নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এমন মানব জনম আর কি হবে !

ৎঁৎঁৎঁ

আমি যুক্তিশূন্য ঈশ্বর মানতে রাজী আছি, কিন্তু কোন হৃদয়হীন ঈশ্বর না।

ৎঁৎঁৎঁ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ দুধ ভাত

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৪

টেবিল থেকে কাগজপত্র সব গুছিয়ে ড্রয়ারে তালা মারলেন আলম সাহেব। দীর্ঘ দিনের অভ্যাসমত ঘড়ির দিকে তাকালেন, আটটা বাজে, অফিসের আর সবাই বের হয়ে গেছে। সবসময় তিনিই অফিস থেকে বের হওয়া শেষ মানুষ। অবশ্য এটা নিয়ে এখন আর তার তেমন কোনো অভিযোগ নেই। সংসারে কেউ কেউ থাকে, বুদ্ধিমানের মত যারা অনেক কিছু এড়িয়ে যাওয়া শেখেনা। আলম সাহেবও ঐ বোকা গোত্রের মানুষের মধ্যে পড়েন। কোন ঝামেলার ক্লান্তিকর কাজ যদি আর কেউ করতে রাজী না হয়,তাহলে সেটার জন্য অবধারিতভাবে আলম সাহেব আছেন, কি সেটা অফিসে হোক, অথবা পরিবারের মধ্যে।

ছাত্রজীবনে যে খুব ভাল ছাত্র ছিলেন আলম সাহেব সেরকম না। তবে পড়াশোনা নিয়ে থাকতে তার খুব ভালো লাগতো,আশেপাশে যারা পড়ালেখা শিখে অনেক বড় মানুষ হল তাদেরকে মনের মধ্যে বেশ শ্রদ্ধাই করে এসেছেন। পরিবারে আলম সাহেব ছিলেন ভাইদের মধ্যে ছোট। তিনি যখন আইএ পাস করলেন, তার কিছুদিন পরেই বাবা স্ট্রোক করলেন, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী । আলম সাহেবের ইচ্ছে ছিল অন্তত বিএ পাস করবেন। কিন্তু সেটা আর হল না! বাবা বিছানায় পড়লেন, বড় দুই ভাই যার যার নিজের মত গুছিয়ে নিলেন। ততদিনে নিজেদের সংসার হয়ে গেছে তাদের, বাবা মা ছোট ভাইবোনের দিকে তাদের আর তাকানোর অবসর ছিল না।

আইএ পাস করে তিনি সরকারী একটা ব্যাংকে কেরানির পদে চাকুরি পেয়ে গেলেন, বিছানায় পড়ে থাকা বাবা, অবিবাহিত ছোট বোন, সবার দিকে তাকিয়ে এমএ পাস করার ইচ্ছা অলক্ষ্যে গিলে ফেলে আলম সাহেব শুরু করে দিলেন মানুষের টাকা গোনা। তারপর কত জল বয়ে গেল, কত নদী শুকিয়ে গেল, কত কুল ভেসে গেল সময়ের প্লাবনে, আলম সাহেব আজ পঁয়ত্রিশ বছর পরে অফিসার হয়ে গেছেন, গঙ্গানন্দপুর ব্রাঞ্চের আজ তিনি সেকেন্ড অফিসার। ছোট বোনের বিয়ে দিয়েছেন, নিজে বিয়ে করে ছেলেমেয়ে বড় করেছেন। নিজের যে কোন শখ আহ্লাদ বলে কোন বস্তু ছিল, সবই গেছে বিস্মৃতির আড়ালে।

তবে এই জোয়াল টানার ক্লান্তিহীন ধারাবাহিকতায় একটা জিনিস হয়েছে বটে, আলম সাহেব তার ক্ষুদ্র পরিমন্ডলে একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবেই বিবেচিত হন। যেমন তিনি যদি অফিসে না আসেন বা অসুস্থ থাকেন তাহলে নিশ্চিতভাবে বেশ কিছু কাজ হবেনা, বেশ কিছু মানুষ ফিরে যাবে, বেশ কিছু ফাইল পড়ে থাকবে অনড়। আর পরিবার আত্মীয়স্বজনের মধ্যেও তার একই অবস্থান। ভাগ্নীর বিয়ে, গহনা কেনার টাকা আলম সাহেব দেবেন। বড় ভাইয়ের ছেলের প্রাইমারী মাস্টারের চাকুরীর জন্য টাকা লাগবে, আলমের কাছে গিয়ে ধর্না দাও। বড় চাচার মেয়ে অসুস্থ, শহরে নিতে হবে চিকিৎসার জন্য, টাকা নাই, জানাবোঝা লোক নাই। তো গিয়ে কেঁদে পড় আলম সাহেবের কাছে, যেভাবেই হোক একটা ব্যবস্থা হবে বটে।



অফিস থেকে বের হয়ে রোজকার মত মতিনের চা এর দোকানে এসে বসলেন। মতিনকে কিছু বলতে হয়না, সে আলম সাহেবের চাহিদা জানে। মতিন একটা চা আর সিগারেট বাড়িয়ে দিল। বদভ্যাস বলেন আর টিকে থাকা কোন শখ বলেন, এই একটাই বিলাসিতা আছে আলম সাহেবের। অফিসের সব কাজ শেষ করে তিনি খুব আয়েস করে বসে এক কাপ চা এর সাথে একটা সিগারেট খান। কোন কোন দিন চুপচাপ বসে থাকেন, এটাসেটা অর্থহীন নানা কিছু ভাবেন, আবার কোনদিন মতিনের সাথে গল্প জুড়ে দেন।



