নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানিনা , কিছুই জানিনা , যা জানি তা অনেক অল্প , অল্প জানা মানুষ আমি

কাল হিরা

না বলতে পারার যন্ত্রনা বয়ে বেড়ান পোকা

কাল হিরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুমনের আত্মত্যাগ কি মনে রাখবে কেউ?

০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭

এই নাগরিক জীবনে সবাই ব্যস্ত। আপনি চলন্ত বাস থেকে ছিটকে পড়েছেন, আপনার দিকে কেউ তাকাবে না। বাস ছুটে চলে যাবে গন্তব্যে। কারো মুখ থেকে হয়তো একটু শোনা যেতে পারে, আহা! একজন গার্মেন্ট কর্মী সুমনের কথা কিভাবে মনে রাখবে এই নির্মম শহর? তারপরেও কিছু কিছু সুমনেরা এই শহরে থাকে, কিংবা অন্যের সন্ধানেই তাঁদের আগমন ঘটে। মন থেকে হারিয়ে যায় না মানবিকতা। কিন্তু জীবনটাই যে হারিয়ে যায়? সুমনেরা আছে বলে যান্ত্রিকতার বাইরে যে একটা জীবন আছে সেটা টের পাওয়া যায়।

আজকের বিকেলে যে সুমন একপথশিশুকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়ে দিলেন, তাঁর কথা আমরা সন্ধ্যা মিলিয়ে যাওয়ার আগেই হয়তো ভুলে যাব। কিন্তু তারপরেও, তারপরেও কোথাও যেন একটা কিছু থেকে যায়... ময়না তদন্তের জন্য সুমনের লাশ এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। একটা নিথর দেহ। যে কিনা সকালেও ঘুম থেকে উঠে দাঁত মেজে নিজের কাজে গিয়েছিলেন, আর বিকেল হতে হতেই মেডিক্যালের মর্গে?

এই তো বিকেল চারটার দিকে বনানী রেল ক্রসিংয়ের পাশের রেল লাইনের উপর এক পথশিশু খেলা করছিল। ঠিক ওই সময়ই একটি দ্রুতগামী ট্রেন আসছিল। সুমনের চোখে পড়ে যায় বিষয়টি। মফস্বল শহর থেকে আসা সুমনের হৃদয়টা এই যান্ত্রিক নগরীর মতো এখনো যন্ত্র হয়ে যায় নি। দৌঁড়ে গিয়ে শিশুটিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন সুমন। শিশুটি বেঁচে যায়। তারপরের ঘটনা কি হতে পারে? সুমন বেঁচে যেতে পারতেন। সুমন জীবিত থাকতে পারতেন। না সুমন ফিরতে পারে নি। নিজে চলে যান ট্রেনের তলে। ট্রেনে কাটা পড়ে গুরুতর আহত হন। তাঁর সহকর্মী নায়েব আলীসহ স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সুমন যে আর বেঁচে নেই। চিকিৎসকরা সে কথাই জানালেন। এরপরেই সুমনের জায়গা হলো মর্গে।

নিহত সুমন বনানীর মেডোনা ফ্যাশন নামক একটি গার্মেন্টসের স্টোর লোটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই মেডোনা ফ্যাশনে কি সুমনের কথা মনে রাখবে? স্টোর লোটারের জায়গায় আরেকজন স্টোর লোটার আসবেন। দুপুরের খাবার সুমন আজ একটু দেরিতেই খেতে গিয়েছিলেন। একটু বিশ্রাম নিয়ে হয়তো ফিরছিলেন। আর ওই সময়টাতেই ওই পথশিশুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিলেন। সুমন এখনো মর্গেই আছেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ির ইনচার্জ সে কথাই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। বনানীর কড়াইল বস্তিতে বসবাস করা সুমনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল মাদারনগর গ্রামে। সুমনের আয়-উপার্জনের অপেক্ষায় থাকা মা হয়তো বুকে ভেঙে আর্তনাদ করছেন। কি আর করার আছে, সেই আর্তনাদ এই ব্যস্ত নগরে হয়তো পৌঁছবে না। সন্ধ্যায় মিলিয়ে যাওয়ার আগে আমরা যে ক'জন সুমনের ত্যাগের কথা মনে রেখেছিলাম, সেটাও হয়তো ভুলে যাব। -

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.