নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাস্তব এবং সাধারন মানুষ আমার লিখার জীবন। এখানে রানা নামের একজন অতি সাধারন ব্যক্তির দৈনিক জীবন এবং তার দৃষ্টিতে সমাজের বর্তমান অবস্থা এবং এর প্রভাব তার নিজের ভাষায় প্রকাশ করা হবে।

আমি রানা

আমি বিশেষ কেউ বা কিছু না। যা মনে আসে যেভাবে মনে আসে তাই লিখি।

আমি রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প- শিক্ষকের খোজেঁ।

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:৫৯

” নিজেকে চেন , নিজেকে জানো। নিজেকে খুঁজে পেয়েছত পেয়েছ জগৎ ঈশ্বর ” যখন থেকে এই কথা শুনতে পারলাম তখন আমার ইচ্ছা হলো দেখিনা একবার নিজের খোঁজ নিয়ে। চারপাশেতো জ্ঞানী গুনীর অভাব নাই। কেউ না কেউ তো আমাকে আমার খোঁজ অবশ্যয় দিতে পারবে। তাই যতটুকুই বিদ্যাশিক্ষা নিয়েছি অতটুকুতে ইস্তফা দিয়ে, বাবা-মা কে দু-চারটে নীতি কথা শুনিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম।
বহু নাটক সিনেমায় দেখেছি নির্জন নিড়ালায় গিয়ে ধ্যান করলেই নিজেকে পাওয়া যায়। তাই প্রথমে গেলাম এক বাগানে, ফলের বাগান। চারপাশটা নিড়ব, পাখির কলরব, শান্ত প্রকৃতি। ভাবলাম এটাই উপযুক্ত জায়গা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেখে একজায়গাই বসে পড়লাম। চোখটা বুঝতে নাবুঝতেই চিৎকার চেচামেচি। কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলাম তিনি বাগানের মালিক এবং তিনি চিৎকার করে জানতে চাইছে বাগানে আমার কি কাজ ? আমি বললাম ”কিছুইনা, এখানে কিছু সময়ের জন্য এসেছি এবং আমি নিজেকে খুজঁছি।” বাগানের মালিক আমাকে বলল -” তুমি এই স্থান তারাতারি ত্যাগ কর, তা নাহলে আমিও লাঠি খুজঁছি”। কোন কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই আমি বাগান ত্যাগ করলাম।

তারপর সরনাপন্ন হলাম এক মহাজ্ঞানী লোকের। টিভিতে বেশ কেয়েকবার তাকে দেখেছি, টকশোতে কথা বলে দেশটাকে এমনকি বিশ্বটাকে উদ্ধার করছে। ভাবলাম তিনি নিজেও হয়তবা উদ্ধার হয়েছে। তার কাছে গিয়ে বললাম-” স্যার আমি নিজেকে খুজেঁ বেড়াচ্ছি, আমি আশা করি আপনি আমাকে এই ব্যপারে উপযুক্ত পরামর্শ দিবেন।” তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন ” কত সময়ে নিজের ব্যাপারে জানতে চাও? ” আমি অবাক হয়ে বললাম ” এটা আবার কি বললেন ? নিজেকে জানার জন্য আবার সময়ের মাপকাঠি আছে নাকি??? ” তিনি তখন হেসে বললেন “ চল্লিশ মিনিটে দেশটাকে উদ্ধার করতে আড়াই হাজার টাকা পাই, তুমি কত দিবে ?” তখন মনে মনে বললাম –” উনার মত মহাজ্ঞানীরা যেভাবে দেশটাকে উদ্ধার করছে, একদিন দেশটাও আমার মত করে নিজেকে খুজেঁ বেড়াবে।”

যাইহোক অনেক চিন্তা ভাবনা করে বুঝতে পারলাম একমাত্র ধর্মগুরুই পারেন আমাকে উপযুক্ত পথ দেখাতে। কারন এতটুকু বুঝতাম, ধর্মের ঈশ্বর আর নিজের মাঝে বিশেষ কোন তফাৎ নাই। তাই এক ধর্মগুরুর শরনাপন্ন হলাম। কিছুদিন গুরু পাশে থেকে বুঝতে পারলাম তিনি নিজেকে কি জানবেন ? তিনি তার ধর্ম সম্পর্কেই বিশেষ কিছু জানেন না। শুধু আশায় থাকেন কখন কিছু বার্তী উপার্জন আর……..! আর নাইবা বললাম। উনার ধর্মচর্চার উপর আপত্তিকর কিছু কথাবলে বের হয়ে আসলাম।

