নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনেকেই এখনও স্বাধীনতার মানে বোঝেনি। কিন্তু কেন?

২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:০৪



অনেকেই এখনও স্বাধীনতার মানে বোঝেনি। কিন্তু কেন?
সাইয়িদ রফিকুল হক

বড় সাদামাটাভাবে আমাদের এতবড় স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। কারও কোনো সাড়াশব্দ নাই! অনেকে হয়তো বলবেন, দেশের সবাই স্বাধীনতা দিবস পালন করছে। টেলিভিশনে দেখানোও হচ্ছে! এইখানে বিরাট একটা প্রশ্ন। রাষ্ট্রীয় বা বেসরকারি টেলিভিশনে স্বাধীনতার খবর প্রচার করলেই কি স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়ে যায়? স্বাধীনতা দিবসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়ে যায়? এইখানে অনেকের সঙ্গে হয়তো মদীয় মতের মিল হবে না। তার কারণ, মানুষের মধ্যে স্বাধীনতা দিবসের প্রতি পূর্ণাঙ্গ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আজ কমে গেছে। তারা ভাবছে, স্বাধীনতা পেয়েছি—আরকী? এই অমূল্য স্বাধীনতাকে তারা আজ সাধারণ কোনোকিছু ভাবছে বা মনে করছে! মদীয় দুঃখবোধটা এখানেই।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা মানে লোকদেখানোভাবে কয়েকটি অনুষ্ঠান বা একাধিক অনুষ্ঠানমালাও নয়। দেশের সর্বস্তরের মানুষের মনের গভীরে মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রতি থাকতে হবে গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সীমাহীন উচ্ছ্বাস, গভীর আনন্দবোধ ও অপরিসীম সম্মান। কিন্তু আমরা চারিদিকে কী দেখতে পাচ্ছি? এখনও চলছে স্বাধীনতাবিরোধীদের রোপিত বীজের মাতালধ্বনি। আর ভয়ানক মাতলামি। তাদের মাতলামি অন্যখানে। তারা গায়ের জোরে বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক উদাহরণ টেনে বলছে—“এই স্বাধীনতা স্বাধীনতা নয়! এই স্বাধীনতা পূর্ণ স্বাধীনতা নয়! এই কি স্বাধীনতা! এই স্বাধীনতা পরাধীনতার নামান্তর! এই অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতার নামান্তর! পিন্ডির হাত থেকে স্বাধীনতা এখন দিল্লির হাতে বন্দি!” আরও কত কী? এদের মনে ব্যাধি আছে, জানি। এরা এসব বলতেই পারে। কিন্তু আপনার মনে তো কোনো ব্যাধি নাই। আপনি কেন স্বাধীনতা দিবসের দিনে চুপচাপ ঘরে বসে থাকেন? আপনার সমস্যা কোথায়? যারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ওইসব প্রসঙ্গের অবতারণা করে তাদের মনে ও তাদের পূর্বপুরুষের মনে বিরাট দুঃখবোধ রয়েছে। তাদের স্বপ্নের পাকিস্তান ভেঙে যাওয়ায় তারা আজও নাখোশ। কিন্তু আপনি তো ওদের আদর্শের লোক বা ওদের আদর্শের রুহানি সন্তান নন। তাহলে, আপনি কেন স্বাধীনতা দিবসে চুপচাপ জাবর কাটছেন? আপনার মুখে কেন আনন্দধ্বনি নাই! কেন আপনি স্বাধীনতা দিবসে একটুকু উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে পারছেন না?

