নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবী আমার আবাস। মানুষ আমার পরিচয়।

আবীর চৌধুরী

ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার

আবীর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিভাবক, ভাই, গডফাদার, ফাদার...

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৫

এক বন্ধু ফেসবুকে নিজ স্ট্যাটাস হিসেবে লিখেছেঃ-

পৃথিবীতে সবার অভিভাবক থাকে না।কারো কারোর জন্য অভিভাবক তো বহুত দূরের কথা,স্থানীয় অভিভাবক পর্যন্ত থাকে না!অভিভাবকবিহীন সেইসব হতভাগ্যরা যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন থাকে জ্যান্ত লাশ হয়ে।আর যখন মরে যায় তখন তাদের পরিচয় হয় বেওয়ারিশ লাশ!

উত্তরে আমি যা লিখলামঃ-

আমার অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে করেছিল।
এই যেমন- আমারও ইচ্ছা ছিল অনেকের জন্য স্থানীয় অভিভাবক হওয়া; অনেক অভিভাবকহীনদের নিজের অভিভাবক বা নিজের পরিচিত প্রভাবশালী, দরদী মানুষদের সাথে লিয়াজো করে দেওয়া। আমিও একসময় উঠতে বসতে মানুষকে সাহায্য করতাম।
কিন্তু দিন অনেক পালটে গিয়েছে। গত ৩ বছরে আমি যেন নতুন নতুন অনেক জগত আবিষ্কার করেছি।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে যা বলা আমার জন্য প্রাসঙ্গিক হবেঃ-

অভিভাবকের এই ধারণাটাই কি অনেক সমস্যার গোড়াপত্তন করে না??

এই যেমন উদাহরণস্বরূপ- আমার বাবা এখনও পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে জীবিত; যদিও ক্যান্সার আক্রান্ত, বেশিদিন হয়তো বাঁচবে না। ৩ দশকের উপরে দেখেছি, বাবা অনেকের জন্য অভিভাবকস্বরূপ; যার মূলত ২টা কারণ- প্রথমত উনি খুব সিনিয়র আইনজীবি, দ্বিতীয়ত উনার জন্ম-বেড়ে উঠা একদম তুমুল রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে, আর অবভিয়াসলি চট্টগ্রামের মত অঞ্চলে।

এখন যেকোন সমস্যা ও সংকটে আমাদের নিউক্লিয়াস ফ্যামিলিতে বা আমাদের এক্সটেন্ডেড ফ্যামিলিতে বাবার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব ও হস্তক্ষেপ থাকে। কোন কারণে, লিংক স্থাপনে, রেকমন্ডেশনে, সোশাল নেটওয়ার্কিং-এ, বাবার নাম চলে আসেই।
আমি ছোটবেলা থেকে তেমন এসব মেইনটেইন করিনি। মাঝখানে কলেজ লাইফ থেকে ভার্সিটি লাইফ এর পরে পর্যন্ত করেছি- খুব দৌড়ঝাঁপ, অতি সামাজিকতা- টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া আমাদের বাড়িকে চিনে, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত আমরা ইনিয়ে বিনিয়ে কানেকশন লাগায় ফেলতে পারি।

কিন্তু উন্নত-সভ্য প্রকৃত মানুষের দেশ ঘুরে এসে আমার অন্তর্চক্ষু খুলে গেল।

এত তালিজোড়া দেওয়া পরিচয় তো ঐসব দেশে লাগে না! ওইসব দেশে তো প্রতিপদে পদে অমুকের রেফারেন্স, তমুকের আত্মীয় পরিচয় দিতে হয় না। ৫টা হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে অক্সিজেন না পেয়ে কারো মা মারা যায় না! ওইসব দেশে সবাই সবার অভিভাবক, সবাই সবার আত্মীয়, সবাই সবার বন্ধুত্ব। ওদের সামাজিকতা আমাদের মত লোকদেখানো ও খাওয়াইন্যা সামাজিকতা না। ওরা গদগদ হয়ে একে অন্যের সাথে গাদাগাদি করে না ঠিকই, কিন্তু গোটা সমাজব্যবস্থায় সবকিছুতে সবার প্রায় সমান অধিকার, সমান সম্মান।
আর আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি, কখন কাকে কিভাবে কাজে লাগে।

আমাকে তো অনেকেই বলে, এখন তোমার বাবা আছে বলে এভাবে কথা বলতে পারছো, এভাবে লিখতে পারছো, এভাবে থাকতে পারছো... আরো অনেক কিছু। এত বছর পরে বুঝছি, শুধু যুবতী সুন্দরী অবিবাহিতরা আমাদের সমাজে ভালনারেবল না। তথাকথিত অভিভাবকহীন, পিছনে জোরবিহীন প্রত্যেকেই ভীতসন্ত্রস্ত, অসহায়, ক্ষমতাশূন্য।

এই কারণেই উন্মাদ রোবটের মত ক্ষমতাশালী পেশা (বিসিএস) এবং ক্ষমতাশালী রাজনীতির জন্য দেশের মানুষ নামের অমানুষগুলো নিজেদের সময় ও বিবেক বিকিয়ে দেয়।

আরো লেখার ছিল, সময় নেই...

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:০৫

শাহিদা খানম তানিয়া বলেছেন: আপনার লেখাটির সাথে সহমত জানিয়ে গেলাম।

২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ দরিদ্র দেশ। যতটুকু সম্পদ ছিলো- তাও ক্ষমতাসীণরা এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন লুট করে নিয়েছে।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২১

করুণাধারা বলেছেন: আপনার লেখাটা ভালো লেগেছে। তবে এই পোস্টের পরপরই একজন প্রিয় ব্লগারের মৃত্যু সংবাদ থাকায় সবাই দুঃখে আপ্লুত হয়ে যাবার কারণে আপনার চমৎকার পোস্টটি তেমন পঠিত হয়নি।

৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪৩

সিগনেচার নসিব বলেছেন: তিক্ত ব্যস্তবতা মিশিয়ে চমৎকার একটা পোস্ট লিখেছেন।
সারা বিশ্বের অনেক দেশই আমাদের চেয়ে প্রযুক্তিগতভাবে অনেক এগিয়ে কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যায় তারা আমাদের মত মানবতা হারিয়ে বসে নেই। আমরা নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি করে ফেলি সংকীর্ণ। তখন এসব ব্যপার আর খেয়াল রাখি না।

৫| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:২১

গফুর ভাই বলেছেন: আমিও আপনার সাথে একমত অনেক লোক কে সাহায্য করছি শুধুমাত্র যদি কখনো কাজে লাগে আদতে পরে লাগে নাই কাজে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.