নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমের মতো ঘুম চাই

ফটিকলাল

ইহা একটু হৃস্টপুস্ট ব্লগ কারন ব্লগ দিয়েই তো ইন্টারনেট চালাই

ফটিকলাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরেকটি হৃস্টপুস্ট পোস্ট!

৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩



মফস্বল শহরগুলোর রং বদলে যাচ্ছে দ্রুত। শৈশবে লোডশেডিং ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক কিছু। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে এর একটি যোগসুত্র ছিলো। এখন হাতে হাতে মোবাইল আসাতে সেটা কমছে, তবে বাল্যবিবাহের মতো বিষয় ঘটছে প্রকাশ্যেই। যারা এই বাল্যবিবাহ রুখবেন তাঁরাই এর আয়োজক।

চ্যায়ারম্যান সাহেবের ছেলের হবু বৌ এর বয়স চৌদ্দ। ছেলেটা নর্থসাউথে পড়েছে, ধার্মিক মানুষ। আমার ওখানে ইন্টার্নির জন্য আবেদন করেছিলো। হয়তো কোরোনার প্রকোপ কমলে হয়ে যাবে। সে ছেলে কেন এ বিয়েতে রাজি হচ্ছে সেটা কস্টকর। শোনা যাচ্ছে এমপি সাহেবও বিয়ের দাওয়াত খেতে আসবেন। বাবা যেতে চাচ্ছেন না।

সে আমার ঘরে বসে অরুন্ধতি রায়ের বইটা উল্টে পাল্টে দেখছেন,”মেয়েটা এন্টি এস্টাবলিস্ট না বাম পন্থি?” আমি মিট মিট হাসলাম,”সে তার মাকে অনুসরন করে। মধ্যপ্রাচ্যে সংখ্যালঘুর ঘরের এক মায়ের সন্তান হিসেবে সে দেখতে পেলো গনতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় কিভাবে শ্রেনীবৈষম্যের সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা মিশে আছে তখনই সে তার মায়ের কথা গুলোই বলছে।” বাবার হাতের বইটা অবশ্য কাশ্মীর ও গুজরাটের ইস্যু নিয়ে বর্তমান ভারতের ধনী রাস্ট্রের সলুক সন্ধান করা হয়েছে, তবে আমি নিশ্চিত বাবা এ বই নিয়ে কথা বলতে আসেননি।

“বাবা, মনে আছে একবার পূজোর ছুটিতে ১০ টাকা চেয়েছিলাম খেলনা কেনার জন্যে? তুমি বলেছিলাম দূর্গার একটি মূর্তি আনতে। মা সেটা নিয়ে কি হৈ চৈ টাই না করলো।” বাবা মিস্টি করে হাসি দিয়ে সোফায় বসলেন,” তুমি কি সত্যি মা কে রাগাবার জন্য চেয়েছিলে?”

আমি অবশ্য উত্তরটা জানি,” তোর মা হুট করে আমাকে একটা জায়নামাজ কিনে দিলো। বাসায় দুটো জায়নামাজ আছে তারপরও ২৫০০ টাকা দিয়ে ইরানের মোটা জায়নামাজ কিনে আনলো। আত্তাহিয়াতু কায়দায় বসতে বসতে হাটুতে, পাতায় কহর জমেছিলো। বেটনোভেট লাগিয়েও সুফল পাচ্ছিলাম না। এখন নামাজ তো বন্ধ করতে পারি না। কিন্তু এই বাহুল্য খরচের দরকার ছিলো না, আর মসজিদে এত মোটা জায়নামাজ নিয়েও যাওয়া যায় না। তারপরও শুধু এতগুলো টাকা গচ্চা।” আমি প্রত্যুত্তরে যোগ করলাম,”তুমি কিন্তু নিজেই সেদিন আমার সাথে গিয়েছিলে। আমরা অনেক কিছু কিনেছিলাম কিন্তু তুমি দূর্গার মূর্তি কেনোনি। অথচ কেনো কিনিনি সেটা নিয়েও মায়ের কি রাগ! আমাকে তো বলেই বসলো, আমার কথার কোনো দাম নেই!”