তারপর পথে ঘাটে ঘোরাফেরা শুরু করলাম। এখানে ওখানে এঘাটে ওঘাটে ঘুরে অনেক কষ্টে পেলাম এক সাধু বাবার সন্ধান। সাধু বাবার অনেক ভক্তবৃন্দ রয়েছে তারা এমন ভাবে সাধু বাবার প্রশংসা করলো যে, আমি মনে মনে ভেবে নিলাম এইবার যোগ্য জায়গাই এসেছি। অনেক উৎসাহ ও আগ্রহ নিয়ে সাধু বাবার আচার আচরন উপলব্ধি করতে লাগলাম। কিছুদিন পর বুঝতে পারলাম, এটা কিছুই না। শুধু অনাহার অদ্ধাহার , সময় অসময়ে ধ্যানের নামে ঘুম, মনে যাহা আসে তাই গম্ভির ভাবে উচ্চারন করে যায় আর এসব নিয়েই লোক মুখে ধন্য ধন্য পড়ে যায়। মানুষকে এত সহজে বোকা বানানো যাই তা আগে বুঝতে পারি নাই। মনের আশা মনে নিয়েই ভন্ড সাধুর সঙ্গ ত্যাগ করলাম।

এরপর বেশ কিছুদিন কেটে গেল। পথে মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছি, কোন ভাবেই নিজের সন্ধান পাইনা। নিজেকে যখনি খোজাঁর চেষ্টা করি তখনি, ক্ষুদা, নিদ্রা, কাম, লোভ, লালসা গ্রাস করে ফেলে। কঠিন ভাবে একজন শিক্ষকের প্রয়োজনিয়তা উপলব্ধি করছিলাম। কিন্তু কে হতেপারে আমার এই শিক্ষক ? কোন ভাবেই মাথায় আসছেনা কারন সবদিকেই ভন্ডে ভরা।

সেদিন যখন বড় গাছটার নিচে বসে নিজের মাথার চুল ছিড়ছিলাম আর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম, তখনি এক লোক সামনে এসে হাজির। মাঝাড়ি গড়নের দেহ, মাথায় উষ্ক খুষ্ক চুল, মুখ ভর্তি গোফঁ। আমার সামনে এসেই রাজকীয় এক হাসি দিল। লোকটি দেখতে, ছোট বেলায় পড়া সুখি মানুষের গল্পের ,সেই সুখি মানুষের মত। পড়নে জামা নেই কিন্তু মুখে আত্মতৃপ্তি রয়েছে। তার হাসির কারনে আমি তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। ভাবছি কোন পাগল, খাবারের জন্য টাকা খুজঁবে। তখনি সে পাগল আমাকে জিজ্ঞাসা করলো-” তুমি কি কিছু খুজঁছ ?” আমি তখনি বললাম “ হ্যাঁ আমি আমার নিজের সন্ধান করছি ” তখন পাগল আবার অট্টাহাসি দিয়ে বলল- “ নিজের সন্ধান কি এতই সোজারে বোকা, করিলেই পাওয়া যায় ? সন্ধান পাইতে সাধনা লাগে যোগ্য সাধক হওয়া চাই” আম বললাম-” আমি সাধনা করতে চাই নিজের হতে চাই” পাগল আবার এক অট্টাহাসি দিয়ে “ নিজেকে পাইলেই বা কি নিজের হওয়া যায়” বলতে বলতে চলে যাচ্ছে……..
এখন আমি বুঝতেছিনা আমার কি পাগলের পিছনে যওয়া দরকার তার কাছ থেকে নিজেকে জানার শিক্ষা নেওয়া জন্য নাকি পাগলের প্রলাপ ভেবে তাকে যেতে দিব…?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:২৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুবই ভালো লিখেছেন । চমৎকার

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৩১

আমি রানা বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনটাকে নাটুকে করতে চান? না জীবনটা আনন্দময় করতে চান? আগে সেটা ঠিক করতে হবে।

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৩২

আমি রানা বলেছেন: সবাই অনন্দয় জীবন চাই, আমিও তাই।

৩| ২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

জীবন নাটক সিনেমা নয়।
জীবন কঠিন বাস্তব
জীবনকে পেতে হলে
বা নিজেকে আবিস্কার
করতে হলে বাস্তবের
সম্মুখীন হতে হবে।
সমস্যার সমাধান
খুঁজে বের করতে
হবে। ,
মনে রাখতে হবে Life is not a bead of roses

২২ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৩৩

আমি রানা বলেছেন: সঠিক বলেছেন। তবে নিজের সন্ধান অতি প্রাচীন একটা বিষয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.