তবে আজ আলম সাহেবের বেশ তাড়া আছে, তার মেয়ে তিনবছরের নাতনী সহ বাড়ী এসেছে আজ। নাতনীকে দেখার জন্য, ওর ছোট্ট মুখটা বুকে চেপে ধরার জন্য তার বুড়ো বুকটা বড় আকুপাকু করছে! আহা, কি মায়া! কি মায়া! তার শ্যালকের ছোট ছেলের বিয়ে, সেই উপলক্ষে মেয়ে এসেছে, জামাই আসবে দুইদিন পরে।



এখন অবশ্য আলম সাহেবের ব্যস্ততা, দুশ্চিন্তা অনেক কমে গেছে। ব্যাঙ্কে নতুন নতুন ছেলেমেয়েদের নিয়োগ হচ্ছে, তার ব্রাঞ্চেও দিয়েছে দুইজন। কিন্তু ওদের উপরে তো ভরসা করে সব কাজ ছেড়ে দেওয়া যায়না। নতুন চাকুরি সবার, কাজ বুঝে নিতে তো ওদের সময় লাগবে। আর পরিবারের ভারও একটু হাল্কা হচ্ছে, বড় ছেলেটা চাকুরীতে ঢুকেছে ঢাকায়। আইটি, কম্পিউটার অমুক তমুক নিয়ে কাজ, তিনি নিজে তেমন একটা বোঝেন না। যখন চাকুরীর কথা বলল ছেলে, তিনি তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। ছেলে যে একটা কোথাও ঢুকে কাজ শুরু করেছে, এটাই তো অনেক। ছেলেও রওয়ানা দিয়েছে ঢাকা থেকে, আজকেই চলে আসবে।



বাসায় ফিরে দেখেন কোন সাড়াশব্দ নাই, আলো বন্ধ, বুকটা হুট করে অজানা অমঙ্গল আশঙ্কায় থমকে গেল। তিনি হৈ চৈ মুখর একটা বাসা আশা করছিলেন। পিচ্চি নাতনী গুটিগুটি পায়ে ছুটাছুটি করবে, মেয়েটাকে দেখবেন কতদিন পর। বাসা থেকে আবার চলে যাবেন সবাইকে নিয়ে বাজারে, কেনাকাটা করবেন বেশ মজা করে। কিন্তু খালি বাসাটা যেন তার দিকে তাকিয়ে ব্যঙ্গের হাসি হাসতে থাকে। গেট খুলে দিল নুরজাহান, তার বাসায় কাজ করে। তাকে দেখা মাত্র নুরজাহান বলে উঠলো, চাচা- ভাইজান আসছে ঢাকা থেকে, সবাইরে নিয়ে গেছে বাজারে, কেনাকাটা করবে।

আলম সাহেব বলা বেশ হতবাক হয়ে যান, তাকে ছাড়া এই বাসায় বাজার হবে, কেনাকাটা হবে, এইটা তো কখনও হয়নাই! টাকা কোথায় পেল ওরা, ছেলে তাহলে ভালো রোজগার শুরু করেছে। পিতা হিসেবে আর সবার মতই খুশী হন, কিন্তু এই ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে তার খুব মন খারাপ লাগতে থাকে। নিজের ভেতর থেকে কেমন অভিমানের তেতো ঢেঁকুর উঠে আসছে। অফিস থেকে দেরী করে আসার জন্য কতবার গিন্নির সাথে ঝগড়া করেছেন, তিনি না থাকলে বাজারে যাওয়া হচ্ছে না, অমুক দাওয়াতের গিফট কেনা হচ্ছে না! আর আজ হন্তদন্ত হয়ে বাসায় ফিরে দেখেন কেউ নেই।



আলো না জ্বালিয়ে ঘর অন্ধকার করে বসে রইলেন গম্ভীর হয়ে, নুরজাহান ঘরে এসে আলো জ্বালিয়ে বললঃ

-চাচা কি শরিল খারাপ?

-না।

-চা কইরা দিমু? অন্ধকারে বইসা আছেন কেন?

-কিছু হয় নাই, তুই যা, তোর কাজ কর।

-চাচা, আম্মায় কইসে দুধ নিয়ে আসতে, বাবু দুধভাত খাইব, করিমনের মা দুধ দেয় নাই , ওদের গরু মরসে।

- তুই যা, দেখতেসি আমি কি করা যায় । ওরা কখন আসবে কিছু বলসে?

- না, তয় দেরী হইতে পারে, দেরী হইলে আপনারে খাইয়া ফেলতে বলসে।



কিছুক্ষন গুম হয়ে বসে থাকেন আলম সাহেব। নাতনী কে আদর করে ডাকেন বুড়ি বলে। বুড়ি দুধ ভাত খাবে, বসে তো থাকা যায়না, কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি নিজেকে রাস্তায় আবিস্কার করলেন। বাজারে অধিকাংশ মানুষ তার পরিচিত । ব্যাংকে চাকুরি করার সুবাদে ব্যবসায়ী সবাই কমবেশী তাকে চেনে। কিছুক্ষনের মধ্যেই তিনি দুধের ব্যবস্থা করে ফেললেন। বাড়িতে এখন কেউ নেই, তবুও বাইরে থাকতে ইচ্ছে করলো না, বাসার দিকে রওনা দিলেন। বাড়ি গিয়ে বিছানায় সটান শুয়ে পড়লেন। নিজেকে অত্যাবশ্যকীয় না মনে হবার এক অচেনা অনুভূতি নিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লেন তিনি।



ঘুম ভাঙ্গল তার চুল টানা খেয়ে, কি ব্যাপার? চোখ খুলে দিলেন পেটের উপরে বুড়ি বসে তার চুল ধরে টানছে!

