নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাস্তব এবং সাধারন মানুষ আমার লিখার জীবন। এখানে রানা নামের একজন অতি সাধারন ব্যক্তির দৈনিক জীবন এবং তার দৃষ্টিতে সমাজের বর্তমান অবস্থা এবং এর প্রভাব তার নিজের ভাষায় প্রকাশ করা হবে।

আমি রানা

আমি বিশেষ কেউ বা কিছু না। যা মনে আসে যেভাবে মনে আসে তাই লিখি।

আমি রানা › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্ণফুলী নদী ও টানেল

৩০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৪


ছোড ছোড ঢেউ তুলি ফানি।।
লুসাই পাহাড়ত্তুন লামিয়ারে যার গৈ কর্ণফুলী।
কর্ণফুলী নদী, দশ হাজার বছরের পুরনো এক ঐতিহাসিক নদী। মধ্যযুগীয় পুথিঁতে এটিকে কাঁইচা খাল লিখা হয়েছে। মার্মা উপজাতিদের কাছে এই নদী কান্সা খিওং নামে পরিচিত। ভারতের মিজোরামে এটির নাম খওৎলাং তুইপুই।
কর্ণফুলী নামকরনেও এর এক চমকপ্রদ প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। শোনা যায়, আরাকান রাজার মেয়ে প্রেমে পড়ে এক পাহাড়ি রাজপুত্রের। পাহাড়ি রাজপুত্র তাদের প্রেমের নিদর্শন সরুপ রাজকন্যাকে কানফুল দেয়। কোন এক রুপালি পূর্ণিমা রাতে নদীতে ঘুরতে বের হয় রাজকন্যা, অসাবধানতা বসত তার কানফুলটি খুলে পড়ে যায় নদীতে। পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজকন্যা কানফুলটি ধরতে চায়, কিন্তু পারে না। তারপর সে ঝাঁপ দেয় প্রবল স্রোতে।
রাজকন্যা কানফুলটিত নিতেই পারে না; বরং সেও তলিয়ে যেতে থাকে প্রবল স্রোতের মাঝে।
নিজের প্রিয়তমাকে বাচাঁতে রাজপুত্রও ঝাঁপ দেয় – কিন্তু ততক্ষনে নদীর স্রোতে হারিয়ে যায় রাজকন্যা।
প্রিয়তমাকে হারানোর বেদনা সহ্য করতে না পেরে নদীর স্রোতের মাঝে নিজেকে সপেদেয় রাজপুত্র। সেই ট্রেজিডি দেখে নদীর নাম হয় কর্ণফুলী মানে কানের ফুল।
ভারতের মিজোরামের মমিত জেলার শৈতা গ্রাম (লুসাই পাহাড়) থেকে নেমে সুদীর্ঘ ৩২০ কিলোমিটার পথ বয়ে কর্ণফুলী নদী মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। বাংলাদেশের অংশে এ নদীর ১৬১ কিলোমিটারের পথচলা।কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী কাপ্তাই, হালদা, কাসালাং, রাঙখিয়াং ও বোয়ালখালী। আর এ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি, প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম বন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা ১৩৪বছর অতিক্রম করলেও এ বন্দরে বানিজ্যের ইতিহাস বহু প্রাচিন। ইবনে বতুতা মার্কো পোলোসহ বিশ্বের নামকরা পরিব্রাজকদের ভ্রমন কাহিনীতে তৎকালীন চট্টগ্রাম বন্দরের কথা পাওয়া যায়। প্রাক ইসলামিক যুগে আরব বণিকেরা ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কর্ণফুলির মোহনার চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করত। এছাড়া পর্তুগিজরাএ বন্দরকে বলত পোর্টে গ্র্যান্ড। ব্রিটিশরাই প্রথম এ বন্দরকে বিধিবদ্ধ কাঠামোর আওতায় আনে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। যাকে দেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহী বলা হয়। দেশের আমদানি-রপ্তানি বানিজ্যের ৯২ শতাংশই হয়ে থাকে এ বন্দরের মাধ্যমে। সেদিক থেকে বলা যায়, কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অর্থনীতির জীবনরেখা। ফলে অন্য যেকোনো নদীর চেয়ে এটির গুরুত্ব আলাদা। সম্প্রতি শিপিং- বিষয়ক প্রচীন জার্নাল লয়েড’স লিস্ট তাদের ২০২০ সালের সংস্করনে বিশ্বের ব্যস্ততম ১০০টি বন্দরের নাম প্রকাশ করে। তাদের তথ্য মতে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবস্থান ৫৮। এবং দিন দিন এ বন্দরের কর্মযজ্ঞতা বেড়েই চলছে। সে ধারাবাহিকতায় কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে 'ওয়ান সিটি টু টাউন' গড়ে তুলতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকার। যেটি দক্ষিন এশিয়ার সর্বপ্রথম টানেল। যার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর নতুন করে পরিচিত হচ্ছে বিশ্বের কাছে। সৃষ্টি করছে আরেক নতুন যুগের সূচনা।
নদীর দক্ষিণে আনোয়ারায় রয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইপিজেড, সিইউএফএল, পারকি সমুদ্র সৈকত। কর্ণফুলী পেরিয়ে আনোয়ারা দিয়েই কক্সবাজার, বাঁশখালী ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। আর নদীর উত্তর দিকে চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকাসহ দেশের অন্যান প্রান্তে যাবার সব মহাসড়ক। সুতরাং অদূর ভবিষ্যতে চট্টগ্রামকে ঘিরে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে তার অগ্রনি ভূমিকা রাখবে এ টানেল।
প্রকল্পটির মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে মোট দুটি করে চারটি লেন থাকবে। আর রয়েছে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘে্যর একটি ওভারব্রিজ।
ধারনা করা হচ্ছে চালুর বছরে টানেল দিয়ে ৬৩ লাথ গাড়ি এবং কক্সবাজারের গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো চালুর পর ২০৩০ সাল থেকে বছরে ১ কোটি ৩৯ লাখ গাড়ি চলাচল করবে। এর ৫০ শতাংশই পণ্যবাহী গাড়ি।
সুতরাং বলাই যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বংলাদেশকে যেমন বিশ্বের কাছে এক অন্য পরিচয়ে তুলে ধরবে তেমনি , দেশের অর্থনীতিতে রাখবে অপরিসীম অবদান।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৫৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পোষ্ট পড়ে ভালো লাগলো।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৩৯

আমি রানা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০৫

ফেনা বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। অনেক তথ্য পেলাম। ভাল লাগল।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪০

আমি রানা বলেছেন: ধন্যবাদ। পাশে থাকবেন।

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: কর্নফুলি নদীই ইতিহাস যে এত পুরোনো জানতাম না।
যাইহোক, ইদানিং তো আপনার পোস্ট দেখি না। সামুতে খুব একটা আসেন না। কেন?

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪২

আমি রানা বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। মানুষিক অবস্থা ভালো না। তাই একটু নিজেকে সময় দিচ্ছি।

৪| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:১১

কামাল১৮ বলেছেন: তথ্যের প্রমান দিলে ভালো হতো।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৩

আমি রানা বলেছেন: ধন্যবাদ কামাল ১৮ ভাই। পরবর্তীতে সকল তথ্যের প্রমাণ দিয়ে দিব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.