যারা বলে, দেশে স্বাধীনতা নাই—তারা অন্যকিছু বোঝাতে চাইছে। তাদের মনে অনেক দুঃখ। সব বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিটি দেশই কোনো-না-কোনো সমস্যায় জর্জরিত রয়েছে? তাই বলে কি তারা তাদের ‘জাতীয় দিবস’ বা ‘স্বাধীনতা দিবস’কে কখনো অসম্মান করে? কখনোই নয়। এসব শুধু আমাদের এই বাংলাদেশেই সম্ভব। এখানে, স্বাধীনতাবিরোধী বরাহদেরও অনেক আদরযত্নে লালনপালন করতে হয়। তা-না-হলে স্বাধীনতাবিরোধীদের মিত্রদেশ আমাদের দেশের জন্য ‘স্যাংশন’ বন্ধ করে দিতে পারে? দেশের সরকার পছন্দনীয় নয় বলে এই অজুহাতে ‘জাতীয় দিবস’কে অবজ্ঞা করা বা পালন না-করাটা বিরাটবড় ধৃষ্টতা ও সীমাহীন অপরাধ। এসব কি দেশের সাধারণ ও অজ্ঞ নাগরিকরা বুঝতে পারে?
আমাদের দেশে গণতন্ত্র রয়েছে। পৃথিবীর কোন্ দেশে ১০০ ভাগ গণতন্ত্র ও মানবতা রয়েছে? পারলে আমাকে দেখান তো। আমি জানতে চাই। আর সবিনয়ে আপনাদের কাছে জানতে চাই।
গণতন্ত্রের আত্মস্বীকৃত ধ্বজাধারী আমেরিকায় কী গণতন্ত্র রয়েছে? সেখানকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যাতে প্রেসিডেন্ট-ইলেকশন করতে না-পারে তজ্জন্য তার বিরুদ্ধে কতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে? আমার তো মনে হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পৃথিবীর কোনো মামলা দায়ের করা আর বাকি নাই! শুধু কি তাই, আমেরিকা সগৌরবে ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আজও ফিলিস্তিনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। মদীয় লেখার বিষয় আজ তা নয়। প্রসঙ্গক্রমে দুই-একটি উদাহরণ দিচ্ছি মাত্র। কেউ আবার এব্যাপারে ভুল বুঝবেন না। কিন্তু সবসময় আমাদের মনে রাখতে হবে: বাজার-দরে কখনোই স্বাধীনতাকে পরিমাপ করা যাবে না। সামাজিক, রাষ্ট্রিক ও বৈশ্বিক কোনো ইস্যু দিয়েও স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। স্বাধীনতা ব্যক্তিস্বার্থ, রাজনৈতিক দলাদলি, চাওয়া-পাওয়ার স্বার্থচিন্তা, লাভক্ষতির হিসাবনিকাশ ও জাতীয় সকল সমস্যার ঊর্দ্ধে। আর স্বাধীনতাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে প্রিয় শব্দ।

দেশের সরকারের প্রতি কারও ক্ষোভ থাকতে পারে। সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার। সবাইকে কোনো সরকারের প্রতি সমর্থন রাখতেই হবে—তা নয়। তবে সবাইকে রাষ্ট্রের আইনকানুন ও রাষ্ট্রীয় দিবসসমূহ মেনে চলতে হবে। আর স্বাধীনতা দিবসের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এব্যাপারে কোনো ওজর-আপত্তি করা চলবে না।
যারা স্বাধীনতা দিবসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না-রেখে নানান আলতুফালতু প্রসঙ্গের অবতারণা করে তারা অবশ্যই স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তান। আজকের দিনে ফেসবুক ও অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমগুলোর দিকে তাকালে এর সত্যতা মিলবে শতভাগ।

আমাদের দেশের একটা শ্রেণি সম্পূর্ণভাবে দেশদ্রোহিতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এদের আচার-আচরণ মোটেই স্বাধীন দেশের নাগরিকের মতো নয়। এরা সুনাগরিক হওয়া তো দূরের কথা—আজও সাধারণ নাগরিক হতে পারেনি। কিন্তু এদের হাবভাব দেখলে মনে হবে এরা কতই-না উঁচুদরের লোক! এরা আত্মস্বীকৃত ও তথাকথিত উঁচুতলার মানুষ। এদের কখনো শহীদ মিনারে যাওয়ার দরকার হয় না। জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়ার প্রয়োজনবোধ হয় না। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতিও সম্মান জানানোর কোনো কর্মকাণ্ডে উপস্থিত হওয়ার মতো বিবেকবোধ জাগ্রত হয় না। এদের কখনোই আমাদের জাতীয় কোনো অনুষ্ঠানে দেখতে পাই না!