- নানু, নানু, উথ, উথ...

মুহূর্তেই গলে জল হয়ে গেলেন আলম সাহেব, কোথায় গেল তার অভিমান, ক্লান্তি, মায়ার টুকরাটাকে কোলে নিয়ে মুহূর্তের মধ্যে সজাগ হয়ে উঠলেন।

মেয়ে আসলো, কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,-

- বাবা, শুয়ে পড়েছ যে, শরীর খারাপ নাকি?

- আরে না রে মা, তোরা আসছিস, আর আমার অষুধ বুড়ি চলে আসছে, আর আমার কোনো সমস্যা নেই!

ততক্ষনে গিন্নী আসছে,

- আর তোরা যখন নিজেরাই সব কিছু করতে পারছিস, আমি ঘুমিয়ে থাকলেই সমস্যা কি?

শেষের কথাটা রিনু বুঝতে পারে যে বাবা মাকেই বলছে। তবু মেয়ে অস্থির হয়ে বলল,

- বাবা, তুমি অফিস থেকে এত ক্লান্ত হয়ে ফের যে তোমাকে আর টানিনি, আর ভাইয়াও খুব তাড়াহুড়া করতে লাগলো!

ছেলে জহির আসে, বাড়িতে আজ চাঁদের হাট! বহুদিন খুব কাছাকাছি প্রান গুলো ছড়িয়ে গিয়েছিল দূরে দূরে, আজ আবার কাছে আসার উত্তাপে টগবগ করছে সবাই! মানুষ কিভাবে বাঁচে? এত লম্বা অর্থহীন জীবনটা মানুষ কিভাবে টেনে নিয়ে যায় হাসিমুখে? এর উত্তর আজ আলম সাহেবের বাড়িতে আসলে পাওয়া যেতে পারে!



রাতে সবাই একসাথে খেতে বসার আগে বুড়িকে দুধভাত খাওয়াতে বসলেন আলম সাহেব। রুনি রান্নাঘর থেকে হাঁক মেরে বলে

- বাবা, গল্প বলতে হবে কিন্তু, গল্প না শুনে শুনে তোমার বুড়ি কিন্তু খেতে চায়না।

আলম সাহেব মহা মুশকিলে পরে গেলেন। ছোটদের গল্পতো তিনি অনেক আগেই সব ভুলে গেছেন, শুধু ছোটদের না, সব কাল্পনিক গল্পই যেন ভুলে গেছেন। কি গল্প বলবেন এখন, ইস তিনি আগে থেকে জানলে একটা ছোটদের গল্পের বই কিনে আনতেন, ওখান থেকেই তিনি তার বুড়িকে গল্প পড়ে শোনাতে পারতেন !

যাই হোক, গল্প তো বলতেই হবে, তিনি মাথায় যা আসছে তাই বলার সিদ্ধান্ত নিলেন, দুধভাত খাওয়াতে খাওয়াতে শুরু করলেন,

- জানিস বুড়ি, এক দেশে ছিল এক রাজা, রাজার মনে ছিল অনেক দুঃখ! এটুকু বলে চুপ করে গেলেন, মাথায় আর কিছু আসছেনা। রাজাদের আবার দুঃখ থাকবে কেন! কি বানিয়ে বললে যে বুড়ি খুশি হবে এইটা আর মনে আসছেনা।

বুড়ি একটু চুপ করে তাকিয়ে থাকে, তারপর বুঝতে পারে নানু আর গল্পে এগুচ্ছে না, সে তীব্র প্রতিবাদের তোড়ে চিৎকার শুরু করে, এটাকে কান্না বলা যেতে পারে।

আলম সাহেব আপোষের সুরে বললেন আচ্ছা, ঠিক আছে, চল, আমি আমার ছোট বেলার গল্প বলি, আমি তখন তোমার মতই ছোট।

তার নানু যে তার মত একসময় খুব ছোট ছিল, এইটাই বুড়ির জন্য বিশাল বিস্ময়ের ব্যপার!

- তুমি একসময় আমার মত খুউব ছোত ছিলা!

- হ্যা, বুড়ি, আমি তোমার মতই একসময় অনেক ছোট ছিলাম!

- তখন কি তুমি আমার মত দুধ ভাত খেতা?

একটু থামেন আলম সাহেব। প্রতিদিন দুধভাত খাওয়ারর সচ্ছলতা তাদের ছিল না, সেই সময় তাদের গ্রামের বেশীরভাগ মানুষেরই এটা ছিল না!

- না আমি দুধ ভাত খেতাম না! তবে খেলায় দুধভাত বলে একটা জিনিস ছিল। বড়দের খেলায় ছোটদের সান্ত্বনা দিয়ে দুধভাত বলে খেলায় নেওয়া হত, দুধ ভাত খেলোয়াড়দের খেলায় কোন ভূমিকা থাকতনা, তারা গোল দিলেও গোল হিসেব হত না,তাকে কেউ আটকাতেও যেতনা।

- তোমরা সেই সময় কি কি খেলা খেলতে?

