মালিক বলতে কৃষি জমির অধিকারী কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষকে বুঝায়৷

মনিব: ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ২(ছ) ধারায় মনির বলতে কোন বর্গাজমি চাষের উদ্দেশ্যে যার নিকট হতে বর্গাদার চুক্তির মাধ্যমে লাভ করে তাকেই বুঝায়৷

বর্গাচুক্তি সম্পাদন প্রক্রিয়া:

১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৮(১) ধারায় বলা হয়েছে জমির মালিক ও বর্গাচাষী জমি হতে উত্‌পন্ন ফসল ভাগ করে নেয়ার শর্তে একটি লিখিত চুক্তি পত্রে আবদ্ধ হবেন ৷

উক্ত বর্গা চুক্তি ঐ বর্গা চুক্তিতে যে তারিখ হতে কার্যকর হওয়ার কথা নির্দিষ্ট করা থাকবে, সেই তারিখ হতে আরম্ভ হয়ে ৫ বছর মেয়াদের জন্য বৈধ থাকবে ৷ {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৮(২) ধারা}

উক্ত বর্গা চুক্তি পত্রটি ১৫০ টাকা মূল্যের নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের উপর মনিব, বর্গাকার ও নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ (সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যাকে নিযুক্ত করা হবে) প্রত্যেকের জন্য একটি করে তিন প্রস্থে সম্পাদিত হবে ৷

বর্গাচাষী ও মালিক যখন বর্গাচাষের ব্যাপারে একমত হবেন সেই একমত হওয়ার দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে একটি বর্গাচুক্তি সম্পাদন করতে হবে ৷{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(১) ধারা}

যদি পক্ষগণ একমত হওয়ার তারিখ হতে ৯০ দিনের মধ্যে বর্গাচুক্তি সম্পাদন করতে ব্যর্থ হন তাহলে তাদের মধ্যে যে কোনো একজন চুক্তি সম্পাদন করার জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পেশ করতে পারবেন।

(১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(৩) ধারা}

যদি কোনো পক্ষ চুক্তি সম্পাদন করার জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন তাহলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত আবেদনের ভিত্তিতে যদি বর্গাচুক্তির সম্পাদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তাহলে অপর পক্ষকে নির্দেশ গ্রহণের তারিখ হতে ২ সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করবার নির্দেশ প্রদান করবেন৷ যদি অপর পক্ষ নির্দেশ পাবার পরও চুক্তি সম্পাদন করতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত অপর পক্ষের হয়ে চুক্তিটি সম্পাদন করবেন ৷ {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(৫) ধারা}

নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষের হয়ে বর্গাচুক্তি সম্পাদন করে থাকলেও উক্ত বর্গাচুক্তিটি চুক্তির তারিখ হতে ৫ বছরের জন্য মেয়াদ বৈধ থাকবে ৷ {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ৯(৬) ধারা}

বর্গাদারের মৃত্যুর পর বর্গা জমির চাষ পদ্ধতি:

যে ক্ষেত্রে কোনো বর্গাদার বর্গাচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই মারা যান সেক্ষেত্রে বর্গাচুক্তির মেয়াদ অবসান না হওয়া পর্যন্ত মৃত বর্গাদারের পরিবারের জীবিত সদস্যগণ বর্গা জমির চাষ অব্যাহত রাখতে পারেন ৷

যে ক্ষেত্রে বর্গাদার তার পরিবারের উক্ত জমি চাষ করবার মত অবস্থায় কোনো ব্যক্তিকে না রেখে মারা যান,সেক্ষেত্রে জমির মনিব বা জমির মালিক জমি ব্যক্তিগত চাষের অধীনে আনতে পারেন অথবা অন্য কোনো বর্গাদারকে উক্ত জমি চাষের অনুমোদন দিতে পারেন ৷ {১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১০ ধারা}

বর্গাচুক্তির অবসান:

বর্গাদার কোনো যুক্তি সঙ্গত কারণ ছাড়া যদি বর্গাজমি চাষ করতে ব্যর্থ হন৷

বর্গাদার কোনো যুক্তি সঙ্গত কারণ ছাড়া যদি সংশ্লিষ্ট একই এলাকায় অবস্থিত বর্গাজমির অনুরূপ কোনো জমিতে যে পরিমাণ শষ্য উত্‌পন্ন হওয়া স্বাভাবিক সেই পরিমাণ শষ্য উত্‌পন্ন করতে ব্যর্থ হন৷

বর্গাদার যদি বর্গাজমিটি সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে কৃষি ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন৷

বর্গাদার যদি স্বেচ্ছায় বর্গাজমিতে চাষের অধিকার পরিত্যাগ করেন তাহলেও বর্গা চুক্তির অবসান ঘটবে৷