আমাদের দেশের অনেকেরই মনে হয় এখনও স্বাধীনতার মানে জানা হয়নি। এ-সম্পর্কে তারা একেবারে অজ্ঞ ও মূর্খ। নইলে স্বাধীনতা দিবসের দিনে তারা ফেসবুকে, ইউটিউবে, টুইটারে আমাদের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে—এমন কথা বলবে কেন? এরা নিশ্চিতভাবে স্বাধীনতাবিরোধীদের সন্তানসন্ততি।

এ-দেশে এখনও সরকারি প্রজ্ঞাপন জারী করে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় দিবসসমূহ (২১-এ ফেব্রুআরি, ৭ই মার্চ, ১৭ই মার্চ, ২৬-এ মার্চ, ১৫ই আগস্ট, ১৬ই ডিসেম্বর ইত্যাদি) পালন করাতে হয়! অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই এসব দিবস স্বেচ্ছায় পালন করতে চায় না বলে তাদের প্রজ্ঞাপন জারী করে তা পালন করাতে হয়! কথাটা বুঝবেন, করাতে হয়! স্বেচ্ছায় করতে চায় না বলে আইন করে করাতে হয়! এরচেয়ে বড় দুঃখ আমাদের আজ আর কী আছে?

সত্যি কথা বলতে কি, আমরা আজও দেশপ্রেমিক হয়ে উঠতে পারিনি। দেশের একটা নষ্ট অংশ এখনও স্বাধীনতাকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপকাণ্ডে লিপ্ত।
এরা তাই সবসময় স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আবোলতাবোল প্রসঙ্গের অবতারণা করতে থাকে। পত্রিকায় লেখে—“অমুকে-তমুকে না-খেয়ে আছে! অমুকের ঘরে চাল নাই! তমুকের চাকরি নাই! অমুকের সংসার নাই! কছিমের বউ নাই! রাজিয়ার স্বামী নাই! বছিরুনের স্বামী চাই! মানুষের হাতে টাকা নাই! ব্যাংকেও টাকা নাই! গার্মেন্টসে চালান নাই! দেশে গণতন্ত্র চাই!” এতক্ষণে মামু বলেছেন আসল কথাটা! আপনাদের মনের কথাটা! বুকের জ্বালা-যণ্ত্রণার কথা! চারিদিকে তখন শুধু পরিকল্পিতভাবে নাই-আর-নাই শুরু হয়ে যায়! কিন্তু এরা একবারও লেখে না যে, আজ দেশের মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খেতে পারে। নিরামিষ হোক, সবজি-ডাল-ভাত হোক, মাছ-মাংসে হোক, মানুষ আজ খেয়েপরে বেঁচে আছে। এসব লিখতে তাদের হাত ব্যথা করে। আসলে, এরা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তাই, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে প্রতিবছর এইসব আলতুফালতু নিউজ প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। এদের বিবেক বলে কিছু কি আছে? একবাক্যে বলা যায়—নাই। নাই মানে নাই। আর এই বিবেকহীন মানুষগুলোর জন্যই আমাদের স্বাধীনতা কখনোই পরিপূর্ণভাবে অর্থবহ হয়ে উঠতে পারছে না। এরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশ ও দেশের মানুষকে প্রতিনিয়ত পিছনের দিকে টানছে!
তবু আমাদের সকল বাধা ও অপশক্তিকে দমন করে এগিয়ে যেতে হবে। ৩০ লক্ষ শহীদের বাংলাদেশ কখনোই পিছিয়ে থাকতে পারে না।


সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা।
২৬-০৩-২০২৪

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৫৮

এস.এম.সাগর বলেছেন: ভাই আমি শহীদ মিনারে যাবোনা, যদি না যাই তাহলে কি আমি দেশদ্রহী? আমি মুসলিম আমি আল্লাহ প্রদত্ত দিবস ছাড়া অন্য কোন দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করবোনা, তার জন্যকি আমি দেশদ্রহী?

২| ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:১৭

রানার ব্লগ বলেছেন: এস.এম.সাগর বলেছেন: ভাই আমি শহীদ মিনারে যাবোনা, যদি না যাই তাহলে কি আমি দেশদ্রহী? আমি মুসলিম আমি আল্লাহ প্রদত্ত দিবস ছাড়া অন্য কোন দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করবোনা, তার জন্যকি আমি দেশদ্রহী?

হ্যা আপনি দেশদ্রোহী । কারন আপনি রাষ্ট্র কে সম্মান করছেন না । রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকছেন না । ইহাই দেশদ্রোহীর প্রধান লক্ষণ ।

২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সুন্দর বলেছেন ভাই। একদম উপযুক্ত জবাব।
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। আর শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার লেখাটি মন দিয়ে পড়লাম।

২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৪৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: কৃতজ্ঞ ভাই। ;)
অশেষ ধন্যবাদ্। আর শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.