- খেলার কি আর শেষ ছিল রে? গোল্লাছুট, গাদি, পলাপলি,লাট্টু, ডাণ্ডাগুলি, বুড়ি-ছু আরও কত খেলা, নাম মনে আসছেনা সবগুলোর!

ছোটবেলার খেলার গল্প বলতে বলতে খাওয়া শেষ, সারাদিনের উত্তেজনায় বুড়ি আলম সাহেবের কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে। ওকে ওর মায়ের কাছে দিয়ে আলম সাহেব জহিরের সাথে কথা বলতে বসলেন। গতরাতে গিন্নি ছেলের বিয়ের কথা তুলেছিল। তিনি কথা বলে বুঝতে চান জহিরের চাকুরীর কি অবস্থা, ভালো হলে তিনিও বিয়ে দিয়ে হাত পা ছাড়া হয়ে যেতে চান।

সবার সাথে কথা আলোচনা শেষ করে যখন বিছানায় ঘুমাতে আসলেন তখন সন্ধ্যের অসময়ের ঘুম পুরো চটে গেছে। বুড়িকে ছোটবেলার গল্প বলতে গিয়ে তিনি নিজেই স্মৃতির আক্রমণে পর্যদুস্ত মনে হচ্ছে। অর্থহীন, টুকরা, ছোটখাটো নানা স্মৃতি ভিড় করছে মাথায়। দুধভাতের কথা মনে পড়ে গেল। বড়রা তাকে খেলায় নিতে চাইতনা। খুব জেদ ধরলে তারা অনেকটা বাধ্য হয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য নিত। খেলায় নেওয়ার সময় বলে নেওয়া হত যে ও দুধভাত। তো খেলায় নিলেও আসলে তার কোন ভূমিকা, গুরুত্ব থাকতো না। দুধভাত খেলোয়াড় গোল দিলেই কি, না দিলেই কি- কারও কোন মনোযোগ থাকতো না সেইদিকে। মাঝে মাঝে এই দুধ ভাত খেলোয়াড় হয়ে থাকতে কি যে দুঃখ লাগতো!

পরের দিন অফিসও আলম সাহেবের বরাবরের মত বেশ ব্যস্ততার মধ্যেই গেল। নিজের কাজ তো আছেই। তার সাথে নতুন ছেলে আছে দুইজন। ওদেরকেও কাজ শিখিয়ে নিতে হয়। বিকাল নাগাদ লেনদেন সব শেষ করে যখন হিসেব মেলাচ্ছেন, হুট করে তাঁর একটা কথা মনে পড়ে গেল, তিনি খুব জরুরী একটা কাজে ভুল করে ফেলেছেন। একটা বড় অঙ্কের পে অর্ডারে সই না করেই খামে রেখেছিলেন, পার্টি এসে নিয়ে গেছে দুপুরে। সই ছাড়া ঐ পে অর্ডারে কোন কাজ হবে না। পার্টি পড়বে বিপদে। তাঁর পঁয়ত্রিশ বছরের চাকুরী জীবনে এই রকম ভুল হয়নাই। প্রথমে একটু হতভম্ব ভাবে বসে রইলেন, তারপরেই উঠে পড়লেন। এই পার্টির দোকান তিনি চেনেন, এরই মধ্যে ঢাকায় রওয়ানা না হলে তিনি হয়ত তাঁর ভুলটা সংশোধন করার সুযোগ পাবেন।

কাউকে তেমন কিছু না জানিয়ে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। বাজারে এসে দেখেন দোকান বন্ধ, বাসায় থাকতে পারে ভেবে পাশের দোকান থেকে ঠিকানা নিয়ে পার্টির বাসায় গেলেন ৫ কিমি দূরে। বাসায় গিয়ে পার্টিকে পেলেন না, তবে একটা নাম্বার পেলেন যেখানে সন্ধ্যার পরে তাকে পাওয়া যাবে। আলম সাহেব আর বাসায় গেলেন না, বাজারে এসে মতিনের চায়ের দোকানে বসে রইলেন। বুঝতে পারলেন, আসলে বলা যায় অনেকটা মেনেই নিলেন যে তাঁর বয়স হয় যাচ্ছে, অবসরে যাওয়ার সময় তো চলেই আসলো, আর কয়েকটা মাস। কিন্তু তাঁর বেখেয়াল ভুলের জন্য একজন বিপদে পড়বে, এইটা মেনে নিতে তাঁর অনেক কষ্ট হতে থাকে।

সন্ধ্যার পরে তিনি পার্টিকে ফোনে পেলেন। যেটা তিনি জানতে পারলেন তাতে তার ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার কথা। পে অর্ডারে নাকি কোন ভুল হয়নি। সই ঠিকই আছে। কিন্তু আলম সাহেব তো সই করেননি, কাউকে করতেও বলেন নি, খামে ভরে ড্রয়ারে রেখেছিলেন পার্টি আসলে দেওয়ার জন্য। সইএর নাম শুনে বুঝলেন নতুন অফিসার, তাকে তিনি বলেন নি, কিন্তু সে নিজে থেকেই তার ভুল সংশোধন করে নিয়েছে।



