নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার দাদী তরমুজ খেতেন না। কারণ উনার মা তরমুজ খেয়ে মারা গিয়েছিলেন।
আমার মা উৎসুক হয়ে ঘটনাটা জিজ্ঞেস করেছিলো দাদুকে। দাদু বলেছিলো, উনার মা একটি কাটা তরমুজ এর অংশ, কাটার পরের দিন (২য় দিন) খেয়েছিলেন। এরপর থেকে অনবরত পাতলা পায়খানা করতে করতে মারা গেলেন।
ঘটনাটা শুনে আমার মা বুঝেছিলো, দোষ তরমুজের না, দোষ তাপমাত্রা ও সংরক্ষণ পদ্ধতির। ফ্রিজ থাকাতে আজকাল কেউ ওভাবে মরে না। সাধারণত গরমেই তরমুজ খায় সবাই। ওইসময়, হয় আস্ত তরমুজ কাটার সাথে সাথে সবাই খেয়ে ফেলতে হয়। নয়তো, ফ্রিজে রেখে দিয়েই বাকিটা পরে খাওয়া যায়। তরমুজের প্রাকৃতিক খোলস ভেঙ্গে যাওয়ার পরে, প্রাকৃতিকভাবেই তরমুজের ভিতরের অংশগুলো অপেক্ষাকৃত বেশি তাপমাত্রায় একটা নির্দিষ্ট সময়ের বেশি থাকলে, খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পরে (সম্ভবত ব্যাক্টেরিয়ার কারণে)।
মানুষ সৃষ্টির সবচেয়ে দুর্বল, অক্ষম ও ভালনারেবল বিইং। মানুষ যে কত সহজে ও কত ভাবে মারা যেতে পারে, এটা বুঝার জন্য ফাইনাল ডেস্টিনেশন সিরিজের মুভিগুলো দেখা যেতে পারে। যদিও মুভিগুলো বর্তমান আধুনিক কালের উপর ভিত্তি করে বানানো। আদিম, বন্য, গুহামানবদের সময়ে তো বন্য জন্তু আর প্রাকৃতিক দুর্যোগেই পাখির মত মারা যেতো মানুষ। আর, জন্মও নিতো গণ্ডায় গণ্ডায়। জন্ম মৃত্যু দুটোই ছিল বন্যজন্তুর মত। ইচ্ছে হলেই সহবাস করে ফেলতো। জন্মের সময়েও অনেক মারা যেতো; মা বা শিশু বা উভয়েই। স্ট্রিং বা টান থাকতো খুবই ক্ষীণ। সারি সারি মানুষ মারা গেলেও সেটাকে ঐশ্বরিক প্রকৃতির লীলাখেলা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না মানুষের।
সেই মানুষ ইঞ্চি ইঞ্চি করে সামনে এগিয়েছে প্রতিটা দিন; হাজার হাজার বছর ধরে। অগ্রসর হয়ে উঠে আসা এই প্রজাতি এরপর থেকে অগ্রাহ্য করা শুরু করে অগ্রজদের- অর্থাৎ মানুষ আসার আগে থেকেই পৃথিবীতে যা কিছু আছে। ফ্যাক্ট বলে, পৃথিবী কোটি কোটি বছর পুরানো, আর প্রজাতিগুলোর মধ্যে মানুষই সবচেয়ে নতুন।
ঠিক যে সময়ে এই লেখা লিখছি, এই সময়ে কোভিড ছাড়াও আরও অনেক প্যান্ডেমিক বা এপিডেমিক গোটা দুনিয়ায় ডরমেন্ট বা নেগলেক্টেড অবস্থায় আছে। এর মধ্যে ৩টি একই সুতোয় বাধা- মাইক্রোপ্লাস্টিক, এন্টিবায়োটিক রেজিট্যান্সি ও ক্যান্সার। এই তিনটা নিয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে লেখা বড় হয়ে যাবে।
শুধু এটাই বলতে চাইছিলামঃ সামষ্টিক, সাময়িক ও আপেক্ষিকভাবে মৃত্যুঞ্জয়ী মানুষ- তেলাপোকার সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকার সফলতা নিয়ে গর্ব করতে গিয়ে নিজেদের "একমাত্র" আবাসস্থলে তার পুরানো সব ভাড়াটিয়াদের বেঁচে থাকাকে অসম্ভব করে তুলেছে। এবং সে কারণেই প্রাকৃতিকভাবেই কাউন্টার এটাকের পরিমাণ ও তীব্রতা বেড়ে গিয়েছে, যা আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির কারণে অতটা পরিস্কার বুঝতে পারছে না "সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো মানবসন্তানেরা"।
গডজিলা বা কং সিরিজের মুভিগুলোতে কাইজু নামের প্রাগৈতিহাসিক দানবগুলি যেমন সারা পৃথিবীতে জেগে উঠেছিল মানুষের নিউক্লিয়ার এক্টিভিটি, পরিবেশ দূষণ, ডিফরেস্টেশন, মাইনিং-ড্রিলিং-বোরিং, এবং যুদ্ধবিগ্রহের কারণে; ঠিক তেমনি বাস্তবেও এখন ঘটে চলেছে। সভ্যতা শুরুর আগে বা মানুষের আবির্ভাবের আগে পৃথিবী দাপিয়ে বেড়ানো সব আণুবীক্ষণিক জীবগুলো তাদের বন্দীদশার প্রাচীর ভেঙ্গে একে একে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। মানুষের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, অহংকার, ও অবহেলাও তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। তারা যে দেশে যাচ্ছে, সেই দেশের আবহাওয়া, ভূপ্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও মানুষের আভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নিজেদেরকে আপডেট করে নিচ্ছে; শত বছরের ইভোলিউশন দেখতে পাচ্ছি চোখের নিমিষেই।
Survival is to be ceased soon. মানুষের মৃত্যু আসন্ন ও অবশ্যম্ভাবী।.
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা তরমুজের দোষ নেই। আমি নিজেই তরমুজ টুকরো টুকরো কেটে ফ্রিজে রেখে দেই। ঠান্ডা হলে খাই। কখনও কখনও দুই দিন পরে খাই।
মৃত্যু যে কোনো সময় আসতে পারে। তবে আমি চাই আমার মৃত্যু দেরীতে হোক। আমার ছোট মেয়েটা অন্তত বড় হোক।
৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২০
চাঁদগাজী বলেছেন:
লজিক্যাল
৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫০
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। দারুণ!
৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫০
এস সুলতানা বলেছেন: তরমুজের কোন দোষ নেই। দোষ ছিল সংরক্ষণের। সম্ভবত তখন এক ফ্রিজ ছিল না। যার জারণে তরমুজে জন্মনেয় ব্যাক্টেরিয়া। আর উনি সেদিন তরমুজ মনে করে খেয়ে নিয়েছিলেন এক গাদা বিষাক্ত ব্যাক্টেরিয়া। সেটাই ছিল উনার মৃত্যুর কারণ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২০
শায়মা বলেছেন: কি ভয়ংকর!!!
এখন থেকে যুদ্ধ করেই বাঁচতে হবে।