বর্গাজমিটি যদি বর্গাদার নিজে চাষ না করে অন্য কোন ব্যক্তিকে চাষ করতে দেন সেক্ষেত্রেও বর্গাচুক্তির অবসান ঘটবে৷

বর্গাজমিটি যদি বর্গাজমির মালিকের বা মনিবের ব্যক্তিগত চাষের জন্য বা ব্যবহারের জন্য প্রকৃত পক্ষে বিশেষ প্রয়োজন হয়৷

বর্গাদার যদি ১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের কোন বিধি বিধান লংঘন করেন৷(১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১১ ধারায় বর্গাচুক্তির অবসানের বিধানাবলীর কথা বলা হয়েছে৷)

উল্লেখ্য যে, যদি কোনো বর্গা জমির মালিক বর্গাচুক্তির অবসান ঘটিয়ে তার ব্যক্তিগত চাষের জন্য জমিটি ব্যবহার না করে ২৪ মাসের মধ্যে অন্য কাউকে বর্গা দেন তাহলে পূর্ববর্তী বর্গাদার নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ নতুন বর্গাদার দখল উচ্ছেদ করে মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পূর্ববর্তী বর্গা গ্রহণকারী বর্গাদারের দখলে বহাল রাখার নির্দেশ দিবেন৷

[১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১৯(২) ধারা]

বর্গা জমির উত্‍পন্ন ফসলের ভাগ এবং ফসলের ভাগ সংক্রান্ত বিষয়ে যা যা করণীয়:

বর্গা জমিটি চাষ করার জন্য চাষের ব্যয় ভার যে বহন করবে সে অবশিষ্ট ১/৩ অংশ ফসলের ভাগ পাবে অথবা যদি উভয় পক্ষই চাষের ব্যয়ভার বহন করে তাহলে অবশিষ্ট ১/৩ অংশ উত্‌পন্ন ফসলের ভাগ ব্যয়ভারের আনুপাতিক হারে পাবে ৷ (১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ এর ১২ ( ১ ) ধারা)

অত্র ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে বর্গাজমির হতে উত্‌পন্ন ফসল বর্গাজমির থেকে নিকটবর্তী (মনিব/বর্গাদারের) কোন স্থানে অথবা উভয় পক্ষ সম্মত হয়ে যে কোনো স্থানে মাড়াই করার জন্য ও গোলাজাত করার জন্য উঠানো যাবে ৷

শষ্য মাড়াই ও গোলাজাত হবার পর মনিব এবং বর্গাদার উভয়েই যার যার অংশ গ্রহণ করে নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করে একে অপরকে রশিদ প্রদান করবে ৷

যদি মালিক তার নির্ধারিত প্রাপ্য ফসলের ভাগ গ্রহণ করতে কিংবা রশিদ প্রদান করতে অস্বীকার করে তাহলে বর্গাদার উক্ত ঘটনা লিখিতভাবে নির্ধাᐂরিত কর্তৃপক্ষকে জানাবেন ৷

নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ জমির মালিকের প্রতি নোটিশ জারি করে ৭ দিনের মধ্যে উক্ত ফসল গ্রহণ করতে বলবেন৷

যদি মনিব নোটিশ জারির তারিখ থেকে ৭ দিনের মধ্যে উত্‍‌পন্ন ফসলের অংশ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হন তাহলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বর্গাদারকে উক্ত উত্‍পন্ন ফসল যে কোনো সরকারী ক্রয় এজেন্সির নিকট অথবা অনুরূপ এজেন্সির অনুপস্থিতিতে স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করতে অনুমতি দিবেন ৷

যদি বর্গাদার উত্‍পন্ন ফসল বিক্রি করেন তাহলে উক্ত বিক্রয়ের তারিখ হতে ৭ দিনের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট বিক্রয়লব্ধ অর্থ/টাকা জমা দিবেন ৷

নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত টাকা গ্রহণ করে বর্গাদারকে একটি রশিদ প্রদান করে বর্গাদারকে উত্‍পন্ন ফসলের অংশ মনিবের নিকট অর্পনের বাধ্যতা হতে মুক্ত করবেন ৷

উক্ত অর্থ বা জমাকৃত টাকার ব্যাপারে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে মনিবকে অবগত করাবেন ৷

যদি মনিব অনুরূপ জমাকৃত টাকা সম্পর্কে অবগত হওয়ার তারিখ হতে ১ মাসের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট হতে উক্ত জমাকৃত অর্থ গ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত টাকা সরকারী কোষাগারে রাজস্ব জমা খাতে মনিবের অনুকুলে জমা করবেন এবং মনিবকে অবগত করবেন ৷

বর্গাদারের ক্রয়াধিকার:

যদি কোনো বর্গাজমির মনিব তার বর্গাজমি বিক্রি করার ইচ্ছা পোষন করেন সেক্ষেত্রে তিনি বর্গাদারকে লিখিত ভাবে জানাবেন যে তিনি (বর্গাদার) উক্ত জমি ক্রয় করতে ইচ্ছুক কিনা:

তবে মনিব যদি তার কোনো সহ শরিক বা পিতা, মাতা, স্ত্রী পুত্র কন্যা বা পৌত্রের নিকট বা তার পরিবারের অপর কোনো সদস্যের নিকট জমিটি বিক্রি করেন সেক্ষেত্রে বর্গাদারকে জমি বিক্রি করার ব্যাপারে অবগত করার প্রয়োজন নাই।

বর্গাদারকে উক্ত প্রস্তাব গ্রহণের তারিখ হতে ১৫ দিনের মধ্যে জমি ক্রয় করা বা না করার ব্যাপারে লিখিত সিদ্ধান্ত মনিবের নিকট পাঠিয়ে দিতে হবে।

যদি বর্গাদার উক্ত জমিটি ক্রয় করতে চান তাহলে জমির দাম ঠিক করে জমিটি ক্রয় করবেন।

যদি বর্গাদার জমি ক্রয়ের ব্যাপারে কোন (হ্যাঁ বা না) উত্তর প্রদান না করেন কিংবা মনিবের চাহিদা মত দাম দিতে রাজী না হন সেক্ষেত্রে মনিব তার পছন্দ ব্যক্তির নিকট জমিটি বিক্রয় করতে পারবেন।

তবে শর্ত থাকে যে বর্গাজমিটির জন্য বর্গাকার যে দাম বলেছিল সেই দামের চেয়ে কম দামে মনিব/মালিক জমিটি অন্য কোথাও বিক্রি করতে পারবেন না।

যে ক্ষেত্রে বর্গাদার ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বর্গাজমিটি ক্রয় করেন সেক্ষেত্রে উক্ত জমি সংক্রান্ত বর্গাচুক্তিটি ক্রেতার উপর বাধ্যতামূলক হবে যেন ক্রেতাই উক্ত বর্গা চুক্তির একজন পক্ষ ছিলেন।

{১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ১৩ ধারা}

জমি বর্গা নেয়ার সীমাবদ্ধতা:

কোন বর্গাদারই ১৫ বিঘার বেশী জমি বর্গাচাষের জন্য গ্রহণ করতে পারবেন না।

(১৯৮৪ সালের ভূমি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ১৪ ধারা)

চাষ কার্যে বাধা নিষেধ:

বর্গা চাষের সংগে জরিত ব্যক্তি বর্গাচুক্তির অধীনে চাকুরে বা শ্রমিক হিসাবে জমি চাষ করবেন৷

যদি কোনো ব্যক্তি এই ধারার নিয়মাবলী লংঘন করে জমি চাষ করেন তাহলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উত্‍পন্ন ফসল বাধ্যতামূলক ভাবে সংগ্রহ করতে পারবেন৷

(১৯৮৪ সালের ভূমি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ১৫ ধারা)

বিরোধীয় বিষয় ও মীমাংসা:

কোনো কারণে জমির উত্‍পন্ন ফসলের বিভাজন, বর্গাচুক্তির অবসান অথবা উত্‍পন্ন ফসলের গোলাজাত করন ও মাড়াইয়ের স্থান নির্ধারণ ইত্যাদি নিয়ে মনিব এবং বর্গাদারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হতে পারে সেই বিরোধ নিরসনের জন্য বিরোধ সৃষ্টির দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে হবে ৷ তারপর বিরোধ নিষ্পত্তির দরখাস্তের ভিত্তিতে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উভয় পক্ষকে শুনানীর জন্য সুযোগ দিয়ে সাক্ষ্য উপস্থাপন সহ প্রয়োজন তদন্ত করে দরখাস্ত গ্রহণের তারিখ হতে ৩ মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন ৷

( ১৯৮৪ সালের ভূমি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ১৬ ধারা )

নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নাহলে প্রতিকার:

১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের কোনো বিধানের অধীনে যদি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশ, সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে কোনো ব্যক্তি সন্তুষ্ট না হন তাহলে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি উক্ত আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। (১৯৮৪ সালের ভূমি সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ১৭(২) ধারা)

কতদিনের মধ্যে?

আদেশ প্রদানের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে।

কোথায় আপীল করতে হবে?

সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট।

তবে উল্লেখ্য যে, নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্তে বলে গন্য হবে।

বিধান লংঘনের শাস্তি:

যদি কোনো ব্যক্তি এই অধ্যাদেশের কোনো বিধিমালার অধীনে কোনো কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত কোনো আদেশ লংঘন করেন তাহলে তিনি জরিমানা সহ শাস্তি যোগ্য অপরাধী বলে বিবেচিত হবেন যার পরিমাণ ২০০০/= টাকা পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে।

(১৯৮৪ সালের ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশের ২১ ধারা)





মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.