তার মানে নতুনরা কাজ শিখছে, ওরা দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছে, আলম সাহেবরা না থাকলেও কাজ চলবে। রাত হয়ে আসছে, বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলেন। আজও বেশ দেরী হয়ে গেল। তবে আজকের জন্য আর তেমন অস্থিরতাড়া অনুভব করছেন না। তিনি বাসায় দেরিতে পৌছুলেও তেমন কিছু আটকে থাকবে না, তিনি এখন অনেকটাই ভারহীন। বাড়ি গিয়ে বুড়িকে দুধ ভাত খাইয়ে গল্প পড়ে শোনাবেন। কাল অফিসে একটু দেরিতে গেলেও তেমন অসুবিধা হবেনা বুঝতে পারছেন। তার ধারনা ছিল এরকম একটা দিন আসলে তার খুব শান্তি লাগবে, কোথাও আর সেদিন কোন দুঃখ থাকবেনা। কিন্তু অবাক ব্যাপার, আজ আলম সাহেবের সেই ছোটবেলার সেই দুধভাত খেলার কথা মনে পড়ছে। ছোটবেলায় যখন বড়দের খেলায় দুধ ভাত হতেন, বড় কষ্ট লাগতো তার। আজকে ছোটদের খেলায় আজ তাকে আবার দুধ ভাত হতে হচ্ছে। এইবেলা কেমন লাগবে সেই খেলা- সেইটা ভাবতে ভাবতে ফিরে চললেন ঘরে।







মন্তব্য ৫৮ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৫৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২২

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ঈশ আপনার গল্প পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। ভাবছি অফিসে কাল হতে যদি লেট করে যেতে পারতাম তবে আমার ছেলে দুটোকে একটু সময় দিতে পারতাম। যখন অফিসের জন্য সেই কাক ডাকা (যদিও ঢাকা শহরে এখন আর কাক ডাকতে তেমন দেখা যায়না ) ভোরে বের হই ছেলে দুটি মন খারাপ করে দরজায় দাড়িয়ে থাকে। আর রাতে যখন বাসায় ফিরি ওরা ততক্ষনে ঘুমিয়ে পরে। অদেরকে ছুটির দিনগুলো ছাড়া সময় দেয়া হয়ে উঠে না তেমন। আর আমিও ব্যাংকে চাকরী করি তাই গল্পটি পড়ে মনের মাঝে দাগ কাটল ভীষণ। ভাল থাকুন ভাই।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৪

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: এইটা আমার লেখা প্রথম ছোট গল্প! :) প্রথম ভালো লাগায় আপনাকে অভিনন্দন ভাই কান্ডারী!

আপনিও ব্যাংকে চাকুরী করেন! :( এত এত লেখার সময় পান কই?

আমি ব্যাংকে বছরখানেক, কাছ থেকে দেখা চরিত্র নিয়ে লেখা।

একসময় দেখা যাবে আপনি সকাল বেলা দেখবেন ছেলেরা বের হয়ে যাচ্ছে, অনেক রাতে আবার দেখা হবে! জীবন চক্রক্রমিক ছন্দে এগিয়ে যায় ...

আপনার জন্য শুভকামনা!

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২৮

টুম্পা মনি বলেছেন: আপনি কবিতার পাশাপাশি গল্পও চমৎকার লিখেছেন। শুভকামনা রইল।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ধন্যবাদ টুম্পামনি!

ভালো থাকুন!

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৯

নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ বলেছেন: ভালো লাগল দাদা

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৬

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প পাঠে ধন্যবাদ হে নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ!

শুভকামনা!

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:২৭

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আবার মনটাও খারাপ হয়ে গেল, আশেপাশে এরকম কত আলম সাহেব আছেন যারা না থাকলেই শুধু আমরা তাদের অবদান বুঝতে পারি, কিন্তু যতক্ষণ থাকেন নীরবে আপন কাজ করে যান সবার অলক্ষ্যে।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৯

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: এরকম আলম সাহেবেরা সংখ্যায় হয়ত কম, কিন্তু তাঁরা আমাদের প্রতিটি আনাচে কানাচেতেই ছড়িয়ে আছেন, না হলে তো সংসারটা অচল হয়ে যেত। এরা বুদ্ধিমানের মত দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে শেখেনা।

গল্প পাঠে ধন্যবাদ রেজওয়ানা আলী তনিমা !

শুভকামনা!

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:১১

বোকামন বলেছেন:





এত লম্বা অর্থহীন জীবনটা মানুষ কিভাবে টেনে নিয়ে যায় হাসিমুখে?

লেখক উত্তরটা দুধ ভাতেই দিলেন।

খুব ভালো লাগলো, চমৎকার একটি গল্প, সাদাসিধা প্লটে আলম সাহেবদের এক টুকরো জীবন ধ্বনিত হলো। ভালো থাকুন লেখক।
শুভকামনা রইলো :-)

পক্ষাগাতগ্রস্ত আবিস্কার অস্তির ব্যপার স্বান্তনা

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩২

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ওহ, অনেক ধন্যবাদ ভাই বোকামন! বিশেষ করে অভিধান সহযোগিতায়! :)

খুব সাধাসিধে ঘটনার মধ্যে দিয়েই দুধ ভাত হওয়ার বিষয়টা বলতে চেয়েছিলাম। লেখার আগে দুশ্চিন্তায় ছিলাম ফোটাতে পারবো কিনা! আপনাদের মন্তব্যে বুঝতে পারছি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়নি!

আপনিও অনেক ভালো থাকুন! অনেক অনেক শুভকামনা!