বাবার পাশে গিয়ে বসলাম,”বিয়েতে তুমি না গেলেও ওটা থামানো যাবে না। সবচে ভালো হয় জহির আংকেলকে ফোন করো। তাকে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে যাও। ইউএনও হিসেবে সে যদি নিজ থেকে থামানোর উদ্যোগ নেয় তাহলে দেখবে ব্যাপারটা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক ইস্যু হবে না।” কথাটা শুনে তার গোমড়া মুখে একটা হাসির ঝিলিক দিলো। মাথায় হাত বুলিয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।

আজকের সকালটা একটু বিষন্ন। দূর থেকে হিন্দি গানের আওয়াজ। শুনেছি ঢাকা থেকে ডিজে আসবে রাতে। একসময় বিয়ে বাড়ি মানে প্যান্ডেলের গান, সেই চেনা সুরের সাথে ব্যান্ডপার্টির আশেপাশে ঘিরে থাকা শিশু মাঝবয়সীদের নাচ একটু নস্টালজিক করে। কাঁচা রাস্তা হেটে পুরো এলাকা হেটে যাওয়া নৃত্যরত শিশুদের দল পুরো গ্রামবাসীকে জানিয়ে দেয় বিয়ের উত্সবে শরীক হবার।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৬

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:১২

ফটিকলাল বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনি প্রথম কমেন্ট করলেন। অনেক ধন্যবাদ এবং আপনাকেও স্বাগতম

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩০

নীল আকাশ বলেছেন: কিছু বানান ভুল আছে ঠিক করে দিন।
কথোপকথন আলাদা আলাদা লাইনে দিন। দেখতে ভাল লাগবে।
প্রথম ২টা প্যারা সাথে নীচের লেখাগুলির লিংক মিলছে না।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

ফটিকলাল বলেছেন: ব্লগ হচ্ছে আমি আমার দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ব্যাপারে লগ রাখা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেমন লগ রাখা হয় কখন কোনটা কাজ হবে, কে কি কাজ করলো বা তার পাশে নিদেনপক্ষে থাকে ফুট নোট।

আমি সাহিত্য চর্চার জন্য ব্লগে আসিনি, এসেছি সময়ের কিছু অংশে আমার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লগ ধরে রাখতে। নিশ্চয়ই একান্ত ব্যাক্তিগত ব্লগ পাবলিক প্লেসে শেয়ার করা যায় না। তবে সেটাও ওয়েব ব্লগে পড়ে। আমি অনেকটা এ ধারনা নিয়েই পোস্টগুলো লিখতে চাই। তাই বাংলার তথাকথিত প্রথাগত গতানুগতিক সাহিত্যিক ধারা অনুসরন করে লেখতে অপারগ। এটা আমার কাছে অপরিপক্ক মনে হয়।

আপনাকে মিরোস্লাভ পেনলোভের উপন্যাস সমূহ পড়ে দেখার অনুরোধ করছি। আমি এই ধারাটা পছন্দ করি।

স্বাগতম আমার ব্লগ বাড়িতে

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ব্যক্তিগত অনুভূতির বয়ান।ব্যক্তিগত অনুভূতি আসলে কোনো নিয়ম মানে না।মানা উচিৎও না। সমাজের কয়েকটা গুরুত্বপুর্ণ দিক তুলে এনেছেন।বাল্যবিবাহ, অপসংস্কৃতি ও আমাদের দ্বিমুখীতা।যাদের বাল্যবিবাহ রোধ করার কথা তারাই এর আয়োজক।ক্ষমতার দাপট।এমপি সাহেব আসছেন,তাই রদ করা যাবে না। ব্যাপারগুলো বেশ ভালো লেগেছে।

আপনার বাবা-মা সম্পর্কিত প্যারায় ধর্মভীরুতার ব্যাপারটি বেশ সুন্দর করে তুলে এনেছেন। ঈমান চলে যাবে এই ভয়ে অন্য ধর্মের অনেক কিছু সম্পর্কেই এদেশের মুসলমানদের ভয় থাকে।বেশির ভাগ লোকই এই ভয়ে অন্য ধর্ম সম্পর্কে কিছু জানতে চায় না।আর লোক দেখানো ধর্ম পালনেরও একটা প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত এসেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩১