৬| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৫

রবিউল ফকির বলেছেন: গল্পটা এমন একটা গল্প ছিল যেন পাকা হাতের লেখুনি। বিশ্বাস করে আমি বানিয়ে বলছি না, আমি জানি না আপনার পেশা কি। তবে লিখার অভ্যাসটা ছাড়বেন না। লিখে যান নিজ চিন্তা চেতনা থেকে নিশ্চই একদিন খোউব ভাল করবেন। তবে কয়েক যায়গাতে গল্পের আবেগে আমাকে শিশু, অবুঝ এবং আবেগাপ্লুত করে দিয়েছে। আমার মনটা ব্যাকুল হয়েছিল, চোখের কোনে পানিতে টল মল করছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভকামনা জানাই সেই সাথে আপনাকে উৎসাহ দিচ্ছি লিখে যাবার জন্য।
রবিউল, ০১৮১৭১২৫৩০০

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৯

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অদ্ভুত অসাধারণ একটা মন্তব্যে আমাকে ভীষণ ভীষণ অনুপ্রানিত করলেন আপনি! এটা আমার লেখা প্রথম ছোট গল্প, মাথায় মাঝে মাঝে গল্প ঘুরে, কিন্তু কখনই লেখা হয়ে ওঠেনা, এইবার লিখে ফেললাম! এবং বুঝতে পারছি অন্য গল্পগুলোকেও লিখে ফেলা যায়!

আপনার সাথে আমার যোগাযোগ হবে এবং আশা করি সামনের দিনে গল্পে আবার আমাদের দেখা হবে!

আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইলো রবিউল ভাই!
অনেক অনেক উৎসাহ দিলেন!
:)

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯

খেয়া ঘাট বলেছেন: ভালো লেগেছে। লেখকের জন্য শ্রদ্ধা।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছপ্লাস।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ খেয়া ঘাট !

গল্পে আপনার ভালোলাগায় আনন্দ!

শুভকামনা রইলো!

৮| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০৪

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: যদিও মন খারাপ হয়ে গেল লেখাটা পড়ে

কিন্তু খুব ভালো লাগলো আপনার লেখনী। একদম পাকা হাতের লেখনী।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৩

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: বিষয়টা আসলেই অনেক মন খারাপের!

লেখনী ভালো লেগেছে জেনে আনন্দও পাচ্ছি, উৎসাহও পেলাম!

শুভকামনা!

৯| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫

আিম এক যাযাবর বলেছেন: সাধারণ জীবনের অসাধারণ গল্প, ভালো লাগল....

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প ভালো লাগায় আনন্দ যাযাবর ভাই!

শুভকামনা!


* আপনার প্রো পিকটা মজার, নিকের সাথে দারুন যায়!

১০| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনি তো গল্পও চমৎকার লেখেন।নিয়মিত গল্প চাই।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্পে যাদের আগমনের প্রত্যাশা ছিল তাদের মধ্যে আপনি একজন হা-মা ভাই! লেখকদের কাছ থেকে ভালো লাগা পাওয়াটা দারুন! :)


শুভকামনা!

গল্প লেখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে !

১১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: আপনি তো গল্পও চমৎকার লেখেন।নিয়মিত গল্প চাই।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: :)

১২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১২

এরিস বলেছেন: মানুষ কিভাবে বাঁচে? এত লম্বা অর্থহীন জীবনটা মানুষ কিভাবে টেনে নিয়ে যায় হাসিমুখে?
চেনা অচেনা অনেক অনেক খুনসুটি নিয়ে জীবন এগিয়ে চলে। জীবনের ক্লান্তি নেই। রাজপ্রাসাদে বসে জীবন, রাস্তার ফুটপাথে ঘুমিয়েও জীবন। কতো রং জীবনের!!
আলম সাহেবের এই অনুভব চিরন্তন। সব মানুষই একসময় দুধভাত হয়ে যায়। কেউ কেউ আলম সাহেবের মতো ধীরে ধীরে বুঝতে পারে, কেউ আবার কিছু বুঝে উঠার আগেই দুম করে চলে যায় ওপারে। দুধভাত হওয়াটা বেদনাদায়ক, আর নির্মম সত্যি।
গল্পের চিন্তা ভালো লেগেছে। বর্ণনাও সাবলীল ছিল, অনুভব করিয়ে ছেড়েছে। আপনার গল্প পড়িনি এর আগে, কবিতার ভক্ত ছিলাম, আজকে গল্পেরও ভক্ত হয়ে গেলাম।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৫৬

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: স্বাগতম এরিস! বেশ কিছুদিন পরে আপনার সাথে সাক্ষাৎ হল, তাও আবার গল্পে! :)

আসলেই জীবনের ক্লান্তি নেই, একেকজনের উপর দিয়ে সে তার রথ টেনে চলে নিষ্ঠুর উদাসীনতায়। কেউ তার নিচে চাপা পড়ে, কেউবা টেনে চলে যতদুর কুলায়, কেউ কেউ নিমেষেই হয়ে যায় দুধভাত!

আপনার সবাই কত দারুন দারুন গল্প লিখছেন, তাই আমিও একটা লিখে ফেললাম!

শুভকামনা রইলো এরিস!

আর আপনার মন্তব্যে প্লাস!

১৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: চমৎকার একটা গল্প। ভাল লাগা রইল।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৫৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ধন্যবাদ সমুদ্র কন্যা!

আপনি কি তাহলে জলপরীদের গোত্রে পড়েন নাকি ভিন্ন প্রজাতি?

সমুদ্র কন্যার জন্য শুভকামনা রইলো!

১৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সর্বনাশ!!!!!!! আপনি তো ভাবে টু ইন ওয়ান!!!
কবিতা পড়েছি, মুগ্ধ হয়েছি, গল্প পড়েছি, দারুন লাগছে। নাহ! বুঝতে পেরেছি আপনি দেখি একে বারে সব ফিল্ডেই রাজত্ব করতে চান। :P :D

চমৎকার এবং পরিনত হাতের লেখা! অনেক ভালো লাগল।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: কি দারুন কাল্পনিক ভাই! আপনি আসলেই এক গাদা ভালো লাগায় ভাসিয়ে দিয়ে যান, আর আমি সেই ভালোলাগায় হাবুডুবু খেতেই থাকি, খেতেই থাকি! :)

আসলে কাহিনী হইসে বেশ কয়েকটা বিশাল বিশাল গল্প চিন্তা করে লিখতে গিয়ে একটাও শেষ করতে পারিনাই, কয়েকদিন পরেই উৎসাহ হারায়ে ফেলি। আর গল্প লিখতে সময় ও পরিশ্রম দুইটাই বেশী হয়। সেইদিক থেকে কবিতায় কত আরামের! কিন্তু আপনার সবাই এত সুন্দর সুন্দর গল্প লিখছেন যে শুধু কবিতা লিখে পোষালো না! গল্প লেইখা ফেললাম!

আপনার ভাললাগায় অশেষ অনুপ্রানিত হইলাম। গল্প লেখার প্রচেষ্টা জারি থাকবে!

শুভকামনা কাল্পনিক ভাই!

১৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:০৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ইফতির এই গদ্য লেখার গুনটাও যে আছে এই গল্প না পড়লে জানাই হতো না ! এখন থেকে কবিতার পাশপাশি গল্পও লিখবেন কিন্তু !

গোল্লাছুট, গাদি, পলাপলি,লাট্টু, ডাণ্ডাগুলি, বুড়ি-ছু > গাদি -- এইটা কি খেলা ?

এই লেখার নাম শুনি নাই , খেলিও নাই ! পলাপলি !!! বহুত খেলছি , ডাংগুলিও । সবচেয়ে বেশি খেলছি দাড়িয়াবান্ধা ।

ছোট বেলায় দুধ ভাত হওয়া খুব অপমানের ছিল , অনেকবার দুধভাত হইছি। বড়রা দুধভাত ভেবে অনেক গোপন কথাও আলোচনা করতো , ভাবতো কিছুই বুঝি না !

আলম সাহেবের চিন্তার জগতটা ভালো লাগলো , দার্শনিক এবং হিসেবী।

গল্পে প্লাস রইলো। ভালো লাগছে পড়ে।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১৭

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: কত কি জানার আছে বাকি!

গাদি খেলাটা মনে হয় খেলসেন, অন্য নামে হতে পারে। খেলাটা হত ব্যাডমিন্টন কোর্টের মত ছককাটা ঘরে। দুই দলে ভাগ হয়ে এদ দল একটা ঘরে আটকা থাকতো, আর অন্য দলের সবাই ঘরগুলোর লাইন বরাবর দুই হাত দুই দিকে দিয়ে দাঁড়াত, প্রথম ঘরটা থেকে বের হয়ে সব ঘর ঘুরে এসে আবার প্রথম ঘরে অন্য দলের ছোয়া এড়িয়ে ফিরতে পারলেই গাদি! মাঝে একটা বিশেষ ঘর ছিল, যেটাতে লবন খাওয়ার জন্য যেতেই হত, যে গাদি দেবে তাকে অবশ্য লবনের ঘরে সফল ভাবে ঢু মারতে হবে। ফাটাফাটি মজার খেলা! সেই খেলাতে যখন দুধভাত বানায়ে রাখতো কি যে কষ্ট লাগতো আমার! :( বিষয়টা খুব অপমানেরও ছিল!

বড়রা কিন্তু অনেক গাধাও ছিল, বিশেষ করে যখন দুধভাত ভেবে মেলা কথা বইলা ফেলত! আসলেই ভাবত পুলাপাইন কিছু বুঝতাসে না !

গল্প তাহলে শেষমেশ একখানা লিখেই ফেললাম! :-0

১৬| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: দুধভাত - পরীক্ষা ফেইলের সমতুল্য !
যদিও আসন্ন পবিত্র রমজানের আমার অন্যতম সেহেরী আইটেম !
দুধভাত গল্পে ভালোলাগা !

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১৯

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: দুধভাত - পরীক্ষা ফেইলের সমতুল্য ! - ঠিক বিষয়টা সেই রকমি দুঃখের! :(

আজ ভোররাতেই তাহলে আপনি আবার দুধভাত হচ্ছেন মানে খাচ্ছেন! আমারও ছোটবেলার সেহেরির আইটেম ছিল দুধভাত!

শুভকামনা রইলো অভি ভাই!

১৭| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আম্মানসুরা বলেছেন: হুম, বয়সের কাছে হার মেনে একদিন দুধভাত হতে হবেই- এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:২১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: একদিন আসবে যেদিন আমরাও আবার দুধ ভাত হয়ে যাব! :(

গল্প পাঠে কৃতজ্ঞতা রইলো আম্মানসুরা !

১৮| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪২

মামুন রশিদ বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন । মানুষের জীবনটা হয়ত এমনই বৃত্তময় । অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে আবার সেই জায়গায় ফিরে আসে । ফিরে যায় সেই কিশোরবেলার নস্টালজিয়ায় ।


কবির কাছে নিয়মিত গল্প চাই ।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:২৬

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: মানুষের জীবনটা বৃত্তময় ! সুন্দর করে বলেছেন! কিছু কিছু জিনিস জীবনে এরকম ঘুরে ঘুরে আসে, যেমন একদিন আবার এই দুধভাত হয়ে যাওয়া!