ফটিকলাল বলেছেন: লেখার ভেতর এত কিছু বলতে চেয়েছিলাম এটাই একসময় ভুলে গিয়েছিলাম। এরকম মনোযোগ দিয়ে পড়ে ভেতরের পাঠোদ্ধার আপনিই প্রথম করলেন। বাকি সবাই আশেপাশের ব্যাপার গুলো নিয়ে কথা বলতে ব্যাস্ত। নিজের ব্যাস্ততার সাথে সবার এমন আপেক্ষিক আলোচনা আমাকে প্রায় অনুৎসাহিত করে ফেলছে ব্লগের জন্য।


আপনার লেখার ব্যাপারে অনেক শুনেছি, নিজেও কিছু পড়েছি। মন্তব্য করা হয়নি তার কারন একটু ভাবতে চাই নিরালায় বসে। হাজার হোক এমন শৈল্পিক লেখাতে যাচ্ছেতাই মন্তব্য করে আপনার প্রতি অবিচার করতে চাই না।

আপনি মেধাবী, প্রচন্ড মেধাবী। আপনাকে অনুসরন করি। মন্তব্যে পাওয়া শব্দগুলো সত্যি অনুপ্রানিত করছে। ভালো থাকবেন

৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আপনার লেখাগুলোতে আপনি দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ ঘটনাগুলোর মাধ্যমে কিছু গভীর প্রশ্ন বা দর্শন জুড়ে দেন।এ ব্যাপারটা একজন শক্তিশালী লেখকের বৈশিষ্ট্য। এসব ঘটনা আমরা প্রায়ই দেখি,কিন্তু এর ভেতরের সত্যকে আমরা বুঝতে পারি না কিংবা বোঝার চেষ্টা করি না। বাকি লেখাগুলোতে কমেন্ট করিনি কারণ ওখানে যেসব ব্যাপার আপনি তুলে এনেছেন সেগুলো আমি বুঝতে পেরেছি কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করার মতো তেমন কিছুই জানি না।তাই ভেবে বসবেন না যে আমি আপনার লেখা পড়ি না।আমি সাথেই আছি।আপনি লিখতে থাকুন।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৭

ফটিকলাল বলেছেন: আপনার লেখার বুননেরও প্রশংসা করতে হয়। যেভাবে পুরো কাহিনী জমিয়ে তোলেন, ভাবছি আপনার পদ্ধতিটা অনুসরন করবো। ভয় নেই, নীচে ট্রেডমার্কে আপনার নাম দিয়ে রাখবো।

বলতে পারেন আপনি গুরুর কাতারে চলে গেছেন

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৯

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: ভাই আমি এখনো শিশু :D । আমার নাম লেখার দরকার নেই। আপনি এমনিতেই চমৎকার লেখেন।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২০

ফটিকলাল বলেছেন: মানুষের বয়স লিঙ্গ পারিবারিক বা সামাজিক অবস্খান দিয়ে তার বিচার হয় না। একসময় মানুষকে বিচার করা হতো যুদ্ধে কতগুলো মানুষ খুন করেছে বা কটা শহর দখল করেছে। আমরা ভাগ্যবান যে ঐ দুঃসময়ে জন্ম হয়নি। আবার ঐ দুঃসময়টা না থাকলে আমার জন্মটাও হতো কিনা সন্দেহ। বিশ্ব ইতিহাস পাল্টানোর চাবিকাঠি সবার হাতে। আর আপনার সৃস্টির পারফেকশনের চাবিকাঠির মূল নায়ক আপনি।

সামুতে অনেকেই ভালো লেখেন। কিন্তু নতুন লেখক হিসেবে আপনি যা লিখছেন লিখেছেন। মুগ্ধতায় পূর্ন। বিশেষ করে একটা ঘটনার বর্ননার সাথে তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা ম্যাসেজ সহসাই পাঠকমনে ধরা দেয় আচ্ছন্ন করে। দুটো লেখা আজ পড়ছিলাম, ভাবছি কিভাবে এত সুন্দর লেখা যায়!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.