গল্প নিয়ে কত সংকলন, হৈ চৈ, অমুক তমুক দেইখা আমিও গল্প লেইখা ফেলসি! :)

শুভকামনা রইলো মামুন ভাই!

১৯| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

সায়েম মুন বলেছেন: গল্পেও আপনার দুর্দান্ত পার্ফমেন্স। আশা রাখি নিয়মিত গল্প পাবো।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:২৯

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ধন্যবাদ হে চন্দ্রকবি! কবিরা কিন্তু চাইলেই গল্প লিখে ফেলতে পারে! :-0

(এইটা আর কেউ না মানলেও কবিরা কিন্তু জানে!)


শুভকামনা!

২০| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২০

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: কবিতা ও গল্প দুটাই ভাল লেখেন দেখছি!
আশা রাখি নিয়মিত গল্প পাবো।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প পাঠে আনন্দ হে তন্দ্রা বিলাস!

গল্প লেখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে! :)

শুভকামনা!

২১| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫৫

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: গপ ভালই লাগছে - নতুনরা আসবে পুরানরা ভারমুক্ত হবে এটাই নিয়ম

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৩

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ঠিক, এটাই নিয়ম! দুঃখজনক নিয়ম! :(

শুভকামনা রইলো মাসুম ভাই!

২২| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৩২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: মৎকার গল্প।আসলে মানবজীবনটাই এমন- যে বিন্দু থেকে শুরু হয়, ঘুরে ফিরে সেই বিন্দুতে ফিরে আসে।দুধভাত হয়ে শুরু করা জীবন দুধভাত হয়েই শেষ করতে হয় :(

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আমি তুমি আমরা- আমাদের সবার জীবনই এমন! ঘুরে ফিরে আবার সেই একই বিন্দুতে ফিরে আসা, বৃত্তের পরিধিতে ঘুরতে ঘুরতে ...

গল্প পাঠে আনন্দ!

শুভকামনা!

২৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: গল্পটা অফলাইনে পড়ে গিয়েছিলাম। আজ এলাম প্লাস দিতে। খুব ভালো ভাবে চিত্রায়িত করেছেন মানুষের জীবনের এইরকম দ্বন্দকে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়মিত করতেও ভালো লাগেনা আবার সেই কাজ অন্য কেউ করলেও স্বস্তি মেলেনা। মানব চরিত্র বড়ই জটিল।

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪২

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মহামহোপাধ্যায় !

আপনার ভালো লাগায় অনুপ্রানিত হলাম!

মানুষের মন এত জটিল, সে কিছু ছাড়াও থাকতে পারেনা, আবার অনেক কিছুর মধ্যে থাকতে থাকতেও তার হাঁপ ধরে যায়, মুক্তির জন্য ছটফট করে!

শুভকামনা রইলো!

২৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০১

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: চমতৎকার গল্প কবি!! :) নিয়মিত চাই!

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ধন্যবাদ !

গল্প লেখার ইচ্ছে বাড়ল!

শুভকামনা!

২৫| ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:২১

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: ভাল লাগলো !!!!

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: ধন্যবাদ ইরফান!

শুভকামনা !

২৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: কবিতা কঠিন লাগে, সেই দিক থেকে গল্প বুঝতে সুবিধা হয় বেশি। আপনি সুন্দর লেখেন, আরও লিখবেন আশা করি।

শুভকামনা।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:০৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ প্রোফেসর! আমি নিজেও আপনার লেখার ভক্ত! গল্প লেখা কষ্টের, গুছিয়ে লিখে শেষ করতে বেশ সময় লেগে যায়, সেই তুলনায় কবিতা লেখা আরামের বলে বেশী কবিতা লেখা হয়!

শুভকামনা রইলো !

২৭| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
দেরিতে পড়ার জন্য দুঃখিত ইফতি।
গল্প চমৎকার হয়েছে।
থিমটা কমন, তবে উপস্থাপনা সত্যিই চমৎকার হয়েছে।
বিশেষ করে নানা নাতনীর কথোপকথনের যায়গাটা খুব ভাল লেগেছে। আপনার গল্প লেখার হাত দারুন।
নিয়মিত লিখুন এই আশা করব।

১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প লিখে বসে আছি আর আপনার দেখা নেই! :(

যাক অবশেষে আপনার দেখা মিললো এবং আপনার কাছে থেকে ভালো লাগা তো অবশ্যই বিশেষ কিছু! :) অনুপ্রানিত হইলাম! সামনের দিনে গল্প মাথায় আসলে এবার লিখে ফেলবো! :)

আপনার কাছ থেকে নতুন গল্প পাচ্ছিনা, পুরনো গল্পগুলোতে ঢু মারার প্রস্তুতি নিচ্ছি!

শুভকামনা!

২৮| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:২৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর গল্পে প্লাস +++

১২ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৩৫

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প পাঠে ধন্যবাদ সেলিম ভাই!

শুভকামনা রইলো!

২৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: শেষটা খুবই ভালো লেগেছে ! যোগ নিন !

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২০

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: যোগ গ্রহন করলুম! :)

দুধভাত দিয়ে শুরু, দুধভাত দিয়েই শেষ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.